গাইবান্ধা সরকারি কলেজ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১ নং লাইন:
উত্তরবঙ্গের অন্যতম প্রাচীন শহর ঘাঘট নদীতীরবর্তী এই গাইবান্ধা। এতদাঞ্চলেরশিক্ষানুরাগী ও শিক্ষাব্রতীজনের সাধনার ফসল এই '''গাইবান্ধা  সরকারি কলেজ। ১৯৪৭সালের  কলেজ''' বাংলাদেশের গাইবান্ধা জেলার একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১৯৪৭ সালের ১৭  আগষ্ট  গাইবান্ধা  সরকারি  কলেজ  প্রতিষ্ঠিত হয়।তৎকালীন  হয়। তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত  অধ্যক্ষ  অস্বিনী  কুমার  চৌধুরী    জন  শিক্ষক    ২৩  জন  ছাত্র  নিয়ে  বর্তমান  গাইবান্ধা  ইসলামিয়া  বালক  উচ্চবিদ্যালয়ে একাদশ  শ্রেণীর  কেবল  মানবিক  শাখা  দিয়ে  কলেজটিকে  দাঁড়  করিয়েছিলেন।  শিক্ষারথে  যাত্রা  শুরুর  পর  কলেজের  প্রথম অধ্যক্ষ  হিসেবে  দায়িত্ব  পালন  করেন  ফণিভূষণ  রায়।  পঞ্চাশের  দশকের  মাঝামাঝি  সময়টা  ছিল  গাইবান্ধা  সরকারি  কলেজের  জন্যউল্লেখযোগ্য  সময়। এ–সময়ই স্নাতক (পাস) কোর্স চালু হয় শিক্ষানুরাগী স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ ও কলেজ প্রশাসনের যৌথ প্রয়াসে।  প্রবাদ–প্রতিম  অধ্যক্ষ  এন.সি.  সেন    স্বাধীন  বাংলাদেশের প্রথম  স্পীকার  মরহুম  শাহ্  আব্দুর  হামিদ–  এর  যৌথ  প্রচেষ্টায়  গাইবান্ধা  সরকারি  কলেজে  সহশিক্ষার  স্বর্ণদ্বার  উন্মোচিত  হয়  এই  পঞ্চাশের দশকেই।১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে গাইবান্ধা সরকারি কলেজ ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা ট্রেনিংসেন্টার। অমিত সাহসী কমান্ডার আজিম নিয়মিত গেরিলা প্রশিক্ষণ দিতেন মুক্তিযোদ্ধাদের এই কলেজ প্রাঙ্গনেই। আর কমান্ডার আজিমকে প্রত্যক্ষ সহযোগীতা দান করতেন সেই রক্তাক্ত সময়ের সাহসী অধ্যক্ষ অহিদ উদ্দিন আহম্মদ।পাকিস্তানী হানাদারবাহিনীর কবল থেকে দেশ মুক্ত হওয়ার অব্যবহিত পরেই কলেজ–শিক্ষক পরিষদের এক আলোচনা সভায় দশকেই।
 
পাকহানাদারবাহিনীর রোমহর্ষক, বিভীষিকাময় নির্যাতনের করুন চিত্র যখন তুলে ধরছিলেন অধ্যক্ষ অহিদ উদ্দিন আহম্মদ, ঠিক তখনই তিনিমৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন সবাইকে নিস্তব্ধ করে দিয়ে। অনুমান করা হয়– বর্বর পাক হানাদার বাহিনীর অমানুষিক নির্যাতনেরচিত্র তাঁর মনে প্রবল প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছিল এবং তিনি তা সইতে না পেরে আলোচনার টেবিলেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। মুক্তিযুদ্ধ– যুগের চাহিদা মেটাতে এবংশিক্ষা বিস্তারের যৌক্তিক প্রয়োজনে ১৯৮০  সালে  ১লা  মার্চ  কলেজটি  জাতীয়কৃত  হয়।    