ভো নগুয়েন গিয়াপ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
WikitanvirBot (আলোচনা | অবদান)
বট বানান ঠিক করছে, কোনো সমস্যায় তানভিরের আলাপ পাতায় বার্তা রাখুন
তথ্যাদি
ট্যাগ: দৃশ্যমান সম্পাদনা মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
৪০ নং লাইন:
 
== প্রাথমিক জীবন ==
তিনি কুয়াং বিন প্রদেশে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ভো নঘিয়েম এবং মাতার নাম নগুয়েন থি কিয়েন। গিয়াপের বাবা ছিলেন একজন নিম্নপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা এবং দেশপ্রেমিক। গিয়াপের বাবা ১৮৮৫ সালে ও ১৮৮৮ সালে ফরাশীদের বিপক্ষে আন্দোলন করেন। ১৯১৯ সালে ফরাশী উপনেবিশের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য গিয়াপের বাবাকে গ্রেফতার করে ফ্রান্স। গ্রেফতারের কয়েক সপ্তাহ পরে কারাগারে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। গিয়াপ ছিলেন দুইবোনের এক ভাই। বাবার মৃত্যুর পর নগুয়েনের এক বোনকেও গ্রেফতার করা হয়। তবে তার বোন বেশীদিন কারাগারে ছিলেন না। কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়ায় বোনকে মুক্তি দেয়া হয়। মুক্তির কয়েক সপ্তাহ পর গিয়াপের বোন মারা যান। নিজের ১০ বছর বয়সের আগেই পরিবারের দুজন সদস্যের মৃত্যু দেখেন নগুয়েন গিয়াপ। গ্রামের বিদ্যালয়ে যাওয়ার আগে বাবার কাছে পড়াশোনা করতেন নগুয়েন। তুখোড় বুদ্ধিমত্তার কারণে ১৯২৪ সালে তাকে জেলা স্কুলে পাঠানো হয়। মাত্র ১৩ বছর বয়সে বাড়ি ত্যাগ করে ন্যাশনাল অ্যাকাডেমিতে যোগ দেন তিনি। এই স্কুলটি চালাতেন নগো দিন খা নামের একজন ক্যাথলিক। নগো দিন খার ছেলে নগো দিন ডিয়েমও একই স্কুলে পড়তেন। পরবর্তীতে (১৯৫৫-৬৩) সময়কাল পর্যন্ত দক্ষিণ ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট ছিলেন ডিয়েম। ন্যাশনাল অ্যাকাডেমিতে আরেকজন শিক্ষার্থী ছিলেন, যার নাম নগুয়েন সিন চুং। তিনিও ছিলেন এক সরকারি কর্মকর্তার পুত্র। ১৯৪৩ সালে নগুয়েন সিন চুং নিজের নাম পাল্টে রাখেন হো চি মিন। ১৪ বছর বয়সে হাইফং পাওয়ার কোম্পানিতে বার্তাবাহকের কাজ করতেন নগুয়েন। স্কুলে ২ বছর কাটানোর পর আন্দোলন করার কারণে বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত হন তিনি।

== তারপরবিপ্লবী বাড়িআন্দোলন ফেরেন==
স্কুল নগুয়েনথেকে গিয়াপ।বহিষ্কৃত ঘরেহয়ে ফিরেতিনি যোগ দেন ভিয়েতনামের একটি বিপ্লবী দলে। বিপ্লবী দলটি ছিলো চরমপন্থীয় বিশ্বাসী এবং ১৯২৪ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই বিপ্লবী সংগঠনই নগুয়েনকে [[সমাজতন্ত্র|সমাজতন্ত্রের]] সৈনিক হিসেবে গড়ে তোলে। ১৯৩০ সালে ছাত্র বিক্ষোভে যোগ দেয়ার কারণে গ্রেফতার হন গিয়াপ এবং লো বাও কারাগারে ২ বছরের সাজার মেয়াদে ১৩ মাস জেল খেটে মুক্তি পান। গিয়াপের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত প্রমাণ না পাওযায় মেয়াদ শেষের আগে তাকে মুক্তি দেয়া হয়। ১৯৩১ সালে ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন গিয়াপ। দলে যোগ দেয়ার পরপরই ফরাশীদের বিপক্ষে অসংখ্য প্রতিবাদ কর্মসূচীতে অংশ নেন এবং ১৯৩৩ সালে ডেম্যোক্র্যাটিক ফ্রন্ট তৈরীতে কাজ করেন। গিয়াপ ১৯৩৩ থেকে ১৯৩৮ পর্যন্ত হানুই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন এবং রাজনীতি-অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেনকরেন।
 
