প্রাকৃতিক নির্বাচন: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
FerdousBot (আলোচনা | অবদান) অ বানান, replaced: কারন → কারণ (2) |
অ টেমপ্লেটে সংশোধন |
||
৫ নং লাইন:
প্রাকৃতিক নির্বাচন মূলত ফেনোটাইপ বা বাহ্যিক বৈশিষ্ট্যের উপর কাজ করে কিন্তু ফেনোটাইপের [[জিনতত্ত্ব|জিনতাত্ত্বিক]] ভিত্তি, যা প্রজননগত সাফল্যের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে, জনগোষ্ঠীতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করবে। (দেখুন: [[অ্যালিল কম্পাঙ্ক]])। এভাবে ক্রমাগত অভিযোজনের ফলে প্রাণীরা তাদের আপন পরিবেশের (Ecological niche) জন্য বিশেষায়িত হতে হতে এক সময় নতুন প্রজাতিতে রুপান্তরিত হয়। অর্থাৎ, প্রাকৃতিক নির্বাচন এমন একটি প্রক্রিয়া (তবে একমাত্র প্রক্রিয়া নয়) যার মাধ্যমে একটি জনগোষ্ঠী হতে নতুন প্রজাতির উদয় ঘটে। এটি এমন এক ছাঁকনি যার ভেতর দিয়ে শুধু উপকারী প্রকরণগুলোই গমন করতে পারে। কৃত্রিম নির্বাচনের ক্ষেত্রে মানুষই এই "ছাকনি"-র ভূমিকা পালন করে।
প্রাকৃতিক নির্বাচন আধুনিক [[জীববিজ্ঞান|জীববিজ্ঞানের]] অন্যতম ভিত্তি। ডারউইন প্রথম তার ''[[অন দি অরিজিন অফ স্পিসিস]]''<ref name="origin">Darwin C (1859) ''On the Origin of Species by Means of Natural Selection, or the Preservation of Favoured Races in the Struggle for Life'' John Murray, London; modern reprint {{
== সাধারণ নীতিমালা ==
২২ নং লাইন:
"প্রাকৃতিক নির্বাচন" শব্দটির অর্থ প্রেক্ষাপটের উপর সামান্য নির্ভরশীল। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একে উদ্ধারিক (হেরিটেবল) বৈশিষ্ট্যের উপর কার্যকরী হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়, কারণ এই বৈশিষ্ট্যগুলোই সরাসরি জৈব বিবর্তনে অংশগ্রহন করে। তবে প্রাকৃতিক নির্বাচন “অন্ধ”, এই অর্থে যে ফিনোটাইপ (শারীরিক ও আচরণগত বৈশিষ্ট্য) দায়যোগ্য (হেরিটেবল) না হওয়া সত্ত্বেও প্রজননগত সাফল্য প্রদান করতে পারে (উদ্ধারিক নয়, এমন সব বৈশিষ্ট্য পরিবেশের প্রভাবেও উদ্ভূত হতে পারে)।
ডারউইনের প্রাথমিক ব্যবহার<ref name="origin"/> অনুসারে শব্দটি দূরদৃষ্টিহীন নির্বাচনের বিবর্তনীয় পরিণতি ও বিবর্তনীয় প্রক্রিয়া, দু’টো বিষয়কেই নির্দেশ করতে ব্যবহার করা হয়।<ref name="fisher">Fisher RA (1930) ''The Genetical Theory of Natural Selection'' Clarendon Press, Oxford</ref><ref name="nomenclature1">Works employing or describing this usage:<br />{{
