চীনের ইতিহাস: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
বানান সংশোধন
১ নং লাইন:
[[File:Territories of Dynasties in China.gif|thumb|300px|চীনের ইতিহাসে বিভিন্ন রাজবংশ কর্তৃক শাসিত অঞ্চলসমূহের একটি আনুমানিক মানচিত্র]]
{{চীনের ইতিহাস}}
খ্রীস্টপূর্বখ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ সাল থেকে চীনের সাং[[শাং রাজবংশেরসাম্রাজ্য|শাং সাম্রাজ্যের]] (১৬০০ থেকে ১০৪৬ খ্রীস্টপূর্বখ্রিস্টপূর্ব) <ref name="state1">{{cite web|url=http://exchanges.state.gov/culprop/cn04sum.html|archiveurl=https://web.archive.org/web/20071215094418/http://exchanges.state.gov/culprop/cn04sum.html|archivedate=15 December 2007|title=Public Summary Request Of The People's Republic Of China To The Government Of The United States Of America Under Article 9 Of The 1970 Unesco Convention|publisher=Bureau of Educational and Cultural Affairs, U.S. State Department|accessdate=12 January 2008}}{{Dead link|url=http://exchanges.state.gov/culprop/cn04sum.html|date=December 2008|language=ইংরেজি|trans-title=}}</ref> আমলে লিখিত ও প্রামান্য ইতিহাস পাওয়া যায়।<ref name="William">William G. Boltz, Early Chinese Writing, World Archaeology, Vol. 17, No. 3, Early Writing Systems. (Feb., 1986), pp. 420–436 (436).</ref><ref>David N. Keightley, "Art, Ancestors, and the Origins of Writing in China", ''Representations'', No. 56, Special Issue: The New Erudition. (Autumn, 1996), pp.68–95 (68).</ref> প্রাচীন ইতিহাস গ্রন্থ যেমন ‘রেকর্ড অব গ্রান্ড হিস্টোরিয়ান’ (১০০ খ্রীস্টপূর্বাব্দেখ্রিস্টপূর্বাব্দে) এবং ‘বাম্বু এ্যানালস’ এ [[সিয়া রাজবংশসাম্রাজ্য]] এর উল্লেখ পাওয়া যায়। সে সময় থেকে [[সাংশাং রাজবংশ|সাং রাজবংশের]]সাম্রাজ্যের আমল পর্যন্ত লিখিত কোন দলিল দীর্ঘদিন সংরক্ষন করার কোন উপায় চীনাদের জানা ছিল না।<ref name="state1"/><ref name="The Ancient Dynasties">{{cite web|url=http://www-chaos.umd.edu/history/ancient1.html|title=The Ancient Dynasties|publisher=University of Maryland|accessdate=12 January 2008|language=ইংরেজি|trans-title=}}</ref> হলুদ[[হুয়াংহো]] নদীকে (হোয়াং হো নদী) চৈনিক সভ্যতার সুতিকাগার বলা হয়। হাজার হাজার বছর ধরে হোয়াং হোহুয়াংহো ও ইয়াংজি নদীর অববাহিকায় গড়ে ওঠা অনেক আঞ্চলিক সংস্কৃতি চীনের সভ্যতাকে বিভিন্নভাবে সমৃদ্ধ করেছে। এ কয়েক হাজার বছরের ধারাবাহিক ইতিহাসে [[চীন|চৈনিক]] সভ্যতা পৃথিবীর আদিম [[সভ্যতা|সভ্যতাগুলোর]] মধ্যে অন্যতম।<ref>{{cite news|url=http://news.bbc.co.uk/2/hi/africa/country_profiles/1287798.stm |title=China country profile |publisher=BBC News |date=18 October 2010 |accessdate=7 November 2010|language=ইংরেজি|trans-title=}}</ref> এই কারনে চৈনিক সভ্যতাকে মানব সভ্যতার অন্যতম সুতিকাগার বলা হয়।<ref>''Cradles of Civilization-China: Ancient Culture, Modern Land'', Robert E. Murowchick, gen. ed. Norman: University of Oklahoma Press, 1994</ref>
 
