রুশ–জাপান যুদ্ধ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
৫৬ নং লাইন:
তখনকার একটি বৃহৎ সাম্রাজ্যবাদী শক্তি জারশাসিত রাশিয়ার প্রাচ্যে সাম্রাজ্য বিস্তারের উচ্চাভিলাষ ছিল। ১৮৯০-এর মধ্যে রাশিয়ার প্রভাব [[মধ্য এশিয়া|মধ্য এশিয়ার]] মধ্য দিয়ে [[আফগানিস্তান]] পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছিল এবং এ প্রক্রিয়ায় স্থানীয় রাষ্ট্রগুলো রাশিয়ায় অঙ্গীভূত হয়ে যায়। রুশ সাম্রাজ্য পশ্চিমে [[পোল্যান্ড]] থেকে পূর্বে [[কামচাটকা]] উপদ্বীপ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল<ref>University of Texas: [http://www.lib.utexas.edu/maps/historical/shepherd/japan_euro_growth_1800.jpg Growth of colonial empires in Asia]</ref>। [[ভ্লাদিভোস্টক]] পর্যন্ত ট্রান্স-সাইবেরিয়ান রেলপথ নির্মাণের মাধ্যমে রাশিয়া এ অঞ্চলে তার প্রভাব এবং উপস্থিতির বিস্তৃতি ঘটানোর ইচ্ছা পোষণ করছিল। ১৮৬১ সালের 'শুশিমা ঘটনা'য় রাশিয়া সরাসরি জাপানি ভূখণ্ডে আগ্রাসন চালিয়েছিল।
 
=== চীন-জাপানচীন–জাপান যুদ্ধ (১৮৯৪–১৮৯৫) ===
{{Main article|প্রথম চীন-জাপানচীন–জাপান যুদ্ধ}}
 
[[File:Generals Pyongyang MigitaToshihide October1894.jpg|thumb|১৮৯৪ সালের অক্টোবরে [[পিয়ংইয়ং]]-এ জাপানিদের কাছে চীনা জেনারেলদের আত্মসমর্পণ]]
 
'মেইজি পুনর্গঠন' এবং [[প্রথম বিশ্বযুদ্ধ|প্রথম বিশ্বযুদ্ধে]] অংশগ্রহণের মধ্যবর্তী সময়ে জাপান দুইটি গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধে অংশ নেয়। এদের মধ্যে প্রথমটি হলো ১৮৯৪ থেকে ১৮৯৫ সালে সংঘটিত [[প্রথম চীন-জাপানচীন–জাপান যুদ্ধ]]। যুদ্ধটি জোসেওন রাজবংশের শাসনাধীন কোরিয়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্যের বিষয় নিয়ে সংঘটিত হয়। ১৮৮০-এর দশক থেকে কোরিয়ায় প্রভাব বিস্তারের জন্য চীন ও জাপানের মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতা চলতে থাকে।থাকে<ref name="Kyung Moon Hwang pages 132-133">Kyung Moon Hwang, ''A History of Korea'', London: Palgrave, 2010 pages 132–133</ref> কোরীয় রাজদরবার ছিল দলাদলিতে জর্জরিত, এবং এটি একটি জাপানপন্থী সংস্কারবাদী দল ও একটি চীনপন্থী তুলনামূলক রক্ষণশীল দলের মধ্যে বিভক্ত হয়ে পড়েছিল।পড়েছিল<ref>Kyung Moon Hwang, ''A History of Korea'', London: Palgrave, 2010 page 132</ref> ১৮৮৪ সালে চীনা সৈন্যরা কোরিয়ায় একটি জাপানপন্থী অভ্যুত্থান দমন করে, এবং [[সিউল|সিউলে]] জেনারেল ইউয়ান শিকাই-এর অধীনে একটি 'রেসিডেন্সি' প্রতিষ্ঠিত হয়।হয়<ref name="Kyung Moon Hwang pages 132-133"/> এরপর [[দংহাক]] ধর্মীয় আন্দোলনের নেতৃত্বাধীন একটি কৃষক বিদ্রোহ দমনের জন্য কোরীয় সরকার চীনকে সৈন্য প্রেরণের অনুরোধ জানায়।জানায়<ref>Kyung Moon Hwang, ''A History of Korea'', London: Palgrave, 2010 page 133</ref> প্রত্যুত্তরে জাপান বিদ্রোহ দমনের জন্য কোরিয়ায় নিজেদের একটি সৈন্যবাহিনী প্রেরণ করে এবং সিউলে একটি পুতুল সরকার প্রতিষ্ঠা করে। চীন এর প্রতিবাদ জানায় এবং যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। যুদ্ধটি সংক্ষিপ্ত হয়, কারণ জাপানি স্থলবাহিনী দ্রুত [[লিয়াওদং উপদ্বীপ|লিয়াওদং উপদ্বীপে]] চীনা সৈন্যদেরকে পরাজিত করে এবং [[ইয়ালু নদীর যুদ্ধ (১৮৯৪)|ইয়ালু নদীর যুদ্ধে]] জাপানি নৌবাহিনী চীনা নৌবহরকে প্রায় সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দেয়। যুদ্ধ শেষে চীন ও জাপানের মধ্যে [[শিমোনোসেকি চুক্তি]] স্বাক্ষরিত হয় এবং এর ফলে চীন জাপানের কাছে লিয়াওদং উপদ্বীপ ও [[তাইওয়ান]] দ্বীপ সমর্পণ করে। শান্তি চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর রাশিয়া, [[জার্মানি]] এবং [[ফ্রান্স]] জাপানকে লিয়াওদং উপদ্বীপ থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করতে বাধ্য করে। জাপানি নেতাদের ধারণা ছিল যে, রাশিয়া, জার্মানি ও ফ্রান্সের সম্মিলিত শক্তির মোকাবেলা করার মতো সামর্থ্য তাঁদের নেই এবং তাই তাঁরা চরমপত্রের কাছে নতি স্বীকার করেন। একই সময়ে জাপানিরা কোরিয়ায় তাদের প্রভাব বিস্তারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখে। ১৮৯৫ সালের ৮ অক্টোবর কোরিয়ার রানী মিয়েয়ংসেয়ং (যিনি ছিলেন কোরীয় রাজদরবারে জাপান-বিরোধী ও চীনপন্থী দলের নেত্রী) [[জিয়েওংবোকগাং]] প্রাসাদের অভ্যন্তরে জাপানি গুপ্তচরদের হাতে খুন হন। এ ঘটনাটি জাপানের জন্য লাভজনক না হয়ে উল্টো ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়, কারণ এ ঘটনার ফলে কোরীয় জনমত জাপানের বিরুদ্ধে চলে যায়।যায়<ref name="Kyung Moon Hwang page 137">Kyung Moon Hwang, ''A History of Korea'', London: Palgrave, 2010 page 137</ref> ১৮৯৬ সালের প্রথমদিকে কোরিয়ার রাজা গোজোং জাপানি গুপ্তচরদের হাত থেকে প্রাণরক্ষার জন্য সিউলে রুশ দূতাবাসে আশ্রয় নেন এবং এসময় থেকে কোরিয়ায় রুশ প্রভাব বাড়তে থাকে।থাকে<ref name="Kyung Moon Hwang page 137"/> রাজার পালিয়ে যাওয়ার পর কোরিয়ার জনগণ বিদ্রোহ করে এবং জাপানপন্থী সরকারের পতন ঘটে। বেশ কয়েকজন মন্ত্রীকে রাস্তায় প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।হয়<ref name="Kyung Moon Hwang page 137"/>
 
