বক্সারের যুদ্ধ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
বানান ঠিক করা হয়েছে, ব্যাকরণ ঠিক করা হয়েছে
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল অ্যাপ সম্পাদনা
2405:204:4009:E9CA:0:0:382:68AD-এর সম্পাদিত সংস্করণ হতে Himel Rahmon-এর সম্পাদিত সর্বশেষ সংস...
৯ নং লাইন:
|combatant1=[[বঙ্গ|বাংলা]] <br> [[অযোধ্যা]] <br> [[মুঘল সাম্রাজ্য]]
|combatant2=[[চিত্র:Flag of the British East India Company (1707).svg|25px]] [[ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি]]
|commander1=[[মিরমীর কাশিম]] <br> [[সুজাউদ্দৌলা]] <br> [[দ্বিতীয় শাহ আলম]]
|commander2=[[চিত্র:Flag of the British East India Company (1707).svg|25px]] [[হেক্টর মুনরো]]
|strength1= ৪০,০০০ পদাতিক সৈন্য
১৬ নং লাইন:
|casualties2= কম}}
 
'''বক্সারের যুদ্ধ''' [[ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি|ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির]] সাথে সম্মিলিত ভাবে [[মিরমীর কাশিম]]-এর মধ্যে সংঘটিত হয়েছিল। [[ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি|ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির]] জয়ের ফলে ভারতবর্ষে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠার পথ সূচিত হয় । ১৭৬০ সালে ক্লাইভ বিলেত চলে যান। ক্লাইভের মতো পৃষ্ঠপোষক ও অভিভাবক হারিয়ে মিরজাফরমীরজাফর অসহায় হয়ে পড়েন। তা ছাড়া খড়কুটো ধরে বাঁচার লক্ষ্যে ওলন্দাজদের সাথে ষড়যন্ত্র করার পর তিনি ইংরেজদের বিশ্বাস ও সমর্থন হারিয়েছিলেন। অধিকন্তু ইংরেজদের পুনঃপুন টাকার দাবি মেটাতে পারছিলেন না। সে জন্য ইংরেজ কর্তৃপক্ষ হলওয়েল ও ভেনসিটার্ট মিরজাফরকেমীরজাফরকে সরিয়ে তার জামাতা মিরমীর কাশিমকেকাসিমকে মসনদে বসানোর পরিকল্পনা করে। তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৭৬০ সালের অক্টোবরে মিরমীর কাশিমকেকাসিমকে মসনদে বসায়। নবাবীর বিনিময়ে মিরমীর কাশিমকাসিম ইংরেজ প্রধানদের বহু অর্থ উপঢৌকন দেন। তা ছাড়া বর্ধমান, মেদিনীপুরমেদেনীপুর ও চট্টগ্রাম জেলা কোম্পানিকে দান করে দিতে বাধ্য হন।
 
মিরমীর কাশিমকাসিম অনেকটা স্বাধীনচেতা ছিলেন। ইংরেজ আশ্রিত অবস্থান থেকে নবাবের শাসনক্ষমতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চেষ্টা করেছিলেন। নবাব এ সময় কয়েকজন হিন্দু কর্মচারী, জমিদার ও ব্যবসায়ীর অবাধ্যতায় বিরক্ত হয়ে ওঠেন। এ জন্য আজিমাবাদের নায়েম নাযিম রামনারায়ণ, গুপ্ত পুলিশ বিভাগের কর্মকর্তা রাজা মুরলী ধর এবং রাজবল্লভ, জগৎশেঠ ও অন্যদের গ্রেফতার করেন। ইংরেজদের সাথে ষড়যন্ত্র করার অপরাধে রামনারায়ণ, রাজবল্লভ, উমেদরায়, জগৎশেঠ এবং আরো কয়েকজনের প্রাণদণ্ড হয়। ইংরেজদের প্রভাব থেকে অব্যাহতি পাওয়ার জন্য মিরমীর কাশিমকাসিম তার রাজধানী মুর্শিদাবাদ থেকে [[মুঙ্গের]] এ স্থানান্তর করেন। বিলম্বিত বোধোদয়ের কারণে তিনি ইংরেজদের বিনাশুল্কে বে-আইনি ব্যবসায় নিষিদ্ধ করে আদেশ জারি করেন। কোম্পানির কর্মকর্তারা এর বিরোধিতা করায় তিনি সব বণিকের পণ্যদ্রব্যের ওপর হতে শুল্ক রহিত করে দেন। এই ব্যবস্থার ফলে বাণিজ্যে ইংরেজদের একচেটিয়া ও বিশেষ সুবিধা নষ্ট হয়। কারণ এর ফলে তাদের অন্য বণিকদের সাথে সমপর্যায়ে ব্যবসায়ে প্রতিযোগিতা করতে হতো। এ সব কারণে মীর কাসিমের সাথে ইংরেজদের স্বার্থের সংঘাত দেখা দেয়। ১৭৬৩ সালে ইংরেজদের সাথে তার সংঘর্ষ বেধে যায়। কাটোয়া, মুর্শিদাবাদ, গিরিয়া, সুতি, উদয়নালা ও মুঙ্গেরের যুদ্ধে পরাজিত হয়ে মীর কাসিম ক্ষমতাহারা অবস্থায় অযোধ্যায় আশ্রয় গ্রহণ করেন। ১৭৬৩ সালে কোম্পানির কর্মকর্তারা দ্বিতীয়বার ক্লাইভের গর্দভ খ্যাত মিরজাফরকেমীরজাফরকে বাংলার সিংহাসনে বসায়।
 