ঝউ রাজবংশের (১০৪৬ থেকে ২৫৬ খ্রীস্টপূর্বখ্রিস্টপূর্ব) আমলে চীনের সংস্কৃতি, সাহিত্য ও দর্শনের প্রভূত উন্নতি সাধিত হয়। খ্রীস্টপূর্বখ্রিস্টপূর্ব ৮ম শতাব্দী থেকে ঝউ শাসকরা নানা রকম অভ্যন্তরিন ও বাইরের চাপের কাছে নতি স্বীকার করতে শুরু করে এবং এক সময় বিভিন্ন ছোট ছোট রাজ্যে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এই ক্ষয়িষ্ণু অবস্থা ’শরৎ’ ও ‘বসন্ত‘ পর্যায় (Spring and Autumn period) থেকে শুরু হয় এবং ‘আন্তঃরাজ্য যুদ্ধাবস্থা’ (Warring States period) এর সময়ে পূর্নরূপ লাভ করে। এই সময়কালটি ছিল চীনের ইতিহাসের অন্যতম ’ব্যর্থ রাষ্ট্রীয় শাসনামল’। এই ব্যর্থ রাষ্ট্রীয় শাসনামলের সর্বশেষ সময়টি ছিল ১৯২৭ সালে [[চীনের গৃহযুদ্ধ|চীনের গৃহযুদ্ধের]] সময়।
 
বহু রাজ্য ও যুদ্ধবাজ নেতাদের শাসনামলে চৈনিক রাজবংশগুলো চীনের একটি অংশ শাসন করত। যার সীমানা বর্তমান জিংজিয়ান এবং তিব্বত পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। ২২১ খ্রীস্টপূর্বাব্দেখ্রিস্টপূর্বাব্দে [[কিন শীশি হুয়াং]] বিভিন্ন যুদ্ধরত রাজ্যগুলোকে একত্রিত করে কীন বংশের একটি ক্ষুদ্র “সম্রাজ্য” (হুয়াংডি) প্রতিষ্ঠা করে, চৈনিক সম্রাজ্যের ইতিহাসে শুরু করেন। পরবর্তী রাজবংশগুলো একটি আমলাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল যা ক্রমে তৎকালিন চীনের বিশাল এলাকায় চৈনিক সম্রাটের নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠা করতে সাহায্য করে। চীনের সর্বশেষ রাজবংশসাম্রাজ্য ছিল [[কিং রাজবংশসাম্রাজ্য]] (১৬৪৪ থেকে ১৯১২), যার উচ্ছেদের পর ১৯১২ সালে [[রিপাবলিক অব চায়না]], এবং ১৯৪৯ সালে [[গণচীন|গনপ্রজাতন্ত্রী চীন]] প্রতিষ্ঠিত হয়।
 
প্রচলিত চৈনিক ইতিহাসে পর্যায়ক্রমে রাজনৈতিক ঐক্য এবং অনৈক্যের চিত্র দেখা যায়, আরো দেখা যায় যে স্তেপ জাতির মানুষেরা মাঝে মধ্যে চীন শাসন করেছেন পরবর্তীকালে যারা চৈনিক [[হান জাতির]] জনগোষ্ঠীর সাথে মিশে গেছেন। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের সংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক প্রভাব, অভিবাসন, বৈদেশিক বাণিজ্য ও চুক্তি ইত্যাদি আধুনিক চীনের সংস্কৃতি গঠনে ভূমিকা পালন করেছে।
১০ ⟶ ১১ নং লাইন:
{{TOClimit|3}}
 
