মুহাম্মাদ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

[অপরীক্ষিত সংশোধন][অপরীক্ষিত সংশোধন]
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Ahmedafifkhan (আলোচনা | অবদান)
"সা." কে পরিবর্তন করে "সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" করা হয়েছে। কারণ পূর্ণ দুরূদ লেখা মুসলিম র...
Ahmedafifkhan (আলোচনা | অবদান)
যে সকল স্থানে দুরূদ ছিলো না, সেসকল স্থানে দুরূদ প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।
৪২ নং লাইন:
[[File:Persia 600ad.jpg|thumb|৬০০ শতকে ইসলামের উত্থানের পূর্বমুহূর্তে আরব উপদ্বীপ, বাইজান্টাইন ও সাসানীয়-পারস্য সাম্রাজ্য।]]
{{মূল নিবন্ধ|ইসলাম-পূর্ব আরবের অবস্থা}}
তৎকালীন আরব অর্থনীতির মূল ভিত্তি ছিল ব্যবসায় ও পশুপালন। [[নোমাড|নোমেডীয়]] অঞ্চলের সাথে এখানকার বাণিজ্য যোগাযোগ ছিল। আরব বলতে এখানে [[মক্কা]] ও [[মদিনা]] এবং এদের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলো নিয়ে গড়ে উঠা অংশকে বুঝানো হচ্ছে, এই অংশের সাথেই মুহাম্মাদেরমুহাম্মাদ (সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জীবনের সাক্ষাৎ সম্পৃক্ততা ছিল।
 
== মুহাম্মাদেরমুহাম্মাদ (সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জীবনের উপর তথ্যসূত্র ==
{{মূল নিবন্ধ|মুহাম্মাদের জীবনের ইতিহাস-লিখন}}
 
মুহাম্মাদেরমুহাম্মাদ (সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপর অনেক জীবনীকার জীবনীগ্রন্থ লিখেছেন। তার জীবনীগ্রন্থকে সাধারণভাবে "সিরাত" গ্রন্থ বলে। মুহাম্মাদেরমুহাম্মাদ (সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মৃত্যুর পর থেকে অনেক মুসলিম ও অমুসলিম তার জীবনীগ্রন্থ লিখেছেন। এর মাঝে উল্লেখযোগ্য হলো [[ইবনে ইসহাক]] রচিত মুহাম্মাদেরমুহাম্মাদ (সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সর্বাধিক প্রাচীনতম নির্ভরযোগ্য জীবনী সংকলন [[সিরাতে ইবনে ইসহাক]] (যা অনেকের মতে বর্তমানে প্রায় বিলুপ্ত) এবং তা হতে সম্পাদিত [[ইবনে হিশাম|সিরাতে ইবনে হিশাম]],<ref name="Nigosian6">S. A. Nigosian(2004), p. 6</ref> [[আল তাবারি]] রচিত "সিরাতে রাসুলাল্লাহ",<ref>Donner (1998), p. 132</ref> [[ইবনে কাসির]] রচিত "আল-সিরাত আল-নববিয়াত", [[মার্টিন লিংস|মার্টিন লিংসের]] "মুহাম্মদ : হিজ লাইফ বেজড অন দ্য আর্লিয়েস্ট সোর্সেস", [[ক্যারেন আর্মস্ট্রং]] রচিত "মুহাম্মদ : এ বায়োগ্রাফি অব দ্য প্রফেট" এবং "মুহাম্মদ : এ প্রফেট অব আওয়ার টাইম", [[মার্মাডিউক পিকথাল]] রচিত "আল আমিন : এ বায়োগ্রাফি অব প্রফেট মুহাম্মদ", সাম্প্রতিককালে রচিত [[আর্-রাহিকুল মাখতুম]], বাংলা ভাষায় [[গোলাম মোস্তফা (বাঙালি কবি)|গোলাম মোস্তফা]] রচিত [[বিশ্বনবী]], [[এয়াকুব আলী চৌধুরী]]র [[নুরনবী]], মওলানা আকরম খাঁ রচিত মুস্তাফা চরিত প্রভৃতি।
===হাদিস===
{{main|হাদিস}}
আরেকটি উল্লেখযোগ্য তথ্যসূত্র হল হাদিস সংকলন, মুহাম্মাদেরমুহাম্মাদ (সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মৌখিক ও কার্যগত শিক্ষা ও ঐতিহ্য। মুহাম্মাদেরমুহাম্মাদ (সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মৃত্যুর পর বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি বহু প্রজন্মব্যাপী হাদিস সংকলন করেছেন, এদের মধ্যে অন্যতম হলেন [[মুহাম্মাদ আল বুখারী]], [[মুহাম্মাদ ইবনে ইসা আত-তিরমিজি]] প্রভৃতি।<ref name="Lewis 1993, pp. 33–34">Lewis (1993), pp. 33–34</ref>
 
