বংশগতি: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Sarker Kawshik Ahmed (আলোচনা | অবদান)
RockyMasum (আলোচনা | অবদান)
রচনাশৈলী
১ নং লাইন:
 
[[চিত্র:A-B-Z-DNA Side View.png|থাম্ব|বংশগতিবস্তু ( ডি.এন.এ)]]
[[চিত্র:Condensed Eukaryotic Chromosome.png|থাম্ব|বংশগতিবস্তু ( ক্রোমোসোম)]]
'''বংশগতি''' হল বাবা-মা হতে সন্তান-সন্ততিতে জীনগত বৈশিষ্ট স্থানান্তরিত হওয়া যার মাধ্যমে বাবা-মায়ের সাথে সন্তানের অনেক সামঞ্জস্যতা দেখা যায়। জীবের বংশগতি নিয়ে যে শাখায় আলোচনা করা হয় তাকে বলা হয় জেনেটিক্স বা বংশগতিবিদ্যা।মানবদেহে আমরা সবসময় দেখি যে সন্তানের চেহারা বাবা/মায়ের মত হয় ,বা বাবার মত ছেলেমেয়ের চুল,নাক বা শরীরের অন্য যে কোন অংশ বাবা-মা/দাদা-দাদির সাথে মিলে যায়।বংশগতির জন্যই এমনটা হয়ে থাকে।স্বকীয় বৈশিস্ট্যগুলি পরবর্তী প্রজন্মে প্রায় অবিকলভাবে স্থানান্তরিত হয়ে থাকে।এই কারনেই বংশানুক্রমে প্রজাতির বৈশিস্ট্য বজায় থাকে।
'''==বংশগতির উপাদান''' :==
বংশগতির এই ধারা নিয়ন্ত্রিত হয় জীন দ্বারা। কোন প্রজাতির জিনোমে (জিনোম হল যেখানে বংশগতির উপাদান থাকে, যেমন ক্রোমোসোম/ ডি.এন.এ) বিভিন্ন বৈশিস্টের জীন থাকে।মাতাপিতার বৈশিস্ট্যাবলি তাদের সন্তানসন্ততিতে এসব উপাদানের মাধ্যমে সঞ্চারিত হয় বলে এসব কে বলে বংশগতিবস্তু।
 
;ক্রোমোসোম
'''ক্রোমোসোম''' বংশগতির প্রধান উপাদান হল ক্রোমোসোমক্রোমোসোম। ।বিজ্ঞানীবিজ্ঞানী স্ট্রাসবুরগার ১৮৭৫ সালে সর্বপ্রথম এটি আবিস্কার করেন। এটি কোষের নিউক্লিয়াসের নিউক্লিওপ্লাজমে পাওয়া যায় এবং ক্রোমাটিন তন্তু দ্বারা গঠিত।প্রজাতির বৈশিস্ট্যভেদে ২-১৬০০ পর্যন্ত ক্রোমোসোম পাওয়া যায়। সাধারনত দৈর্ঘ্য ৩.৫ থেকে ৩০ মাইক্রন এবং প্রস্থ ০.২-২.০ মাইক্রন হয়ে থাকে (১ মাইক্রন=১/১০০০ মিমি)।ক্রোমোসমের কাজ হল মাতা-পিতা থেকে জীন সন্তানসন্তুতিতে বহন করা।
 
ক্রমোসোম হল ডি.এন.এ এর প্যাকেজ আকার যেখানে ডি.এন.এ সুস্থিত অবস্থায় থাকে।মানুষের দেহে ৪৬ টি ক্রমোসোম পাওয়া যায় যার মধ্যে ৪ টি অটোসোম এবং বাকি ২ টি সেক্স ক্রোমোসোম।দুটি ক্রোমাটিন জালিকা মিলিত হয়ে দিসুত্রক ক্রমোসোম গঠন করে। ক্রোমোসমের যে স্থানে দুটি ক্রোমাটিন জালিকা মিলিত হয় তাকে সেন্ট্রমিয়ার বলে।প্রায় প্রতি কোষে ক্রোমাটিন থাকে কিন্তু কিছু ব্যতিক্রম যেমন, লোহিত রক্তকণিকায় ক্রোমাটিন থাকে না।
 
