ভূমেন্দ্র গুহ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
→‎মৃত্যু: add info, sources (আরো সম্প্রসারণ করা হবে)
তথ্যসূত্র যোগ
১ নং লাইন:
[[File:BhumendraGuha2007.jpg|thumb|জীবনানন্দ গবেষক কবি ভূমেন্দ্র গুহ, কলকাতা, ২০০৭]]
'''ভূমেন্দ্র গুহ''' একজন বাঙ্গালী কবি যিনি [[জীবনানন্দ দাশ|কবি জীবনানন্দ দাশের]] পাণ্ডুলিপি পাঠোদ্ধার ও প্রকাশের জন্য বিশেষভাবে স্মরণীয় হয়ে আছেন। কর্মজীবনে তিনি ছিলেন ভারতের একজন নামকরা শৈল্যচিকিৎসাবিদ। [[কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ|কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের]] হৃদশল্য চিকিৎসা বিভাগের এককালের প্রধান কবি ভূমেন্দ্র গুহ পরিচিত ছিলেন অধ্যাপক ড. বি.এন. গুহরায় নামে। তাঁর পিতৃপ্রদত্ব পূর্ণনাম ভূমেন্দ্রনাথ গুহরায়। তবে [[পশ্চিম বঙ্গ|পশ্চিম]] ও [[বাংলাদেশ|পূর্ব বাংলার]] সাহিত্যের জগতে তিনি কবি ভূমেন্দ্র গুহ নামে পরিচিত হয়েছিলেন। তাঁর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা এগার। কিন্তু কালক্রমে তাঁর কবি-পরিচয় ছাপিয়ে ‘জীবনানন্দ গবেষক’ এই পরিচয়টিই ক্রমান্বয়ে বড় হয়ে গিয়েছিল। <ref>[http://www.kaliokalam.com/%E0%A6%95%E0%A6%AC%E0%A6%BF-%E0%A6%AD%E0%A7%82%E0%A6%AE%E0%A7%87%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%B0-%E0%A6%97%E0%A7%81%E0%A6%B9-%E0%A6%8F%E0%A6%95%E0%A6%9F%E0%A7%81%E0%A6%96%E0%A6%BE/ কবি ভূমেন্দ্র গুহ : একটুখানি পরিচিতি]</ref>
 
== জন্ম শিক্ষা ও জীবন ==
৭ নং লাইন:
ভূমেন্দ্র গুহ’র বাবা নগেন্দ্রনাথ গুহরায় রেল কোম্পানিতে চাকুরি করতেন। বদলির চাকুরি, ফলে নানা স্কুলে পড়তে হয়েছে ভূমেন্দ্র গুহকে, তবে ম্যাট্রিক পাশ করেছেন কলকাতার মিত্র ইনস্টিটিউশনের ছাত্র হিসেবে। [[বঙ্গবাসী কলেজ]] থেকে আইএসসি করার পর ডাক্তারি পড়েছিলেন [[ক্যালকাটা মেডিকেল কলেজে]]। ১৯৫৭’য় ডাক্তারী পাশের পর তিনি শল্যচিকিৎসায় মাস্টার্স করেছেন; পরে বিশেষভাবে বক্ষদেশের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, হৃৎপিন্ড ও ভাসকুলার সার্জারিতে এম.সি-এইচ।
 
