অপারেশন সার্চলাইট: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
অ টেমপ্লেটে সংশোধন |
অনেক স্থলে ইংরেজিকে বাংলা অনুবাদ না করেই রেখে দেওয়া হয়েছিলো। ঐ অংশগুলোকে বাংলা করলাম। |
||
৯ নং লাইন:
[[বাংলাদেশ|বাংলাদেশের]] স্বাধীনতা লাভ
<!--
• সাময়িক সামরিক দখলদারী <br />
• ভয়াবহ গণহত্যার শিকার বাঙালি নিরস্ত্র জনতা <br />
• [[মুক্তিযুদ্ধ]]র সূচনা<br />
•
• বাঙালি শরণার্থিদের ভারত পলায়ন <br />
• [[ভারত সেনাবাহিনি]]র পূর্বাঞ্চল কমান্ড কর্তৃক [[অপারেশন জ্যাকপট]] প্রারম্ভিকা <br />
• পরবর্তিতে [[ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ১৯৭১]] সংঘটন এবং বাংলাদেশের জন্ম-->
|combatant1= পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনীর বাঙালি সদস্য ও সাধারণ স্বেচ্ছাসেবী
|combatant2=পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনী
৩৪ নং লাইন:
|strength2='''পাকিস্তানি সেনাবাহিনী''': ১৪তম পদাতিক ডিভিশন, ১৮,০০০+ এর বেশি সৈন্য,<ref>Qureshi, Maj. Gen. Kakeem Arshad, The 1971 Indo-Pak War: A Soldier’s Narrative, p20, Oxford University Press ISBN 0-19-579778-7</ref>
১ সমরাস্ত্র রেজিমেন্ট (৭৫ [[এম-২৪]] শ্যাফে ট্যাংক)।
''
'''রি-ইনফোর্সমেন্ট''': পশ্চিম পাকিস্তান থেকে আনা ৯ম ও ১৬দশ ইনফ্যানট্রি ডিভিশন <br />
'''পাকিস্তান বিমান বাহিনি'':
বিশটি এফ-৮৬ স্যাবর, তিনটি টি-৩৩ ট্রেইনারস, আটটি হেলিকপ্টার, সি-১৩০ হিরাকলস্ ট্রান্সপোর্ট প্লেন।
''পাকিস্তান নৌবাহিনি''':
|casualties1='''
|casualties2=~
|notes=[[Operation Searchlight#Casualties|Civilian death toll]]: estimated several thousands Bengali civilians.
}}
৪৯ নং লাইন:
== পেছনের কথা ==
[[১৯৭০ এর সাধারণ নির্বাচন (পাকিস্তান)|১৯৭০ এর নির্বাচনে]] [[আওয়ামী লীগ]] নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পর বাঙালিরা আশা করেছিল যে ক্ষমতার পালাবদল হবে এবং আওয়ামী লীগ [[৬ দফা আন্দোলন|৬ দফা]] অনুসারে সরকার গঠন করবে। ২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৭১ এ তৎকালীণ রাষ্ট্রপতি ও সেনা প্রধান [[ইয়াহিয়া খান]] পিপিপি ([[পাকিস্তান পিপলস্ পার্টি]]) এর [[জুলফিকার আলী ভুট্টো|জুলফিকার আলী ভুট্টোর]] প্ররোচনা ও চাপে জাতীয় বিধানসভার কার্যাবলি মার্চ পর্যন্ত স্থগিত করে দেন। পিপিপি এরই মধ্যে [[শেখ মুজিবুর রহমান|শেখ মুজিবুর রহমানের]] জনপ্রিয়তা হ্রাস করার উদ্দেশ্যে তদবির চালিয়ে যাচ্ছিলো, জুলফিকার আলি ভুট্টো এও বলেন যে তিনি বাঙালিদের ক্ষমতা থেকে দূরে রাখতে চান। এই স্থগিতকরণের প্রতিবাদে আওয়ামী লীগ [[৭ মার্চ]] ১৯৭১ এ একটি গণসমাবেশের আয়োজন করে। এই সমাবেশ এতই সফল ছিল যে পাকিস্তান সরকার সেনাছাউনি ও পূর্বপাকিস্তানের সরকারি প্রতিষ্ঠান কার্যাবলী সীমিত করে দিতে বাধ্য হয়। সধারন জনগণ ও সেনাবাহিনী এবং [[বাঙালি]] ও [[বিহারী|বিহারীদের]] মধ্যাকার সংঘর্ষ ছিল প্রতিদিনকার সাধারণ ব্যপার। জেনারেল ইয়াহিয়া শেখ মুজিবের সাথে বৈঠকের উদ্দেশ্যে মার্চের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা আসেন,এবং এরপর ভূট্টো তার সাথে যোগ দেন। আওয়ামী লীগের কাছে ক্ষমতা না হস্তান্তরের উদ্দেশ্য (পশ্চিম পাকিস্তানী শাষক গোষ্ঠীর ভয় ছিল যে ক্ষমতা পূর্বে হস্তান্তরিত হলে পশ্চিমে পাকিস্তান পিপলস পার্টির কর্তৃত্ব হ্রাস পাবে)পাকিস্তানী জেনারেলরা,( যাদের মধ্যে [[গুল হাসান]] ছিলেন অগ্রগামী) পিপিপি কে সমর্থন যোগাতে থাকে যার ফলাফল দাঁড়ায় সেনা আক্রমণ<ref name