১৮৯৭ সালে রাশিয়া লিয়াওদং উপদ্বীপ দখল করে, পোর্ট আর্থার নৌঘাঁটি নির্মাণ করে এবং বন্দরটিতে রুশ প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌবহরকে স্থাপন করে। রাশিয়া কর্তৃক পোর্ট আর্থার দখল ছিল প্রকৃতপক্ষে একটি ব্রিটিশ-বিরোধী চাল, কারণ ওয়েইহাই-এ ব্রিটিশ জবরদখল প্রতিহত করার জন্যই রাশিয়া এই পদক্ষেপ নিয়েছিল। কিন্তু জাপানে এই পদক্ষেপকে জাপান-বিরোধী পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হতে থাকে।থাকে<ref>Jukes, Geoffrey ''The Russo-Japanese War 1904–1905'', London: Osprey 2002 page 8.</ref> জার্মানি জিয়াওঝোও উপসাগর দখল করে নেয়, তিসিংতাও দুর্গ নির্মাণ করে এবং বন্দরটিতে জার্মান পূর্ব এশিয়া স্কোয়াড্রন স্থাপন করে। ১৮৯৭ থেকে ১৯০৩ সালের মধ্যে রাশিয়া মাঞ্চুরিয়ায় [[চীনা পূর্বাঞ্চলীয় রেলপথ]] নির্মাণ করে।করে<ref name="Jukes, Geoffrey page 9">Jukes, Geoffrey ''The Russo-Japanese War 1904–1905'', London: Osprey 2002 page 9</ref> চীনা পূর্বাঞ্চলীয় রেলপথ রাশিয়া ও চীনের যৌথ মালিকানাধীনে ছিল, কিন্তু কোম্পানির ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিল কেবল রুশরাই, রেলপথটি তৈরি করা হয়েছিল রুশ গেইজের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এবং রেলপথটিতে চলাচলকারী রেলগাড়িগুলোকে ডাকাতদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য মাঞ্চুরিয়ায় রুশ সৈন্য মোতায়েন করা হয়।হয়<ref name="Jukes, Geoffrey page 9"/> চীনা পূর্বাঞ্চলীয় রেলপথ কোম্পানির সদর দপ্তর ছিল রুশদের দ্বারা নবনির্মিত শহর [[হারবিন|হারবিনে]], যেটিকে 'প্রাচ্যের মস্কো' নামে অভিহিত করা হতো।হতো<ref name="Jukes, Geoffrey page 9"/> ১৮৯৭ সাল থেকে মাঞ্চুরিয়া ক্রমেই একটি রুশ প্রদেশের রূপ ধারণ করতে থাকে, যদিও কাগজে-কলমে সেটি তখনও চীন সাম্রাজ্যের অন্তর্গত ছিল।ছিল<ref name="Jukes, Geoffrey page 9"/>
 
=== রুশ সম্প্রসারণ ===