মঙ্গল শোভাযাত্রা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

[অপরীক্ষিত সংশোধন][অপরীক্ষিত সংশোধন]
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সার্বিক সম্পাদনা
৮ নং লাইন:
== ইতিহাস ==
[[File:Mangal Shobhajatra in Dhaka.jpg|thumb|মোঙ্গল শোভাযাত্রায় ব্যবহৃত প্রতিকৃতি।]]
প্রতি বছর [[বাংলা নববর্ষক|বাংলা নববর্ষকে]] বরণ করে নিতে ঢাকার রমনা পার্কে [[ছায়ানট]] আয়োজিত প্রাদোষিক সঙ্গীতানুষ্ঠান এবং একে ঘিরে আয়োজিত অন্যান্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও [[মেলা]] মানুষকে নিবিড়ভাবে আকৃষ্ট করতে থাকে এবং নাগরিক আবহে সার্বজনীন [[পহেলা বৈশাখ]] উদযাপনে নতুন মাত্রা যোগ হয়৤ ১৯৮০’র দশকে স্বৈরাচারী শাসনের বিরূদ্ধে সাধারণ মানুষের ঐক্য এবং একইসঙ্গে শান্তির বিজয় ও অপশক্তির অবসান কামনায় [[ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়|ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের]] চারুকলা ইন্সটিটিউটের উদ্যোগে ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দের সর্বপ্রথম মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রবর্তন হয়।<ref>রমনার বটমূলে জাতীয় উৎসবে, নওয়াজেশ আহমদ, দৈনিক প্রথম আলো, ১৪ এপ্রিল ২০০৮</ref> সে বছরই ঢাকাবাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয় এই আনন্দ শোভাযাত্রা। সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইন্সটিটিউটের শিক্ষক শিক্ষার্থীগন পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে এই আনন্দ শোভাযাত্রা বের করার উদ্যোগ প্রতি বছর অব্যাহত রাখে৤
 
মঙ্গলশোভাযাত্রার শোভাযাত্রা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইন্সটিটিউটের উদ্যোগে ১৯৮৯ সাল থেকে শুরু হয়েছিল।<ref>রমনার বটমূলে জাতীয় উৎসবে, নওয়াজেশ আহমদ, দৈনিক প্রথম আলো, ১৪ এপ্রিল ২০০৮</ref> সে বছরই লোকজনের দৃষ্টিঅনতম আকর্ষণ করতে সক্ষম হয় এই আনন্দ শোভাযাত্রা। সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইন্সটিটিউটের শিক্ষক শিক্ষার্থীগন পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে এই আনন্দ শোভাযাত্রা বের করেন। শোভাযাত্রায় থাকে বিশালকায় চারুকর্ম পাপেটপুতুল, হাতি, কুমীর ও ঘোড়াসহ বিচিত্র মুখোশ ও সাজসজ্জাসহ বাদ্যযন্ত্র ও নৃত্য।<ref>পহেলা বৈশাখ উদযাপিত, দৈনিক ইত্তেফাক, ১৬ এপ্রিল ১৯৮৯। পৃ ৭</ref> পহেলা বৈশাখ উদযাপন উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু থেকেই জনপ্রিয়তা পেয়ে যায়। পরের বছরও চারুকলার সামনে থেকে আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়। তবে সংবাদপত্রের খবর অনুযায়ী জানা যায়, সে বছর চারুশিল্পী সংসদ নববর্ষের সকালে চারুকলা ইন্সটিটিউট থেকে বর্ণাঢ্য আনন্দ মিছিল বের করে।<ref>পহেলা বৈশাখ উদযাপিত, দৈনিক ইত্তেফাক, ১৭ এপ্রিল ১৯৯০। পৃ ২</ref> শুরু থেকেই চারুকলার শোভাযাত্রাটির নাম মঙ্গল শোভাযাত্রা ছিল না।
 
মাহবুব জামাল শামীম নামক শুরুর দিকের একজন অংশগ্রহণকারীর কাছ থেকে জানা যায় পূর্বে এর নাম ছিল বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা। সেই সময়ের সংবাদপত্রের খবর থেকেও এমনটা নিশ্চিত হওয়া যায়। সংবাদপত্র থেকে যতোটা ধারণা পাওয়া যায়, ১৯৯৬ সাল থেকে চারুকলার এই আনন্দ শোভাযাত্রা মঙ্গল শোভাযাত্রা হিসেবে নাম লাভ করে।<ref>বাঙালির বর্ষবরণ মিলন মেলায়, দৈনিক আজকের কাগজ, ১৬ এপ্রিল ১৯৯৬। পৃ ২</ref> তবে বর্ষবরণ উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রা চারুকলায় ১৯৮৯ সালে শুরু হলেও এর ইতিহাস আরো কয়েক বছরের পুরানো।
 
