রবীন্দ্র কাছারি বাড়ি: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Ashiq Shawon (আলোচনা | অবদান)
103.41.244.85-এর সম্পাদিত সংস্করণ হতে AftabBot-এর সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণে ফেরত
১২৩ নং লাইন:
 
== ইতিহাস ==
আমার প্রতি সেখানকার অধিবাসীদের শ্রদ্ধা এখনো যদি অক্ষুন্ন থাকে তবে আমি পুরস্কার বলে গণ্য করব’’ (শাহজাদপুরে রবীন্দ্রনাথ-মোহাম্মদ আনসারুজ্জামান)। শাহজাদপুরের প্রতি রবীন্দ্রনাথের এই ভালবাসা একে দিয়েছে মর্যাদা ও গৌরবের এক ভিন্ন মাত্রা। শাহজাদপুরও রবীন্দ্রনাথকে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সাথে হৃদয়ে লালন করছে। প্রতিদিন দেশ বিদেশ থেকে বহু দর্শনার্থী কবির স্মৃতিধন্য এই স্থানটি শাহজাদপুরের কুঠিবাড়ি দর্শনে আসেন। এছাড়া প্রতি বছর সরকারি উদ্যোগে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে তিন দিন ব্যাপী ব্যাপক অনুষ্ঠানমালার মাধ্যমে যথাযোগ্য মর্যাদায় ও উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী পালিত হয়। এই জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠানে হাজার হাজার দর্শনার্থী  মানুষের ঢল নামে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর সরকার এই কুঠিবাড়িটির গুরুত্ব অনুধাবন করে । কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিভিন্ন শিল্পকর্ম সংগ্রহপূর্বক একে একটি জাদুঘর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয় । এর আগে রবীন্দ্রনাথের ঠাকুরদা প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর ১৮০৭ সালে এ অঞ্চলের জমিদারি পান।<ref>[http://bn.banglapedia.org/index.php?title=পতিসর বাংলাপিডিয়া পতিসর নামক নিবন্ধ]</ref> তিনি নিজে এখানে জমিদারি করতেন কিন্তু পরবর্তীতে ১৮৮৯ সালের দিকে কবি এখানে জমিদার হয়ে আসেন। এবং এখানে তিনি ১৯০১ সাল পর্যন্ত জমিদারী পরিচালনা করেছেন । ১৮৪০ সালে শাহজাদপুরের জমিদারি নিলামে উঠলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতামহ প্রিন্স দারকানাথ ঠাকুর ১৩ টাকা ১০ আনায় এই জমিদারি কিনে নিয়েছিলেন। এর আগে কাছারি বাড়ির মালিক ছিল নীলকররা । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এখানে বসেই রচনা করেন তার বিখ্যাত গ্রন্থ সোনার তরী, বৈষ্ণব কবিতা, দুইপাখি, আকাশের চাঁদ, পুরস্কার, হৃদয়, যমুনা, চিত্রা, চৈতালী, ইত্যাদি, গীতাঞ্জলী কাব্যের কাজও শুরু করেন । যাতে পরবর্তীতে তিনি নোবেল পুরস্কার পান । পোস্ট মাস্টার গল্পের 'রতন' চরিত্রও শাহজাদপুরে বসেই লেখা। চিত্রা, শীতে ও বসন্তে, নগর সঙ্গীতে এবং চৈত্রালীর ২৮টি কবিতা, ছিন্ন পত্রাবলীর ৩৮টি, পঞ্চভূতের অংশবিশেষ এবং বিসর্জনের নাটক তিনি শাহজাদপুরে বসেই রচনা করেছেন। রবীন্দ্রনাথ ১৮৯০ থেকে ১৮৯৬ সাল পর্যন্ত মোট ৭ বছর এখানে জমিদারির কাজে শাহজাদপুরে অবস্থান করেছেন ।<ref>[http://shahjadpur.sirajganj.gov.bd/en/node/87042/রবীন্দ্র-কাছারি-বাড়ি জেলার সরকারি ওয়েব পোর্টাল]</ref> ১৯৫৮ সাল থেকে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের ব্যবস্হাপনায় শিলাইদহ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়িটি গৌরবময় স্মৃতিরূপে সংরক্ষিত করা হয় । এখন সকল দর্শনার্থীদের জন্য এটি উন্মুক্ত ।
বাংলা সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র রবীন্দ্রনাথ। যে কয়েকজন কবি বাংলাসাহিত্যকে আর বাঙ্গালি জাতিকে বিশ্ব দরবারে স্থান করে দিয়েছেন তাদের মধ্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অন্যতম। সাহিত্য, সংস্কৃতির ক্ষেত্রে এমন কোনো শাখা নেই যেখানে রবীন্দনাথ ঠাকুরের অবদান নেই। বাংলা সাহিত্যের এই হ্মনজন্মা মহান সাধক তার জীবনের কিছু গুরুর্তপুর্ন সময় কাটিয়েছেন সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুরে।
 