কোন বৈশিষ্ট্য প্রজজনগত সাফল্যে ইতিবাচক ভূমিকা রাখলে নির্বাচনী শক্তি তার পক্ষে কাজ করে, এর বিপরীত হলে নির্বাচনী শক্তি তার বিপক্ষে কাজ করে। একটি বৈশিষ্ট্য নির্বাচিত হলে এর সাথে আরও অনেক বৈশিষ্ট্য নির্বাচিত হতে পারে যেগুলো আদতে প্রজননগত সাফল্যকে প্রভাবিত করে না। এটি প্লেয়োট্রপি কিংবা জিন সংযোগের (gene linkage) কারণে ঘটতে পারে।<ref>Sober E (1984; 1993) ''The Nature of Selection: Evolutionary Theory in Philosophical Focus'' University of Chicago Press ISBN 0-226-76748-5</ref>
৪৯ নং লাইন:
=== যৌন নির্বাচন ===
{{Main|যৌন নির্বাচন}}
“পরিবেশগত নির্বাচন” ও “যৌন নির্বাচন” এর মাঝে পার্থক্যটা গুরুত্বপূর্ণ। “পরিবেশগত নির্বাচন” বলতে পরিবেশগত প্রভাব বোঝায়(যেমন, প্রতিযোগীতা, শিশুহত্যা, পরিবার নির্বাচন(kin selection) ইত্যাদি) যেখানে “যৌন নির্বাচন” বলতে যৌনসঙ্গীর জন্য প্রতিযোগীতাকে ইঙ্গিত করে।<ref>{{
যৌন নির্বাচন একই লিঙ্গের প্রাণীদের প্রতিযোগীতার উপর যেমন কাজ করতে পারে, তেমনি একাধিক যোগ্য সঙ্গী থেকে সবচেয়ে যোগ্য সঙ্গীটির কোন একটি বিশেষ লিঙ্গ দ্বারা নির্বাচিত হওয়ার উপরও কাজ করতে পারে। সাধারণত স্ত্রী প্রাণীটি একাধিক পুরুষ প্রাণী হতে একজন যৌনসঙ্গী নির্বাচন করে। যেহেতু সন্তান লালন-পালনে স্ত্রী প্রাণীটির বিনিয়োগ সবচেয়ে বেশি, তাই সে সবচেয়ে উন্নতমানের জিনের ধারক পুরুষ প্রাণীটিকেই সঙ্গী হিসেবে নির্বাচন করে। কিছু কিছু প্রজাতিতে অবশ্য পুরুষরা স্ত্রী সঙ্গী নির্বাচন করে, যেমনটি ''Syngnathidae'' পরিবারের মাছ ও বেশ কিছু পাখি ও উভচর প্রজাতির মধ্যে দেখা যায়।<ref name="Eens">{{cite journal | last1 = Eens | first1 = M | last2 = Pinxten | first2 = R. | year = 2000 | title = Sex-role reversal in vertebrates: behavioural and endocrinological accounts | url = | journal = Behav Processes | volume = 51 | issue = 1–3| pages = 135–147 | pmid = 11074317 | doi = 10.1016/S0376-6357(00)00124-8 }}</ref>
৬৪ নং লাইন:
যথেষ্ঠ সময় থাকলে এবং বারংবার জীবাণু-নাশকটির সংস্পর্শে আসলে জীবাণু-নাশকটির প্রতি সম্পূর্ণভাবে সহনশীল এক নতুন ব্যাকটিরিয়া জনগোষ্ঠীর উদয় ঘটবে। এই নতুন জনগোষ্ঠীটি বিদ্যমান পরিবেশের প্রতি অভিযোজিত হলেও তার পূর্বপুরুষদের জীবাণু-নাশকমুক্ত পরিবেশের প্রতি অভিযোজিত হবে না। এক্ষেত্রে প্রাকৃতিক নির্বাচনের ফলে এমন দু'টি জনগোষ্ঠী উদ্ভূত হবে যারা নিজেদের পরিবেশের প্রতি পূর্নভাবে অভিযোজিত হলেও অন্য পরিবেশে ভালভাবে খাপ খাওয়াতে পারবে না।
জীবাণু-নাশকের অতিরিক্ত ব্যবহার ও অপব্যবহারের ফলে অনেক অণুজীব জীবাণু-নাশকের প্রতি সহনশীল হয়ে পড়েছে, মেথিসিলিন-বিরোধী ''Staphylococcus aureus'' (MRSA) তার ক্ষতিকর প্রভাব ও প্রতিরোধক্ষমতার কারণে এখন "সুপারবাগ" হিসেবে অভিহিত হচ্ছে।<ref>{{
