কামালপুর যুদ্ধ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
ট্যাগ যোগ/বাতিল
FerdousBot (আলোচনা | অবদান)
বানান, replaced: কারন → কারণ (4)
৪১ নং লাইন:
==প্রেক্ষাপট==
পুরাতন [[ব্রহ্মপুত্র নদ|ব্রহ্মপুত্র নদের]] তীরে এবং [[জামালপুর সদর উপজেলা|জামালপুর]] হয়ে [[ময়মনসিংহ (শহর)|ময়মনসিংহ]] সড়ক সংযোগে [[কমলপুর|কমলপুর]] ছিল অন্যতম শক্ত সীমান্ত ফাঁড়ি। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ওয়ার ম্যাপে বৃহত্তর টাংগাইল এবং ময়মনসিংহের দায়িত্বে ছিল মেজর জেনারেল জামশেদের ৩৬ অ্যাডহক ডিভিশন। ১৮৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই এলাকাটিতে ২ টি রাস্তা ছিলো ঢাকার দিকে মুক্তিবাহিনীর অগ্রসর হওয়ার। একটি হালুয়াঘাট-ময়মনসিংহ হয়ে , অন্যটি কামালপুর-জামালপুর দিয়ে। এটি আটকানোর দায়িত্বে ছিলো ব্রিগেডিয়ার কাদিরের পাক আর্মির ৯৩ ব্রিগেড- যার দুটি রেজিমেন্ট যথাক্রমে : ৩৩ পান্জ্ঞাব এবং ৩১ বালুচ। ৩৩ পান্জ্ঞাব অবস্থান নিয়েছিলো হালুয়াঘাটে আর ৩১ বালুচ অবস্থান নিয়েছিলো কামালপুর, নকশী আর বারোমারিতে। <br />
কামালপুরে ৩১ বালুচের সাথে ছিলো ইস্ট পাকিস্তান সিভিল আর্মড ফোর্স আর আর ১ প্লাটুন রাজাকার। কামালপুর বিওপি(বর্ডার আউট পোষ্ট) এর সিও ছিলো ক্যাপটেন আহসান মালিক। প্রচুর শক্তিশালী অস্ত্র আর গোলাবারুদের পাশাপাশি ৮১ মি.মি. ৩ টি মর্টার ছিলো কামালপুর বিওপিতে। <ref>{{বই উদ্ধৃতি|author1=মেজর সিদ্দিক সালিক|title=উইটনেস টু সারেন্ডার|publisher=ইউনিভার্সিটি প্রেস|isbn=9840513745|pages=১৮১-১৮২|accessdate=15 জানুয়ারি 2017}}</ref>
সেখানে ছিল গোলা-নিরোধী ছাদ বিশিষ্ট কংক্রিট বাংকার/পরিখা যেগুলি প্রতিটি গভীর নালার মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ ও সাহায্য বিনিময়ে সক্ষম, নিরাপত্তার বেষ্টনী হিসাবে ছিল স্ব-নিয়ন্ত্রিত ফাঁদ ও ভূমিবিস্ফোরক এবং অন্ধকারের সময় পাকিস্তানের সৈন্যরা একেবারে ভিতরের নিরাপদ স্তরে ঢুকে যেত। <ref name="ডেইলি স্টার_০২">{{cite web|author=|url=http://archive.thedailystar.net/newDesign/news-details.php?nid=115138 |title=সিগনিফিকেন্স অব আর্মড ফোর্সেস ডে|publisher=ডেইলিস্টার আর্কাইভ|date=2009-11-23 |accessdate=2013-05-19}}</ref>
==প্রস্তুতি==
১৯৭১ সালের ৩১শে জুলাই দিবাগত রাত্রে (১লা অগাস্ট রাত) [[জিয়াউর রহমান]] এর নির্দেশ মোতাবেক মেজর মইনুল হোসেন এর নেতৃত্বে উত্তর ও পূর্ব দিক থেকে ডেল্টা এবং ব্রাভো শত্রুপক্ষের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। মেজর মইন এতোদ্রুত এমন মিশনে রাজী ছিলেননা, তার মতে কামালপুরের মত যথেষ্ট শক্তিশালী পাকিস্তানী ঘাটিতে সেটপিস যুদ্ধের মাধ্যমে আক্রমন করার সক্ষমতা জেড ফোর্সের বা তার ব্যাটালিয়নের নেই।মেজর মইনের প্ল্যান ছিলো হিট অ্যান্ড রান গেরিলা পদ্ধতিতে পাকিস্তান ফোর্সকে দুর্বল এবং নাজেহাল করা। কিন্তু জিয়া সিদ্ধান্ত পাল্টালেন না যার মূল কারনকারণ ছিল হাইকমান্ডের নির্দেশ এবং ঘাঁটিটির স্ট্রাটেজিক গুরুত্ব। মেজর মইনের ১ম বেংগল ব্যাটালিয়নে সৈন্য ছিলো সর্বসাকুল্যে ৮৫০ জন। জেড ফোর্সের ১ম সম্মুখ সমর কামালপুর অপারেশনে [[জিয়াউর রহমান]] নিজে উপস্থিত ছিলেন যুদ্ধ সমন্বয় করার জন্য।