ষাটের দশকে ভারতের প্রথম ওপেনহার্ট সার্জারি হয়েছিল ১৯৬২ তে; সেদিন অপারেশন থিয়েটারে শিক্ষক প্রফেসর ডাঃ অজিত কুমার বসুর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন তরুণ শল্যবিদ বি. এন. গুহরায়।<ref>[http://www.prothom-alo.com/international/article/717769/%E0%A6%9A%E0%A6%B2%E0%A7%87-%E0%A6%97%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%A8-%E0%A6%95%E0%A6%AC%E0%A6%BF-%E0%A6%AD%E0%A7%82%E0%A6%AE%E0%A7%87%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%B0-%E0%A6%97%E0%A7%81%E0%A6%B9 চলে গেলেন কবি ভূমেন্দ্র গুহ]</ref> এরপর এ বিষয়ে তিনি অনেক গবেষণা করেছেন; তাঁর দেড়শরও বেশী গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক জার্নালে। যুক্তভাবে একটি ডাক্তারী বই-ও প্রকাশ করেছিলেন, বেশ কিছু বহুলেখক গ্রন্থের জন্য লিখেছেন। শেষ জীবনে কলকাতা মেডিকেল কলেজ-এর থোরাসিক সার্জারি বিভাগের প্রধান হিসেবে কাজ করেছেন চৌদ্দ বছর। লিভার সিরোসিস রোগটি অপরেশন ক’রে সারানোর পদ্ধতিটিও তাঁরই আবিস্কার: এটি বিশ্বব্যাপী চিকিৎসাশাস্ত্রে [[গুহরায়-বাসু শান্ট অপারেশন]] নামে খ্যাত। চাকুরী জীবনে যথেষ্ট ব্যস্ত ছিলেন ড. বি. এন. গুহরায়।
 
==ব্যক্তিজীবন ও ব্যক্তিত্ব==
১৭ নং লাইন:
পঞ্চাশের দশকের শুরুতে নিজেদের সাহিত্যের ছোটকাগজ “ময়ূখ”-এর জন্য কবিতা সংগ্রহ করতে গিয়ে জীবনানন্দ দাশের সঙ্গে যে পরিচয় হয়েছিল তারই সূত্র ধ’রে কবির মৃত্যু পরবর্তী সময়ে তাঁর পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কই গড়ে উঠেছিল তাঁর। কার্যত জীবনানন্দের প্রকাশিত-অপ্রকাশিত রচনা সম্বলিত ট্রাংকভর্তি অসংখ্য লেখার খাতা তাঁরই অধিকারে সংরক্ষিত ছিল দীর্ঘ কাল। সুসংরক্ষিত ছিল। সেগুলোর অধিকাংশ পাঠোদ্ধার ক’রে তিনি প্রকাশযোগ্য পাণ্ডুলিপি প্রস্তুত ক’রে দিয়েছিলেন। বাংলা ভাষার জনপ্রিয়তম কাব্য [[রূপসী বাংলা]] এবং জীবনানন্দের সপ্তম কাব্য সংকলন [[বেলা অবেলা কালবেলা]], তাঁর প্রথম প্রবন্ধসংকলন [[কবিতার কথা]] এবং সর্বপ্রথম প্রকাশিত উপন্যাস [[মাল্যবান]]-এর মুদ্রণযোগ্য পাণ্ডুলিপি সবই ভূমেন্দ্র গুহ’র হাতে তৈরী। কলকাতার প্রতিক্ষণ পাবলিকেশনস ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে ১২ খণ্ডের [[জীবনানান্দ সমগ্র]] প্রকাশ শুরু করেছিল ভূমেন্দ্র গুহেরই কপি করা বিবিধ পাণ্ডুলিপিরর ভিত্তিতে। অপ্রকাশিত কবিতার সংকলন [[হে প্রেম তোমাকে ভেবে ভেবে]], [[ছায়া-আবছায়া]], উপন্যাস [[সফলতা-নিষ্ফলতা]] এবং ২০১২ তে প্রকাশিত [[অপ্রকাশিত শেষ ১৪টি গল্প ও ২টি উপন্যাস]] ইত্যাদিরও পশ্চাৎ কারিকর তিনি।
 
ভূমেন্দ্র গুহ কেবল লেখার খাতা থেকে মুদ্রণযোগ্য পাণ্ডুলিপিই প্রস্তুত করেন নি, তিনি জীবনানন্দের এত-এত লেখার খাতাকে চির অবলুপ্তির হাত থেকে বাঁচিয়েছেন; ১৯৫৪ থেকে ১৯৬৮ পর্যন্ত লেখার খাতাগুলো সযত্নে আগলে রেখেছিলেন নিজের ঠানে যত দিন না চাকুরীসূত্রে কলকাতার বাইরে চলে যাওয়ার ডাক এসেছিল।<ref>[http://www.kaliokalam.com/%E0%A6%95%E0%A6%AC%E0%A6%BF-%E0%A6%AD%E0%A7%82%E0%A6%AE%E0%A7%87%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%B0-%E0%A6%97%E0%A7%81%E0%A6%B9-%E0%A6%8F%E0%A6%95%E0%A6%9F%E0%A7%81%E0%A6%96%E0%A6%BE/ কবি ভূমেন্দ্র গুহ : একটুখানি পরিচিতি]</ref>
 
