দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
→‎বলকান অঞ্চল: বানান সংশোধন, তথ্য সংশোধন
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্য থাকল এর পরিচালককে জানান।
৩ নং লাইন:
'''দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ''' ({{lang-en|World War&nbsp;II, Second World War, WWII, WW2}}) মানবসভ্যতার ইতিহাসে এযাবৎকাল পর্যন্ত সংঘটিত সর্ববৃহৎ এবং সবচেয়ে ভয়াবহ যুদ্ধ। ১৯৩৯ সাল থেকে ১৯৪৫ সাল, এই ছয় বছর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়সীমা ধরা হলেও ১৯৩৯ সালের আগে [[এশিয়া|এশিয়ায়]] সংগঠিত কয়েকটি সংঘর্ষকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অংশ হিসেবে গণ্য করা হয়। তৎকালীন বিশ্বে সকল [[পরাশক্তি]] এবং বেশিরভাগ রাষ্ট্রই এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে এবং দুইটি বিপরীত [[সামরিক জোট|সামরিক জোটের]] সৃষ্টি হয়; [[দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিত্রশক্তি|মিত্রশক্তি]] আর [[দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অক্ষশক্তি|অক্ষশক্তি]]। এই মহাসমরকে ইতিহাসের সবচেয়ে বিস্তৃত যুদ্ধ বলে ধরা হয়, যাতে ৩০টি দেশের সব মিলিয়ে ১০ কোটিরও বেশি সামরিক সদস্য অংশগ্রহণ করে। অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রসমূহ খুব দ্রুতএকটি সামগ্রিক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে এবং সামরিক ও বেসামরিক সম্পদের মধ্যে কোনরকম পার্থক্য না করে তাদের পূর্ণ অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা প্রয়োগ করা শুরু করে। এছাড়া বেসামরিক জনগণের উপর চালানো নির্বিচার গণহত্যা, [[হলোকস্ট]] (হিটলার কর্তৃক ইহুদীদের উপর চালানো গণহত্যা), পৃথিবীর ইতিহাসে [[হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমাবর্ষণ|একমাত্র পারমাণবিক অস্ত্রের প্রয়োগ]] প্রভৃতি ঘটনায় কুখ্যাত এই যুদ্ধে প্রায় ৫ কোটি থেকে সাড়ে ৮ কোটি মানুষ মৃত্যুবরণ করে। এসব পরিসংখ্যান এটাই প্রমাণ করে যে এটাই পৃথিবীর ইতিহাসে নৃশংসতম যুদ্ধ।<ref name="Sommerville 2008 5">{{Harvnb|Sommerville|2008|p=5}}.</ref>
 
