মোহাম্মদ মোহর আলী (ইতিহাসবিদ): সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
ওমর হামযা খান (আলোচনা | অবদান)
ওমর হামযা খান (আলোচনা | অবদান)
১৩ নং লাইন:
== কর্মজীবন ==
লন্ডন বিশবিদ্যালয় থেকে পিএইচডি শেষে দেশে ফিরে মোহর আলী ঢাকা হাইকোর্টে যোগদান করেন। কিন্তু এই ওকালতী পেশা তিনি দীর্ঘদিন আঁকড়ে থাকেন নি। কারণ তাঁর কাছে মনে হয়েছিল এটি তাঁর ভবিষ্যত বুদ্ধিজীবীতার জন্য প্রতিবন্ধক হয়ে উঠবে। ফলে তিনি পুনরায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা জীবনে প্রত্যাবর্তন করেন। ১৯৬৯ সালে তিনি নুফিল্ড ফাউন্ডেশনের (Nuffield Foundation) এর বৃত্তি নিয়ে বৃটেন যান এবং পরবর্তী বছর ফিরে আসেন।
 
১৯৬৫ সালে তাঁর পিএইচডি অভিসন্দর্ভ The Bengali Reaction to Christian Missionary Activities, 1833-1857 গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। ১৯৬৬ সালে The Autobiography and The Other Writings of Nawab Abdul Latif বইটি মোহর আলীর সস্পাদনায় প্রকাশিত হয়।
বাংলাদেশ ত্যাগের পূর্বে ১৯৭৫ সালে তিনি তাঁর উল্লেখযোগ্য গবেষণা গ্রন্থ The Fall of Sirajuddawla এর পাণ্ডুলিপি প্রকাশের ব্যবস্থা করে যান। একই বছরে লন্ডনে মুসলিম কাউন্সিল অব ইউরোপের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সিম্পোজিয়ামে মোহর আলী History of the Muslims of Bengal নামে একটি নিবন্ধ পাঠ করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত কয়েকজন সৌদি কুটনীতিক নিবন্ধটির বিষয়বস্তুতে চমৎকৃত হন এবং অধ্যাপক আলীকে রিয়াদের ইমাম মুহাম্মদ ইবনে সৌদ বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলার ইসলামী ইতিহাস নিয়ে একটি গবেষণা পদ গ্রহণের অনুরোধ করেন। এই ভাবে মোহর আলীর জীবনের নবরূপান্তর ঘটে এবং তিনি সাধারণ ইতিহাস (General History) থেকে ইসলামী ইতিহাসের বিপুল ঐশ্বর্য নিয়ে গবেষণার প্রাসাদে প্রবেশ করেন। রিয়াদে অবস্থানকালে তিনি ভালো মতো আরবী ভাষাও আয়ত্ত করেন।
 
১৯৭৬ সাল থেকে ১৯৮৬ এই দীর্ঘ দশ বছর তিনি একটানা বাংলার মুসলমানদের ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করেন, যার ফল হিসেবে প্রকাশিত হয় চারখণ্ডের বৃহদায়তন History of the Muslims of Bengal নামের ধ্রুপদী ইতিহাস গ্রন্থ। ইতিহাসের এই ঋদ্ধ ও প্রামাণ্য গ্রন্থ রচনার ফলেই মোহর আলীর খ্যাতি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ছড়িয়ে পড়ে। এরপরে মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁকে নতুন একটি গবেষণা পদ অফার করা হয়। এখানে তিনি ১৯৮৭ থেকে ১৯৯৮ পর্যন্ত গবেষণার কাজে সম্পৃক্ত থাকেন এবং যার ফল হিসেবে দুই খণ্ডে Sirat-al-Nabi and the Orientalists নামে বৃহৎ গ্রন্থ রচনা করেন। এটি প্রকাশ করেছে মদীনার Center for the Service of Sunnah and Sirah. পরবর্তীকালে তিনি এ ধারার আরো একটি সম্পূরক গ্রন্থ রচনা করেন The Quran and the Orientalist: An Examination of Their Main Theories and Assumptions নামে।
 
মোহর আলী মদীনার King Fahad Complex for the Printing of the Holy Quran নামের প্রতিষ্ঠানটির সাথেও এক বছর যুক্ত ছিলেন এবং এই সময়েই তিনি কুরআন অধ্যয়নের দিকে বেশী আগ্রহী হয়ে ওঠেন। জীবনের শেষ দিনগুলোতে তিনি লন্ডনে স্থায়ী হয়েছিলেন। এ সময়েই তিনি তিন খণ্ডে রচনা করেন আরবী ভাষার সাথে অপরিচিত পাঠকদের জন্য A Word for Word Meaning of the Quran. মোহর আলী তাঁর শ্রেষ্ঠ কীর্তি History of the Muslims of Bengal গ্রন্থের জন্য ২০০০ সালে মুসলিম বিশ্বের নোবেল প্রাইজ বাদশাহ ফয়সল আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেন। বইটির মৌলিকত্ব, গভীরতা ও বিশ্লেষণী তাৎপর্যের কারণে এবং মধ্যপ্রাচ্যের বাইরে মুসলিম সমাজ ও সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার এক অনন্য সাধারণ ইতিহাস রচনার জন্য মূলতঃ তিনি এ পুরস্কারটি পান।