==কাব্যকৃতি==
৫৫ নং লাইন:
 
===গদ্য===
যৌবনে, ১৯৫৮য়, তিনি স্যাফোর কাব্য অনুবাদ করেছিলেন। বাংলা ভাষায় তিনিই প্রথম স্যাফোর কবিতা অনুবাদ করেছেন। হেনরী মিলারের “ঘাতকদের সময়” অনুবাদ করেছেন (তবে বলে রাখা দরকার অনুবাদের জন্য লেগেছে ১৩৮ পাতা, আর ভূমিকা-টীকার জন্য বাকী ২৭৪ পৃষ্ঠা)। ২০০৮এ প্রকাশ করেছেন জীবনানন্দের অপ্রাকশিত উপন্যাস “সফলতা-নিষ্ফলতা”। এখানেও বলে রাখা দরকার যে ১১৭ পাতার এ উপন্যাসের শুরুতে আছে ১৬ পৃষ্ঠার একটি ভূমিকা আর শেষে আছে ১২৫ পৃষ্ঠাব্যাপী টীকা-টিপ্পনীর বিশাল বহর। ২০১২ তে প্রকাশ করেছেন জীবনানন্দ’র “সমরেশ ও অন্যান্য গল্প” এবং “অপ্রকাশিত শেষ ১৮টি গল্প ও ২টি উপন্যাস”। কেবল জীবনানন্দ নিয়ে তাঁর বই একটিই; আর সেটি হলো “আলেখ্য : জীবনাননদ দাশ”। তাঁর জীবনানন্দ চর্চার অনুপুঙ্খ দলিল ২০০৮-এ প্রকাশিত “জীবনানন্দ ও সঞ্চয় ভট্টাচার্য”। উপন্তু জীবনানন্দের লিটের‌্যারি নোটস “দিনলিপি” শিরোনামে প্রকাশ করেছিলেন ৪টি প্রশস্ত খণ্ডে। দিনলিপি লেখার খাতার ফ্যাকসিমিলি প্রকাশ করেছেন “শেষ ছ’বছর” শিরোনোমে। বাংলাদেশের [[কালি ও কলম]] পত্রিকার-এর সম্পাদক আবুল হাসানাতের উদ্যোগে ভূমেন্দ্র গুহ জীবনানন্দ দাশের কবিতার মূলানুগ পাঠের একটি সংকলনগ্রন্থের পাণ্ডুলিপি করতে সম্মত হয়েছিলেন ২০০৯-এ। কাজ চলছিল সেই ২০১১ থেকে। তাতে “শ্রেষ্ঠ কবিতা” সহ জীবনানন্দের সাতটি কাব্যগ্রন্থ থেকে বাছাই করা কবিতা, জীবনানন্দের মৃত্যুকালে অপ্রকাশিত ৭৯টি কবিতা এবং সরাসরি ৩২টি লেখার খাতা থেকে ১৪৩২টি কবিতা (পূর্বোল্লিখিতগুলোবাদ দিয়ে) পত্রস্থ করা হয়েছে। কবিতা-সম্বলিত ৬৮৭ পৃষ্ঠার প্রথম খণ্ডের পর ৪৯৬ পৃষ্ঠার দ্বিতীয় খণ্ডে ভূমেন্দ্র গুহের লেখা ভূমিকা ও টীকা-টিপ্পনী।<ref>পেল্লাই ভূমিকা ও টীকা-টিপ্পনীর বিশাল বহর প্রসঙ্গে একটু সলজ্জ হেসে ভূমেন্দ্র গুহ বলেছিলেন, “এ যেন বারো হাত কাঁকুড়ের তের হাত বিচি”।</ref><ref>[http://www.thedailysangbad.com/sangbad-samoyeki/2016/01/07/43375 ভূমেন্দ্র গুহ, জীবনানন্দ দাশের মূলানুগ পাঠ প্রসঙ্গে]</ref>
 
==পুরস্কার ও স্বীকৃতি==