== কর্মজীবন ==
১৯৩৮ সালে তিনি হো চি মিনের নেতৃত্বাধীন ইন্দোচীন কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যপদ পান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর আগে জাপানি আগ্রাসনের মুখে নেতা হো চি মিনের সঙ্গে তিনি প্রতিবেশী রাষ্ট্র চীনে চলে যান। চীনে থাকাকালে গিয়াপ শরণার্থী ভিয়েতনামীদের নিয়ে ভিয়েত মিন নামে একটি সেনাদল গঠন করেন। নবগঠিত ভিয়েত মিন সেনাদের নিয়ে তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং দখলদার জাপানিদের বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ শুরু করেন। তিনি চীনে থাকার সময় ফরাসি ঔপনিবেশিক কর্তৃপক্ষ তাঁর স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে। এরপর তাঁর স্ত্রী কারাগারেই মারা যান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানিরা পরাজিত হওয়ার পর ফরাসি ঔপনিবেশিক শক্তির সঙ্গে ভিয়েতনামীদের লড়াই শুরু হয়। যার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয় দিয়েন বিয়েন ফুতে।<ref name="ReferenceA">সাপ্তাহিক একতা; বর্ষ - ৪৩, সংখ্যা ১০; ১৩ অক্টোবর ২০১৩।</ref> তার অংশগ্রহণ করা অনেকগুলো যুদ্ধের মধ্যে রয়েছে ১৯৫৪ সালের বিখ্যাত এই [[দিয়েন বিয়েন ফু]] গেরিলা যুদ্ধ অন্যতম, যেটি ফরাসীদেরকে ঐ অঞ্চল থেকে পাততাড়ি গুটিয়ে সটকে পড়তে বাধ্য করে। ভিয়েতনাম স্বাধীন হয় দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে। কমিউনিস্ট শাসিত উত্তর ভিয়েতনাম, আর যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনপুষ্ট দক্ষিণ ভিয়েতনাম। দক্ষিণ ভিয়েতনামে কমিউনিস্ট বিদ্রোহ দেখা দিলে যুক্তরাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করে। এর ফলে শুরু হয় ইতিহাসখ্যাত ১৯৫৪ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত দীর্ঘমেয়াদী ভিয়েতনাম যুদ্ধ; ভিয়েতনামবাসী যেটাকে বলেন আমেরিকান যুদ্ধ। এ যুদ্ধেও সামনে থেকে ভিয়েতনামকে নেতৃত্ব দেন জেনারেল গিয়াপ। ১৯৬৮ সালে তার পরিকল্পনায় পরিচালিত হয় টেট আক্রমণ। পরিকল্পনা অনুযায়ী কমিউনিস্ট বাহিনী মার্কিন অধিকৃত দক্ষিণ ভিয়েতনামের ৪০টি প্রাদেশিক রাজধানী আক্রমণ করে দক্ষিণ ভিয়েতনামের রাজধানী সায়গনে প্রবেশ করে। এসময় কমিউনিস্ট বাহিনী অল্প সময়ের জন্য যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসও দখল করে রাখে। এই বিপর্যয়ের পর ভিয়েতনামে প্রবল পরাক্রান্ত মার্কিন বাহিনীর পরাজয় আসন্ন হয়ে ওঠে। পরবর্তীতে ১৯৭৩ সালে মার্কিন বাহিনী দক্ষিণ ভিয়েতনাম ছেড়ে যায়।<ref name="ReferenceA"/> যুদ্ধ দুটি ছিল তার ও তার সঙ্গীদেরকে বিশ্ব ইতিহাসে আগামী বহুকাল যাবত মহান বীরের মর্যাদাদানকারী হিসাবে শ্রেষ্ঠ বীরত্বপূর্ণ। ১৯৭৬ সালে তাকে ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। তিনি ১৯৮২ সালে দায়িত্ব থেকে অবসর নেন। ২০০৫ সালে সায়গন পতনের ৩০তম বার্ষিকীতে এসোসিয়েটেড প্রেসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে গিয়াপ বলেন; "''সাম্রাজ্যবাদের কবল থেকে জাতীয় মুক্তির লড়াইয়ে এত ভয়ঙ্কর ও ক্ষয়ক্ষতিসম্পন্ন আর কোন যুদ্ধ ইতিহাসে নেই। তথাপি আমরা এখনো যুদ্ধ করে চলেছি আমাদের ভিয়েতনামের জন্য, মুক্তি এবং স্বাধীনতার চেয়ে বড় এবং মূল্যবান আর কিছু নেই।নেই''।" গিয়াপের রণকৌশল, বুদ্ধিমত্তা এবং নেতৃত্বদানের অভূতপূর্ব ক্ষমতা মার্কিন সমরনায়ক শুধু নয় সারা পৃথিবীকেই বিস্মিত করেছিল।
 
== রচিত গ্রন্থ ==
নগুয়েন গিয়াপ তার অভিজ্ঞতা সম্বলিত একটি বই রচনা করেন যার নাম 'জনযুদ্ধ ও গনফৌজ'।
 
== তথ্যসূত্র ==