[[পূর্ব এশিয়া|পূর্ব এশিয়ায়]] একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারের লক্ষে [[জাপান]] ইতোমধ্যেই ১৯৩৭ সালে [[প্রজাতন্ত্রী চীন (১৯১২-১৯৪৯)|প্রজাতন্ত্রী চীনে]] [[দ্বিতীয় চীন-জাপান যুদ্ধ|আক্রমণ]] করে।<ref>{{Citeবই bookউদ্ধৃতি|first1=David P|last1=Barrett|last2=Shyu|title=China in the anti-Japanese War, 1937–1945: politics, culture and society. Volume 1 of Studies in modern Chinese history|publisher=Peter Lang|location=New York|year=2001|isbn=0-8204-4556-8|page=6|first2=Lawrence N|unused_data=first2-Lawrence N}}</ref> পরবর্তীতে ১৯৩৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর [[নাৎসি জার্মানি|জার্মানি]] [[পোল্যান্ড আক্রমণ]] করে এবং তার ফলশ্রুতিতে [[ফ্রান্স]] ও [[যুক্তরাজ্য]] জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। দ্বিতীয় ঘটনাটিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা বলে গণ্য করা হয়। ১৯৩৯ থেকে ১৯৪১ পর্যন্ত একনাগাড়ে বেশ কয়েকটি যুদ্ধ অভিযান পরিচালনা আর চুক্তি সম্পাদনার মাধ্যমে জার্মানি [[ইতালি|ইতালির]] সাথে একটি মিত্রজোট গঠন করে এবং ইউরোপ মহাদেশের অধিকাংশ অঞ্চল নিজের দখলে বা নিয়ন্ত্রণে আনতে সমর্থ হয়। [[Molotov–Ribbentrop Pact|মলোটভ- রিবেনট্রপ চুক্তি]] অনুসারে জার্মানি আর [[সোভিয়েত ইউনিয়ন]] তাদের দখলিকৃত [[পোল্যান্ড]], [[ফিনল্যান্ড]] ও [[বাল্টিক রাষ্ট্র|বাল্টিক রাষ্ট্রসমূহ]] নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেয়। এই সময় শুধু যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য [[কমনওয়েলথ অফ নেশনস|ব্রিটিশ কমনওয়েলথভুক্ত]] দেশসমূহ অক্ষশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছিল (যেমন 'উত্তর আফ্ৰিকার যুদ্ধসমূহ’ আর বহুদিন ধরে চলা ‘[[আটলান্টিকের যুদ্ধ]]’)। ১৯৪১ সালের জুন মাসে ইউরোপীয় অক্ষশক্তি [[অপারেশন বার্বারোসা|সোভিয়েত ইউনিয়ন আক্রমণ]] করে যার ফলশ্রুতিতে সমর ইতিহাসের সর্বাপেক্ষা বৃহৎ রণাঙ্গনের অবতারণা ঘটে। এই আক্রমণ অক্ষশক্তির সামরিক বাহিনীর একটা বড় অংশকে মূল যুদ্ধ থেকে আলাদা করে রাখে। ১৯৪১ সালের ডিসেম্বরে জাপান অক্ষশক্তিতে যোগদান করে এবং [[প্রশান্ত মহাসাগর|প্রশান্ত মহাসাগরে]] অবস্থিত [[পার্ল হারবার আক্রমণ|যুক্তরাষ্ট্র]] ও ইউরোপীয় উপনিবেশগুলো আক্রমণ করে অত্যন্ত দ্রুততার সাথে পশ্চিম প্ৰশান্ত মহাসাগরের অধিকাংশ অঞ্চল জয় করতে সক্ষম হয়।
 
[[১৯৪১]] সালের [[ডিসেম্বর ৭|৭ ডিসেম্বর]] [[যুক্তরাষ্ট্র]] মিত্রশক্তির সাথে যোগ দেয়। মূলত জার্মানি এবং [[জাপান]] দুই অক্ষশক্তিই যুক্তরাষ্ট্রে আক্রমণ করার মাধ্যমে একে যুদ্ধে ডেকে আনে। অপরদিকে [[চীন|চীনের]] সাথে জাপানের ছিল পুরাতন শত্রুতা; [[১৯৩০]] সালের মাঝামাঝি সময় থেকেই এই দুই দেশের মধ্যে [[দ্বিতীয় চীন-জাপান যুদ্ধ]] চলছিল। এর ফলে চীনও মিত্রপক্ষে যোগদান করে। [[১৯৪৫]] সালে জার্মানি এবং জাপান উভয় দেশের নিঃশর্ত আত্মসমর্পনের মধ্য দিয়েই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে।
৫২ নং লাইন:
[[চিত্র:Bundesarchiv Bild 183-J19568, Bei Stalingrad, russische Flüchtlinge.jpg|thumb|250px|১৯৪২ সালে [[স্ট্যালিনগ্রাদের যুদ্ধ|স্ট্যালিনগ্রাদের যুদ্ধে]] রুশ শরণার্থীদের অন্যত্র গমনের দৃশ্য।]]
[[চিত্র:News. V.E. Day BAnQ P48S1P12270.jpg|thumb|''Montreal Daily Star'': "Germany Quit", May 7, 1945]]
[[সংঘর্ষ]] এবং [[রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা|রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার]] প্রেক্ষাপটে এ সময়ে অগণিতসংখ্যক লোক [[শরণার্থী]] হয়েছিলেন। যুদ্ধ শেষে একমাত্র [[ইউরোপ|ইউরোপেই]] ৪০ [[মিলিয়ন|মিলিয়নেরও]] অধিক লোক শরণার্থী ছিল।<ref>{{citeসাময়িকী journalউদ্ধৃতি |url=http://www.time.com/time/magazine/article/0,9171,920455-2,00.html |title= Refugees: Save Us! Save Us! |publisher=Time |date=9 July 1979}}</ref> ১৯৪৩ সালে [[দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিত্রশক্তি]] [[জাতিসংঘ ত্রাণ ও পুণর্বাসন প্রশাসন]] (ইউএনআরআরএ) গঠন করে। যার প্রধান কাজ ছিল [[দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অক্ষশক্তি|দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অক্ষশক্তির]] নিয়ন্ত্রণাধীন দেশসহ ইউরোপ ও চীন থেকে আগত শরণার্থীদেরকে সহায়তা করা। তাদের নিয়ন্ত্রণে ও প্রত্যক্ষ সহায়তায় ৭ মিলিয়ন লোক নিজ বাসভূমিতে ফিরে যায়। কিন্তু উদ্বাস্তু এক মিলিয়ন লোক মাতৃভূমিতে ফিরে যেতে অস্বীকৃতি জানায়।
 