== পৌরনিকপৌরাণিক চীন ==
[[File:Nine-Dragons1.jpg|thumb|right|230px|১২৪৪ সালে আঁকা ড্রাগনের ছবি।]]
প্রাচীন চৈনিক লোকগাঁথা থেকে জানা যায়, পৃথিবী সৃষ্টির আগে সবকিছু ছিল খুব বিশৃঙ্খল। এই বিশৃঙ্খল অবস্থা থেকে ‘ইয়াং’ ও ‘ইন’ ‌নামের দুইটি শক্তির জন্ম হয়। এই শক্তিদুটি কালো ও সাদা রঙের একটি বৃত্তের মধ্যে ঘুড়তে থাকে। বৃত্তের কালো অংশ থেকে সৃষ্টি হয় নারী সত্তা ও সাদা অংশ থেকে সৃষ্টি হয় পুরুষ সত্তা। এদের থেকে জন্ম হয় ‘পানকু’ নামের এক বিরাটাকয় মানুষের। এই পানকু আসলে পৃথিবীর একটি রূপ। এই পানকুকে খুশি করার জন্য চন্দ্র, সূর্য আর তারা সৃষ্টি করা হয়। পানকুর মাথা থেকে পর্বত সৃষ্টি হয়। মেঘ সৃষ্টি হয় নিঃশ্বাস থেকে। শিরা উপশিরা থেকে নদী আর গায়ের পশম থেকে গাছপালার জন্ম হয়। বিশাল পানকুর গায়ে যে সব পোকামাকড় ছিল সেগুলো কালক্রমে হয়ে যায় মানুষ আর অন্যান্য পশুপাখি। ফিনিক্স পাখি, বিশাল কালো কচ্ছপ আর ড্রাগন ছিল পানকুর সহকারী। একসময় ড্রাগনকে সৌভাগ্যের প্রতীক হিসাবে বিশ্বাস করা হত।<ref> এ কে এম শাহনাওয়াজ এর প্রাচীন সভ্যতা সিরিজ ৫ চীন পৃষ্ঠা ১০ প্রথমা প্রকাশনী মার্চ ২০১৫ ISBN 9789848765173</ref>
 
== প্রাক ইতিহাস ==
===পুরাতন প্রস্তরযুগ===
দশ লাখ বছর পূর্বে প্রাগৈতিহাসিককালে, [[হোমো ইরেক্টাস]] নামে মানুষের একটি প্রজাতি চীনের ভূখন্ডে বসবাস করত। <ref name="MagnetostratigraphicDating">{{cite journal|author=Rixiang Zhu, Zhisheng An, Richard Pott, Kenneth A. Hoffman|title=Magnetostratigraphic dating of early humans of in China|journal=Earth Science Reviews|volume=61|date=June 2003|pages=191–361|url=http://www.paleomag.net/members/rixiangzhu/Earth-Sci%20Review.pdf|format=PDF|issue=3–4|language=ইংরেজি|trans-title=}}</ref> অধূনা গবেষনায় দেখা যায় যে, জিয়াওচাংলিয়ানে প্রাপ্ত পাথরের হাতিয়ার ১.৩৬ মিলিয়ন বছর পুরাতন। <ref name="Xiaochangliang">{{cite web|url=http://www.mnh.si.edu/anthro/humanorigins/whatshot/2001/wh2001-3.htm|archiveurl=https://web.archive.org/web/20070813201519/http://www.mnh.si.edu/anthro/humanorigins/whatshot/2001/wh2001-3.htm|archivedate=13 August 2007|title=Earliest Presence of Humans in Northeast Asia|publisher=[[Smithsonian Institution]]|accessdate=4 August 2007|language=ইংরেজি|trans-title=}}</ref> সাংঝি প্রদেশের Xihoudu এর প্রত্নস্থানটিতে হোমো ইরাক্টাসদের আগুন ব্যবহারের প্রমান পাওয়া গেছে, যা ১.২৭ মিলিয়ন বছর পুরাতন।<ref name="MagnetostratigraphicDating" /> Yuanmou এর প্রত্নস্থান খননের পর সেখানে প্রাচীন মানুষের আবাসের প্রমান পাওয়া যায়। এদের মধ্যে ১৯২৩-২৭ সালে প্রাপ্ত হোমো ইরেক্টাস জাতির প্রাচীন মানুষের কংকালটি সবচেয়ে পরিচিত যা তথাকথিত ‘পিকিং’ মানুষ হিসাবে পরিচিত। Hunan প্রদেশের Fuyan গুহা এবং Dao কাউন্টিতে প্রাপ্ত [[হোমো সেপিয়েন্স|হোমো সেপিয়েন্সের]] প্রাপ্ত ফসিলকৃত দাঁতের বয়স ১,২৫,০০০ থেকে ৮০,০০০ খ্রীস্টাপূর্বাব্দেরখ্রিস্টপূর্বাব্দের বলে প্রমান পাওয়া যায়।<ref>{{cite web|url=http://www.bbc.com/news/science-environment-34531861|title=Fossil teeth place humans in Asia '20,000 years early'|publisher=[[BBC News]]|accessdate=14 October 2015|language=ইংরেজি|trans-title=}}</ref>
 