== অপারেশনের পরিকল্পনা ==
৫৭ নং লাইন:
পাকিস্তানের উর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা পূর্ব পাকিস্তানের জিওসি লে জেনারেল [[সাহেবজাদা ইয়াকুব খান]] এবং পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ভাইস অ্যাডমিরাল [[এস এম আহসান]] পূর্ব পাকিস্তানের সাধারণ জনগণের উপর সামরিক হামলার বিরোধী ছিলেন বলে অপারেশনের পূর্বেই তাদেরকে দায়িত্ব হতে অব্যাহতি দেয়া হয়।<ref>মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী, পাকিস্তানের জন্ম, p60</ref> লে জেনারেল [[টিক্কা খান]]কে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ও জিওসি করে পাঠানো হয়। মার্চের ১৭ তারিখ পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর সিওএস জেনারেল হামিদ টেলিফোন করে জেনারেল রাজাকে অপারেশনের পরিকল্পনা করার দায়িত্ব প্রদান করেন। ১৮ মার্চ সকালে ঢাকা সেনানিবাসের জিওসি কার্যালয়ে বসে জেনারেল রাজা এবং মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলি অপারেশনের পরিকল্পনা তৈরি করেন। পরিকল্পনাটি জেনারেল ফরমান নিজ হাতে হালকা নীল রঙের একটি অফিস প্যাডের ৫ পাতা জুড়ে লিড পেন্সিল দিয়ে লিখে নেন।
জেনারেল ফরমান অপারেশনের সিদ্ধান্ত, এবং সাফল্যের শর্ত ইত্যাদির সীমা তৈরি করেন এবং জেনারেল খাদিম সেনাদলের স্থান বিতরন, বিভিন্ন ব্রিগেড ও ইউনিটের উপর সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব বণ্টন ইত্যাদি কাজ তদারকি করেন। এটা ধারণা করা হয় যে বাঙালি সেনারা অপারেশনের শুরুর সময় বিদ্রোহ করবে, তাই পরিকল্পনাকারীরা প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সাথে আলাপকালে বাঙালি সৈন্যদের অপারেশনের পূর্বেই নীরস্ত্র করার এবং বাঙালি রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতারের প্রস্তাব দেন।<ref name
অপারেশন শুরু হয় ঢাকায় ২৫ মার্চ রাতের শেষ প্রহরে এবং অন্যান্য গ্যারিসনকে ফোন কলের মাধ্যমে তাদের জিরো আওয়ারে (অপারেশন শুরুর পূর্বনির্ধারিত সময়) তাদের কার্যক্রম শুরু করার জন্য সতর্ক করে দেয়া হয়। ঢাকার সৈন্যদের কমান্ডে ছিলেন রাও ফরমান আলি এবং অন্যান্য সব স্থানের সৈন্যদের কমান্ডে ছিলেন জেনারেল খাদেম। জেনারেল টিক্কা এবং তার কর্মকর্তারা ৩১তম কমান্ড সেন্টারের সব কিছু তদারকি করা এবং ১৪তম ডিভিশনের কর্মকর্তাদের সহযোগিতা করার উদ্দেশ্যে উপস্থিত ছিলেন।
৬৩ নং লাইন:
== পরিকল্পনার প্রধান অংশগুলো ==
=== গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ ===
পাকিস্তানী পরিকল্পনাকারিদের গৃহীত সিদ্ধান্ত অণুযায়ী, অপারেশনের মূল লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন অংশ এবং স্বশস্ত্র বাহিনীর যারা সামরিক শাসনকালে আওয়ামী লীগকে সমর্থন জুগিয়েছে তাদের নিশ্চিহ্ন করে দেয়া। অপারেশনের সর্বোচ্চ সার্থকতার জন্য ধুর্ততা, চমকে দেয়া, প্রবঞ্চনা, এবং দ্রুতগতি ইত্যাদি বিষয়ের উপর জোড় দেয়া হয়। নির্বাধ এবং সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগের ক্ষমতা প্রদান করা হয়। সাধারণ জনবসতি এবং হিন্দু এলাকাগুলোতে অনুসন্ধান এবং আক্রমণের কর্তৃত্বও প্রদান করা হয়<ref name