<ref name="ব্লগস্পট">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|title=১৯৭১, জেড ফোর্সের মুক্তিযুদ্ধ : জিয়া-শাফায়াত-মইন-আমিনুলদের যুদ্ধ দিনের গল্প জানুন ছবি আর বর্ননায়| url=http://muktijuddhergolpo.blogspot.com/2012/09/blog-post_1723.html| website=গুগল ব্লগস্পট| accessdate=14 জানুয়ারি 2017}}</ref>
==যুদ্ধের বিবরণ==
'''৩১ জুলাই রাত ৩:০০''' এর দিকে জিয়া এবং মেজর মইন ১ম বেংগল ব্যাটালিয়ন নিয়ে পাকিস্তান আর্মির ঘাঁটি থেকে প্রায় ১১০০-১২০০ গজ দুরে অবস্থান নেন (সেদিনরাতে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিলো।)।
৬২ নং লাইন:
অন্যদিকে ২ টি ১২০ মি. মি. মর্টার আর বেশকিছু সেনা সহ বকশীগন্জ্ঞ থেকে কামালপুরের দিকে আসতে থাকা ৩ টি লরী উড়ে যায় কাট অফ পার্টির পুতে রাখা মাইনে। তাদের অ্যামবুশে ১০ জন পাকসেনা নিহত এবং ১০-১১ জন আহত হয়। ১ মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন , ২/৩ জন আহত হন।
==ফলাফল==
যুদ্ধোত্তর বিশ্লেষণে মুলত ৪টি কারনকারণ প্রতীয়মান হয় পরাজয়ের কারনকারণ হিসাবেঃ
# ২৮ জুলাই সন্ধ্যায় রেকী করার সময় ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিন মমতাজ , লে: মান্নান , সুবেদার আবদুল হাই , সুবেদার হাশেম , নায়েক শফি ভুলে কামালপুর বিওপির অবজার্ভেশন পোস্টে ঢুকে পড়েন এবং ২ জন পাকিস্তানী সেনার সামনে পড়ে যান। ২ জনকেই মেরে ফেললেও সেটাই বিপদ বাড়িয়ে দেয়। ৩১ বালুচ সতর্ক হয়ে যায়। এর জের ধরে ২৯ জুলাই স্বয়ং লে: জে: নিয়াজী কামালপুরে আসেন। বলাই বাহুল্য এর ফলে তারা সেনাসংখ্যা এবং গোলাবারুদ প্রচুর বাড়িয়েছিলো যা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে মেজর মইন তীব্রভাবে টের পান।
# ভারতীয় সেনাবাহিনী যে ওয়ারলেস সেট গুলো দিয়েছিলো জেড ফোর্সকে সেগুলো নিম্নমানের এবং ত্রুটিপূর্ন ছিলো বলে মেজর মইন জেনারেল মানেকশ কে অভিযোগ করেছিলেন। মেজর মইনের মতে ক্যাপ্টেন মাহবুবকে সময় মত ওয়ারলেসে কমান্ড করতে পারলে ক্ষয়ক্ষতি অনেক কম হতো এবং শত্রুপক্ষের ক্যাসুয়ালটি আরো বেশী হতো। অতি দরকারের সময় ওয়ারলেস কাজ না করা ছিলো খাঁড়ার উপর মড়ার ঘা।
# যুদ্ধের সেই সময়টায় মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিলো এবং আগের কয়েকদিন বৃষ্টি হওয়ায় পাটক্ষেতে ১ ফুট পানি জমে গিয়েছিলো। এ ধরনের যুদ্ধে ক্রলিং এবং কুইক মুভের যে প্রয়োজন হয় তার বিপরীতে এই ব্যাপারটাকে "ক্রুশাল লুজিং ফ্যাক্টর" হিসেবে বিবেচনা করেছেন মেজর মইন।
# কামালপুর যুদ্ধে ঘোর অন্ধকার আর মুষলধারে বৃষ্টির কারনেকারণে যু্দ্ধ প্রায় মিনিট ৩০ দেরীতে শুরু হয়। কিন্তু এদিকে জেড ফোর্সের প্রিএইচ আওয়ার বোমা গুলোও বিস্ফোরিত হতে থাকে । ফলে নিজেদের বোমাতেও ১ম বেংগল ধরাশায়ী হয়েছিলো সে রাতে।
 
আক্রমণ থেকে প্রত্যক্ষভাবে জয় না পেলেও এই আক্রমণে ৫০ এর অধিক পাকিস্থানি সৈন্য নিহত হয় এবং তাদের মনোবলের উপর ছিল বড় ধরনের ধাক্কা একই সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্যে ছিল উৎসাহের প্রতীক।
 
এটি এতই শক্তিশালী ঘাঁটি, যে এই ঘাঁটিতে সর্বমোট ৪ বার নিয়মিত বাহিনী পর্যায়ে সরাসরি সেটপিস যুদ্ধ হয়েছে.....