কিছু পাশ্চাত্য শিক্ষাবিদও হাদিস সংকলনকে সম্পূর্ণ নির্ভুল ঐতিহাসিক তথ্যসূত্র বলে মনে করেন।<ref name="Lewis 1993, pp. 33–34"/> আবার [[উইলফ্রেড ম্যাডেলাং|ম্যাডেল্যাঙের]] মতো পণ্ডিতগণ পরবর্তী যুগে সংগৃহীত হাদিসের বিবৃতিকে প্রত্যাখ্যান না করলেও সেগুলো ঐতিহাসিক পরিস্থিতি সাপেক্ষে এবং প্রসঙ্গ ও ব্যক্তির সাথে সামঞ্জস্যতার ভিত্তিতে বিচার করে থাকেন।<ref>Madelung (1997), pp.xi, 19 and 20</ref>
৭৬ নং লাইন:
আরবদের মধ্যে বিদ্যমান হিংস্রতা, খেয়ানতপ্রবণতা এবং প্রতিশোধস্পৃহা দমনের জন্যই [[হিলফুল ফুজুল]] নামক একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হয়। মুহাম্মাদ (সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এতে যোগদান করেন এবং এই সংঘকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে তিনি বিরাট ভূমিকা রাখেন। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায় তরুণ বয়সে মুহাম্মাদ (সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর তেমন কোনো পেশা ছিল না। তবে তিনি বকরি চরাতেন বলে অনেকেই উল্লেখ করেছেন। সাধারণত তিনি যে বকরিগুলো চরাতেন সেগুলো ছিল [[বনি সা'দ গোত্র|বনি সা'দ গোত্রের]]। কয়েক কিরাত পারিশ্রমিকের বিনিময়ে তিনি মক্কায় বসবাসরত বিভিন্ন ব্যক্তির বকরিও চরাতেন। এরপর তিনি ব্যবসায় শুরু করেন। মুহাম্মাদ (সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অল্প সময়ের মধ্যেই একাজে ব্যাপক সফলতা লাভ করেন। ব্যবসায় উপলক্ষে তিনি [[সিরিয়া]], [[বসরা]], [[বাহরাইন]] এবং [[ইয়েমেন|ইয়েমেনে]] বেশ কয়েকবার সফর করেন। মুহাম্মাদ(সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর সুখ্যাতি যখন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে তখন [[খাদিজা|খাদিজা বিনতে খুওয়াইলিদ]] তা অবহিত হয়েই তাকে নিজের ব্যবসার জন্য সফরে যাবার অনুরোধ জানান। মুহাম্মাদ(সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এই প্রস্তাব গ্রহণ করেন এবং খাদিজার পণ্য নিয়ে সিরিয়ার অন্তর্গত বসরা পর্যন্ত যান।
 
খাদিজা মাইসারার মুখে মুহাম্মাদ(সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সততা ও ন্যায়পরায়ণতার ভূয়সী প্রশংশা শুনে অভিভূত হন। এছাড়া ব্যবসায়ের সফলতা দেখে তিনি তাঁর যোগ্যতা সম্বন্ধেও অবহিত হন। এক পর্যায়ে তিনি মুহাম্মাদ(সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বিবাহ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তিনি স্বীয় বান্ধবী '''নাফিসা বিনতে মুনব্বিহরের''' কাছে বিয়ের ব্যাপারে তার মনের কথা ব্যক্ত করেন। নাফিসার কাছে শুনে মুহাম্মাদ(সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন যে তিনি তাঁর অভিভাবকদের সাথে কথা বলেন জানাবেন। মুহাম্মাদ(সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর চাচাদের সাথে কথা বলে বিয়ের সম্মতি জ্ঞাপন করেন। বিয়ের সময় খাদিজার বয়স ছিল ৪০ আর মুহাম্মাদ(সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বয়স ছিল ২৫। খাদিজার জীবদ্দশায় তিনি আর কোনো বিয়ে করেন নি। খাদিজার গর্ভে মুহাম্মাদেরমুহাম্মাদ (সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর(সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ছয় জন সন্তান জন্মগ্রহণ করে যার মধ্যে চার জন মেয়ে এবং দুই জন ছেলে। তাদের নাম যথাক্রমে কাসিম, জয়নাব, রুকাইয়া, উম্মে কুলসুম', [[ফাতিমা]] এবং আবদুল্লাহ। ছেলে সন্তান দুজনই শৈশবে মারা যায়। মেয়েদের মধ্যে সবাই ইসলামী যুগ পায় এবং ইসলাম গ্রহণ করে এবং একমাত্র ফাতিমা ব্যতিত সবাই নবীর জীবদ্দশাতেই মৃত্যুবরণ করে।
 
