মুক্তিবাহিনী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
→‎top: বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্য থাকল এর পরিচালককে জানান।
আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
বানান সংশোধন
১৮ নং লাইন:
|partof=[[১৯৭১ সালের অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকার]]<ref>
*{{citation|last=Lal|first=PC|title=My Years with the IAF|url=https://books.google.com/books?id=eBszCSguEscC&pg=PT168|publisher=Lancer Publishers LLC|isbn=978-1-935501-75-6|pages=168}}
*{{citeওয়েব webউদ্ধৃতি|last1=Oakley|first1=Don|title=East pakistan's unheeded agony|url=http://www.thedailystar.net/editorial-east-pakistans-unheeded-agony-54382|website=The Daily Star|publisher=The Nevada Daily Mail|accessdate=10 January 2016}}
*{{citeওয়েব webউদ্ধৃতি|title=Mujibnagar: History’s first Bengali government|url=http://opinion.bdnews24.com/2015/04/17/mujibnagar-history%E2%80%99s-first-bengali-government/|website=The Opinion Pages|accessdate=14 January 2016}}</ref>
|strength= ১৫0,000
|previous=
|next=
|allies={{flagcountry|India}}
|opponents=[[পাকিস্থানপাকিস্তান]]
|battles= [[Battle of Gazipur]], [[Battle of Goalhati]], [[Battle of Garibpur]], [[Battle of Dhalai Outpost|Battle of Dhalai]], [[Battle of Rangamati-Mahalchari waterway|Battle of Rangamati]], [[Battle of Kushtia]], [[Battle of Daruin]], [[Operation Barisal]], [[Operation Jackpot]]
}}
৩০ নং লাইন:
<!-- [[Image:Muktiyddher.jpg|thumb|right|মুক্তিযুদ্ধে নারীদের অংশগ্রহণের স্মারক পোস্টার]] -->
 
'''মুক্তিবাহিনী''' হলো ১৯৭১ সালের [[বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ|বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে]] অংশ নেয়া বাঙালি সেনা, ছাত্র, ও সাধারণ জনতার সমন্বয়ে গঠিত একটি সামরিক বাহিনী। ২৬শে মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার পর ধীরে ধীরে সাধারণ বাঙ্গালীদের এই বাহিনী গড়ে উঠে। পরবর্তীতে এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে পূর্ব পাকিস্থানপাকিস্তান সামরিক বাহিনীর সাবেক সদস্যরা "বাংলাদেশ সামরিক বাহিনী" গঠন করেন এবং জেনারেল [[আতাউল গণি ওসমানী]] সর্বাধিনায়ক পদ গ্রহণ করেন।<ref>[http://www.afd.gov.bd/milff/army.html]</ref> এই সময় ভারত আমাদের ব্যাপকভাবে সাহায্য করেন। সাধারণ জনতা যুদ্ধকালীন সময়ে নিরলসভাবে এই বাহিনীকে সাহায্য করে যায়। যুদ্ধের পর পশ্চিম পাকিস্থানীপাকিস্তানী বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা বাংলাদেশের সকল সেনা ও জনতার বাহিনীকে "মুক্তিবাহিনী" হিসেবে সম্বোধন করা হয়। মুক্তিবাহিনী বেশিরভাগ সময়ই [[গেরিলা]] যুদ্ধের নীতি অবলম্বন করে শত্রু পক্ষকে ব্যাতিব্যস্ত রাখতো। মুক্তিবাহিনীর যুদ্ধকৌশল অনেকটা বিপ্লবী [[চে গুয়েভারা]]র দ্বারা অনুপ্রাণিত ছিলো বলে মনে করা হয়<ref>''Dangerous Liaison'' by Raza Naeem, ''Frontline'', Volume 26 - Issue 15, July 18–31 2009</ref> এবং একে বিভিন্ন সময় ফরাসি [[উইকিপিডিয়া:Maquis (World War II)|মাকি বাহিনী]], [[Viet Cong|ভিয়েত কং]] এবং [[মার্শাল টিটো]]র গেরিলা বাহিনীর তুলনা করা হতো এর রণকৌশল ও কার্যকারীতার কারণে।<ref>[http://www.defencejournal.com/apr99/bangladesh.htm Why the Movement for Bangladesh Succeeded: A military appreciation] by Mumtaz Iqbal</ref>
 