=== সাফল্যের নিয়ামকগুলো ===
১৫৭ নং লাইন:
১৮তম ও ৩২তম পাঞ্জাব রেজিমেন্টের অনিয়মিত বাহিনী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আক্রমণ চালায়, আওয়ামী লীগ স্বেচ্ছাসেবীদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বাধা প্রদানের চেষ্টাকে পরাভূত করে, ছাত্রনিবাসে অবস্থানরত নীরস্ত্র ছাত্রদের হত্যা করে, সাথে বেশ কিছু অধ্যাপকদেরও হত্যা করে এবং তারপর ২৬ মার্চ সকালের দিকে হিন্দু এলাকা এবং পুরান ঢাকা আক্রমণের জন্য গমন করে।<ref>Islam, Maj Rafiql, A Tale of Millions, p115-p116</ref> রাজারবাগে অবস্থানরত পুলিশেরা আওয়ামী লীগের স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তায় কঠিন প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম হয়, কিন্তু ধীরে ধীরে পরাজিত হয় এবং যারা বেঁচে ছিল তাদের বেশিরভাগ ধরা পরে অথবা এদিক সেদিক পালিয়ে যায়।<ref>মেজর(অবঃ) রফিকুল ইসলাম পিএসসি, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, পৃ-১৫৩</ref> পাকিস্তানী সেনারা অপারেশনের সময় জনগণের নিরাপত্তাকে তুচ্ছ করে যথেচ্ছ ভাবে কামান এবং সাঁজোয়া যান ব্যবহার করে। ভোরের মধ্যে শহর দখলে চলে আসে এবং শহরব্যাপি কারফিউ জারি করা হয়। বেঁচে যাওয়া পুলিশ এবং ইপিআর সেনারা শহর ছেড়ে পালিয়ে যায়, কেউ কেউ বুড়িগঙ্গা নদী পার হয়ে জিঞ্জিরায় জমায়িত হয়।<ref>মেজর(অবঃ) রফিকুল ইসলাম পিএসসি, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, পৃ-১৫২-১৫৭</ref> ২৬ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত অনিয়মিত আক্রমণ চলতে থাকে,শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের নেতাদের গ্রেফতার করতে না পারা ছাড়া সার্বিক অপারেশনের অন্যান্য সব লক্ষ্য অর্জিত হয়। এছাড়া পাকিস্তানী সেনারা শহীদ মিনার, ''[[দৈনিক ইত্তেফাক]]'' কার্যালয়, ''ডেইলি পিপল'' কার্যালয় এবং রমনার কালী মন্দির ধ্বংস করে দেয়, যাদের একটিরও কোন প্রকার সামরিক প্রয়োজনীয়তা ছিল না।
ধরা পরা বাঙালি সৈন্য এবং ইপিআর ও পুলিশ কর্মকর্তাদের হয় মেরে ফেলা হয় নাইলে কোন বিচার ছাড়া কয়েদে নিক্ষেপ করা হয়। ২৬ মার্চ থেকে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত একটি অপারেশন যার নাম দেয়া হয় "GREAT FLY-IN"<ref>Salik, Siddiq, Witness To Surrender, p87 id = ISBN 984-05-1373-7</ref> এর মধ্যে দিয়ে PIA বোয়িং এবং C-130 পরিবহন বিমানের মাধ্যমে ৯ম (২৭তম, ৩১৩তম এবং ১১৭তম ব্রিগেডের সমন্বয়ে গঠিত) এবং ১৬তম (৩৪তম এবং ২০৫তম ব্রিগেড নিয়ে) ডিভিশনকে (মোট ৫টি ব্রিগেড, যার মধ্যে ছিল ১৬টি পদাতিক ব্যটেলিয়ন) ঢাকায় নিয়ে আসা হয়<ref name
পাকিস্তানী সেনারা ২৭ মার্চে ২ ঘণ্টার জন্য কারফিউ তুলে নেয়, যখন হাজার খানেক শহরবাসী গ্রামের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যগ করেছে। পাকিস্তানী সৈন্যরা ২৬ মার্চের পর থেকেই শহরের বাইরের দিকে যেতে থাকে এবং পূর্বে ডেমরা, উত্তরে টঙ্গী এবং দক্ষিণে নারায়ণগঞ্জের দিকে অবস্থান নিয়ে শহরে প্রবেশের রাস্তা বন্ধ করে দেয়। এপ্রিলের ১০ তারিখের মধ্যেই পাকিস্তানী সেনারা দক্ষিণে পদ্মা নদী পর্যন্ত এবং উত্তরে টঙ্গী-নরসিংদী পর্যন্ত এলাকা দখল করে নিতে সক্ষম হয়।
|