সময়  ভারপ্রাপ্ত  অধ্যক্ষ  হিসেবে  একলেজের  দায়িত্ব  পালন  করেন  জনাব  গিয়াস  উদ্দিন।  এরপর  আশির  দশকের  মাঝামাঝি  সময়ের  কথা।  তখন  কলেজের  অধ্যক্ষ প্রফেসর  গোলাম  উদ্দিন  আহম্মেদ। সে সময় চেষ্টা করা হয়েছিল বাংলা ও সাহিত্যে অর্নাস কোর্স প্রবর্তনের। কিছু ছাত্র ভর্তি করারপর পাঠদান কার্যক্রমও শুরু করা হয়েছিল। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তা আর বেশি দূর এগোতে পারে নি । অতঃপর ১৯৯৬ খৃষ্টাব্দের শেষভাগ। বগুড়া সরকারি আযিযুল হক কলেজ থেকে পদোন্নতি পেয়ে অধ্যক্ষ হিসেবে এই কলেজে এলেন প্রফেসর মো: আব্দুল হামিদ। মাত্র তিন মাসের যৌথ প্রয়াস অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে অর্নাসকোর্স প্রবর্তিত হয়েছে এ কলেজের দশ–দশটি বিষয়ে। এ–ব্যাপারে ছাত্র ছাত্রীদেরও ছিল অসমান্য অবদান। ছাত্র ছাত্রীরাযৌথভাবে ছাত্র সংসদের সমস্ত অর্থদান করেছিল অর্নাস কোর্স প্রবর্তনের জন্য । আর কলেজের সমস্ত শিক্ষক দিয়েছিলেনএকদিনের বেতনের সমপরিমাণ অর্থ। কর্মচারীরাও করেছিলেন অক্লান্ত পরিশ্রম এ ব্যাপারে। অর্নাস কোর্স প্রবর্তিত হলে প্রথমবছরেই নির্ধারিত আসন পূর্ণ হয় ৪৫০ জন ছাত্র ছাত্রী দিয়ে। বহু কাঙ্খিত মর্যাদার আসনে আসীন হয় গাইবান্ধা সরকারি কলেজ। উল্লেখ্য, ১৯৯৬-৯৭ শিক্ষাবর্ষে কলেজটি জেলার শ্রেষ্ঠ কলেজ এবং অধ্যক্ষ প্রফেসর মো: আব্দুল হামিদ জেলার শেষ্ঠ শিক্ষকনির্বাচিত হন। বর্তমানে  ১২.১২  একর  জমির  ওপর  কলেজটি  অবস্থিত।  মূল  ভূ–খন্ডের  ঠিক  মাঝামাঝি  কলেজের  বিভিন্ন  ভবনসুশৃঙ্খলভাবে  দাঁড়িয়ে  আছে।  পূর্ব  প্রান্তে  আর  পশ্চিম  প্রান্তে  রয়েছে  দুটি  বিশাল  আকৃতির  পুকুর।  কলেজের  উত্তর  প্রান্তে  দীর্ঘ  টিনশেড  ভবনটি  তার  প্রাচীন  ঐতিহ্য  নিয়ে  এখনও  বর্তমান।  এইভবনেই  পঞ্চাশ  দশকের  মাঝামাঝি  সময়ে  দিবারাত্রি  ক্লাশ  পরিচালিত  হত। 
 
==তথ্যসূত্র==
এ–ভবনেই অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের কার্যালয়, সংশ্লিষ্ট অর্নাস বিষয়ের ৭ টি দপ্তর ও সেসবের সেমিনার কক্ষ এবংপুরুষ মিলনায়তন রয়েছে। কলেজের মূল ফটক দিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে প্রথমে হাতে বামে পড়বে ৫২–এর ভাষা আন্দোলেনের অমর স্মারক শহীদ মিনার। আর হাতের ডানে শান্তনিরিবিলি পরিবেশে কলেজ মসজিদ। একটু এগোলেই হাতের ডানে পড়বে অন্য একটি টিনশেড ভবন। নারকেল গাছ, মেহগনি আর শিশুগাছ যেন যৌথভাবে ছায়ার স্নেহে আগলে রেখেছেভবনটি। ওটি রসায়ন ভবন। এই ভবনেই রয়েছে স্নাতক বিজ্ঞান এবং উচ্চ মাধ্যমিক বিজ্ঞানের ছাত্র ছাত্রীদের দুটি পৃথক লাইব্রেরী। স্থান সংকুলান না হওয়ায় গণিত বিভাগের অফিস কক্ষও গণিত সম্মান শ্রেণীর সেমিনার কক্ষের ব্যবস্থা এখানেই করা হয়েছে। এই ভবনের সামনেই বিস্তৃত উদার সবুজ খেলার মাঠ। রসায়ন ভবন ছেড়ে হাতের ডানে পড়বে কলেজ ক্যান্টিন, বি.