===নবপ্রস্তরযুগ===
খ্রীস্টপূর্বখ্রিস্টপূর্ব ১০,০০০ বছর আগের সময়কালকে নবপ্রস্তর যুগ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়।<ref name="neolithic period in china">{{cite web|title=Neolithic Period in China|url=http://www.metmuseum.org/toah/hd/cneo/hd_cneo.htm|work=Timeline of Art History|publisher=[[Metropolitan Museum of Art]]| date= October 2004|accessdate=10 February 2008|language=ইংরেজি|trans-title=}}</ref> সবচেয়ে পুরাতন প্রাক-চৈনিক যুগের কৃষিকাজ হিসাবে [[মিলেট]] চাষের যে নিদর্শন পাওয়া যায় তার [[কার্বন ডেটিং]] অনুসারে উৎপাদিত হয়েছিল আনুমানিক খ্রীস্টপূর্বখ্রিস্টপূর্ব ৭০০০ সালে।<ref>{{cite web| title=Rice and Early Agriculture in China|url=http://www.mc.maricopa.edu/dept/d10/asb/anthro2003/legacy/banpo/banpo.html|work=Legacy of Human Civilizations|publisher=Mesa Community College|accessdate=10 February 2008|language=ইংরেজি|trans-title=}}</ref> একই ভাবে প্রমান পাওয়া যায় যে, Yangtze নদীর তীরে রোপন করা ধান ৮,০০০ বছর পুরাতন।<ref>[http://science.sciencemag.org/content/282/5393/1446]/Science</ref> তৎকালিন জিহাউ সংস্কৃতি ছিল কৃষিভিত্তিক (৭০০০ থেকে ৫৮০০ খ্রীঃপূঃখ্রিস্টপূর্বাব্দ)।
 
===ব্রোঞ্জ যুগ===
Majiayao সংস্কৃতির প্রত্নস্থানে খ্রীঃপূঃখ্রিঃপূঃ ৩১০০ থেকে ২৭০০ এর মধ্যবর্তী সময়ের পুরাকীর্তি পাওয়া গেছে,<ref>{{cite book|author=Martini, I. Peter|title=Landscapes and Societies: Selected Cases|publisher=[[Springer Science+Business Media|Springer]]|year=2010|isbn=90-481-9412-1|page=310|language=ইংরেজি|trans-title=}}</ref><ref>{{cite book|author=[[Charles Higham (archaeologist)|Higham, Charles]]|title=Encyclopedia of ancient Asian civilizations|publisher=[[Infobase Publishing]]|year=2004|isbn=0-8160-4640-9|page=200|language=ইংরেজি|trans-title=}}</ref> চীনের সর্ব উত্তরের অঞ্চলে নিম্ন Xiajiadian সংস্কৃতিতেও ব্রোঞ্জ যুগের আরো নিদর্শন পাওয়া গেছে।<ref>''Leadership Strategies, Economic Activity, and Interregional Interaction: Social Complexity in Northeast China'', pp.&nbsp;89</ref>)।
 
==মহাপ্রাচীর, রেশম ও কাগজ==
২৮ ⟶ ২৯ নং লাইন:
 
===মহাপ্রাচীর===
খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দী থেকে ১৬শ খ্রীস্টাব্দখ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত চীনের উত্তর সীমান্ত রক্ষার জন্য এই প্রাচীর নির্মান করা হয়। প্রথম চীন সম্রাট কীনকিন শি হুয়াং এই প্রাচীর নির্মান শুরু করেন। এই প্রাচীরের মোট দৈর্ঘ্য ২১,১৯৬ কিমি। উচ্চতা ৫ থেকে ৮ ফুট। প্রাচীন চীনের উত্তর সীমান্তে কিছু ছোট রাজ্যে যাযাবর জাতীর মানুষ বাস করত। তারা প্রায়ই চীনের ভূখন্ডে হামলা চালাত। তাদের এই অনুপ্রবেশে বাধা দানের জন্য বিভিন্ন সময়ে চীন সম্রাটরা প্রাচীর নির্মান করেছিলেন। মহাপ্রাচীর সাংহাই পাস থেকে লোপনুর পর্যন্ত অবস্থিত।
 
