তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
টেমপ্লেটে সংশোধন
সম্পাদনা সারাংশ নেই
ট্যাগ: দৃশ্যমান সম্পাদনা মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
১৭ নং লাইন:
'''তত্ত্ববোধিনী''' পত্রিকা ছিল [[ব্রাহ্মসমাজ|ব্রাহ্মসমাজের]] [[তত্ত্ববোধিনী সভা|তত্ত্ববোধিনী সভার]] মুখপত্র।<ref>বাংলা ভাষা ও সাহিত্য, ড. সৌমিত্র শেখর, আইএসবিএন:৯৮৪-৩২-৩২১৭-৮, পৃষ্ঠা:৫১৬</ref> [[ব্রাহ্মধর্ম|ব্রাহ্মধর্মের]] প্রচার এবং তত্ত্ববোধিনী সভার সভ্যদের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষার উদ্দেশ্যে [[১৮৪৩]] সালের [[১৬ আগস্ট]] (১ [[ভাদ্র]], ১৭৬৫ [[শকাব্দ|শক]]) [[অক্ষয়কুমার দত্ত|অক্ষয়কুমার দত্তের]] সম্পাদনায় তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা প্রথম প্রকাশিত হয়। এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন [[দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর]] । উনিশ শতকের শ্রেষ্ঠ গদ্যলেখক [[ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর]], [[রাজনারায়ণ বসু]], [[দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর]] প্রমুখ এ পত্রিকায় নিয়মিত লিখতেন এবং তাঁদের লেখার মাধ্যমে তখন বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে এক নবযুগের সূচনা হয়। এর লেখক ও পৃষ্ঠপোষক সকলেই ছিলেন সংস্কারপন্থী। বেদান্ত-প্রতিপাদ্য ব্রহ্মবিদ্যার প্রচার পত্রিকার মুখ্য উদ্দেশ্য হলেও জ্ঞানবিজ্ঞান, ইতিহাস, সাহিত্য, ধর্ম, রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজতত্ত্ব এবং দর্শনবিষয়ক মূল্যবান রচনাও এতে প্রকাশিত হতো। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাঙালিদের অংশগ্রহণ এবং রাজনৈতিক স্বাধীনতালাভের উপযুক্ত করে নিজেদের গঠন করার আহ্বান জানিয়ে এ পত্রিকায় লেখা প্রকাশিত হতো। এভাবে তখনকার বাংলার সংস্কৃতি ও সভ্যতার উন্নতিতে এ পত্রিকা বিশেষ অবদান রাখে।
 
[[ব্রাহ্মধর্ম]] আন্দোলনের বার্তাবহ হিসেবে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা তখন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পূর্ববঙ্গে ব্রাহ্মধর্মের প্রচার মূলত তত্ত্ববোধিনী পত্রিকার মাধ্যমেই হয়েছে। [[ঢাকারঢাকা]]<nowiki/>য় [[ব্রাহ্মসমাজ]] গঠনের প্রধান উদ্যোক্তা [[ব্রজসুন্দর মিত্র]] এই পত্রিকা পড়েই ব্রাহ্মসমাজের প্রতি আকৃষ্ট হন এবং ঢাকায়ঢাকাতে ব্রাহ্মসমাজ গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এভাবে তখনকার দিনে অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং কর্মীর স্বল্পতার কারণে ব্রাহ্মসমাজের কাজে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা বিশেষ সহযোগীর ভূমিকা পালন করে।
 
দেবেন্দ্রনাথের ইচ্ছে ছিল পত্রিকাকে বিশুদ্ধ ধর্মচর্চার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা, কিন্তু অক্ষয়কুমার চাইতেন বিজ্ঞান ও জড়বাদী চিন্তার সঙ্গে যুক্ত হতে এবং শেষ পর্যন্ত তা-ই হয়েছে। অক্ষয়কুমারের সম্পাদনায় তত্ত্ববোধিনীতে তাঁর নিজের এবং অন্যান্যদের যেসব যুক্তি ও বিজ্ঞাননির্ভর লেখা প্রকাশিত হতো, তার ফলে বাংলা সংবাদপত্রের মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছিল। পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত যেসকল বুদ্ধিজীবী তখন নিম্নমানের বলে বাংলা পত্রিকা পড়তেন না, বিষয়বস্তুর গাম্ভীর্য এবং প্রকাশনার মানের কারণে তত্ত্ববোধিনী তখন তাঁদেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করে। তত্ত্ববোধিনীতে প্রকাশিত প্রবন্ধগুলি তখন নির্বাচিত হতো পেপার কমিটির মনোনয়নের মাধ্যমে। এই কমিটির সদস্যরা ছিলেন [[ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর]], [[রাজেন্দ্রলাল মিত্র]], [[দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর]], [[রাজনারায়ণ বসু]], [[আনন্দকৃষ্ণ বসু]], [[শ্রীধর ন্যায়রত্ন]], [[আনন্দচন্দ্র বেদান্তবাগীশ]], [[প্রসন্নকুমার সর্বাধিকারী]], [[রাধাপ্রসাদ রায়]], [[শ্যামাচরণ মুখোপাধ্যায়]], [[অক্ষয়কুমার দত্ত]] প্রমুখ। কমিটির অন্যতম সদস্য [[রামমোহন রায়|রামমোহনের]] পুত্র [[রাধাপ্রসাদ রায়]] এই পত্রিকাকে একটি মুদ্রণযন্ত্র দান করেছিলেন। [[১৮৫৯]] সালে তত্ত্ববোধিনী সভা উঠে গেলে উক্ত পেপার কমিটিও রহিত হয়ে যায় এবং পত্রিকা পরিচালনার ভার পড়ে কলকাতার ব্রাহ্মসমাজের ওপর।