এন.সি.সি এর অফিস এবং সাইকেল গ্যারেজ। কিছুদুর এগিয়ে হাতের ডানে পুকুর–সংলগ্ন পদার্থ বিজ্ঞান ভবনটি সহজেই চোখে পড়বে। একতলা ভবনে বিজ্ঞানের ছাত্র ছাত্রীদের জন্য রয়েছে পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি। কলেজের মূল ক্যাম্পাস থেকে ভবনটি একটু দূরে এবংনিরিবিলি হওয়ায় সেখানে সবসময় পড়াশুনার চমৎকার পরিবেশ বিদ্যমান। কলেজের দ্বিতল বিশিষ্ট মূল ভবনটি উত্তরদিকে দাঁড়িয়ে আছে অবকাঠামোগত সমবৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে। এইভবনেই রয়েছে শিক্ষক বিশ্রামাগার, ছাত্রী মিলনায়তন, সুবিশাল গ্রন্থাগার, বিস্তৃত পাঠ কক্ষ, উদ্ভিদ বিজ্ঞানের ও প্রাণি বিজ্ঞানের ল্যাবরেটরী।রয়েছে দশটি শ্রেণী কক্ষ। দ্বিতল বিশিষ্ট এই ভবনের পূর্বপ্রান্ত ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে কলেজের ছাত্র সংসদ ভবন। তারও পূর্ব পাশে অবস্থিতছাত্রদের একতলা হোষ্টেল। দূর–দূরান্তের ছাত্রদের আবাসিক সংকট মোচনে এই হোষ্টেলের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। কলেজ–ক্যাম্পাসেরপূর্বপ্রান্তের পুকুরের পাড়া ঘেঁষে দন্ডায়মান দ্বিতল বিশিষ্ট বিজ্ঞান ভবন । বিজ্ঞান ভবনে বিজ্ঞানের ল্যাবরেটরীগুলো স্থান্তারিত না হলেওঅর্থনীতি বিভাগ এবং হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের অফিস এবং সেমিনারকক্ষ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে এর কক্ষগুলো। এভবনেরই ঠিক উত্তরপাশেই রয়েছে ত্রিতল বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন। এই ভবনে রয়েছে বাংলা বিভাগ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, কম্পিউটার ল্যাব, ব্যবস্থাপনা বিভাগ, ইংরেজী বিভাগ, ইসলামের ইতিহাস বিভাগ।  আমাদের প্রত্যাশা–অতি অল্প সময়ের মধ্যে সরকারি অনুদানের ভিত্তিতে এই কলেজের বহুতলবিশিষ্ট ভবন, ছাত্র ছাত্রীদের আধুনিক মানের হোষ্টেল, বিভিন্ন বিষয়ে আধুনিক মানের ল্যাবরেটরি, আধুনিক মানের গ্রন্হাগার ইত্যাদি প্রতিষ্ঠিতহবে এবং উত্তরবঙ্গের অন্যতম প্রাচীন এই কলেজ তার পূর্ব ঐতিহ্য তথা সুনাম অনুযায়ী শিক্ষার পথ আরও প্রশস্ত করার ক্ষেত্রে রাখবে অগ্রণী ভূমিকা।
{{সূত্র তালিকা}}