===রেশম===
[[চিত্র:Court ladies pounding silk from a painting (捣练图) by Emperor Huizong.jpg|thumb|left|200px|নারীরা রেশম বের করছে (সম্রাট Huizong, [[গণচীন|চীন]], ১২তম খ্রিস্টাব্দে)]]
প্রাচীনকাল সর্বপ্রথম চীনে [[রেশমগুটির চাষ|রেশমগুটির চাষের]] প্রচলন হয়।<ref>{{cite web|url=http://www.infoplease.com/ce6/society/A0861091.html|title=Silk: History|publisher=''[[:en:Columbia Encyclopedia|Columbia Encyclopedia]]'' Sixth Edition}}</ref> সম্ভবত খ্রীস্টেরখ্রিস্টের জন্মের ৩,৫০০ আগে থেকেই চীনারা রেশমের ব্যবহার করত।<ref>{{cite web|url=http://www.asianart.com/textiles/intro.html|title=Textile Exhibition: Introduction|publisher=Asian art}}</ref> প্রাচীন চীনে রাজপরিবার ও ধনাঢ্য ব্যাক্তিরাই কেবল রেশমের কাপড় ব্যবহার করত। কোন কিছু লেখার জন্য রেশম ব্যবহার করা হত। চীন থেকে ক্রমান্বয়ে জাপান, কোরিয়া ও ভারতে এর চাষ ছড়িয়ে পরে।
 
==প্রাচীন চীন==
===সিয়া সাম্রাজ্য (খ্রিস্টপূর্ব ২১০০ থেকে ১৬০০ অব্দ) ===
===সিয়া রাজবংশ===
প্রাচীন চৈনিক শাসকদের মধ্যে [[সিয়া রাজবংশেরসাম্রাজ্য|সিয়া সাম্রাজ্যের]] (খ্রিস্টপূর্ব ২১০০ থেকে ১৬০০ খ্রীস্টাব্দঅব্দ) প্রামান্য ইতিহাস সবচেয়ে পুরান। এর প্রমান [[সিমা কিয়ান]] এর “রেকর্ডস অব গ্রান্ড হিস্টোরিয়ান” ও ”ব্যাম্বু এনা “এনালস“ এ পাওয়া যায়।<ref name="state1"/><ref name="The Ancient Dynasties"/> যদিও প্রকৃতই এই রাজবংশের অস্তিত্ব ছিল কিনা সে বিষয়ে প্রত্নতাত্ত্বিকদের মধ্যে মতভেদ আছে। তবে এই রাজবংশের অস্তিত্ব সম্পর্কে কিছু নির্ভরযোগ্য প্রমান পাওয়া যায়। খ্রীস্টপূর্বখ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দীতে শীমাসিমা কিয়ান লিখেছিলেন যে সিয়া রাজবংশসাম্রাজ্য আনুমানিক ২২০০ খ্রীস্ট পূর্বাব্দেখ্রিস্টপূর্বাব্দে চীন শাসন করে ছিল। যদিও এই তথ্য সম্পর্কে নিঃসন্দেহ হওয়া যায়নি। অধিকাংশ প্রত্নতাত্বিক সিয়া রাজবংশকে Erlitou[[এর লি থৌ]] এবং Henan এর সাথে সম্পর্কৃত মনে করেন।<ref>[http://www.nga.gov/exhibitions/chbro_bron.shtm Bronze Age China] at [http://www.nga.gov/ National Gallery of Art]</ref> যেখান থেকে মাটি খনন করে খ্রীঃপূঃখ্রিস্টপূর্ব ২০০০ সালে নির্মিত একটি ব্রোঞ্জ গলানোর যন্ত্র পাওয়া গেছে।<ref name="Scripts found on Erlitou pottery">[https://web.archive.org/web/20050213035644/http://www.gog.com.cn/gz/art0402/ca615230.htm Scripts found on Erlitou pottery] (written in [[Simplified Chinese]])</ref> প্রাপ্ত কিছু মৃৎপাত্রে কিছু প্রাচীন প্রতীক দেখা যায় যা আধুনিক চৈনিক অক্ষরের আদি রূপ বলে মনে করা হয়।<ref name="Scripts found on Erlitou pottery"/>
 
