ষড়যন্ত্র তত্ত্ব: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Fattah1503027 (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
Fattah1503027 (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১ নং লাইন:
'''ষড়যন্ত্র তত্ত্ব''' (ইংরেজি Conspiracy theory) মূলত কোন ঘটনার এমন ব্যাখাকে বোঝায়, যা সুস্পষ্ট প্রমাণ ছাড়া কোন গভীর ষড়যন্ত্রের দিকে ইঙ্গিত করে থাকে, যার পেছনে সরকার(রাষ্ট্র) বা ক্ষমতাশীল কোন সংগঠনকে এই যুক্তিতে দায়ী করা হয়, এই যুক্তিতে যে যে তারা এর মাধ্যমে অসৎ উপায়ে এবং ক্ষতিকর পন্থায় করে নিজেদের ফায়দা লাভ করতে চায়। এরকম তত্ত্বগুলির একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে যে এগুলি এমন অনুকল্পপ্রকল্প সৃষ্টিতৈরী করে যা ইতিহাস এবং ক্ষেত্রবিশেষে সাধারণ বোধের (সরল সত্য) সাথে সাংঘর্ষিক। এই পদটি নিন্দাজ্ঞাপক অর্থে ব্যবহৃত হয়।
 
বিখ্যাত রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাইকেল বার্কুন এর মতে, ষড়যন্ত্র তত্ত্বগুলো যে দর্শন এর উপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে আছে তা হল যে মহাবিশ্ব পরিকল্পনারকোন অধীনস্ত,সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা অনুযায়ী চলমান। এবংএটি তিনটি মুলনীতির উপর প্রতিষ্ঠিত- ১. কোনকিছু দৈবভাবে ঘটে না। ২. যা আপাত প্রতীয়মান তা সত্য নয়। ৩. সবকিছুই আন্তঃসম্পর্কযুক্ত। বার্কুন এর মতে, ষড়যন্ত্র তত্ত্বগুলোর আরেকটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে যে, এ তত্ত্বগুলো সময়ের প্রয়োজনে এদের বিপরীতে আসতে থাকা প্রমানগুলোর সাথে নিজেদের কিছুটা পরিমার্জন করে খাপ খাইয়ে নেয়। এতে করে এমন একটি বদ্ধ ব্যবস্থার সৃষ্টি হয় যা একে যাচাই এর অযোগ্য করে তুলে। তাই বার্কুন বলেন যে এই ব্যপারটি "প্রমান অপেক্ষা বিশ্বাস এর দাবিদারসাপেক্ষ"।
 
==পদটির ব্যবহার==
মানুষ ষড়যন্ত্র তত্ত্বের উদ্ভব ঘটায় সামাজিক কিছু সংগঠন এবং তাদের সাথে চিরচেনাচিরপরিচিত অশুভ শক্তির ক্ষমতার সম্পর্ক বোঝাতে। এ তত্ত্বগুলোর পেছনে মূলত মনস্তাত্ত্বিক এবং সামজিক-রাজনৈতিক উৎস থাকে। প্রস্তাবিত মানসিক উৎসের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে অভিক্ষেপ-, অর্থাৎ "একটি নির্দিষ্ট ঘটনাকে নির্দিষ্ট কারন দ্বারা ব্যাখা করার মানসিক আকাঙ্ক্ষা।" এবং অনূরুপ কিছু মনস্তাত্ত্বিক জটিলতার বহিঃপ্রকাশ, যেমন- ভ্রম বাতুলতা, তীব্রমৃদু থেকে নির্ণয়যোগ্যতীব্র মানসিক অসুস্থতা।জটিলতা। কোন কোন বিশ্লেষক আবার সামাজিক-রাজনৈতিক কারনকে গুরুত্ব দিয়েছেন, এই ভিত্তিতে যে এলোমেলো, অনির্দেশ্য, ব্যাখাতীত ঘটনা থেকে উদ্ভূত ব্যাক্তিগত অনিরপত্তাবোধ থেকেও এর উতপত্তি হতে পারে। কোন কোন দার্শনিক আবার মত প্রকাশ করেছেন যে ষড়যন্ত্র তত্ত্বে বিশ্বাস করার পেছনে যৌক্তিক হতেকারণ থাকতে পারে।
 
==ইতিহাস==
অক্সফোর্ড অভিধান অনুযায়ী, ষড়যন্ত্র তত্ত্ব হচ্ছে " কোন ঘটনা ঘটার পেছনে থাকাবিদ্যমান জটিল কোন ষড়যন্ত্র, যা নির্দিষ্ট কিছু স্বার্থান্বেষী মহলের মিলিত চক্রান্তের ফসল, বিশেষতঃ যেথায় ধরে নেয়া হয় যে, কতিপয় গুপ্ত তবে প্রভাবশালী গোষ্ঠী (যাদের উদ্দেশ্য রাজনৈতিক এবং শোষণমুলোক) একটি ব্যখাহীন ঘটনার পেছনে দায়ী। " এর সাথে তারাঅক্সফোর্ড সর্বপ্রথম এই পদটির ব্যবহারকারি হিসেবে ''দি এমেরিকান হিস্ট্রিকাল রিভিইউ'' এর ১৯০৯ সালের একটি নিবন্ধের উদ্ধৃতি দেয় সর্বপ্রথম এই পদটির ব্যবহারকারি হিসেবে।দেয়।
 