মুহাম্মাদ(সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বয়স যখন ৩৫ বছর তখন কা'বা গৃহের পুনঃনির্মাণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। বেশ কয়েকটি কারণে কাবা গৃহের সংস্কার কাজ শুরু হয়। পুরনো ইমারত ভেঙে ফেলে নতুন করে তৈরি করা শুরু হয়। এভাবে পুনঃনির্মাণের সময় যখন [[হাজরে আসওয়াদ]] (পবিত্র কালো পাথর) পর্যন্ত নির্মাণ কাজ শেষ হয় তখনই বিপত্তি দেখা দেয়। মূলত কোন গোত্রের লোক এই কাজটি করবে তা নিয়েই ছিল কোন্দল। নির্মাণকাজ সব গোত্রের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু হাজরে আসওয়াদ স্থাপন ছিল একজনের কাজ। কে স্থাপন করবে এ নিয়ে বিবাদ শুরু হয় এবং চার-পাঁচ দিন যাবৎ এ বিবাদ অব্যাহত থাকার এক পর্যায়ে এটি এমনই মারাত্মক রূপ ধারণ করে যে হত্যাকাণ্ড পর্যন্ত ঘটার সম্ভাবনা দেখা দেয়। এমতাবস্থায় '''আবু উমাইয়া মাখজুমি''' একটি সমাধান নির্ধারণ করে যে পরদিন প্রত্যুষে মসজিদে হারামের দরজা দিয়ে যে প্রথম প্রবেশ করবে তার সিদ্ধান্তই সবাই মেনে নেবে। পরদিন মুহাম্মাদ সবার প্রথমে কাবায় প্রবেশ করেন। এতে সবাই বেশ সন্তুষ্ট হয় এবং তাকে বিচারক হিসেবে মেনে নেয়। আর তার প্রতি সবার সুগভীর আস্থাও ছিল। যা হোক এই দায়িত্ব পেয়ে মুহাম্মাদ (সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অত্যন্ত সুচারুভাবে ফয়সালা করেন। তিনি একটি চাদর বিছিয়ে তার উপর নিজ হাতে হাজরে আসওয়াদ রাখেন এবং বিবদমান প্রত্যেক গোত্রের নেতাদের ডেকে তাদেরকে চাদরের বিভিন্ন কোণা ধরে যথাস্থানে নিয়ে যেতে বলেন এবং তারা তা ই করে। এরপর তিনি পাথর উঠিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে স্থাপন করেন।
৯৮ নং লাইন:
 
==== মক্কায় বিরোধিতার সম্মুখীন ====
মুহাম্মাদেরমুহাম্মাদ (সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বিরুদ্ধবাদীরা কয়েকটি স্তরে তাঁর উপর নির্যাতন শুরু করে : প্রথমত উস্কানী ও উত্তেজনার আবহ সৃষ্টি, এরপর অপপ্রচার, কূটতর্ক এবং বিপরীত যুক্তি।<ref name="Watt53-86">Watt (1953), p. 86</ref> এগুলোতেও কাজ না হওয়াতে এক সময় ইসলামের প্রচারকে দুর্বল করার প্রচেষ্টা শুরু হয় এবং তা পরিচালনা করার জন্য একটি অপপ্রচার গোষ্ঠী গড়ে তোলা হয়। একই সাথে তৎকালীন আরব কবি ও চাটুকারদের নিয়ে গড়ে তোলা হয় মনোরঞ্জক সাহিত্য ও গান-বাজনার দল, এমনকি এক পর্যায়ে মুহাম্মাদেরমুহাম্মাদ (সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে আপোসেরও প্রচেষ্টা চালায় কুরাইশরা। কিন্তু মুহাম্মাদ তা মেনে নেন নি; কারণ আপোসের শর্ত ছিল প্রচারবিহীনভাবে ইসলাম পালন করা অথবা বহুঈশ্বরবাদী পৌত্তলিকতাকে সমর্থন করে ইসলাম প্রচার করা, অথচ প্রতিমাবিহীন একেশ্বরবাদের দিকে মানুষকে ডাকাই ছিল তার ধর্ম প্রচারের সর্বপ্রথম ঐশী দ্বায়িত্ব।<ref name="IntroQuran185">An Introduction to the Quran (1895), p. 185</ref>
 
==== ইথিওপিয়ায় হিজরত ====
১০৫ নং লাইন:
 
==== গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ইসলাম গ্রহণ ====
এরপর ইসলামের ইতিহাসে যে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাটি ঘটে তা হল '''মুহাম্মাদ''' এর চাচা [[হামজা]] এবং কুরাইশ নেতা [[উমর ইবনুল খাত্তাব|উমর ইবনুল খাত্তাবের]] ইসলাম গ্রহণ। মুহাম্মাদকে তাঁর চাঁচা হামজা খুব পছন্দ করতেন এবং তাকে নিজের সন্তানের মতো স্নেহ করতেন। আবু জাহল কাবা প্রাঙ্গণে মুহাম্মাদেরমুহাম্মাদ (সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে কঠোর ভাষায় বিরূপ আচরণ করেন। এ ঘটনা জানতে পেরে মুহাম্মাদেরমুহাম্মাদ (সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর চাচা [[হামজা]] তাঁর প্রতিবাদস্বরূপ আবু জাহলকে মারধর করেন এবং মুহাম্মাদেরমুহাম্মাদ (সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সমর্থনে ইসলাম গ্রহণ করেন। তার ইসলাম গ্রহণে আরবে মুসলিমদের আধিপত্য কিছুটা হলেও প্রতিষ্ঠিত হয়। আবু জাহলের সঙ্গী হিসেবে কুরাইশ বলশালী যুবক উমরও মুসলিমদের বিরোধিতায় নেতৃত্ব দিতেন। মুহাম্মাদ সবসময় প্রার্থনা করতেন যেন [[আমর ইবনে হিশাম|আবু জাহল]] ও উমরের মধ্যে যে কোনো একজন অন্তত ইসলাম গ্রহণ করে। উমরের ইসলাম গ্রহণের মাধ্যমে তাঁর এই প্রার্থনা পূর্ণতা লাভ করে। আরব সমাজে উমরের বিশেষ প্রভাব থাকায় তাঁর ইসলাম গ্রহণ ইসলাম প্রচারকে খানিকটা সহজ করে, যদিও কঠিন অংশটিই তখনও মুখ্য বলে বিবেচিত হচ্ছিল। তবুও উমরের ইসলাম গ্রহণে মুসলিমদের আধিপত্য আরও মজবুত হয় এবং মুহাম্মদ সহ মুসলিমগণ উমরের কাছ থেকে সার্বিক নিরাপত্তা দানের আশ্বাস পেয়ে তখন থেকে উমরের সাথে কাবা প্রাঙ্গণে প্রকাশ্যে উপাসনা করা শুরু করেন।
 
==== একঘরে অবস্থা ====
১১১ নং লাইন:
 
==== দুঃখের বছর ও তায়েফ গমন ====
মুক্তির পরের বছর ছিল মুহাম্মাদেরমুহাম্মাদ (সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য দুঃখের বছর। কারণ এই বছরে খুব স্বল্প সময়ের ব্যবধানে তার স্ত্রী [[খাদিজা]] ও চাচা [[আবু তালিব]] মারা যায়। দুঃখের সময়ে মুহাম্মাদ মক্কায় ইসলামের প্রসারের ব্যাপারে অনেকটাই হতাশ হয়ে পড়েন। হতাশ হয়ে তিনি মক্কা বাদ দিয়ে এবার ইসলাম প্রচারের জন্য [[মুহাম্মাদের তায়েফ গমন|তায়েফ]] যান (তায়েফ গমনের তারিখ নিয়ে মতভেদ রয়েছে)। কিন্তু সেখানে ইসলাম প্রচার করতে গিয়ে তিনি চূড়ান্ত অপমান, ক্রোধ ও উপহাসের শিকার হন। এমনকি তায়েফের লোকজন তাদের কিশোর-তরুণদেরকে মুহাম্মাদেরমুহাম্মাদ (সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পিছনে লেলিয়ে দেয়; তারা ইট-প্রস্তরের আঘাতে তাকে রক্তাক্ত করে দেয়। কিন্তু তবুও তিনি হাল ছাড়েন নি; বরং সেখানেও তিনি ইসলাম প্রসারের সম্ভবনার কথা চিন্তা করতে থাকেন।
 
