দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্প্রসারণ
৩০ নং লাইন:
}}
 
এটি পূর্ব [[ভারত]] এর [[পশ্চিমবঙ্গ]] রাজ্যের একটি জেলা। বন, বাদা, খাড়ি, ভেড়ি, নদ-নদী নিয়ে এই জেলার প্রাকৃতিক রূপ গঠিত। তার সঙ্গে পরিচিত সুন্দরবন ও তার বাঘ। নদনদীর ভাটা দক্ষিণে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয় বলে এই অঞ্চল একসময় '''ভাটিদেশ''' নামে পরিচিত ছিল।
এটি পূর্ব [[ভারত]] এর [[পশ্চিমবঙ্গ]] রাজ্যের একটি জেলা।
 
== ইতিহাস ==
৬৫ নং লাইন:
 
দক্ষিণ ২৪টি পরগনা জেলার নদীগুলির মধ্যে [[হুগলি]],[[বিদ্যাধরী]],[[পিয়ালী]], [[মাতলা]], [[ইছামতি]] ও [[যমুনা]] প্রধান। হুগলি নদী জেলার পশ্চিম সীমানা ঘেঁষে প্রবাহিত। বাকি নদীগুলি গঙ্গা ও পদ্মার শাখা নদী।
 
==প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন==
১৯২৩ সালে [[বারুইপুর|বারুইপুরের]] দু'মাইল উত্তর-পশ্চিমে গোবিন্দপুর গ্রামে দ্বাদশ শতাব্দীর সেনবংশীয় রাজা লক্ষ্মণসেনের গ্রামদানের একটি তাম্রশাসন পাওয়া যায় (দ্রষ্টব্য [[খাড়ি গ্রাম]])। এই গ্রামে পুরানো একটি পুকুরপাড়ে (''হেদোপুকুর'' নামে পরিচিত) কারুকাজ করা ইটের একটি স্তুপ দেখা যায়। গোবিন্দপুরের মাইলখানেক দক্ষিণে বেড়াল-বৈকুণ্ঠপুরে প্রাচীন একটি দুর্গের ধ্বংসাবশেষ দেখা যায় এবং আরও দক্ষিণে [[কল্যাণপুর]] গ্রামে প্রাচীন একটি জীর্ণ মন্দিরে একটি শিবলিঙ্গ আছে যাঁকে 'রায়মঙ্গল' কাব্যের 'কল্যাণ-মাধব' বলে চিহ্নিত করা হয়।
 
বারুইপুরের পাঁচমাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে কুলদিয়া গ্রামে বেশ সুন্দর একটি সূর্যমূর্তি (১ ফুট ১০ ইঞ্চি উঁচু ও ১ ফুট চওড়া) এবং সঙ্গে বেলেপাথরের নৃসিংহের একটি প্লাক পাওয়া গিয়েছে। জয়নগর থানার মধ্যে [[দক্ষিণ-বারাসাত]] গ্রামে বিষ্ণু, নৃসিংহের একাধিক পাথরের মূর্তি, বিষ্ণুচক্র, স্তম্ভ ইত্যাদি পাওয়া গেছে। এখানকার সেনপাড়ায় পুকুর খননের সময় মাথায় নিখুঁত বহুগুণাবিশিষ্ট সর্পছত্রযুক্ত জৈন তীর্থঙ্কর পার্শ্বনাথের একটি নগ্নমূর্তির সন্ধান মিলেছিল। দক্ষিণ-বারাসাতের দুই মাইল দক্ষিণে বড়ুক্ষেত্র বা বহড়ু গ্রামেও ছ'ফুট উঁচু সুন্দর একটি সূর্যমূর্তি পাওয়া গেছে, গ্রামের লোক 'পঞ্চানন' বলে এর পূজা করেন। ময়দাগ্রামে পুকুর খুঁড়তে গিয়ে প্রায় দেড়ফুট উঁচু নৃত্যরত চমৎকার একটি গণেশমূর্তি পাওয়া যায়।
 
জয়নগরেও সূর্যমূর্তি পাওয়া গেছে; মথুরাপুরে ভূমিস্পর্শমুদ্রাযুক্ত একটি ভাঙা বুদ্ধমূর্তি এবং সূর্যমূর্তি পাওয়া গেছে। মথুরাপুরের দুই মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে ঘটেশ্বর গ্রামে বিংশ শতকের প্রথম দিকে পুকুর খননের সময় তিনটি জৈনমূর্তি পাওয়া যায়, তার মধ্যে একটি মূর্তি কুসংস্কারবশত জলে ফেলে দেওয়া হয়, একটি বেদখল হয়ে যায়, আর একটি মজিলপুরের কালিদাস দত্ত নিজের সংগ্রহে নিয়ে এসে রাখেন। কাঁটাবেনিয়া গ্রামেও অনুরূপ বিষ্ণুমূর্তি, বাসুদেবমূর্তি, গণেশমূর্তি, মন্দিরের দ্বারফলক, বড় বড় প্রস্তরস্তম্ভ এবং একটি বৃহৎ জৈন পার্শ্বনাথের নিখুঁত মূর্তি পাওয়া গেছে, এটি বর্তমানে বিশালাক্ষি দেবীর সঙ্গে গ্রামদেবতা 'পঞ্চানন'রূপে পূজিত হন।
 