মিরমীর কাশিমকাসিম অযোধ্যার নবাব সুজা-উদ-দৌলাসুজাউদ্দৌলামুঘলমোগল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের সাথে মৈত্রীর সম্পর্ক গড়ে তোলেন। ১৭৬৪ সালের ২২ অক্টোবর তাদের সম্মিলিত সৈন্যবাহিনীর সাথে [[বক্সার]] নামক স্থানে ইংরেজ সৈন্যদের ঘোরতর যুদ্ধ হয়। দুর্ভাগ্য, বক্সারের যুদ্ধে ইংরেজেরা জয়লাভ করে। মিরমীর কাশিমকাসিম কয়েক বছর অজ্ঞাত অবস্থায় ঘুরে বেড়ান। ১৭৭৭ সালে [[দিল্লি]]র কাছে এক জায়গায় তার মৃত্যু হয়। বক্সার যুদ্ধের পর ইংরেজেরা অযোধ্যাও দখল করে নেয়। সুজা-উদ-দৌলাসুজাউদ্দীন [[রোহিলাখণ্ড]]এ আশ্রয় নেন। এমন প্রেক্ষাপটে সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলম ইংরেজদের সাথে সন্ধি করতে বাধ্য হন।
 
‘স্বাধীনতার অস্তমিত সূর্য’খ্যাত মিরমীর কাশিমকাসিম বাঁক ঘুরে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন। তত দিনে ইংরেজেরা অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তি অর্জন করে নেয়। অন্য দিকে দুর্বল সামরিক অবস্থান ও অর্থনৈতিক অসচ্ছলতাই মিরমীর কাশিমেরকাসিমের পরাজয়ের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ইংরেজদের টাকার দাবি মেটাতে মিরমীর জাফর রাজকোষ শূন্য করে ফেলেছিলেন। বহু টাকা ঋণগ্রস্ত ছিলেন। মিরমীর কাশিমকেকাসিমকে এই ঋণ পরিশোধ করতে হয়। তা ছাড়া তিনি মসনদে বসার জন্য কোম্পানির কর্মকর্তাদের দুই লাখ পাউন্ড দিতে বাধ্য হয়েছিলেন। তাতে রাজকোষ আরো শূন্য হয়ে পড়েছিল। এ জন্যই তার অর্থাভাব ছিল বেশুমার। অর্থাভাবের কারণে তিনি ভালোভাবে সৈন্যবাহিনী গঠন করতে পারেননি। দ্বিতীয়ত, নবাবের কয়েকজন হিন্দু কর্মচারী ও জমিদার বিশ্বস্ত ছিল না। তারা ইংরেজদের সাথে ষড়যন্ত্রে মেতে থাকত। জমিদারেরা নিয়মিত খাজনা দিত না। তা ছাড়া বক্সারের যুদ্ধে অযোধ্যার নবাবের মন্ত্রী মহারাজ বেণী বাহাদুর পলাশীর যুদ্ধে মিরজাফরমীরজাফর-জগৎশেঠদের মতোই বিশ্বাসঘাতকতা করে ইংরেজদের সাহায্য করে। সম্রাটের দেওয়ানদিওয়ান সেতাব রায়ও কূটকৌশল অবলম্বন করে ইংরেজদের সাফল্যের পথ সহজ করে দিয়েছিল। তৃতীয়ত, মীর কাসিমের গোলন্দাজ বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা মর্কা ও আরাটোন দুইজনই আর্মেনিয়ান খ্রিস্টান ছিল। তারা ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে বিশ্বস্ততার পরিচয় দেয়নি। সামরিক শিক্ষা ও অভিজ্ঞতায় নবাবের সৈন্যরা ইংরেজ সৈন্যদের সমান ছিল না। রণকৌশল ও আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে ইংরেজদের শ্রেষ্ঠত্ব ছিল। নবাবের অনিয়ন্ত্রিত সৈন্যরা স্বভাবতই সুনিয়ন্ত্রিত ইংরেজ সৈন্যদের সাথে ভালো দক্ষতার পরিচয় দিতে পারেনি। সর্বোপরি বিশ্বাসঘাতকতা চারদিক থেকে নবাবকে আষ্টেপৃষ্ঠে ঘিরে ধরেছিল। তাই পলাশীর মতো বক্সারের যুদ্ধেও বিশ্বাসঘাতকতার জয় হলো ।
 
{{ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন}}