১৯৮৬ সালেখ্রিস্টাব্দে চারুপীঠ নামের একটি প্রতিষ্ঠান যশোরে প্রথমবারের মতো নববর্ষ উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রার আয়োজন করে। যশোরের সেই শোভাযাত্রায় ছিল পাপেট, বাঘের প্রতিকৃতি, পুরানো বাদ্যসহ আরো অনেক শিল্পকর্ম। শুরুর বছরেই যশোরে শোভাযাত্রা আলোড়ন তৈরি করে। পরবর্তীতে যশোরের সেই শোভাযাত্রার আদলেই ঢাকার চারুকলা থেকে শুরু হয় বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা।<ref>মাহবুব জামাল শামীম, একান্ত সাক্ষাৎকার, ৩১ মার্চ ২০০৯।</ref>
 
== মঙ্গল শোভাযাত্রার বিবর্তন ==
১৯৮৯ সালে প্রথম আনন্দ শোভাযাত্রায় ছিল পাপেট, ঘোড়া, হাতি। ১৯৯০ এরখ্রিস্টাব্দের আনন্দ শোভাযাত্রায়ও নানা ধরনের শিল্পকর্মের প্রতিকৃতি স্থান পায়। ১৯৯১ সালে চারুকলার শোভাযাত্রা জনপ্রিয়তায় নতুন মাত্রা লাভ করে। চারুকলা ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থী, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিল্পীদের উদ্যোগে হওয়া সেই শোভাযাত্রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ভাইস চ্যান্সেলর, বিশিষ্ট লেখক, শিল্পীগণ-সহ সাধারণ নাগরিকরা অংশ নেয়।
 
শোভাযাত্রায় স্থান পায় বিশালকায় হাতি, বাঘের প্রতিকৃতির কারুকর্ম। কৃত্রিম ঢাক আর অসংখ্য মুখোশখচিত প্ল্যাকার্ডসহ মিছিলটি নাচে গানে উৎফুল্ল পরিবেশ সৃষ্টি করে। ১৯৯২ সালেরখ্রিস্টাব্দে আনন্দ শোভাযাত্রার সম্মুখে রং বেরংয়ের পোশাক পরিহিত ছাত্র-ছাত্রীদের কাঁধে ছিল বিরাট আকারের কুমির। বাঁশ এবং বহু বর্ণের কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল কুমিরটি। ১৯৯৩ সালেখ্রিস্টাব্দে ‘১৪০০ সাল উদযাপন কমিটি’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরর চারুকলা ইন্সটিটিউটের সামনে থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করে। শোভাযাত্রার আকর্ষণ ছিল বাঘ, হাতি, ময়ূর, ঘোড়া, বিভিন্ন ধরনের মুখোশ। চারুকলার সামনে থেকে শোভাযাত্রাটি শুরু হয়ে শাহবাগ মোড় দিয়ে শিশু একাডেমি হয়ে পুনরায় চারুকলায় এসে শেষ হয়।
 