এ এজন্য শাহজাদপুর বাসী গৌরববোধ করে। ১৮৪০ সালে নাটোরের রাণী ভবানীর জমিদারীর অংশ শাহজাদপুরের জমিদারী নিলামে উঠলে কবির দাদা প্রিন্স দারকাননাথ ঠাকুর সেই আমলের ১৩ টাকা ১০ আনায় কিনে নেন। রবীন্দ্রনাথ ১৮৯০ সাল থেকে ১৮৯৬ সাল পর্যন্ত মোট ৭ বছর জমিদারী দেখতে শাহজাদপুরে আসতেন এবং অবস্থান করতেন।
 
কবির এই শাহজাদপুরে আসা -যাওয়া শুধু জমিদারী তত্তাবধানের বস্তুনিষ্ঠ প্রয়োজনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে নি। বরং এই জমিদারীরর প্রয়োজনকে ছাপিয়ে প্রাধান্য পেয়েছে সাহিত্য সৃস্টির অনুপ্রেরনা ও সৃজনশীলতা। শাহজাদপুরে রয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর অনেক স্মৃতি। জমিদারী এলাকার সমবায়ী দুদ্ধ খামার প্রতিষ্ঠা করে যুগান্তকারী অবদান রাখেন রবীন্দ্রনাথ, যার সুফল শাহজাদপুরের মানুষ আজও ভোগ করছে।
 
এখানে তিনি তাঁর অনেক অসাধারণ কালজয়ী সাহিত্য রচনা করেছেন। এর মধ্যে ‘সোনার তরী’ কাব্যের ‘ভরা ভাদরে’, ‘দুইপাখি’ ‘আকাশের চাঁদ’, ‘হৃদয় যমুনা’, ‘প্রত্যাখ্যান’, ‘বৈষ্ণব কবিতা’, ‘পুরস্কার’ ইত্যাদি অসাধারণ কবিতা রচনা করেছেন। ‘চৈতালী’ কাব্যের ‘নদীযাত্রা’, ‘শুশ্রূষা’,‘ইছামতি নদী’, ‘বিদায়’, ‘আশিস-গ্রহণ’ ইত্যাদি কবিতা এবং ‘কল্পনা’ কাব্যের ‘যাচনা’, , ‘বিদায়’, ‘নরবিরহ’, ‘মানস-প্রতিমা’, ‘লজ্জিতা’, ‘সংকোচ’, ইত্যাদি বিখ্যাত গান রচনা করেছেন।
 
তাঁর শাহজাদপুরে রচিত ছোটগল্পের মধ্যে ‘পোষ্টমাস্টার’, ‘ছুটি’, ‘সমাপ্তি’, ‘অতিথি’ ইত্যাদি বিখ্যাত। আর প্রবন্ধের মধ্যে ‘ছেলে ভুলানো ছড়া’, ‘পঞ্চভূত’, এর অংশবিশেষ এবং ‘ছিন্নপত্র’ ও ছিন্নপত্রাবলীর আটত্রিশটি পত্র রচনা করেছেন। এছাড়া তার ‘বিসর্জন’ নাটকও এখানে রচিত। সবচেয়ে বড় কথা, তার পরবর্তী সাহিত্য সৃষ্টির ক্ষেত্রে শাহজাদপুরের প্রভাব বিশেষভাবে বিদ্যমান।
 
ঠাকুর পরিবারে জমিদারি ভাগাভাগির ফলে শাহজাদপুরের জমিদারি চলে যায় রবীন্দ্রনাথের অন্য শরীকদের হাতে। তাই ১৮৯৬ সালে তিনি শেষ বারের মতো শাহজাদপুর থেকে চলে যান। এর পরে তিনি আর শাহজাদপুরে আসেননি। শাহজাদপুর ছিল রবীন্দ্রনাথের অত্যান্ত প্রিয় এবং ভালোবাসার একটি স্থান। তাঁর ভালোবাসার কথা তিনি বিভিন্ন লেখায় বিশেষ করে ‘ছিন্নপত্র’ ও ‘ছিন্নপত্রাবলী’তে গভীর আবেগ এবং আন্তরিকতার সাথে উল্লেখ করেছেন।
 