==== মি'রাজ বা উর্দ্ধারোহণ ====
১১৮ নং লাইন:
== মদিনায় হিজরত ==
{{মূল নিবন্ধ|মদিনায় হিজরত}}
মুহাম্মাদেরমুহাম্মাদ (সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আহ্বানে মক্কায় বেশকিছু লোক ইসলামের প্রতি উৎসাহী হয়ে ইসলাম গ্রহণ করে। তারা মূলত [[হজ্জ]] করতে এসে ইসলামে দাওয়াত পেয়েছিল। এরা [[আকাবা]] নামক স্থানে মুহাম্মাদেরমুহাম্মাদ (সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে শপথ করে যে তারা যে কোনো অবস্থায় তাদের নবী মুহাম্মাদকে রক্ষা করবে এবং ইসলামে প্রসারে কাজ করবে। এই শপথগুলো [[আকাবার শপথ]] নামে সুপরিচিত। এই শপথগুলোর মাধ্যমেই [[মদিনা|মদিনায়]] ইসলাম প্রতিষ্ঠার উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি হয় এবং একসময় মদিনার ১২ টি গোত্রের নেতারা একটি প্রতিনিধিদল প্রেরণের মাধ্যমে মুহাম্মাদকে মদিনায় আসার আমন্ত্রণ জানায়<ref name="Cambridge39"/><ref name="Esp">Esposito (1998), p. 17.</ref> । মদিনা তথা ইয়াসরিবে অনেক আগে থেকে প্রায় ৬২০ সাল পর্যন্ত গোত্র গোত্র এবং ইহুদিদের সাথে অন্যদের যুদ্ধ লেগে থাকে। বিশেষত বুয়াছের যুদ্ধে সবগুলো গোত্র যুদ্ধে অংশ নেওয়ায় প্রচুর রক্তপাত ঘটে<ref name="Cambridge39">Watt, The Cambridge History of Islam, p. 39</ref>। এ থেকে মদিনার লোকেরা বুঝতে সমর্থ হয়েছিল যে, রক্তের বিনিময়ে রক্ত নেওয়ার নীতিটি এখন আর প্রযোজ্য হতে পারে না। এজন্য তাদের একজন নেতা দরকার যে সবাইকে একতাবদ্ধ করতে পারবে। এ চিন্তা থেকেই তারা মুহাম্মাদকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল<ref name="EoI-Muhammad"/>, যদিও আমন্ত্রণকারী অনেকেই তখনও ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে নি। এই আমন্ত্রণে মুসলিমরা মক্কা থেকে [[হিজরত]] করে মদিনায় চলে যায়। সবশেষে মুহাম্মাদ ও আবু বকর [[৬২২]] খ্রিষ্টাব্দে মদিনায় হিজরত করেন<ref name="IntroQuran187">An Introduction to the Quran (1895), p. 187</ref><ref>Moojan Momen (1985), p. 5</ref>। তাদের হিজরতের দিনেই কুরাইশরা মুহাম্মাদকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল যদিও তা সফল হয় নি। এভাবেই মক্কী যুগের সমাপ্তি ঘটে। যারা মুহাম্মাদেরমুহাম্মাদ (সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেছিল তারা "[[মুহাজিরুন]]" নামে পরিচিত হয়ে উঠল। <ref name="EoI-Muhammad"/>
 
== মাদানী জীবন ==
১৩৬ নং লাইন:
=== মদিনার ইহুদিদের সাথে সম্পর্ক ===
[[চিত্র : Edirne 7331 Nevit.JPG|thumb|তুরস্কের এদ্রিনে মহানবীর নামের স্বাক্ষর সংবলিত লিপি]]
কিন্তু এ সময় মদিনার বসবাসকারী ইহুদিরা ইসলামী রাষ্ট্রের জন্য হুমকী হয়ে দেখা দেয়। মূলত ইহুদিরা বিশ্বাস করত না যে, একজন অ-ইহুদি শেষ নবী হতে পারে। এজন্য তারা কখনই ইসলামের আদর্শ মেনে নেয় নি এবং যখন ইসলামী রাষ্ট্রের শক্তি বুঝতে পারে তখন তারা এর বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে। মুহাম্মাদ প্রতিটি যুদ্ধের পরে একটি করে ইহুদি গোত্রের উপর আক্রমণ করেন। বদর ও উহুদের যুদ্ধের পর বনু কাইনুকা ও বনু নাদির গোত্র সপরিবারে মদিনা থেকে বিতাড়িত হয়; আর খন্দকের পর সকল ইহুদিকে মদিনা থেকে বিতাড়ন করা হয়।<ref>Esposito (1998), pp.10-11</ref> মুহাম্মাদেরমুহাম্মাদ (সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর এই ইহুদি বিদ্বেষের দুটি কারণের উল্লেখ পাওয়া যায়, একটি ধর্মীয় এবং অন্যটি রাজনৈতিক<ref name="Peters77">F.E.Peters(2003), p.77</ref>। ধর্মীয় দিক দিয়ে চিন্তা করলে [[আহলে কিতাব]] হয়েও শেষ নবীকে মেনে না নেয়ার শাস্তি ছিল এটি। আর রাজনৈতিকভাবে চিন্তা করলে, ইহুদিরা মদিনার জন্য একটি হুমকী ও দুর্বল দিক ছিল। এজন্যই তাদেরকে বিতাড়িত করা হয়।<ref name="Peters78">F.E.Peters(2003), p.76-78</ref>
 