এটি বিবর্তনীয় অস্ত্রযুদ্ধের একটি উদাহরণ- গবেষকরা যতই শক্তিশালী জীবাণু-নাশক তৈরী করছেন, ততই নতুন নতুন প্রজাতির সহনশীল ব্যাকটিরিয়া বিবর্তিত হচ্ছে। উদ্ভিদ ও পতঙ্গকূলে কীটনাশক প্রতিরোধের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে। অস্ত্রযুদ্ধ সবসময় মনুষ্যসঞ্চারিত হয় না; সামোয়ার এক দ্বিপে Hypolimnas bolina প্রজাতির এক প্রজাপতির জিনোমে এক বিশেষ জিনের প্রসার পরিলক্ষিত হয়েছে যা Wolbachia ব্যাকটিরিয়ার পুরুষ-নিধন প্রক্রিয়াকে দমন করে- পুরো প্রক্রিয়াটি ঘটতে লেগেছে মাত্র পাঁচ বছর।<ref>Sylvain Charlat, Emily A. Hornett, James H. Fullard, Neil Davies, George K. Roderick, Nina Wedell & Gregory D. D. Hurst (2007). "Extraordinary flux in sex ratio". Science 317 (5835): 214. doi:10.1126/science.1143369. PMID ১৩৪৭৭২৬৭</ref>
৯৪ নং লাইন:
=== প্রাক-ডারউইনীয় তত্ত্বরাজি ===
বেশ কিছু প্রাচীন দার্শনিক ধারণা করেছিলেন যে প্রকৃতি আপাতঃদৃষ্টিতে দৈবক্রমে ব্যাপক জৈববৈচিত্র্য সৃষ্টি করে এবং কেবলমাত্র ইয়ারাই বেঁচে থাকে যারা নিজেদেরকে টিকিয়ে রাখতে সমর্থ হয় এবং প্রজনন করতে সফল হয়; এমপিডোকলস<ref>{{Cite journal | last = Empedocles | authorlink = Empedocles | title = On Nature | volume = Book II | ref = harv | postscript = <!--None--> | url=http://history.hanover.edu/texts/presoc/emp.htm}}</ref> এবং তাঁর ভাবশিষ্য লুক্রেশিয়াস<ref>{{Cite journal | author = Lucretius | authorlink = Lucretius | title = De rerum natura | volume = Book V | ref = harv | postscript = <!--None--> | url=http://classics.mit.edu/Carus/nature_things.5.v.html}}</ref> হলেন প্রখ্যাত কিছু উদাহরণ, তাছাড়া [[এরিস্টটল]] প্রাসঙ্গিক কিছু ধারণাকে পরবর্তীতে পরিমার্জিত করেছিলেন।<ref>{{Cite journal | last = Aristotle | title = Physics | volume = Book II, Chapters 4 and 8 | ref = harv | postscript = <!--None--> | url=http://classics.mit.edu/Aristotle/physics.2.ii.html}}</ref> আল-জাহিজ পরে অস্তিত্বের লড়াইকে বর্ণনা করেছিলেন এবং প্রস্থাপন করেছিলেন যে পরিবেশগত কারণে প্রাণীদের দেহে নতুন বৈশিষ্ট্য দেখা দিতে পারে যার ফলে তারা অস্তিত্বের সংগ্রামে টিকে থাকতে পারে।<ref>{{cite journal | last1 = Zirkle | first1 = Conway | year = 1941 | title = Natural Selection before the "Origin of Species | url = | journal = Proceedings of the American Philosophical Society | volume = 84 | issue = 1| pages = 71–123 }}</ref><ref>Mehmet Bayrakdar (Third Quarter, 1983). "Al-Jahiz And the Rise of Biological Evolutionism", ''The Islamic Quarterly'' . লন্ডন</ref><ref>{{