বিশ্বযুদ্ধের শেষ মাসে প্রায় পাঁচ মিলিয়ন জার্মান বেসামরিক নাগরিক [[পূর্ব প্রুশিয়া]], [[পোমারানিয়া]] এবং [[সিলেসিয়া]] রাজ্য থেকে [[রেড আর্মি|রেড আর্মির]] প্রচণ্ড আক্রমণের হাত থেকে রক্ষার লক্ষ্যে [[ম্যাকলেনবার্গ]], [[ব্রান্ডেনবার্গ]] এবং [[স্যাক্সনি|স্যাক্সনিতে]] [[উদ্বাস্তু]] হিসেবে [[আশ্রয়]] নেয়।
 
[[পটসড্যাম সম্মেলন|পটসড্যাম সম্মেলনের]] সিদ্ধান্ত মিত্রশক্তি অনুমোদন না করায় [[যুগোস্লাভিয়া]] এবং [[রোমানিয়া|রোমানিয়ায়]] অবস্থানরত হাজার হাজার জাতিগত জার্মানদেরকে [[সোভিয়েত ইউনিয়ন|সোভিয়েত ইউনিয়নে]] দাস শ্রমের জন্য ফেরত পাঠানো হয়। বিশ্বের ইতিহাসে এটিই ছিল সবচেয়ে বেশী শরণার্থী স্থানান্তর প্রক্রিয়া। ১৫ মিলিয়ন জার্মানদের সবাই এতে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। এছাড়াও, দুই মিলিয়নেরও অধিক জার্মান বিশ্বযুদ্ধকালীন সময়ে বিতাড়িত হয়ে প্রাণ হারান।<ref>{{citeবই bookউদ্ধৃতি| title=Statistisches Bundesamt, Die Deutschen Vertreibungsverluste |location=Wiesbaden |year= 1958}}</ref><ref>{{citeবই bookউদ্ধৃতি |title=Forced Resettlement", "Population, Expulsion and Transfer", "Repatriation" |work= Encyclopaedia of Public International Law |publisher=North Holland Publishers |edition=Volumes 1–5 |location=Amsterdam |date= 1993–2003}}</ref><ref>{{citeবই bookউদ্ধৃতি| author=Norman Naimark |title= The Russians in Germany |publisher= Harvard University Press |year= 1995}}</ref><ref>{{citeবই bookউদ্ধৃতি| author=Alfred de Zayas |title=Nemesis at Potsdam |publisher=Routledge |location= London and Boston |year= 1977}}</ref><ref>{{citeবই bookউদ্ধৃতি| author=Alfred de Zayas |title=A Terrible Revenge |publisher=Palgrave/Macmillan |year= 2006}}</ref>
 
আরও দেখুন
৬৮ নং লাইন:
 
== গ্রন্থপঞ্জি ==
* {{Citeবই bookউদ্ধৃতি|last={{aut|Sommerville}}|first={{aut|Donald}}|year=2008|title=The Complete Illustrated History of World War Two: An Authoritative Account of the Deadliest Conflict in Human History with Analysis of Decisive Encounters and Landmark Engagements|location=Leicester|publisher=Lorenz Books|isbn=978-0-7548-1898-4|ref=harv}}
 
== বহিঃসংযোগ ==