=== হুদাইবিয়ার সন্ধি ===
২১০ নং লাইন:
}}
{{মূল নিবন্ধ|মুহাম্মাদের মৃত্যু}}
বিদায় হজ্জ থেকে ফেরার পর হিজরি ১১ সালের সফর মাসে মুহাম্মদ জ্বরে আক্রান্ত হন। জ্বরের তাপমাত্রা প্রচণ্ড হওয়ার কারণে পাগড়ির উপর থেকেও উষ্ণতা অনুভূত হচ্ছিল। অসুস্থ অবস্থাতেও তিনি এগারো দিন নামাজের ইমামতি করেন। অসুস্থতা তীব্র হওয়ার পর তিনি সকল স্ত্রীর অনুমতি নিয়ে আয়িশার গৃহে অবস্থান করতে থাকেন। বলা হয়, এই অসুস্থতা ছিল খাইবারের এক ইহুদি নারীর তৈরি বিষ মেশানো খাবার গ্রহণের কারণে। স্ত্রী আয়িশার কোলে মাথা রেখে, তিনি আয়িশাকে তার সর্বশেষ পার্থিব সম্পত্তি (সাত কিংবা আট দিনার) দান করে দিতে বলেন (কথিত আছে তা তিনি বলেন মৃত্যুর এক দিন পূর্বে), এরপর তিনি তার জীবনের সর্বশেষ উক্তিটি উচ্চারণ করেন : {{Quote|''হে আল্লাহ, তুমি আর-রফিক আল-আ'লা'' (শ্রেষ্ঠ বন্ধু, সর্বোচ্চ আবাস বা সর্বোন্নত, স্বর্গের সর্বোচ্চ সঙ্গ)<ref>{{cite book|url=https://books.google.ca/books?id=HTC6BwAAQBAJ&pg=PT255|title=The Luminous Life of Our Prophet|author=Reşit Haylamaz|page=355|publisher=Tughra Books|year=2013}}</ref><ref>{{cite book|url=https://books.google.ca/books?id=C75RN7Smxy0C&pg=PA24|title=Muhammad The Messenger of God|author=Fethullah Gülen|page=24|publisher=The Light, Inc.|isbn=1-932099-83-2}}</ref><ref>{{cite book|url=https://books.google.ca/books?id=85sjN3wM5I8C&pg=PA214|page=214|title=Tafsir Ibn Kathir (Volume 5)|publisher=DARUSSALAM}}</ref>|মুহাম্মাদ}} অবশেষে ৮ই জুন ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দে রবিবারে বা ১১ হিজরি সালের রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ সন্ধ্যায় তিনি মদিনায় আয়িশার গৃহে মৃত্যুবরণ করেন।<ref name="USN&WR">[http://www.usnews.com/articles/news/religion/2008/04/07/the-last-prophet.html?PageNr=3 ''The Last Prophet''], page 3. By Lewis Lord of [[U.S. News & World Report]]. 7 April 2008.</ref> এ সময় তার বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। [[আলি]] তাকে গোসল দেন এবং কাফন পরান। আয়েশার ঘরের যে স্থানে তিনি মৃত্যুবরণ করেন, জানাজার পর সেখানেই তাকে দাফন করা হয়।<ref name="EoI-Muhammad"/><ref>Leila Ahmed (1986), 665–91 (686)</ref><ref name="Peters90">F. E. Peters(2003), [https://books.google.com/books?id=HYJ2c9E9IM8C&pg=PA90 p. 90]</ref><ref name="Intro2Quran281">An Introduction to the Quran II (1895), p. 281</ref> পরবর্তীতে উমাইয়া খলিফা প্রথম ওয়ালিদের সময়ে, মসজিদে নববীকে সম্প্রসারণ করে মুহাম্মাদেরমুহাম্মাদ (সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কবরকে এর সম্প্রসারিত এলাকার ভেতরে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।<ref>{{Cite book| publisher = Penerbit UTM| isbn = 978-983-52-0373-2| last = Ariffin| first = Syed Ahmad Iskandar Syed| title = Architectural Conservation in Islam: Case Study of the Prophet's Mosque| year = 2005| page=88}}</ref> বর্তমানেও মসজিদে নববীর অভ্যন্তরে তার কবর রয়েছে। মুহাম্মাদেরমুহাম্মাদ (সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কবরের পাশেই আরও দুটি কবর রয়েছে, সেগুলো হল যথাক্রমে ইসলামের প্রথম দুই খলিফা ও প্রখ্যাত সাহাবা আবু বকর ও উমরের, এর পাশে আরেকটি কবরের স্থান খালি রাখা হয়েছে, মুসলিমদের বিশ্বাস মতে সেখানে পৃথিবীতে পুনরায় প্রত্যাবর্তীত নবী ঈসাকে প্রকৃত মৃত্যুর পর সমাহিত করা হবে।<ref name="Peters90"/><ref>"Isa", ''Encyclopedia of Islam''</ref><ref name="Al-HaqqaniKabbani2002">{{cite book|author1=Shaykh Adil Al-Haqqani|author2=Shaykh Hisham Kabbani|title=The Path to Spiritual Excellence|url=https://books.google.com/books?id=mzpV0QnOVxsC&pg=PA65|year=2002|publisher=ISCA|isbn=978-1-930409-18-7|pages=65–66}}</ref>
 
