অমর্ত্য সেন: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Suvray (আলোচনা | অবদান)
Sugatomitra (আলোচনা | অবদান)
ভুল বানান এবং ভুল তথ্যের শুদ্ধিকরণ।
১৫ নং লাইন:
}}
 
'''অমর্ত্য সেন''' (জন্ম [[নভেম্বর ৩|৩রা নভেম্বর]], [[১৯৩৩]]) একজন [[নোবেল পুরস্কার]] বিজয়ী বাংলাদেশী-ভারতীয় [[বাঙালী]] অর্থনীতিবিদ ও দার্শনিক। তিনি দুর্ভিক্ষ, মানব উন্নয়ন তত্ত্ব, জনকল্যাণ অর্থনীতি ও গণদারিদ্রের অন্তর্নিহিত কার্যকারণ বিষয়ে গবেষণা এবং উদারনৈতিক রাজনীতিতে অবদান রাখার জন্য ১৯৯৮ সালে অর্থনৈতিক বিজ্ঞানে ব্যাংক অফ সুইডেন পুরস্কার (যা অর্থনীতির [[নোবেল পুরস্কার]] হিসেবে পরিচিত) লাভ করেন। অমর্ত্য সেনই [[জাতিসংঘ|জাতিসংঘের]] বিভিন্ন দেশের শিক্ষা এবং মানব সম্পদ উন্নয়ন সম্পর্কে ধারণা পাওয়ার জন্য [[মানব উন্নয়ন সূচক]] আবিষ্কার করেন।<ref name="Sen Profile">{{cite news|title=The Guardian Profile: Amartya Sen|url=http://www.guardian.co.uk/books/2001/mar/31/society.politics|publisher=The Guardian|accessdate=2012-01-07|location=London|first=Jonathan|last=Steele|date=19 April 2001}}</ref> তিনিই প্রথম যুক্তরাষ্টের নগরিক না হয়েও ন্যাশনাল হিউমিনিটিস মেডেলমেডাল পান।<ref>{{cite news|last= |first=|url=http://www.bbc.co.uk/news/world-asia-india-17022920 |title=Indian Nobel laureate Amartya Sen honoured in US |publisher=BBC News |date= 14 February 2012|accessdate=14 February 2012}}</ref>
 
তিনি বর্তমানে থমাসটমাস ডাব্লিউ লেমন্টল্যামন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক অধ্যাপক এবং [[হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়|হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের]] [[দর্শন]] বিভাগের অধ্যাপক হিসেবেহিসাবে কর্মরত আছেন। তিনি হার্ভার্ড সোসাইটি অফ ফেলোস, ট্রিনিট্রি কলেজ, অক্সব্রিজ এবং [[কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়|ক্যামব্রিজের]] একজন ফিনিয়রসিনিয়র ফেলো। এছাড়াও তিনি ১৯৯৮ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত কেমব্রিজের মাস্টার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।<ref>[http://www.trin.cam.ac.uk/index.php?pageid=321 Trinity College Cambridge – The Fellowship<!-- Bot generated title -->]</ref><ref>[http://www.trin.cam.ac.uk/index.php?pageid=172 Trinity College Cambridge – Master of Trinity – Lord Rees<!-- Bot generated title -->]</ref> তিনি বর্তমানে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হেলথ ইমপ্যাক্ট ফান্ডের '''এডভাইজরি বোর্ড অফ ইনসেন্টিভ ফর গ্লোবাল হেলথ''' এর সদস্য। তিনিই প্রথম ভারতীয় শিক্ষাবিদ যিনি একটি অক্সব্রিজ কলেজের প্রধান হন। এছাড়াও তিনি প্রস্তাবিত নালন্দা আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে কাজ করেছেন।<ref>{{cite news|title=Amartya Sen to be chancellor of Nalanda International University|url=http://www.dnaindia.com/india/report_amartya-sen-to-be-chancellor-of-nalanda-international-university_1717242|accessdate=25 July 2012|newspaper=[[Daily News and Analysis]]|location=|date=July 19, 2012}}</ref><ref>{{cite news|title=Amartya Sen named Nalanda University Chancellor|url=http://articles.timesofindia.indiatimes.com/2012-07-20/news/32763124_1_nalanda-university-board-members-george-yeo|accessdate=25 July 2012|newspaper=[[The Times of India]]|location=|date=July 20, 2012}}</ref>
 