[[আবু রায়হান আল বিরুনি|আবু রায়হান বিরুনি]] কৃত্রিক নির্বাচন বর্ণনা করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন যে প্রকৃতিতেও একই ঘটনা ঘটে।<ref>{{Cite journal|title=On the Presumed Darwinism of Alberuni Eight Hundred Years before Darwin|author=Jan Z. Wilczynski|journal=[[Isis (journal)|Isis]]|volume=50|issue=4|date=December 1959|pages=459–466|doi=10.1086/348801|ref=harv|postscript=<!--None-->}}</ref> ১৮ শতকে Pierre Louis Maupertuis<ref>{{cite journal | last = Maupertuis | first = Pierre Louis | authorlink = Pierre Louis Moreau de Maupertuis | year = 1748 | title = [[s:Derivation of the laws of motion and equilibrium from a metaphysical principle#I. Assessment of the Proofs of God.27s Existence that are Based on the Marvels of Nature|Derivation of the laws of motion and equilibrium from a metaphysical principle]] ([[s:fr:Les loix du mouvement et du repos déduites d'un principe metaphysique#I. Examen des preuves de l.27existence de Dieu.2C tir.C3.A9es des merveilles de la Nature|Original French text]]) | journal = Histoire de l'academie des sciences et belle lettres de Berlin | volume = 1746 | pages = 267–294 | ref = harv}}</ref> সহ চার্লস ডারউইনের দাদা [[ইরাসমাস ডারউইন|ইরাসমাস ডারউইনও]] একই রকম ধারণা প্রকাশ করেছিলেন। এই অগ্রদূতরা ডারউইনবাদের উপর প্রভাব ফেললেও চার্লস ডারউইন পরবর্তী বিবর্তনীয় দর্শনে এঁদের অবদান খুবই সীমিত।
১০৫ নং লাইন:
১৮৫৯ সালে চার্লস ডারউইন অভিযোজন ও প্রজাত্যায়নের ব্যাখ্যা হিসেবে তাঁর প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে বিবর্তনের তত্ত্ব প্রকাশ করেন। তাঁর সংজ্ঞামতে প্রাকৃতিক নির্বাচন হল "এমন এক প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে প্রত্যেকটি তুচ্ছ প্রকরণ, যদি উপকারী হয়, সংরক্ষিত হয়"।<ref>{{harvnb|Darwin|1859|p=[http://darwin-online.org.uk/content/frameset?itemID=F373&viewtype=side&pageseq=76 61]}}</ref> বিষয়টি সহজ কিন্তু শক্তিশালি:পরিবেশের সাথে সুষ্ঠুভাবে অভিযোজিত প্রাণীগুলরই বেঁচে থাকার ও প্রজনন করার সম্ভাবনা বেশি। যতক্ষণ তাদের মাঝে প্রকরণ থাকবে, ততক্ষণ তাদের মধ্যে একটি নির্বাচনি প্রক্রিয়া কাজ করবে যা বেছে বেছে শুধু সবচেয়ে উপকারী প্রকরণগুলোকেই নির্বাচন করবে। প্রকরণগুলো যদি উত্তরাধিকারসূত্র প্রাপ্ত হয়, তাহলে পার্থক্যযুক্ত প্রজননগত সাফল্যের কারণে একটি প্রজাতির বিবর্তন ঘটবে, এবং কোন প্রজাতি বিবর্তিত হয়ে যথেষ্ঠ পরিমাণে আলাদা হলে সম্পূর্ণ নতুন একটি প্রজাতি হিসেবে গণ্য হবে।<ref>{{harvnb|Darwin|1859|p=[http://darwin-online.org.uk/content/frameset?itemID=F373&viewtype=text&pageseq=20 5]}}</ref>
