হস্তিবর্ষ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
টেমপ্লেটে সংশোধন
আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
আইএসবিএন টেমপ্লেট যোগ
১ নং লাইন:
'''হস্তী বর্ষ বা হস্তিবর্ষ''' ({{lang-ar|The Year of the Elephant, ইয়ার অব দ্য এলিফ্যান্ট}}; {{lang-ar|عام الفيل}}, ʿআমুল ফিল) হল আনুমানিক ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে ইসলামী ইতিহাসে সঙ্ঘটিত একটি ঘটনার সময়কাল। ইসলামী ইতিহাস অনুযায়ী, এটি সে বছরে সঙ্ঘটিত হয়, যে বছরে নবী [[মুহাম্মাদ]] জন্মেছিলেন।<ref name="Hajjah">Hajjah Adil, Amina, "''Prophet Muhammad''", ISCA, Jun 1, 2002, ISBN {{আইএসবিএন|1-930409-11-7}}</ref> নামটির আগমন ঘটেছে মক্কায় সঙ্ঘটিত কথিত<ref>Marr JS, Hubbard E, Cathey, JT (2014): The Year of the Elephant. figshare.
http://dx.doi.org/10.6084/m9.figshare.1186833
Retrieved 22:19, Oct 21, 2014 (GMT)</ref> একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে: যা ছিল আবরাহা নামক ইয়েমেনের তৎকালীন সম্রাটের বিশাল সৈন্যবাহিনী সহ মক্কা আক্রমণ<ref name="DACB">[http://www.dacb.org/stories/ethiopia/_abraha.html "Abraha."] ''Dictionary of African Christian Biographies''. 2007. (last accessed 11 April 2007)</ref><ref name="Muller">[http://www.yemenweb.com/info/_disc/0000002c.htm Walter W. Müller, "Outline of the History of Ancient Southern Arabia," in Werner Daum (ed.), ''Yemen: 3000 Years of Art and Civilisation in Arabia Felix''. 1987.]</ref> এবং ইসলামে বর্ণিত ঈশ্বর প্রেরিত সহস্র আবাবিল নামক পাখির আক্রমণের মাধ্যমে উক্ত সেনাবাহিনীকে<ref >{{ওয়েব উদ্ধৃতি
১৮ নং লাইন:
ইয়েমেনে নিজের ক্ষমতা সম্পূর্ণ প্রতিষ্ঠিত করে আবরাহা একটি বিশেষ উদ্দেশ্যে কাজ করতে শুরু করে। এই যুদ্ধের শুরু থেকেই রোমান সাম্রাজ্য এবং আবিসিনিয়ার খৃস্টান সরকারের সেই উদ্দেশ্যই বিদ্যমান ছিল। আর তা হল একদিকে আরবে খৃস্টধর্ম প্রচার করা আর অন্য দিকে দূর প্রাচ্যের ভারতবর্ষ ও রোমান অধিকৃত অঞ্চলে আরবদের পরিচালিত ব্যবসা সম্পূর্ণ করায়ত্ত করা। এই উদ্দেশ্যে আবরাহা ইয়েমেনের রাজধানী সানায় একটি বিরাট গির্জা নির্মাণ করল। ঐতিহাসিকগণ এর নাম লিখেছেন “আল- কালীস” এই কাজটি সুসম্পন্ন করার পর সে আবিসিনিয়ার সম্রাটকে লিখল যে – “আমি আরবদের হজ্জ অনুষ্ঠান মক্কার কাবা হতে সানার এই গির্জায় স্থানান্তরিত না করে ছাড়বনা।” ইয়েমেনে সে এই কথা প্রকাশ্যভাবে ঘোষণা করল এবং চারদিকে এই কথা প্রচার করতে লাগলো। তার এই কাজের উদ্দেশ্য ছিল আরবদের রাগান্বিত করা, কারণ আরবরা যদি রাগান্বিত হয়ে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করে তাহলে সে এটাকে উপলক্ষ বানিয়ে মক্কায় আক্রমণ চালানোর এবং কাবা শরীফ বিধ্বস্ত করার সুযোগ পাবে। তার পরিকল্পনা সফল হয়। কুরাইশদের কিছু যুবক একত্রিত হয়ে তার এই গির্জায় আগুন ধরিয়ে দেয় অথবা গির্জার ভিতর মলমূত্র ত্যাগ করে। এই ধরণের কোন ঘটনা যদি আদৌ ঘটে থাকে তবে তা অস্বাভাবিক নয়, কারণ তার এই ঘোষণাটি ছিল চরম উত্তেজনা সৃষ্টিকারী। তবে, কোন কোন ঐতিহাসিক বলেছেন, আবরাহা নিজেই নিজেদের লোক দ্বারা এই ধরণের কাণ্ড ঘটায় উত্তেজনা তৈরি করে আরব আক্রমণের বাহানা তৈরি করার জন্য।
 