==মুহাম্মাদেরমুহাম্মাদ (সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মৃত্যুর পর==
{{মূল|মুহাম্মাদের উত্তরাধিকার|রাশিদুন খিলাফত}}
৬৩২ খ্রিষ্টাব্দে [[মুহাম্মদ|হযরত মুহাম্মদ(সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)]]-এর ইন্তিকালের পর তার পরিবারের সদস্যরা যখন তার দাফনের কাজে ব্যস্ত ছিলেন তখন মদিনার আনসারদের মধ্যে তার উত্তরসূরি নিয়ে মতপার্থক্য দেখা দেয়। [[উমর ইবনুল খাত্তাব|উমর]] ও [[আবু উবাইদা ইবনুল জাররাহ]] দুজনেই [[আবু বকর|আবু বকরের]] প্রতি তাঁদের আনুগত্য প্রকাশ করেন। মদিনার [[আনসার]] ও [[মুহাজির|মুহাজিররা]] অচিরেই তাদের অনুসরণ করে। আবু বকর (রা.) এভাবে ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রথম খলিফা (খলিফা রাসুলুল্লাহ বা আল্লাহর রাসুলের উত্তরাধিকারী) হিসেবে অভিষিক্ত হন এবং ইসলামের প্রচারের জন্য কাজ শুরু করেন।<ref>http://www.jewishvirtuallibrary.org/jsource/History/Caliphate.html</ref> এর মাধ্যমে খিলাফত নামক নতুন রাজনৈতিক প্রতিষ্টান গড়ে ওঠে। প্রথমে তাকে বিদ্রোহী আরব গোত্রগুলোকে দমন করতে হয় যারা ইসলাম ত্যাগ করে পূর্ব ব্যবস্থায় ফিরে গিয়েছিল।<ref>{{cite book|author1=Azyumardi Azra|title=Indonesia, Islam, and Democracy: Dynamics in a Global Context|date=2006|publisher=[[Equinox Publishing (London)]]|isbn=9789799988812|page=9}}</ref><ref>{{cite book|author1=C. T. R. Hewer|author2=Allan Anderson|title=Understanding Islam: The First Ten Steps|date=2006|publisher=Hymns Ancient and Modern Ltd|isbn=9780334040323|page=37|edition=illustrated}}</ref><ref>{{cite book|editor1-last=Anheier|editor1-first=Helmut K.|editor2-last=Juergensmeyer|editor2-first=Mark|title=Encyclopedia of Global Studies|date=9 Mar 2012|publisher=SAGE Publications|isbn=9781412994224|page=151}}</ref><ref>{{cite book|author1=Claire Alkouatli|title=Islam|date=2007|publisher=Marshall Cavendish|isbn=9780761421207|page=44|edition=illustrated, annotated}}</ref> আবু বকরের ক্ষমতালাভের পর খুব দ্রুত সমস্যা মাথাচাড়া দেয় এবং তা রাষ্ট্রের জন্য হুমকি হয়ে ওঠে। মুহাম্মদ (সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর জীবদ্দশাতেই কিছু ধর্মদ্রোহিতার ঘটনা ঘটে এবং এ সংক্রান্ত সর্বপ্রথম সংঘর্ষ তার জীবদ্দশাতেই হয়। ধর্মত্যাগের ঘটনা বেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে তা আরবের প্রত্যেকটি গোত্রকে প্রভাবিত করে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে পুরো গোত্র ধর্মত্যাগ করে। কিছু ক্ষেত্রে ইসলামকে অস্বীকার না করলেও জাকাত দিতে অস্বীকারের ঘটনা ঘটে। অনেক গোত্রীয় নেতা নিজেকে নবী দাবি করা শুরু করে। ধর্মত্যাগ [[ইসলামি আইন|ইসলামি আইনে]] সর্বোচ্চ ধরনের অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়। আবু বকর বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন।এর মাধ্যমে [[রিদ্দার যুদ্ধ]] শুরু হয়। মধ্য আরবের ধর্মত্যাগীদের নেতৃত্ব ছিল স্বঘোষিত নবী [[মুসাইলিমা]]। অন্যরা দক্ষিণ ও পূর্বের অন্যান্য অঞ্চল যেমন [[বাহরাইন]], [[মাহরা]] ও [[ইয়েমেন|ইয়েমেনে]] নেতৃত্বে দিচ্ছিল। আবু বকর বিদ্রোহ দমনের জন্য পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন। তিনি মুসলিম সেনাবাহিনীকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করেন। সবচেয়ে শক্তিশালী ও প্রাথমিক বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন [[খালিদ বিন ওয়ালিদ]]। বিদ্রোহীদের শক্তিশালী বাহিনীগুলোর সাথে লড়াইয়ের জন্য খালিদের সেনাদের ব্যবহার করা হয়। অন্যান্য সেনাদলগুলো তুলনামূলক কম গুরুত্বপূর্ণ বিদ্রোহীদের মোকাবেলায় ব্যবহার করা হত। আবু বকরের পরিকল্পনা ছিল প্রথমে পশ্চিম ও মধ্য আরব (যা মদিনার নিকটবর্তী ছিল) নিষ্কণ্টক করা, এরপর [[মালিক ইবনে নুয়ায়রাহ|মালিক ইবনে নুয়ায়রাহকে]] মোকাবেলা করা ও শেষে সবচেয়ে বিপদজনক শত্রু মুসায়লামাকে শায়েস্তা করা। বেশ কিছু ধারাবাহিক সাফল্যের পর খালিদ বিন ওয়ালিদ শেষপর্যন্ত [[ইয়ামামার যুদ্ধ|ইয়ামামার যুদ্ধে]] মুসায়লামাকে পরাজিত করেন।<ref>Tabari: Vol. 2, p. 518</ref> হিজরি ১১ সালে এ যুদ্ধ শুরু ও সমাপ্ত হয়। ১২ হিজরিতে আরব মদিনায় অবস্থান করা খলিফার নেতৃত্ব একীভূত হয়। বিদ্রোহী নবীদের যুদ্ধে পরাজয়ের মাধ্যমে আবু বকর আরবকে ইসলামের অধীনে সুসংহত করেন এবং ইসলামী রাষ্ট্রকে পতনের হাত থেকে রক্ষা করেন।
২২৭ নং লাইন:
Economic reforms addressed the plight of the poor, which was becoming an issue in [[Jahiliyyah|pre-Islamic]] Mecca.<ref>Watt, ''The Cambridge History of Islam'', p. 34</ref> The Quran requires payment of an alms tax ([[zakat]]) for the benefit of the poor; as Muhammad's power grew he demanded that tribes who wished to ally with him implement the zakat in particular.<ref>Esposito (1998), p. 30</ref><ref>Watt, ''The Cambridge History of Islam'', p. 52</ref> -->
 