বিগল যাত্রার পর্যবেক্ষণগুলো ডারউইনকে প্রভাবিত করেছিল, আরও প্রভাবিত করেছিল রাজনৈতিক অর্থনীতিবিদ রেভারেন্ড টমাস মালথুসের An Essay on the Principle of Population, যাতে তিনি লিখেছিলেন যে খাদ্যসম্ভারের পাটিগণিতীয় বৃদ্ধির ফলে কোনরকম নিয়ন্ত্রণপ্রবণতার অনুপস্থিতিতে একটি জনগোষ্ঠী জ্যামিতিক হারে বাড়তে থাকবে; সুতরাং প্রাকৃতিক সম্পদের অনিবার্য সীমাবদ্ধতার কিছু জনসংখ্যাতাত্ত্বিক পরিণতি থাকবে, যার ফলে "অস্তিত্বের লড়াই" পরিলক্ষিত হবে।<ref name="June29">{{
অরিজিনের চতুর্থ অধ্যায়ে প্রাপ্ত ডারউইনের ধারণাগুলোর সারমর্ম নিম্মে দেওয়া হল:
১১২ নং লাইন:
একবার কাজ করার মত একটা তত্ত্ব পাওয়ার পর ডারউইন সেটিকে জনসম্মুখে প্রকাশ করার আগে তার পক্ষে প্রমাণ জড়ো করা ও পরিমার্জিত করার ব্যাপারে যত্নশীল ছিলেন। ডারউইন যখন তাঁর বিখ্যাত বইটি লিখছিলেন, তখনই [[আলফ্রেড রাসেল ওয়ালেস]] সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে একই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়ে চার্লস লায়েলের কাছে পাঠানোর জন্য ডারউইনের কাছে একটি প্রবন্ধ লিখে পাঠিয়েছিলেন। লায়েল আর যোসেফ ডাল্টন হুকার ওয়ালেসকে না জানিয়েই তাঁর প্রবন্ধ ও অন্য প্রকৃতিবিদদের কাছে পাঠানো ডারউইনের অপ্রকাশিত পত্রগুলোকে একসাথে উপস্থাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, এবং On the Tendency of Species to form Varieties; and on the Perpetuation of Varieties and Species by Natural Means of Selection শিরোনামের প্রবন্ধটি ১৮৫৮ সালের জুলাই মাসে লিনিয় সমাজের সভায় পাঠ করা হয়েছিল। ডারউইন ১৮৫৯ সালে প্রকাশিত তাঁর ''অন দ্যা অরিজিন অব স্পিসিজ'' গ্রন্থে তাঁর প্রমাণ ও সিদ্ধান্ত আরও বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেছিলেন। ১৮৬১ সালে প্রকাশিত বইটির তৃতীয় সংস্করণে ডারউইন স্বীকার করেছিলেন যে উইলিয়াম চার্লস ওয়েলস ১৮১৩ সালে এবং প্যাট্রিক ম্যাথিউ ১৮৩১ সালে একইরকম মত প্রকাশ করেছিলেন, কিন্তু তাঁরা কেউই সেগুলোকে বিস্তৃত করেননি কিংবা কোন খ্যাত বৈজ্ঞানিক প্রকাশনায় উপস্থাপন করেননি।<ref>{{harvnb|Darwin|1861|p=[http://darwin-online.org.uk/content/frameset?itemID=F381&viewtype=text&pageseq=20 xiii]}}</ref>