== মুক্তিবাহিনীর শুরু ==
পশ্চিম পাকিস্থানীপাকিস্তানী সেনাবাহিনীর ২৫শে মার্চ ১৯৭১ এর গণহত্যার পর প্রতিরোধের জন্য মুক্তিবাহিনী গড়ে উঠে। কিন্তু এ ছিলো [[বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ|বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের]] চূড়ান্ত পর্যায়মাত্র। স্বাধীনতার সংগ্রাম এর আগেই দানা বাধতে শুরু করে ১৯৬৯ এর আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। ১৯৭০ এর শুরুর দিকে বঙ্গবন্ধু [[শেখ মুজিবুর রহমান|শেখ মুজিবুর রহমানের]] [[ছয় দফা আন্দোলন|ছয় দফা আন্দোলনের]] মাধ্যমে তা গণআন্দোলনে রূপ নিতে থাকে। ১৯৭১ এর মার্চে তৎকালীন [[পূর্ব পাকিস্তান|পূর্ব পাকিস্থানেপাকিস্তানে]] (পরবর্তীতে [[বাংলাদেশ]]) ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক অসন্তোষ এবং সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদের দাবী তৎকালীন পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী কঠোর হাতে দমন করার সিদ্ধান্ত নেয়<ref name= genwatch>[http://www.gendercide.org/case_bangladesh.html '''Genocide in Bangladesh, 1971.''' Gendercide Watch.]</ref><ref name= rule>[http://countrystudies.us/bangladesh/21.htm '''Emerging Discontent, 1966-70.''' Country Studies Bangladesh]</ref> এবং [[অপারেশন সার্চলাইট|অপারেশন সার্চলাইটের]] নীল নকশা আঁটে।<ref>'''[http://www.epw.org.in/showArticles.php?root=2005&leaf=10&filename=9223&filetype=html Anatomy of Violence: Analysis of Civil War in East Pakistan in 1971: Military Action: Operation Searchlight''' Bose S Economic and Political Weekly Special Articles, [[October 8]], 2005]''' {{Dead link}}</ref>
 
পশ্চিম পাকিস্থানীপাকিস্তানী সেনাবাহিনীর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের<ref name= NYT>'''The Pakistani Slaughter That Nixon Ignored , Syndicated Column''' by Sydney Schanberg, New York Times, May 3, 1994</ref> মুখে অগণিত অসহায় মানুষ ভারতের পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে আশ্রয়প্রার্থী হতে থাকে (আনুমানিক ১ কোটি শরণার্থী)<ref name= report>'''Crisis in South Asia - A report''' by Senator Edward Kennedy to the Subcommittee investigating the Problem of Refugees and Their Settlement, Submitted to U.S. Senate Judiciary Committee, November 1, 1971, U.S. Govt. Press.pp6-7</ref><ref name=Times13>[http://www.time.com/time/magazine/article/0,9171,910155-2,00.html '''India and Pakistan: Over the Edge.''' TIME Dec 13, 1971 Vol. 98 No. 24]</ref> , যা পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধের গতিপ্রকৃতিতে একটা নতুন মাত্রা দেয়। বাংলার মানুষের অসহনীয় মানবিক দূর্যোগের মুখে [[ভারত]] সরকার মুক্তিবাহিনীকে সর্বোতভাবে সহযোগিতা করা শুরু করে।
 
শুরুর দিকে মুক্তিবাহিনী মুক্তিফৌজ নামে পরিচিত হয়; যার “ফৌজ” অংশটি মূলত [[আরবী]];<ref>http://www.ovidhan.org/b2b/ফৌজ ফৌজ শব্দের উৎপত্তি।</ref> এটি বাংলা "বাহিনী" শব্দের পরিপূরক, যা পরে বিভিন্ন ভাষার মাধ্যমে বাংলা ভাষায় গৃহীত হয়েছে।<ref>আলমু'জামুল ওয়াফী পৃ. ৭৬৮</ref> এটি আগে বিভিন্ন শহরে ও গ্রামে [[সংগ্রাম পরিষদ]] নামে ছাত্র ও যুবকদের উদ্যোগে গঠিত হয় ১৯৭১ এর মার্চের শুরুর দিকে। এটা ঠিক পরিষ্কার নয় কিভাবে মুক্তিফৌজ মুক্তিবাহিনী নামে রূপান্তরিত হয়। তবে, নাম যাই হোক না কেন, এটা বাংলার মুক্তিকামী মানুষের সংগ্রামী বাহিনীকেই নির্দেশ করে।
৬৪ নং লাইন:
== নিয়মিত ও অনিয়মিত বাহিনী ==
 
মুক্তিবাহিনীর "নিয়মিত বাহিনী" গঠন করা হয়েছিল [[ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট]] (EBR), [[ইষ্ট পাকিস্থানপাকিস্তান রাইফেলস]] (পরবর্তীতে [[বাংলাদেশ রাইফেলস]] বা BDR), পুলিশ, অন্যান্য আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্য এবং সাধারণ জনগন নিয়ে। এই বাহিনী বাংলাদেশব্যাপি ১১টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছিল এবং নিয়ন্ত্রন ছিলো সেনাবাহিনীর সদস্যদের হাতে। যুদ্ধের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে নিয়ন্ত্রিত এবং সংঘবদ্ধ আক্রমণের জন্য তিনটি শক্তিশালী বাহিনী গঠন করা হয় - মেজর (পরবর্তীতে মেজর জেনারেল) [[জিয়াউর রহমান|জিয়াউর রহমানের]] নেতৃত্বে [[জেড-ফোর্স]], মেজর (পরবর্তীতে ব্রিগেডিয়ার) [[খালেদ মোশাররফ|খালেদ মোশাররফের]] নেতৃত্বে [[কে-ফোর্স]] এবং মেজর (পরবর্তীতে মেজর জেনারেল) [[কে. এম. শফিউল্লাহ|কে. এম. শফিউল্লাহের]] নেতৃত্বে [[এস-ফোর্স]].
 