== ইসলামী বর্ণনামতে মুহাম্মাদেরমুহাম্মাদ (সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অলৌকিকত্ব ==
মুসলমানদের মতে মুহাম্মদের অসংখ্য অলৌকিক ক্ষমতার মধ্যে প্রকাশ্য অলৌকিকত্ব সংখ্যা দশ হাজারেরও অধিক<ref>{{cite book | title=নাশরুত তিব ফি জিকরিন নাবিয়্যিল হাবিব | author=থানভী, আশরাফ আলি}}</ref>। প্রখ্যাত পণ্ডিত জালালুদ্দিন সুয়ুতির খাসায়েসুল কুবরা নামক গ্রন্থে মুহাম্মাদেরমুহাম্মাদ (সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মুজিযা সম্পর্কিত ঘটনাগুলো আলাদাভাবে লিপিবদ্ধ করেছেন। আল কোরানের সুরা ক্বামারে মুহাম্মদের প্রার্থনায় চন্দ্র দ্বিখণ্ডিত হওয়ার কথা বলা আছে। বদর যুদ্ধের আগের দিন বদর নামক স্থানে পৌঁছে মুহাম্মদ বললেন ''‘এটা আমুকের শাহাদাতের স্থান, এটা অমুকের হত্যার স্থান... সাহাবীরা বলেন ‘রাসুলুল্লাহ! সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যার জন্য যে স্থান দেখিয়েছেন, তার সামান্য এদিক সেদিক হয় নি।’'' (মুসলিম)
ইসলামের একটি বর্ননায় উল্লেখ আছে মুহাম্মদের স্পর্শে এক সাহাবীর ভাঙা পা ভালো হয়ে যায়। সাহাবী আবদুল্লাহ ইবনে আতিক এর পা ভেঙে গেলে তিনি তা মুহাম্মদকে জানালে মুহাম্মদ তার পায়ের উপর হাত বুলালেন। সাহাবী বলেন, ‘এতে আমার পা এমনভাবে সুস্থ হয়ে গেল যেন তাতে আমি কখনো আঘাতই পাই নি। (বুখারী)
ইসলামের আরেকটি বর্ণনায় পাওয়া যায় মুহাম্মদ আল্লাহ প্রদত্ত ক্ষমতা বলে স্বল্প খাদ্যে হাজার মানুষকে পরিতৃপ্তি সহকারে ভোজন করেছিলেন। (বুখারী, মুসলিম) তবে ইসলামের সৌন্দর্য ও প্রশান্তি এই অলৌকিকত্বের উপর নির্ভরশীল নয়। ইসলাম সাম্য ও সৌভাতৃত্বের মহিমাতে অনেক উজ্জ্বল।