অতঃপর ৫৭০ বা ৫৭১ খৃস্টাব্দে আবরাহা ৬০ হাজার সৈন্য ও ১৩ টি হাতি নিয়ে মক্কার দিকে যাত্রা করে<ref name="Watt"/><ref name="The Oxford Dictionary of Islam">Esposito (2003). ''The Oxford Dictionary of Islam'', ISBN {{আইএসবিএন|0-19-512558-4}}, Oxford University Press</ref>। পথিমধ্যে বেশ ক’টি আরব গোত্র আবরাহা বাহিনীর গতিরোধ করার চেষ্টা করে কিন্তু ব্যর্থ হয়। এ সেনাদল মক্কার কাছাকাছি পৌঁছে একটি অগ্রবর্তী দল প্রেরণ করে। কুরাইশ গোত্রের প্রধান ছিল তখন নবীজির দাদা আব্দুল মুত্তালিব। এ অগ্রবর্তী দল আব্দুল মুত্তালিবের প্রায় ২ শত উট লুট করে নিয়ে যায়। আবরাহা একজন দূতের মাধ্যমে কুরাইশ প্রধান আব্দুল মুত্তালিবকে ডেকে পাঠায়। আব্দুল মুত্তালিব আবরাহার সাথে দেখা করতে যায়। আব্দুল মুত্তালিব দেখতে অত্যন্ত বলিষ্ঠ ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ছিলেন। আবরাহা তাকে দেখে অত্যন্ত প্রভাবিত হয়। আলাপচারিতা শুরু হবার পর আব্দুল মুত্তালিব তার ২ শত উট ফেরত চায়। আবরাহা বললেন – “আপনাকে দেখে খুব মুগ্ধ হয়েছিলাম। কিন্তু এই কথায় আমার নিকট আপনার আর কোন মর্যাদা রইলনা। কারণ, আপনি আপনার উটগুলো ফেরত চাইলেন কিন্তু আপনার এবং আপনার বাপ দাদার ধর্মের কেন্দ্রস্থল কাবা ঘর রক্ষার ব্যাপারে আপনি কিছুই বললেননা।” জবাবে আব্দুল মুত্তালিব বললেন – “উটের মালিক আমি, তাই আমি উট ফেরত চাইলাম। এই ঘরের মালিক আল্লাহ। আল্লাহই এই ঘর রক্ষা করবেন। আপনার বাহিনীর মোকাবিলা করার সামর্থ্য আমাদের নেই।”
 
আব্দুল মুত্তালিব আবরাহার সেনানিবাস হতে ফিরে কুরাইশদেরকে সাধারণ হত্যাকাণ্ডের হাত থেকে বাঁচার জন্য পর্বতমালায় আশ্রয় গ্রহন করতে বললেন। অতঃপর তিনি আরও কয়েকজন কুরাইশ সরদারকে সাথে নিয়ে কাবা শরীফে উপস্থিত হলেন এবং কাবার দরজার কড়া ধরে এক আল্লাহর নিকট দোয়া করলেন, তিনি যেন রক্ষা করেন। তখনও কাবার ভিতর ৩৬০ টি মূর্তি বিদ্যমান ছিল। কিন্তু এই কঠিন সময়ে তারা কেবল এক আল্লাহর কাছেই সাহায্য প্রার্থনা করেছিল।
২৪ নং লাইন:
পরের দিন আবরাহা মক্কায় প্রবেশের জন্য অগ্রসর হল। কিন্তু তার নিজের হাতি সহসা বসে পরল<ref>{{বই উদ্ধৃতি|last=Kistler |first=John M. ; foreword by Richard Lair|title=War elephants|year=2007|publisher=University of Nebraska Press|location=Lincoln|isbn=0803260040|page=177|url=http://books.google.com/books?id=-5RHK4Ol15QC&lpg=PA177&pg=PA177#v=onepage&q&f=false|chapter=The Year of The Elephant|quote=[T]he lead elephant, named Mahmud, stopped and knelt down, refusing to go further.}}</ref><ref name="Watt">William Montgomery Watt (1974), p.7</ref>। হাতিটিকে উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্ব দিকে চালানোর চেষ্টা করলে উহা দৌড়াতে শুরু করে কিন্তু মক্কার দিকে চালানোর চেষ্টা করলে তা সাথে সাথে বসে পড়ত। এই সময় হঠাৎ ঝাকে ঝাকে পাখি চঞ্চু ও পাঞ্জায় পাথরকুচি নিয়ে উড়ে আসে এবং কাবা আক্রমণকারী আবরাহা বাহিনীর উপর পাথরকুচির বৃষ্টি বর্ষণ করতে থাকে। এই পাথরকুচির আঘাতে আবরাহার বাহিনীর সৈন্যদের শরীরের মাংসপেশী খসে পড়তে শুরু করে এবং তারা চর্বিত ভুষির ন্যায় পরিণত হয়। এইরুপ অবস্থায় তারা নিরুপায় ও পাগলপারা হয়ে ইয়েমেনের দিকে পালাতে শুরু করে। এইভাবে পালিয়ে বাঁচতে গিয়ে তারা নানা জায়গায় পড়ে মরতে লাগলো অথবা মরে পড়তে লাগলো। এই ঘটনা সঙ্ঘটিত হয় মুযদালিফা ও মিনার মাঝখানে মুহাসসির নামক স্থানে।
 
মক্কার কোন কোন লোকের নিকট দীর্ঘদিন এই পাথরকুচির নমুনা সংরক্ষিত ছিল। ইতিহাস থেকে জানা যায়, এই ঘটনা সঙ্ঘটিত হবার ৩/৪ বছরের মধ্যে ইয়েমেন থেকে আবিসিনিয়া সরকারের পতন ঘটে। যে বছর এ ঘটনা সঙ্ঘটিত হয় সেই বছরটিকে আরবরা “হস্তী বর্ষ” নামে অভিহিত করে। মুহাম্মাদের জন্মও এই বছরে সম্পন্ন হয়<ref name="The Oxford Dictionary of Islam">Esposito (2003). ''The Oxford Dictionary of Islam'', ISBN {{আইএসবিএন|0-19-512558-4}}, Oxford University Press</ref>। এ ঘটনার পর কুরাইশরা প্রায় ১০ বছর এক আল্লাহ ব্যতীত আর কারও ইবাদত করেনি।
 
== তথ্যসূত্র ==