জন আইতোর ''টুয়েনটিথ সেঞ্চুরি ওয়ার্ডস'' এর মতে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব পদটি শুরুতে নিরপেক্ষ অর্থে বোঝালেওব্যবহৃত হলেও এটি নিন্দাসূচক অর্থে সংজ্ঞায়িত হওয়া শুরু করে ১৯৬০ এর মধ্যের দিকে; এই ভিত্তিতেকারনে যে, এটি প্রচার এর পেছনে এক প্রকার ভ্রম কাজ করে, যা কোন ঘটনার পেছনে প্রভাবশালী, বিদ্বেষ্পরায়ণ তবে গুপ্ত কোন সংস্থাকে কল্পনা করতে বাধ্য করে। ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটি এর অধ্যাপক ল্যান্স ডীহ্যাভেন স্মিথ এর ২০১৩ সালে প্রকাশিত বই ''কন্সপিরেসি থিওরি ইন এমেরিকা'' অনুযায়ী '''কন্সপিরেসি থিওরি''' পদটি ১৯৬০ সালে প্রথম সি আই এ দ্বারা ব্যবহৃত হয় ,জন এফ কেনেডি এর গুপ্তহত্যার সাথে জড়িত যাবতীয় ষড়যন্ত্র তত্ত্ব কে অসাড় প্রমান করতে । তবে স্টকটন ইউনিভার্সিটি এর সহকারি অধ্যাপক রবার্ট ব্লাস্কেউইয এর ভাষ্যানু্যায়ী এমন দাবি নতুন নয়, বরং অন্তত ১৯৯৭ সাল অবধি থেকে চলে এসেছিল এবং ডিহ্যাভেন স্মিথ এর সাম্প্রতিক প্রচার এর কারনে "ষড়যন্ত্র তাত্ত্বিকগণ তার কথাটিকে প্রমান হিসেবে ধরে নিয়ে একে উদ্ধৃত করেন ।" ব্লাস্কেউইয পরবর্তিতে এ নিয়ে গবেষণা করে দেখেন যে, এই নামকরনটি কখনই নিরপেক্ষ অর্থে ব্যবহৃত হয় নি বরং এটি দীর্ঘসময় ধরেই নিন্দনীয় অর্থে কোন ঘটনার প্রেক্ষাপট হিসেবে চরম কোন আন্দাজ বা অবোধ্য অনুমান কল্পনা করাকে বোঝাতে নিন্দনীয় অর্থে ব্যবহৃত হয়ে এসেছে ১৮৭০ সাল অব্দি থেকে।
 
স্যান ডিয়েগো স্টেট ইউনিভার্সিটির প্রফেসর রেবেকা মুর ''জোন্সটাউন ম্যাসাকার'' এর ব্যপারেঘটনা নিয়ে যে ঘোর অনুমানগুলো চলতে থাকে, যেমন- সি আই এ এর বিরুদ্ধে মস্তিস্ক নিয়ন্ত্রঙ্কারী পরীক্ষা চালনা করার দাবি ইত্যাদিগুলোকে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব হিসেবে অভিহিত করেন, যা অনেকের মধ্যে ক্ষোভ এর সঞ্চার করে। এর প্রতিউত্তরে তিনি বলেন," তারা আমার প্রতি ক্ষুব্ধ কেননা আমি তাদের জানা সত্যকে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব হিসেবে আখ্যায়িত করেছি...... তাদের ক্ষোভ করা অনেক অংশে ন্যায্য। কেননা, ষড়যন্ত্র তত্ত্ব পদটি নিরপেক্ষ নয়। এটি এর সাথে নিন্দা, হাস্যরস এবং বর্জনীয় ভাব প্রকাশ করে।পায়। এটি অনেকটা "কাল্ট" শব্দটির মত,যা কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ধর্মীয় সংগঠঙ্কেসংগঠনকে বোঝায়। মুর এছাড়াও ষড়যন্ত্র তত্ত্ব কে "কলঙ্কিত জ্ঞান" বা "দমনকৃত জ্ঞান" আখ্যা দেন যারযযে জ্ঞানের ভিত্তি হচ্ছে যে " ক্ষমতাধর কিছু গোষ্ঠী মুক্ত জ্ঞান সরবরাহের পথে বাধা সৃষ্টি করছে এবং একে নিয়ন্ত্রণ করছে কোন বিশেষ অসাধু উদ্দেশ্যে।"
 
=== প্রচলিত ধারণা মতে ===
কিংস কলেজ লন্ডন এর জেষ্ঠ্য প্রভাষক ক্লেয়ার বারশল এর মতে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব হচ্ছে " লৌকিক জ্ঞান ও ব্যখারব্যাখার একটি রূপ। " সামান্য জ্ঞান অর্জন করে একে বৈধ জ্ঞান এর সাথে এক কাতারে ফেলা হয়। বিরচাল এর মতে বৈধ এবং অবৈধ জ্ঞান এর মাঝে পার্থক্য সামান্য। অন্যান্য জনপ্রিয় জ্ঞান বা তথ্যের অন্তর্গত হচ্ছে ভীনগ্রহের প্রাণি দ্বারা অপহরণ,নবযুগীয় দর্শন, ধর্মীয় বিশ্বাস এবং জ্যোতিঃশাস্ত্র।
 
হ্যারি জি ওয়েস্ট লিখেছেন " ইন্টারনেট এ বিদ্যমান ষড়যন্ত্র তাত্ত্বিকদের বিচ্ছিন্ন দল হিসেবে অগ্রাহ্য করা হয়। তবে বিদ্যমান প্রমানাদির সাপেক্ষে দেখা যায়, এমেরিকান দের একটি একটি বড় অংশ বিভিন্ন ষড়যন্ত্র তত্ত্বে বিশ্বাস রাখে। ওয়েস্ট ষড়যন্ত্র তত্ত্বকে আমেরিকার চলমান সংস্কৃতি এর অংশ হিসেবে গণ্য করেন এবং একে উগ্র জাতীয়তাবাদ এবং ধর্মান্ধতার সাথে তুলনা করেন।