অনিয়মিত বাহিনী, যাকে "[[গণ বাহিনী]]" নামেও অভিহিত করা হয়ে থাকে, গঠন করা হয়েছিলো গেরিলা যুদ্ধে প্রশিক্ষিত যোদ্ধাদের নিয়ে। এই বাহিনীর সদস্যরা ছিলো মূলত ছাত্র, কৃষক, শ্রমজীবী এবং রাজনৈতিক কর্মীরা। তাদের প্রাথমিক প্রশিক্ষনের পর বিভিন্ন সেক্টরে বিন্যস্ত করা হয়েছিলো। তাদের মূল দায়িত্ব ছিলো বাংলাদেশের ভেতরে পাকিস্থানীপাকিস্তানী আর্মির বিরুদ্ধে গেরিলা কায়দায় চকিত আক্রমণ চালানো এবং যথাসম্ভব ক্ষতিসাধণ। নিয়মিত বাহিনী গতানুগতিক সম্মুখযুদ্ধে নিয়োজিত ছিলো।
 
মুক্তিবাহিনী মূলত দু'টি উৎস থেকে গড়ে উঠেছিলো - তৎকালীন [[পূর্ব পাকিস্তান]] সেনাবাহিনীর সদস্যগণ এবং শহর ও গ্রামের স্বেচ্ছাসেবক তরুণ ও যুবকেরা। এছাড়াও [[সংগ্রাম পরিষদ]], [[আওয়ামী লীগ]], [[ন্যাপ]], বামপন্থী-সমাজতান্ত্রিক দল ও উগ্রপন্থী কিছু দলের যুব ও ছাত্র সংগঠন সমূহও যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলো। মুক্তিবাহিনীর বেশ কয়েকটি ভাগ ছিলো। প্রথমত, একটি ভাগ ছিলো নিয়মিত সেনাসদস্যদের সংগঠিত করে তৈরি করা অংশ, যাদের "মুক্তিযোদ্ধা" বলা হয়ে থাকে। অপর একটি ভাগ ছিলো [[বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্সেস]] (Bangladesh Liberation Forces - BLF) (বাংলা:বাংলাদেশ স্বাধীনতা বাহিনী) নামে, যারা ছিলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের আওয়ামী লীগের চার যুবনেতার দ্বারা সংগঠিত ছিলো। এর চলতি নাম ছিল [[মুজিব বাহিনী]]৤ আরেকটি ভাগের নাম ছিলো "বিশেষ গেরিলা বাহিনী" (Special Guerrilla Forces (SGF)), যা বামপন্থী দলসমূহের ([[বাংলাদেশ]] [[কমিউনিস্ট পার্টি]] (Communist Party of Bangladesh), [[ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি]] (National Awami Party), [[বাংলাদেশ]] [[ছাত্র ইউনিয়ন]] (Bangladesh Students Union)) দ্বারা সংগঠিত হয়েছিলো। এই গেরিলা বাহিনী একত্রে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ গেরিলা আক্রমণ চালাতো, তাদের উদ্দেশ্য ছিলো চকিত আক্রমণ দ্বারা পাকবাহিনীর যথাসম্ভব ক্ষতিসাধণ করা। এই বাহিনীর কার্যক্রম সামাল দেওয়ার জন্য পাকবাহিনী কিছু সমান্তরাল আধা-সামরিক বাহিনী তৈরি করে, যেমন [[রাজাকার]] বাহিনী, [[আল-বদর]] বাহিনী, [[আল-শামস]](মূলত তৎকালীন [[জামায়াতে ইসলামী]]|জামাত-ই-ইসলামী]] ও অন্যান্য ধর্মভিত্তিক দলের সদস্যদের নিয়ে) বাহিনী। এছাড়াও তারা স্বাধীনতা-বিরোধী বাঙ্গালী ও [[বিহারী]]দেরকেও কাজে লাগায়। এই বিহারীরা ৪৭ এর দেশবিভাগের সময় ভারত ও পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বাংলাদেশে বসত গড়েছিলো। এই সব আধা-সামরিক বাহিনীগুলো জুন-জুলাইয়ে বর্ষার সময় [[পাকিস্তান]] বাহিনীর উপর মুক্তিবাহিনীর আক্রমণ কিছুটা হলেও ঠেকাতে পেরেছিলো।