অমর্ত্য সেনের লিখিত বই বিগত চল্লিশ বছর ধরে প্রায় তিরিশটি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। তিনি ইকোনমিস্টইকনমিস্ট ফর পিস এন্ডঅ্যান্ড সিকিউরিটির একজন ট্রাষ্টি। ২০০৬ সালে টাইম ম্যাগাজিন তাকে অনূর্ধ ষাঁটষাট বছর বয়সী ভারতীয় বীর হিসেবে চিহ্নিত করেছে।করেছে<ref>{{cite news| url=http://www.time.com/time/asia/2006/heroes/at_sen.html | work=Time | title=60 Years of Asian Heroes: Amartya Sen | date=13 November 2006 | deadurl=yes}}</ref> এবং ২০১০ সালে তাকে বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালী ব্যাক্তির তালিকায় স্থান দেওয়া হয়। নিউ স্টেটসম্যানস্টেট্সম্যান ম্যাগাজিন তাকে বিশ্বের সবচেয়ে ৫০ গুরুত্বপূর্ন প্রভাবশালী ব্যাক্তির তালিকায় স্থান দেয়।<ref name="htanna">{{cite web|title=Amartya Sen – 50 People Who Matter 2010|url=http://www.newstatesman.com/global-issues/2010/09/conscience-teacher-amartya-sen|publisher=New Statesman|accessdate=28 September 2010| archiveurl= http://web.archive.org/web/20100930152204/http://www.newstatesman.com/global-issues/2010/09/conscience-teacher-amartya-sen| archivedate= 30 September 2010 <!--DASHBot-->| deadurl= no}}</ref>
== শৈশব ==
অমর্ত্য সেনের জন্ম বাংলাদেশের [[মানিকগঞ্জ|মানিকগঞ্জে]]। তারতাঁর আদি নিবাস বর্তমান [[বাংলাদেশ|বাংলাদেশের]] রাজধানী [[ঢাকা|ঢাকার]] ওয়ারীতে। কথিত আছে [[রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর]] তারতাঁঁর নাম রেখেছিলেন অমর্ত্য, যার অর্থ অমর বা অবিনশ্বর। অমর্ত্য সেন একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহন করেছিলেন। তারতাঁর নানামাতামহ [[ক্ষিতিমোহন সেন|আচার্য ক্ষিতিমোহন সেন]] ছিলেন মধ্যযুগীয়প্রাচীন [[ভারতীয় সাহিত্য|ভারতীয় সাহিত্যের]] একজন পন্ডিত এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সহযোগী। এছাড়াওএছাড়া, তিনি সংস্কৃতিসংস্কৃত ভাষার অধ্যাপক এবং [[বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়|বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের]] দ্বিতীয় উপাচার্যউপাচার্যও ছিলেন। [[ক্ষিতিমোহন সেন|ক্ষিতিমোহন সেনের]] তিনজনতিন ভাতিজারভ্রাতষ্পুত্রের মধ্যে সুকুমার সেন ভারতের প্রথম নির্বাচন কমিশনার, অমিয় সেন একজন প্রসিদ্ধ ডাক্তার এবং ব্যারিস্টার অশোক কুমার সেন, এমপিসাংসদ. ছিলেন ভারতের কেন্দ্রীয় আইন ও বিচার মন্ত্রনালয়ের একজন সাবেক কেবিনেটক্যাবিনেট মন্ত্রি। অমর্ত্য সেনের বাবা অধ্যাপক আশুতোষ সেন এবং মা অমিতা সেন, দুজনেইদুজনই [[ঢাকা|ঢাকার]] [[মানিকগঞ্জ|মানিকগঞ্জে]] জন্মগ্রহন করেন। আশুতোষ সেন [[ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়|ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের]] রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক এবং পরবর্তীতেপরবর্তীকালে ওয়েষ্টওয়েস্ট বেঙ্গল পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে [[দিল্লি|দিল্লিতে]] কর্মরত ছিলেন।
 
== শিক্ষাজীবন ==
১৯৪১ সালে অমর্ত্য সেন তার শিক্ষাজীবন শুরু করেন [[সেইন্ট গ্রেগরী উচ্চ বিদ্যালয়]] এ। দেশ ভাগের পরে তারাতাঁরা ভারতে চলে গেলেএলে, অমর্ত্য সেন [[বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়]] স্কুলে ভর্তি হন। ১৯৫৩ সালে তিনি কোলকাতারকলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে অর্থনীতিতে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়ে বিএবি.এ ডিগ্রি অর্জন করেন। ওই বছরই তিনি ক্যাম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রিনিটি কলেজে পড়তে যান। ১৯৫৬ সালে তিনি প্রথম শ্রেণীতে বিএবি.এ (সম্মান) ডিগ্রি অর্জন করেন। সেই একই বছরবছরই তিনি ক্যামব্রিজ মজলিসের প্রসিডেন্টপ্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তিনি ট্রিনিট্রি কলেজে স্নাতকের ছাত্র থাকা অবস্থাতেই ব্রিটিশ রয়েলরয়্যাল সোসাইটির ফেলো [[প্রশান্ত চন্দ্র মোহালনবিশ|প্রশান্ত চন্দ্র মোহালনবিশেরমহলনাবিশের]] সাথে দেখা করেন। তিনি অমর্ত্য সেনের সাথে দেখামিলিত করেহয়ে অভিভূত হন এবং পরবর্তীতেপরবর্তীকালে [[কোলকাতাকলকাতা]] ফিরে এসে তৎলালীন [[পশ্চিমবঙ্গ|পশ্চিমবঙ্গের]] শিক্ষামন্ত্রি ত্রিগুনা সেনের কাছে অমর্ত্য সেনের জন্য সুপারিশ করেন। ত্রিগুনা সেন তখন জাতিয় কাউন্সিলে [[যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়]] প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছিলেন।
 
