পীর গোরাচাঁদ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সংশোধন
সংশোধন
৫ নং লাইন:
পীর গোরাচাঁদের আসল নাম হল পীর ''হজরত শাহ সৈয়দ আব্বাস আলী রাজী''। তাঁর পিতার নাম হজরত করিম উল্লাহ এবং মাতার নাম মায়মুনা সিদ্দিকা। আনুমানিক ১২৬৫ খ্রিস্টাব্দে আরবের [[মক্কা]] নগরে জমজম মহল্লায় বিখ্যাত কোরায়েশ বংশে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। পীর হজরত [[শাহজালাল]] এঅমনির কাছে তরীকা সুফীমতে দীক্ষাগ্রহণের পর গুরুর নির্দেশে ভারতবর্ষে ধর্মপ্রচারে আসেন। <ref name=Ghosh/><ref name=":0">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|url=http://www.anandabazar.com/district/2.917/local-people-want-developed-museum-1.147451|title=উন্নতমানের সংগ্রহশালা চান স্থানীয় মানুষ|last=নির্মল বসু|first=|date=১৯ মে, ২০১৫|website=|publisher=আনন্দবাজার পত্রিকা|access-date=২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭}}</ref><ref name=M/>
 
গোরাচাঁদ (সৈয়দ আব্বাস আলী) ছোটবেলা থেকে খুবই ধর্মপ্রাণ মানুষ ছিলেন। আধ্যাত্মিক জীবনের উন্নতি সাধনের জন্য অতি অল্প বয়সেই তিনি গৃহত্যাগ করেন। এরপর হজরত [[শাহ জালাল|শাহ জালালের]] শিষ্যত্ব গ্রহণ করে পীরভ্রাতাদের সঙ্গে ভারতে [[ইসলাম ধর্ম]] প্রচারে আসতে মনস্থ করেন। পিতা করিমউল্লাহ অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাকে সুদূর ভারতে ধর্মপ্রচারে যেতে দিতে রাজি হলেনহন; সঙ্গে নিজের পালকপুত্র মাহতাবউদ্দীনকে তার দেখাশুনার জন্য প্রেরণ করলেন।করেন। <ref name=aa>Dr. Gaurishankar de & Prof. Subhradip de, Prasanga: Pratna-Prantar Chandraketugarh, First Edition: 2013, ISBN 978-93-82435-00-6</ref>
 
==ভারতে আগমন==
১৬ নং লাইন:
==স্থানীয় রাজাদের সাথে বিরোধ ও মৃত্যু==
===গোরাচাঁদ ও চন্দ্ৰকেতু===
লোককথা অনুসারে, তিনি দেউলিয়ার[[দেউলিয়া]]র ('দেবালয়') হিন্দুরাজা চন্দ্রকেতুকে (যার নামে সম্পৰ্কীত [[চন্দ্ৰকেতুগড়]] প্রত্নস্থলটি আবিষ্কৃত হয়েছে) ইসলামধর্ম গ্রহণের অনুরোধ করলে রাজা তা প্রত্যাখ্যান করেন। গোরাচাঁদ নিজের অলৌকিক ক্ষমতার পরিচয় দিতে রাজার লোহার কলাকে সত্যিকারের পাকা কলায় রূপান্তরিত করেন এবং রাজপ্রাসাদের চারিদিকে লোহার বেড়ায় চাঁপাফুল ফুটিয়ে তোলেন (যা থেকে পরবর্তীকালে ঐ স্থানের নাম হয় '[[বেড়াচাঁপা]]')। রাজা তাতেও নতি স্বীকার করলেন না। শেষে গোরাচাঁদের কথায় গৌড় বাদশাহ চন্দ্রকেতুকে ধর্মান্তরিত হওয়ার আদেশ দিলে বিরোধ চরমে ওঠে এবং যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে পড়ে।
 