ডারউইন প্রাকৃতিক নির্বাচনকে কৃষকদের প্রজননের জন্য শস্য কিংবা পশু নির্বাচনের সাথে তুলনা করেছিলেন, এবং একে তিনি "কৃত্রিম নির্বাচন" আখ্যা দিয়েছিলেন; তাঁর প্রথম দিকের পান্ডুলিপিতে তিনি এক "প্রকৃতি" এর কথা বলেছিলেন যে এই নির্বাচনের কাজটি করবে। সেই সময়ে জিন প্রবাহের মাধ্যমে বিবর্তনের ধারণাটি জ্ঞাত ছিল না, এবং ডারউইন বিশ্বাস করতেন যে প্রাকৃতিক নির্বাচন খুব সম্ভবত কাহিনীর একটি অংশ মাত্র:"আমি নিশ্চিত যে [এটি] পরিবর্তনের প্রধান মাধ্যম হিসেবে কাজ করেছে, কিন্তু একচেটিয়া নয়।"<ref>{{harvnb|Darwin|1859|p=[http://darwin-online.org.uk/content/frameset?itemID=F373&viewtype=side&pageseq=21 6]}}</ref> চার্লস লায়েলের কাছে ১৮৬০ সালের সেপটেম্বরের এক চিঠিতে ডারউইন আফসোস করে বলেছিলেন যে "প্রাকৃতিক নির্বাচন" শব্দটি ব্যবহার না করে "প্রাকৃতিক সংরক্ষণ" ব্যবহার করা উচিত ছিল।<ref>{{
ডারউইন ও তাঁর সমসাময়ীক ব্যক্তিবর্গের কাছে প্রাকৃতিক নির্বাচন আদতে "প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে বিবর্তন" এর সমার্থক ছিল। "অন দ্যা অরিজিন অব স্পিসিজ" প্রকাশের পর শিক্ষিত সমাজ স্বীকার করে নিয়েছিল যে বিবর্তন কোন না কোনভাবে ঘটেছে। তবে প্রাকৃতিক নির্বাচন প্রক্রিয়া হিসেবে বিতর্কিত রয়ে গিয়েছিল, একারণে যে এটি জীবজন্তুর পর্যবেক্ষিত বৈশিষ্ট্যগুলোর ব্যাখ্যায় দৃশ্যত দুর্বল ছিল, এবং একারণে যে বিবর্তনের সমর্থকরাও প্রক্রিয়াটির "অনির্ধারিত" ও অ-প্রগতিশীল প্রকৃতি গ্রহণ করতে দ্বিধাগ্রস্ত ছিল<ref name="Eisley">Eisley L. (1958). ''Darwin's Century: Evolution and the Men Who Discovered It.'' Doubleday & Co: New York, USA.</ref>- এই দ্বিধাই মূলত বিবর্তনবাদের গ্রহণযোগ্যতার প্রতি সবচেয়ে বড় বাধা ছিল।<ref name="Kuhn">Kuhn TS. [1962] (1996). ''The Structure of Scientific Revolution'' 3rd ed. University of Chicago Press: Chicago, Illinois, USA. ISBN 0-226-45808-3</ref>
তবে কিছু কিছু চিন্তাবিদ সোৎসাহে ডারউইনের তত্ত্বকে গ্রহণ করেছিলেন; ডারউইনের লেখা পড়ার পর হার্বার্ট স্পেন্সার "সারভাইভাল অব দ্যা ফিটেস্ট" শব্দমালাটি প্রস্তাব করেন, যা তত্ত্বটির সারমর্ম হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।<ref name="sotf">{{
১৮৬৯ সালে প্রকাশিত ''অন দ্যা অরিজিন অব স্পিসিজের'' পঞ্চম সংস্করণে প্রাকৃতিক নির্বাচনের বিকল্প হিসেবে স্পেন্সারের বাক্যাংশটি ব্যবহার করা হয়েছিল:"But the expression often used by Mr. Herbert Spencer, of the Survival of the Fittest, is more accurate, and is sometimes equally convenient."<ref>{{harvnb|Darwin|1872|p=[http://darwin-online.org.uk/content/frameset?itemID=F391&viewtype=text&pageseq=70 49].}}</ref>
১৬৬ নং লাইন:
সদিক নির্বাচন ঘটে যখন একটি বিশেষ এলেলের যোগ্যতা অন্য এলেলের চেয়ে বেশি হয় এবং এর সংখ্যাবৃদ্ধি ঘটে। এই প্রক্রিয়াটি চলতেই থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত্য এলেলটি জিনপুঞ্জে প্রোথিত না হবে এবং জনপুঞ্জের প্রত্যেকটি প্রাণীর ওই নির্দিষ্ট ফেনোটাইপ না থাকবে। জীবাণু-নাশকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধও দিকনির্দিষ্ট নির্বাচনের উদাহরণ।