;ডি.এন.এ (DNA)
'''ডি.এন.এ (DNA)''' ডি.এন.এ (DNA) হল ডিওক্সিরাইবো নিউক্লিক এসিড (Deoxyribo Nucleic Acid).প্রায় সকল প্রাণী,উদ্ভিদ,প্রোক্যারিওটে ডি.এন.এ পাওয়া যায়। ইউক্যারিওট এ ডি.এন.এ সাধারণত নিওক্লিয়াসে পাওয়া যায় ( কিছু ডি.এন.এ মাইটকন্ডিয়া এবং ক্লোরোপ্লাস্টে পাওয়া যায়)। এটি সাধারণত দ্বিসুত্রক পলিনিউক্লিওটাইড এর সর্পিলাকার গঠন।এর একটি সুত্র অন্যটির বিপরীত ও পরিপূরক।এর একটি সুত্রক ৩'-৫' এবং অন্যটি ৫'-৩' পর্যন্ত বিস্তৃত। এতে পাঁচ কার্বন বিশিষ্ট শর্করা,নাইট্রোজেন বেস, ও অজৈব ফসফেট দ্বারা গঠিত। নাইট্রোজেন বেস ২ প্রকার, পিউরিন ও পাইরিমিডিন। এডিনিন(A) ও গুয়ানিন(G) বেস হল পিউরিন থায়মিন(T) ও সাইটোসিন(C) হল পাইরিমিডিন। একটি সুত্রের এডিনিন অন্য সুত্রের থাইমিন এর সাথে ২ টি হাইড্রোজেন বন্ড দ্বারা যুক্ত এবং একটি সুত্রের গুয়ানিন অন্য সুত্রের সাইটোসিনের সাথে ৩ টি হাইড্রোজেন বন্ড দ্বারা যুক্ত।১৯৫৩ সালে ওয়াটসন ও ক্রিক সর্বপ্রথম ডি.এন.এ (DNA) এর দ্বি সুত্রক কাঠামো এর বর্ণনা দেন।হেলিক্সের প্রতিটি পূর্ণ ঘূর্ণন ৩৪ Å
|থাম্ব|[[চিত্র:DNA replication split.svg|থাম্ব|ডি.এন.এ অনুলিপন]]
 
;ডি.এন.এ অনুলিপন (DNA Replication)
'''ডি.এন.এ (DNA)''' ডি.এন.এ (DNA) হল ডিওক্সিরাইবো নিউক্লিক এসিড (Deoxyribo Nucleic Acid).প্রায় সকল প্রাণী,উদ্ভিদ,প্রোক্যারিওটে ডি.এন.এ পাওয়া যায়। ইউক্যারিওট এ ডি.এন.এ সাধারণত নিওক্লিয়াসে পাওয়া যায় ( কিছু ডি.এন.এ মাইটকন্ডিয়া এবং ক্লোরোপ্লাস্টে পাওয়া যায়)। এটি সাধারণত দ্বিসুত্রক পলিনিউক্লিওটাইড এর সর্পিলাকার গঠন।এর একটি সুত্র অন্যটির বিপরীত ও পরিপূরক।এর একটি সুত্রক ৩'-৫' এবং অন্যটি ৫'-৩' পর্যন্ত বিস্তৃত। এতে পাঁচ কার্বন বিশিষ্ট শর্করা,নাইট্রোজেন বেস, ও অজৈব ফসফেট দ্বারা গঠিত। নাইট্রোজেন বেস ২ প্রকার, পিউরিন ও পাইরিমিডিন। এডিনিন(A) ও গুয়ানিন(G) বেস হল পিউরিন থায়মিন(T) ও সাইটোসিন(C) হল পাইরিমিডিন। একটি সুত্রের এডিনিন অন্য সুত্রের থাইমিন এর সাথে ২ টি হাইড্রোজেন বন্ড দ্বারা যুক্ত এবং একটি সুত্রের গুয়ানিন অন্য সুত্রের সাইটোসিনের সাথে ৩ টি হাইড্রোজেন বন্ড দ্বারা যুক্ত।১৯৫৩ সালে ওয়াটসন ও ক্রিক সর্বপ্রথম ডি.এন.এ (DNA) এর দ্বি সুত্রক কাঠামো এর বর্ণনা দেন।হেলিক্সের প্রতিটি পূর্ণ ঘূর্ণন ৩৪ Å
'''ডি.এন.এ অনুলিপন (DNA Replication)''' এই প্রক্রিয়ায় একটি DNA অনু থেকে আর একটি নতুন DNA অনু তৈরি হয়। DNA অর্ধ-রক্ষণশীল পদ্ধতিতে অনুলিপিত হয়। মাতৃ DNA এর একটি সুত্রে সাথে নতুন একটি সুত্র যুক্ত হয়ে নতুন দ্বি-সুত্রক DNA তৈরি হয় বলে একে অর্ধ-রক্ষণশীল বলে। এই পদ্ধতিতে DNA সূত্র দুটির হাইড্রোজেন বন্ধন ভেঙ্গে গিয়ে আলাদা হয় এবং তাদের পরিপূরক সূত্র তৈরি হয়। ১৯৫৬ সালে ওয়াটসন ও ক্রিক এ ধরনের ডি.এন.এ অনুলিপন পদ্ধতি বর্ণনা করেন।
|থাম্ব|[[চিত্র:DNA replication split.svg|থাম্ব|ডি.এন.এ অনুলিপন]]
 