যুদ্ধের আগে রাজা তাঁর রাণী ও নগরবাসীদের বলে যান তিনি যুদ্ধে জিতলে রাজধানীর দিকে সাদা পায়রা উড়ে আসবে কিন্তু পরাজিত হলে উড়ে আসবে কালো পায়রা। গৌড়ের সুলতানের প্রেরিত পাঠান শাসক পীর গোরাচাঁদের পক্ষ নিয়ে রাজা চন্দ্রকেতুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করেন। যুদ্ধটি হয়েছিল চাঁপাতলার রণখেলার প্রান্তরে যেখানে রাজা চন্দ্রকেতুর দুই প্রিয়পাত্র হামা ও দামা যুদ্ধানুশীলন করতেন। যুদ্ধে রাজা চন্দ্রকেতু জয়ী হবার সমীপে চলে এসেছিলেন; এমন সময় পীরের অলৌকিক ক্ষমতার আশ্রয় নিয়ে রাজধানীর দিকে উড়িয়ে দেওয়া হয় কালো পায়রা। সেটা দেখে নগরবাসীগণ বিমর্ষ হয়ে পড়েন এবং রানী পদ্মদহে ডুবে আত্মহত্যা করেন। এই খবর রাজার কাছে পৌঁছাতেই রাজা মনোবল হারিয়ে যুদ্ধে পরাজয় বরণ করেন। পরাজিত রাজা চন্দ্রকেতু রাজ্যে ফিরে পদ্মদহে প্রাণ বিসর্জন দেন।
২৩ নং লাইন:
 
===অকানন্দ-বকানন্দের হাতে মৃত্যু===
অবশেষে, সুন্দরবনের হাতিয়াগড় পরগনার শিবভক্ত[[শিব]]ভক্ত অনার্য রাজা মহিদানন্দের দুই পুত্র অকানন্দ (মতান্তরে অক্ষয়ানন্দ<ref name=M/>) ও বকানন্দ ([[বিনয় ঘোষ|বিনয় ঘোষের]] মতে, এরা ছিলেন স্থানীয় চাষী-ধীবরদের সর্দার<ref name=Ghosh/>) গোরাচাঁদের ধর্মান্তরকরণ অভিযান প্রতিরোধ করেন;করেন। প্রতিরোধযুদ্ধে পীরসাহেব ভীষণরকম আহত হন।হন; প্রতিপক্ষের বাণাঘাতে তাঁর অর্ধেক গ্রীবা কাটা যায়। তবুও, শিরস্ত্রাণের কাপড় দিয়ে আহত স্থানস্কন্ধ বেঁধে তিনি লড়াই চালিয়ে গিয়েছিলেন।
স্থানীয় ফকিরদের লোকায়ত গানে এই লড়াইয়ের বিবরণ পাওয়া যায়:
<poem>
৩৮ নং লাইন:
</poem>
 
অবশেষে, ১৩৪৫ খ্রীষ্টাব্দের ১২ ফাল্গুন প্রায় আশি বছর বয়সে সাবেক বালাণ্ডা পরগনায় ভার্গবপুরের জঙ্গলে মুমূর্ষু অবস্থায় এসে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। শোনা যায়, কালু ঘোষ নামে এক ব্যক্তি তাঁকে [[বিদ্যাধরী নদী]]র তীরে সমাধিস্থ করেন। উল্লেখ্য, গোরাচাঁদের হাড় এখানে সমাধিস্থ করা হয়েছিল বলেই এই অঞ্চলের নাম হয় 'হাড়োয়া'।<ref name=Ghosh/><ref name=M/>
 
==পীর গোরাচাঁদের দরগাহ ও নজরগাহ==
৬৫ নং লাইন:
* দেগঙ্গা থানার অন্তর্গত গাঙ্গুলিয়া, নারায়ণপুর, হাসিয়া, গাংধুলোট, সাতহাটিয়া, গোসাইপুর, এয়াজপুর, সুহাই, ভাসলিয়া প্রভৃতি স্থানের নজরগাহ।<ref name=Ghosh/>
 
এছাড়া, পীর গোরাচাঁদের দরগাহ আছে খাস [[কলকাতা]] শহরেও; [[পার্কসার্কাসপার্ক সার্কাস]] অঞ্চলের ''গোরাচাঁদ দরগা রোড-টি'' এখন ''দরগা রোড'' বলেই পরিচিত। কাছাকাছি অঞ্চলেই রয়েছে ''গোরাচাঁদ রোড'' এবং ''গোরাচাঁদ লেন''।
 
==আরও দেখুন==