দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্প্রসারণ, বানান সংশোধন, তথ্যসূত্র যোগ/সংশোধন
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্য থাকল এর পরিচালককে জানান।
৫০ নং লাইন:
“মনসামঙ্গল” কাব্যে ২৪টি পরগনা জেলার অনেক জায়গার নামের উল্লেখ পাওয়া যায়। [[চাঁদ সওদাগর]] চম্পকনগরী থেকে যাত্রা শুরু করে তাঁর তরী ভাসিয়েছিলেন [[ভাগীরথী]]র প্রবাহে।তিনি [[কুমারহট্ট]], [[ভাটপাড়া]],[[কাকিনাড়া]],মুলাজোর,গারুলিয়া,[[ইছাপুর]], দিগঙ্গা-চনক ([[ব্যারাকপুর]]),[[খড়দহ]], [[চিৎপুর]], [[কলিকাতা]],[[কালীঘাট]] ইত্যাদি জায়গা পার হয়েছিলেন।তিনি চম্পকনগরী থেকে যাত্রা শুরু করে [[বারুইপুর|বারুইপুরে]] পৌছেছিলেন।
 
জানা যায়, গৌড় থেকে মাহিনগর (পাঠান সুলতানদের রাজকর্মচারী মহীপতি বসুর নামানুসারে এই গ্রামের নাম) পর্যন্ত ভাগীরথী গঙ্গার প্রবাহ ছিল এবং এখানে সুলতান হুসেন শাহের (১৪৯৩ - ১৫১৮) নৌবহরের একটি বড় ঘাঁটি ছিল।<ref name=Ghosh>ঘোষ, বিনয়, "পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতিGhosh", তৃতীয় খন্ড, প্রথম সংস্করণ, প্রকাশ ভবন, পৃষ্ঠা: ১৫২</ref>
 
গঙ্গার প্রাচীন প্রবাহ [[কালীঘাট]] দিয়ে পূর্ব-দক্ষিণ অভিমুখে বৈষ্ণবঘাটা, [[গড়িয়া]], রাজপুর, হরিনাভি, কোদালিয়া, চাংড়িপোতা, মালঞ্চ, মাহিনগর, শাসন, বারুইপুর, ময়দা, দক্ষিণ-বারাসত, জয়নগর, মজিলপুর, প্রভৃতি গ্রাম দিয়ে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হত৷ সাগর অভিমুখি গঙ্গাপ্রবাহপথের এই গ্রামগুলি ধর্মার্থীদের কাছে পবিত্র ছিল এবং সেজন্য দাক্ষিণাত্য বৈদিক ব্রাহ্মণরা এখানে বহুকাল আগে থেকে বসবাস শুরু করেছিলেন।<ref>ঘোষ, বিনয়, "পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি", তৃতীয় খন্ড, প্রথম সংস্করণ, প্রকাশ ভবন, পৃষ্ঠা: ২২০</ref>
৭৭ নং লাইন:
১৯২৩ সালে [[বারুইপুর|বারুইপুরের]] দু'মাইল উত্তর-পশ্চিমে গোবিন্দপুর গ্রামে দ্বাদশ শতাব্দীর সেনবংশীয় রাজা লক্ষ্মণসেনের গ্রামদানের একটি তাম্রশাসন পাওয়া যায় (দ্রষ্টব্য [[খাড়ি গ্রাম]])। এই গ্রামে পুরানো একটি পুকুরপাড়ে (''হেদোপুকুর'' নামে পরিচিত) কারুকাজ করা ইটের একটি স্তুপ দেখা যায়। গোবিন্দপুরের মাইলখানেক দক্ষিণে বেড়াল-বৈকুণ্ঠপুরে প্রাচীন একটি দুর্গের ধ্বংসাবশেষ দেখা যায় এবং আরও দক্ষিণে [[কল্যাণপুর]] গ্রামে প্রাচীন একটি জীর্ণ মন্দিরে একটি শিবলিঙ্গ আছে যাঁকে 'রায়মঙ্গল' কাব্যের 'কল্যাণ-মাধব' বলে চিহ্নিত করা হয়।
 
বারুইপুরের পাঁচমাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে কুলদিয়া গ্রামে বেশ সুন্দর একটি সূর্যমূর্তি (১ ফুট ১০ ইঞ্চি উঁচু ও ১ ফুট চওড়া) এবং সঙ্গে বেলেপাথরের নৃসিংহের একটি প্লাক পাওয়া গিয়েছে। জয়নগর থানার মধ্যে [[দক্ষিণ-বারাসাত]] গ্রামে বিষ্ণু, নৃসিংহের একাধিক পাথরের মূর্তি, বিষ্ণুচক্র, স্তম্ভ ইত্যাদি পাওয়া গেছে। এখানকার সেনপাড়ায় পুকুর খননের সময় মাথায় নিখুঁত বহুগুণাবিশিষ্ট সর্পছত্রযুক্ত জৈন তীর্থঙ্কর পার্শ্বনাথের একটি নগ্নমূর্তির সন্ধান মিলেছিল। দক্ষিণ-বারাসাতের দুই মাইল দক্ষিণে বড়ুক্ষেত্র বা বহড়ু গ্রামেও ছ'ফুট উঁচু সুন্দর একটি সূর্যমূর্তি পাওয়া গেছে, গ্রামের লোক 'পঞ্চানন' বলে এর পূজা করেন। ময়দাগ্রামে পুকুর খুঁড়তে গিয়ে প্রায় দেড়ফুট উঁচু নৃত্যরত চমৎকার একটি গণেশমূর্তি পাওয়া যায়।
 
জয়নগরেও সূর্যমূর্তি পাওয়া গেছে; মথুরাপুরে ভূমিস্পর্শমুদ্রাযুক্ত একটি ভাঙা বুদ্ধমূর্তি এবং সূর্যমূর্তি পাওয়া গেছে। মথুরাপুরের দুই মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে ঘটেশ্বর গ্রামে বিংশ শতকের প্রথম দিকে পুকুর খননের সময় তিনটি জৈনমূর্তি পাওয়া যায়, তার মধ্যে একটি মূর্তি কুসংস্কারবশত জলে ফেলে দেওয়া হয়, একটি বেদখল হয়ে যায়, আর একটি মজিলপুরের কালিদাস দত্ত নিজের সংগ্রহে নিয়ে এসে রাখেন। কাঁটাবেনিয়া গ্রামেও অনুরূপ বিষ্ণুমূর্তি, বাসুদেবমূর্তি, গণেশমূর্তি, মন্দিরের দ্বারফলক, বড় বড় প্রস্তরস্তম্ভ এবং একটি বৃহৎ জৈন পার্শ্বনাথের নিখুঁত মূর্তি পাওয়া গেছে, এটি বর্তমানে বিশালাক্ষি দেবীর সঙ্গে গ্রামদেবতা 'পঞ্চানন'রূপে পূজিত হন।