তবে সদিক নির্বাচনের চেয়ে সুস্থিতিকরণ নির্বাচন বা stabilizing selection(''পরিশোধনকারী নির্বাচন'' বা purifying selection এর সাথে গুলিয়ে ফেলা চলবে না<ref>{{
এছাড়াও সুষমকরণ নির্বাচন(balancing selection) নানা রুপে কাজ করে যার ফলে কোন এলেল প্রোথিত না হলেও বিভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সিতে সে জিনপুঞ্জে বিচরণ করে। এটা ডিপ্লয়ড(যাদের দু'জোড়া ক্রোমজোম থাকে) প্রজাতিতে ঘটতে পারে যখন হেটেরোজাইগোটদের(যাদের ক্রোমজোমের কোন নির্দিষ্ট স্থান বা লোকাসে দু'টো ভিন্ন এলেল থাকে) যোগ্যতা হোমোজাইগোটদের(লোকাসে যখন দু'টো একই এলেল থাকে) চেয়ে বেশি হয়। একে হেটেরোজাইগোট সুবিধা বলে, যার সবচেয়ে বিখ্যাত উদাহরণ হল কাস্তে কোষ ব্যাধির জন্য দায়ী জিনের শুধু একটি কপি বহন করা কিছু হেটেরোজাইগোট মানুষ, যারা এর ফলে প্রাকৃতিক ভাবেই ম্যালেরিয়ার প্রতি সহিষ্ণু। বহুমুখী নির্বাচন বা diversifying selection এর ফলেও এলেল প্রকরণ টিকে থাকতে পারে কারণ এই প্রক্রিয়ায় গড় মান থেকে যেকোন দিকে বিচ্যুত জেনোটাইপগুলোই নির্বাচিত হয়। অবশেষে, সুষমকরণ নির্বাচন ফ্রিকোয়েন্সি-নির্ভরশীল নির্বাচন এর মাধ্যমেও ঘটতে পারে, যেখানে একটা ফেনোটাইপের ফ্রিকোয়েন্সী আরেকটা ফেনোটাইপের ফ্রিকোয়েন্সীর উপর নির্ভর করে। [[ক্রীড়া তত্ত্ব|ক্রীড়াতত্ত্ব]] বা Game theory এসব ক্ষেত্রে , বিশেষ করে গোত্র নির্বাচন এবং ব্যতিহার পরার্থপরতা(reciprocal altruism) এর বিবর্তন বোঝার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।<ref name="Hamilton">{{cite journal | pmid = 5875340 | year = 1964 | last1 = Hamilton | first1 = WD | title = The genetical evolution of social behaviour. II | volume = 7 | issue = 1 | pages = 17–52 | journal = Journal of theoretical biology | doi = 10.1016/0022-5193(64)90039-6 }}</ref><ref name="Trivers">{{cite journal | last1 = Trivers | first1 = RL. | year = 1971 | title = The evolution of reciprocal altruism | url = | journal = Q Rev Biol | volume = 46 | issue = | pages = 35–57 | doi = 10.1086/406755 }}</ref>
১৯৫ নং লাইন:
== তথ্যসূত্র ==
{{সূত্র তালিকা|2}}
== আরও পড়ুন ==
* For technical audiences
** {{
** {{
** [[কার্ল পপার|Popper, Karl]] (1978) ''Natural selection and the emergence of mind.'' Dialectica 32:339-55. দেখুন: [166]
** Sober, Elliott (1984) ''The Nature of Selection: Evolutionary Theory in Philosophical Focus.'' University of Chicago Press.
|