;আর.এন.এ (RNA)
'''ডি.এন.এ অনুলিপন (DNA Replication)''' এই প্রক্রিয়ায় একটি DNA অনু থেকে আর একটি নতুন DNA অনু তৈরি হয়। DNA অর্ধ-রক্ষণশীল পদ্ধতিতে অনুলিপিত হয়। মাতৃ DNA এর একটি সুত্রে সাথে নতুন একটি সুত্র যুক্ত হয়ে নতুন দ্বি-সুত্রক DNA তৈরি হয় বলে একে অর্ধ-রক্ষণশীল বলে। এই পদ্ধতিতে DNA সূত্র দুটির হাইড্রোজেন বন্ধন ভেঙ্গে গিয়ে আলাদা হয় এবং তাদের পরিপূরক সূত্র তৈরি হয়। ১৯৫৬ সালে ওয়াটসন ও ক্রিক এ ধরনের ডি.এন.এ অনুলিপন পদ্ধতি বর্ণনা করেন।
'''আর.এন.এ (RNA)''' আর.এন.এ (RNA) হল রাইবোনিউক্লিক এসিড। সাধারণত RNA হল একসুত্রক, কিন্তু কিছু ব্যতিক্রম ভাইরাস যেমনঃ TMV, Yellow Mosaic Virus,Influenza Vairas হল দ্বিসুত্রক।এতে পাঁচ কার্বন বিশিষ্ট রাইবোজ শর্করা,অজৈব ফসফেট, ও নাইট্রোজেন বেস (এডিনিন, গুয়ানিন, সাইটোসিন ও ইউরাসিল) থাকে। RNA তে থায়ামিন থাকে না এর পরিবর্তে ইউরাসিল থাকে।
 
''';জিন''' জীবের সকল বৈশিস্ট্য নিয়ন্ত্রণকারী এককের নাম জিন।এর অবস্থান ডি.এন.এ তে। ডি.এন.এ এর যে অংশটুকু প্রোটিন তৈরি করতে পারে তাকে জিন বলে।সাধারণত একটি বৈশিষ্টের জন্য একটি জিন থাকে।১৯০৯ সালে ডব্লিউ. জোহান্সন সর্বপ্রথম 'জিন' শব্দটি ব্যবহার করেন।বিভিন্ন জীবে জিনের সংখ্যা বিভিন্ন। তবে একই প্রকৃতির জীবে তা সাধারণত একই থাকে। মাতাপিতা থেকে প্রথম জেনারেশনে (F1) যে বৈশিষ্ট প্রকাশ পায় তাকে প্রকট(Dominant) বৈশিষ্ট এবং এই বৈশিষ্ট প্রকাশে দায়ী জিনকে প্রকট জিন বলে। তবে ২য় জেনারেশনে (F2) এক চতুর্থাংশ জীবে প্রচ্ছন্ন ( Recessive) বৈশিষ্ট প্রকাশ পায়।
 