জয়নগরের তিন মাইল দক্ষিণে উত্তরপাড়ার জমিদারদের একটি পুরানো কাছারিবাড়ির কাছে পুকুর সংস্কারের সময় তিনটি সুন্দর বিষ্ণুমূর্তি ও একটি দশভূজা দুর্গামূর্তি পাওয়া যায়; মূর্তিগুলো জমিদাররা তাদের উত্তরপাড়া লাইব্রেরিতে নিয়ে যান৷ ছত্রভোগে একটি কুবেরের মূর্তি, বিষ্ণু ও দশভূজা দুর্গামূর্তি, ব্রোঞ্জের গণেশ ও নৃসিংহমূর্তি পাওয়া গেছে। আটঘরা থেকে তাম্রমুদ্রা, মৃৎপাত্রের টুকরো, পোড়ামাটির মেষমূর্তি, যক্ষ্মিণীমূর্তি, শীলমোহর,তৈজসপত্র, পাথরের বিষ্ণুমূর্তি ইত্যাদি মিলেছে।
 
১৮৬০-এর দশকে মথুরাপুর থানার মধ্যে, লট নং ১১৬, পুরানো আদিগঙ্গার খাত থেকে এখানকার গভীর জঙ্গল পরিস্কারের সময় 'জটার দেউল' নামে একটি মন্দির আবিষ্কৃত হয়। অনেকের মতে, এখানে জটাধারী নামে এক শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠিত ছিল; আবার কারোর মতে, জটাধারী বড় বড় বাঘ এখানে ঘুরে বেড়াত। অধিকাংশ প্রত্নতত্ত্ববিদদের মতে, জটার দেউলের স্থাপত্যশৈলীর সাথে ভুবনেশ্বরের দেউল স্থাপত্যের মিল আছে এবং সেদিক থেকে ও অন্যান্য আবিষ্কৃত নিদর্শন বিচার করে এর নির্মাণকাল আনুমানিক দ্বাদশ শতাব্দী।
 
১৯১৮ সালে জঙ্গল সাফ করার সময় জটার দেউলের ছ'মাইল দূরে দেউলবাড়ি নামক স্থানে (লট নং ১২২) এই ধরনের আরও একটি মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায় (এখন বিলুপ্ত)। এই স্থানের আধমাইল পূর্বে কমবেশি একবিঘা পর্যন্ত বিস্তৃত একটি অট্টালিকার ধ্বংসাবশেষ দেখা গিয়েছিল। ১৯২১-২২ সালে জটার দেউলের বারো-তেরো মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে জগদ্দল গাঙের কাছে আরও একটি মন্দিরের অবশেষের হদিশ মিলেছিল। মাটি খোঁড়ার সময় এখানে (বনশ্যামনগর) ইটের ঘর, প্রচুর ইট মৃৎপাত্রের টুকরো এবং মানুষের অস্থি-কঙ্কাল ইত্যাদি পাওয়া যায়।
 
এর আটমাইল উত্তর-পশ্চিমে (লট নং ১১৪) এসময় জঙ্গলের মধ্যে বেশ একটি বড় ইটের স্তুপ খুঁড়ে নিচে একটি মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়, গর্ভগৃহ ছাড়া এই মন্দিরের আর কোন অংশের চিহ্ন ছিল না। খননকালে চারটি বিষ্ণুমূর্তি (একটি ৪ ফুট উঁচু, দুটি ৩ ফুট ৪ ইঞ্চি এবং আরেকটি ৩ ফুট ২ ইঞ্চি উঁচু) ও একটি নটরাজমূর্তি (মূর্তিটি ৩ ফুট ১ ইঞ্চি উঁচু, দশহাতযুক্ত; গলায় আজানুলম্বিত একটি মালা আছে, মালার নিচে দশটি নরমুণ্ড ঝোলানো।)। এছাড়া, পাথরপ্রতিমা, রাক্ষসখালি প্রভৃতি অঞ্চলেও অষ্টধাতুর বুদ্ধমূর্তি , অন্যান্য পাথর ও পোড়ামাটির মূর্তি আবিষ্কৃত হয়েছে।<ref name=Ghosh>ঘোষ, বিনয়, "পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি", তৃতীয় খন্ড, প্রথম সংস্করণ, প্রকাশ ভবন, পৃষ্ঠা: ১৫২-১৫৫</ref>
 
== প্রশাসনিক বিভাগ ==
৮০ ⟶ ৯৫ নং লাইন:
== কৃষি ==
== শিল্প ==
*কাকদ্বীপ
*সাগর দ্বীপ
sagardwip
 
== দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার কৃতি সন্তান ==