১৮৯৪ সালের ৫ সেপ্টেম্বর শাহজাদপুর থেকে লেখা একটি চিঠিতে তিনি স্পষ্টই বলেছেন, ‘‘ এখানে (শাহজাদপুরে) যেমন আমার মনে লেখার ভাব ও ইচ্ছা আসে এমন কোথাও না।’’ (ছিন্নপত্র- পত্র সংখ্যা-১১৯) এছাড়াও অন্যান্য লেখাতেও শাহজাদপুর সম্পর্কে তাঁর আবেগময় ভালোবাসার কথা ব্যক্ত করেছেন। তাঁর মৃত্যুর এক বছর আগে ১৯৪০ সালে শাহজাদপুরের তৎকালীন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হরিদাস বসাকের চিঠির জবাবে তিনি লিখেছেন,‘শাহজাদপুরের সাথে আমার বাহিরের যোগসূত্র যদিও বিচ্ছিন্ন তবুও অন্তরের যোগ নিবিড়ভাবে আমার স্মৃতির সঙ্গে জড়িত।
 
আমার প্রতি সেখানকার অধিবাসীদের শ্রদ্ধা এখনো যদি অক্ষুন্ন থাকে তবে আমি পুরস্কার বলে গণ্য করব’’ (শাহজাদপুরে রবীন্দ্রনাথ-মোহাম্মদ আনসারুজ্জামান)। শাহজাদপুরের প্রতি রবীন্দ্রনাথের এই ভালবাসা একে দিয়েছে মর্যাদা ও গৌরবের এক ভিন্ন মাত্রা। শাহজাদপুরও রবীন্দ্রনাথকে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সাথে হৃদয়ে লালন করছে। প্রতিদিন দেশ বিদেশ থেকে বহু দর্শনার্থী কবির স্মৃতিধন্য এই স্থানটি শাহজাদপুরের কুঠিবাড়ি দর্শনে আসেন। এছাড়া প্রতি বছর সরকারি উদ্যোগে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে তিন দিন ব্যাপী ব্যাপক অনুষ্ঠানমালার মাধ্যমে যথাযোগ্য মর্যাদায় ও উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী পালিত হয়। এই জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠানে হাজার হাজার দর্শনার্থী  মানুষের ঢল নামে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর সরকার এই কুঠিবাড়িটির গুরুত্ব অনুধাবন করে । কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিভিন্ন শিল্পকর্ম সংগ্রহপূর্বক একে একটি জাদুঘর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয় । এর আগে রবীন্দ্রনাথের ঠাকুরদা প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর ১৮০৭ সালে এ অঞ্চলের জমিদারি পান।<ref>[http://bn.banglapedia.org/index.php?title=পতিসর বাংলাপিডিয়া পতিসর নামক নিবন্ধ]</ref> তিনি নিজে এখানে জমিদারি করতেন কিন্তু পরবর্তীতে ১৮৮৯ সালের দিকে কবি এখানে জমিদার হয়ে আসেন। এবং এখানে তিনি ১৯০১ সাল পর্যন্ত জমিদারী পরিচালনা করেছেন । ১৮৪০ সালে শাহজাদপুরের জমিদারি নিলামে উঠলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতামহ প্রিন্স দারকানাথ ঠাকুর ১৩ টাকা ১০ আনায় এই জমিদারি কিনে নিয়েছিলেন। এর আগে কাছারি বাড়ির মালিক ছিল নীলকররা । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এখানে বসেই রচনা করেন তার বিখ্যাত গ্রন্থ সোনার তরী, বৈষ্ণব কবিতা, দুইপাখি, আকাশের চাঁদ, পুরস্কার, হৃদয়, যমুনা, চিত্রা, চৈতালী, ইত্যাদি, গীতাঞ্জলী কাব্যের কাজও শুরু করেন । যাতে পরবর্তীতে তিনি নোবেল পুরস্কার পান । পোস্ট মাস্টার গল্পের 'রতন' চরিত্রও শাহজাদপুরে বসেই লেখা। চিত্রা, শীতে ও বসন্তে, নগর সঙ্গীতে এবং চৈত্রালীর ২৮টি কবিতা, ছিন্ন পত্রাবলীর ৩৮টি, পঞ্চভূতের অংশবিশেষ এবং বিসর্জনের নাটক তিনি শাহজাদপুরে বসেই রচনা করেছেন। রবীন্দ্রনাথ ১৮৯০ থেকে ১৮৯৬ সাল পর্যন্ত মোট ৭ বছর এখানে জমিদারির কাজে শাহজাদপুরে অবস্থান করেছেন ।<ref>[http://shahjadpur.sirajganj.gov.bd/en/node/87042/রবীন্দ্র-কাছারি-বাড়ি জেলার সরকারি ওয়েব পোর্টাল]</ref> ১৯৫৮ সাল থেকে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের ব্যবস্হাপনায় শিলাইদহ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়িটি গৌরবময় স্মৃতিরূপে সংরক্ষিত করা হয় । এখন সকল দর্শনার্থীদের জন্য এটি উন্মুক্ত ।
 
== বিবরণ ==