'''আর.এন.এ (RNA)''' আর.এন.এ (RNA) হল রাইবোনিউক্লিক এসিড। সাধারণত RNA হল একসুত্রক, কিন্তু কিছু ব্যতিক্রম ভাইরাস যেমনঃ TMV,Yellow Mosaic Virus,Influenza Vairas হল দ্বিসুত্রক।এতে পাঁচ কার্বন বিশিষ্ট রাইবোজ শর্করা,অজৈব ফসফেট, ও নাইট্রোজেন বেস (এডিনিন, গুয়ানিন, সাইটোসিন ও ইউরাসিল) থাকে। RNA তে থায়ামিন থাকে না এর পরিবর্তে ইউরাসিল থাকে।
 
 
 
 
'''জিন''' জীবের সকল বৈশিস্ট্য নিয়ন্ত্রণকারী এককের নাম জিন।এর অবস্থান ডি.এন.এ তে। ডি.এন.এ এর যে অংশটুকু প্রোটিন তৈরি করতে পারে তাকে জিন বলে।সাধারণত একটি বৈশিষ্টের জন্য একটি জিন থাকে।১৯০৯ সালে ডব্লিউ. জোহান্সন সর্বপ্রথম 'জিন' শব্দটি ব্যবহার করেন।বিভিন্ন জীবে জিনের সংখ্যা বিভিন্ন। তবে একই প্রকৃতির জীবে তা সাধারণত একই থাকে। মাতাপিতা থেকে প্রথম জেনারেশনে (F1) যে বৈশিষ্ট প্রকাশ পায় তাকে প্রকট(Dominant) বৈশিষ্ট এবং এই বৈশিষ্ট প্রকাশে দায়ী জিনকে প্রকট জিন বলে। তবে ২য় জেনারেশনে (F2) এক চতুর্থাংশ জীবে প্রচ্ছন্ন ( Recessive) বৈশিষ্ট প্রকাশ পায়।
 
==মেন্ডেলের বংশগতি সূত্র ==
৩১ ⟶ ২৮ নং লাইন:
 
=== মেন্ডেলের প্রথম সূত্র === মেন্ডেলের প্রথম সূত্রটি ‘পৃথকীভবনের সূত্র (Law of Segregation) নামে পরিচিত । এই সূত্রানুযায়ী “কোনও জীবের একজোড়া বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্য একটি জনু থেকে আর একটি জনুতে [অপত্য] সঞ্চারিত হওয়ার সময় একত্রিত হলেও এরা [বৈশিষ্ট্যগুলি বা অ্যালিলগুলি] কখনও মিশ্রিত হয় না, বরং গ্যামেট গঠনকালে বিপরীতধর্মী অ্যালিল দুটি পরস্পর পৃথক হয়ে যায় ।”
 
 
=== মেন্ডেলের দ্বিতীয় সূত্র === মেন্ডেলের দ্বিতীয় সূত্রটি ‘স্বাধীন বন্টনের সূত্র’ (Law of Independence Assortment) নামে পরিচিত । এই সূত্রানুযায়ী “কোনও জীবের দুই বা ততোধিক যুগ্ম বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্য জনিতৃ হতে অপত্য জনুতে সঞ্চারিত হওয়ার সময় একত্রিত হলেও শুধুমাত্র গ্যামেট গঠনকালে যে এরা পরস্পর পৃথক হয় তাই নয়, উপরন্তু প্রত্যেকটি বৈশিষ্ট্য স্বাধীনভাবে যে-কোনও বিপরীত বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে সম্ভাব্য সমস্ত ধরনের সমন্বয়ে সঞ্চারিত হয় ।”
৩৯ ⟶ ৩৪ নং লাইন:
 
==তথ্যসূত্র==
 
{{Reflist}}