কেমব্রিজেরক্যামব্রিজের টিনিট্রি কলেজে পি.এইচ.ডি ডিগ্রির জন্য ভর্তি হয়ে দুই বছরের ছুটিতে [[কোলকাতা|কলকাতা]] ফিরলে সাথে সাথে ত্রিগুনা সেন তাকে সদ্য প্রতিষ্ঠিত [[যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়|যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের]] অধ্যাপক এবং অর্থনিতী বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেন। অমর্ত্য সেনই ছিলেন ভারতের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ (২৩ বছর) অধ্যাপক এবং বিভাগীয় প্রধান। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনাকালীন তিনি বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং তাত্বিক এ.কে. দাশগুপ্তকে তার অধীক্ষক (সুপারভাইজার) হিসেবে পেয়েছিলেন। পূর্নপূর্ণ দুই বছর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করার পর ১৯৫৯ সালে তিনি ট্রিনিট্রি কলেজে তার পি.এইচ.ডি ডিগ্রি শেষ করতেকরার জন্য ফেরতফিরে যন।
 
ট্রিনিট্রিতে ফেরত যাবার পর তিনি সেখানে ফেলোশিপ অর্জন করেন যা তাকেতাঁঁকে পরবর্তী চার বছর তারতাঁর ইচ্ছামত যেকোনযে কোন কাজ করার সুযোগ এনে দেয়। তিনি দর্শনশাস্ত্রে অধ্যয়ন করার সিদ্ধান্ত নেন। দর্শনশাস্ত্রের জ্ঞান তাকেতাঁকে পরবর্তীতেপরবর্তীকালে তারতাঁর গবেষণা কাজে অনেক সাহায্য করে। তারতাঁর মতে
{{উক্তি|''দর্শন চর্চার মাধ্যমে জ্ঞান বিকশিত করা আমার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ন ছিল তার কারন এই নয় যে আমার প্রিয় বিষয় অর্থনীতি, দার্শনিক চিন্তাভবনার সাথে ওতোপ্রত ভাবে জড়িত, তার মূল কারন দর্শন শাস্ত্র অধ্যয়ন নিজে থেকেই অনেক ফলপ্রসু।''।}}
যদিও দর্শনের প্রতি তারতাঁর এই আগ্রহ অনেক আগেই তারতাঁর কলেজ জীবন থেকে শুরু হয়েছিল। প্রেসিডেন্সি কলেজে তিনি নিয়মিত দর্শন চর্চা এবং এর উপর বিতর্কে অংশগ্রহন করতেন।
 
অমর্ত্য সেনের জন্য কেমব্রিজ একটি যুদ্ধক্ষেত্রে পরিনত হয়েছিল। সেখানে কেইনিসিয়ানকেইনসিয়ান অর্থনিতীর পক্ষাবলম্বি ও কেইনিসেরকেইনসের অবদান সমর্থনকারীদের সাথে নিও-ক্লাসিক্যাল ও কেইনিসেরকেইনসের বিরোধিতাকারীদেরবিরোধিদের সাথে বিতর্ক লেগেই থাকত। সৌভাগ্যবশত অমর্ত্য সেনের সাথে দুই পক্ষের সম্পর্কই ভাল ছিল এবং ট্রিনিট্রি কলেজে সহনশীল এবং গনতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় থাকত। বি.এ শেষ করার পর পি.এইচ.ডি গবেষণার জন্য অমর্ত্য সেনকে সম্পূর্ন ভিন্নধর্মী একটি বিষয়ের চয়ন করতে হয়। তিনি জন রবিনসনের অধীনে অর্থনিতীর বিকল্প কৌশলের উপর তারতাঁর গবেষণাপত্র দাখিল করেন।<ref name="noblprize autobio">{{cite web | url=http://www.nobelprize.org/nobel_prizes/economics/laureates/1998/sen-autobio.html | title=Amartya Sen – Autobiography | publisher=[[The Nobel Foundation]] | year=1998 | accessdate=February 27, 2012 | author=Sen, Amartya}}</ref> জন রবিনসন ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী কিন্তু কিছুটা অসহনশীল এবং নব্য-কেইনিসিয়ানকেইনসিয়ান ধারণায় বিশ্বাসী ছিলেন। কুইন্টিনকুয়েন্টিন স্কিনারের মতে অমর্ত্য সেন কেমব্রিজ এপোস্টেলসঅ্যাপোস্টলস নামক একটি গোপন সংঘের সদস্য ছিলেন।<ref>[http://www.youtube.com/watch?v=tVdAhzqFLps YouTube – Interview of Professor Quentin Skinner – part 2]</ref>
 
== শিক্ষকতা ==