== ইউনেস্কোর অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ‌্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্তি ==
জাতিসংঘের অঙ্গসংস্থা ইউনেস্কো বাংলাদেশ সরকারের [[সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের]] আবেদনক্রমে ২০১৬ খ্রিস্টাব্দের ৩০শে নভেম্বর বাংলাদেশের ‘‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’’ কে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ অধরা বা ইনট্যানজিবল (ইং: Intangible ) সাংস্কৃতিক ঐতিহ‌্যের তালিকায় অন্তর্ভূক্তঅন্তর্ভুক্ত করে।<ref>{{Cite news|url=http://www.thedailystar.net/country/unesco-recognises-mangal-shobhajatra-cultural-heritage-1322926|title=UNESCO recognises Mangal Shobhajatra as cultural heritage|date=2016-11-30|newspaper=The Daily Star|access-date=2016-11-30}}</ref><ref>{{Cite news|url=http://www.unesco.org/culture/ich/en/RL/mangal-shobhajatra-on-pahela-baishakh-01091|title=২০১৬ খ্রিস্টাব্দের ৩০ নভেম্বর ইউনেসকো মঙ্গল শোভাযাত্রাকে সাংস্কৃতিক হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করে।|date=2016-11-30|newspaper=unesco official site|access-date=2016-11-30}}</ref> সংস্কৃতিইথিওপিয়ার বিষয়কআদ্দিস মন্ত্রণালয়আবাবা’য় ২০১৪অনুষ্ঠিত খ্রিস্টাব্দে২৮ ইউনেস্কোর প্যারিসে অবস্থিত সদর দপ্তরে আবেদন করেছিল যে পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রাকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা হোক। ‘‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’’ অশুভ শক্তির বিরূদ্ধে শান্তি, গণতন্ত্র ও বাঙ্গালী জাতিসত্বার ঐক্যের প্রতীক হিসেবে পরিগণিত। ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দনভেম্বর থেকে বছরের প্রথমডিসেম্বর দিনেপর্যন্ত ‘‘মঙ্গলঅনুষ্ঠিত শোভাযাত্রার’’ইউনেস্কোর মাধ্যমেসংশিষ্ট বাংলাদেশেরআন্তজাতিক মানুষপর্ষদ কল্যাণময়(INTERGOVERNMENTAL ভবিষ্যতেরCOMMITTEE আশাFOR ব্যক্তTHE করেSAFEGUARDING চলেছে।OF <ref>ইউনেস্কোTHE লিখেছে:INTANGIBLE MangalCULTURAL Shobhajatra is a festival for the public that celebrates Pahela Baishakh (New Year’s DayHERITAGE) onবাংলাদেশ Aprilসরকারের 14,প্রস্তাবটি organizedঅনুমোদন byকরে৤ students andবিষয়ে teachersবাংলাদেশের ofপ্রস্তাবটি DhakaNomination University’sfile Faculty of Fine Artno. The01091 traditionহিসেবে beganচিহ্নিত inছিল৤ 1989সংস্কৃতি whenমন্ত্রণালয়ের students,পক্ষে frustrated[[বাংলা byএকাডেমী]] livingএই underপ্রস্তাবনাটি militaryপ্রণয়ন rule,করে৤ wantedপরবর্তীকালে toইউনেস্কোর bringচাহিদা theঅনুযায়ী communityএই hopeপ্রস্তাবনাকে forগ্রহণযোগ্যরূপে aপুনঃপ্রণয়ন betterকরা future.হয়৤ It২০১৫ featuresএর floats১লা andজুন masksপ্যারিসে symbolizingনিযুক্ত strength, peace and a driving away of evil to allowবাংলাদেশের forরাষ্ট্রদূত progressএম. Withশহিদুল knowledgeইসলাম ofএই theপুনঃপ্রণীত elementপ্রস্তবনাটি sharedবাংলাদেশ byসরকারের theপক্ষে school,পুনরায় itইউনেস্কোর promotesনিকট publicদাখিল solidarity and democracy.করেন৤</ref> ইতোপূর্বে ২০০৮ খ্রিস্টাব্দে[http://www.unesco.org/culture/ich/en/RL/mangal-shobhajatra-on-pahela-baishakh-01091 বাংলাদেশের বাউলনমিনেশন গানফাইল সংখ্যা ২০১৩ খ্রিস্টাব্দে জামদানী বয়ন শিল্প ইউনেস্কোর অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ‌্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্তি লাভ করে। ২০১৫ খ্রিস্টাব্দে [[বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর01091]] সিলেটের [[শীতল পাটি]] বয়ন শিল্পকে ইউনেস্কোর অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ‌্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য আবেদন করেছে যা ২০১৭ খ্রিস্টাব্দে বিবেচিত হবে। </ref>
 
২০০৫-০৬ অর্থবৎসরে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি তালিকা প্রণয়নের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করে এবং [[এশিয়াটিক সোসাইটি|এশিয়াটিক সোসাইটিকে]] এর দায়িত্ব দেয়া হয়৤ ১২ খণ্ডে প্রকাশিত এই তালিকা তথা সমীক্ষা প্রতিবেদনের ১১শ খণ্ডে পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রাকে জাতীয় সংস্কৃতি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে৤ এরই ধারাবাহিকতায় সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সর্বপ্রথম ২০১৪ খ্রিস্টাব্দে ইউনেস্কোর প্যারিসে অবস্থিত সদর দপ্তরে আবেদন করেছিল যে পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রাকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা হোক। ‘‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’’ অশুভ শক্তির বিরূদ্ধে শান্তি, গণতন্ত্র ও বাঙ্গালী জাতিসত্বার ঐক্যের প্রতীক হিসেবে পরিগণিত। ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে বছরের প্রথম দিনে ‘‘মঙ্গল শোভাযাত্রার’’ মাধ্যমে অপশক্তির অবসান এবং বাংলাদেশের মানুষ কল্যাণময় ভবিষ্যতের আশা ব্যক্ত করে চলেছে। <ref>ইউনেস্কো লিখেছে: Mangal Shobhajatra is a festival for the public that celebrates Pahela Baishakh (New Year’s Day) on April 14, organized by students and teachers of Dhaka University’s Faculty of Fine Art. The tradition began in 1989 when students, frustrated by living under military rule, wanted to bring the community hope for a better future. It features floats and masks symbolizing strength, peace and a driving away of evil to allow for progress. With knowledge of the element shared by the school, it promotes public solidarity and democracy.</ref> ইতোপূর্বে ২০০৮ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশের বাউল গান ও ২০১৩ খ্রিস্টাব্দে জামদানী বয়ন শিল্প ইউনেস্কোর অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ‌্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্তি লাভ করে। ২০১৫ খ্রিস্টাব্দে [[বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর]] সিলেটের [[শীতল পাটি]] বয়ন শিল্পকে ইউনেস্কোর অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ‌্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য আবেদন করেছে যা ২০১৭ খ্রিস্টাব্দে বিবেচিত হবে।