চৈনিক পৌরনিকপৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, এই রাজবংশ প্রায় খ্রীঃ পূঃখ্রিস্টপূর্ব ১৬০০ অব্দে [[মিঙতিয়াও যুদ্ধে]] বিলুপ্ত হয়।
 
===সাং রাজবংশশাং সাম্রাজ্য (খ্রীঃপূঃখ্রিস্টপূর্ব ১৬০০ থেকে ১০৪০ অব্দ)===
[[File:Shang_dynasty_inscribed_tortoise_plastron.jpg|right|size|150px|thumb|সাংশাং রাজপরিবারেরসাম্রাজ্য সময়কার [[ওরাকল হাড়]]]]
প্রাপ্ত প্রত্নতাত্মিক নিদর্শনসমূহ নির্দেশ করে যে সাং[[শাং বংশসাম্রাজ্য]] খ্রীঃপূঃখ্রিস্টপূর্ব ১৬০০ থেকে ১০৪৬ পর্যন্ত চীন শাসন করে। সাং শাসনামলের প্রমানসমুহ দুইটি ভাগে বিভক্ত। প্রথম ভাগটি, Erligang, Zhengzhou, এবং Shangcheng উৎস থেকে এসেছে।
 
===চৌ রাজবংশ (খ্রীঃপূঃখ্রিস্টপূর্ব ১০৪৬ থেকে ২৫৬ অব্দ)===
চৌ রাজবংশ চীনের ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী রাজবংশ। খ্রীস্টপূর্বখ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় সহস্রকে হলুদ নদী অববাহিকায় সাং বংশের অধিকৃত এলাকার উপর চৌ রাজবংশের উত্থান শুরু হয়। চৌ শাসন শুরু হয়েছিল একটি আধা-সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থার আদলে। চৌরা সাংদের পশ্চিমে বাস করত। চৌ সেনাপতিদেরকে পশ্চিমাঞ্চলের প্রতিরক্ষার দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। Muye এর যুদ্ধে চৌ শাসক রাজা উইউ, তার ভ্রাতা চৌএর ডিউকের সম্মিলিত বাহিনীর সাহায্য নিয়ে সাং বাহিনীকে পরাজিত করে। চৌ রাজা এই সময়ে তার ক্ষমতাকে স্থায়ী করতে ‘স্বর্গাদেশ’ ধারনার প্রচার করেন। এই ধারনাটি তখনকার আমলে অধিকাংশ সম্রাটকে শাসক হিসাবে টিকে থাকতে সাহায্য করেছিল। সাংডি মতে, স্বর্গ (tian) সকল দেবতাদের সেরা এবং তিনিই নির্দেশ দেন কে পরবর্তী শাসক হবেন। জনমনে বিশ্বাস ছিল যে যদি ঘন ঘন প্রাকৃতিক দূর্যোগ দেখা দেয় তাহলে ধরে নিতে হবে সম্রাট তার স্বর্গাদেশ হারিয়েছেন। ফলস্রুতিতে শাসককে উৎখাত করা হত, এবং স্বর্গাদেশ প্রাপ্ত অন্য কাউকে শাসনভার দেয়া হত।
 
===শরৎ-বসন্ত যুগ (খ্রীঃ পুঃখ্রিস্টপূর্ব ৭২২ থেকে ৪৭৬ অব্দ)===
খ্রীস্টপূর্বখ্রিস্টপূর্ব ৮ম শতাব্দীতে, শরৎ ও বসন্তকালে রাজনৈতিক ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করা হয়। এ যুগের নামকরন করা হয় তৎকালিন প্রভাবশালী [[শরৎ বসন্ত ইতিবৃত্ত]] এর নামে। এই সময়ে, আঞ্চলিক সামরিক প্রধানরা চৌ সম্রাজ্যের বিভিন্ন ক্ষমতা লাভ করার জন্য পরস্পরের সাথে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়। পরিস্থিতির আরো অবনতি হয় যখন উত্তর পশ্চিম অঞ্চল থেকে কিছু বহিরাগতরা (যেমন কিন জা‌তি) আক্রমন শুরু করলে চৌরা তাদের রাজধানী আরো পূর্বে সরিয়ে নেয়। এভাবে চৌ রাজবংশের দ্বিতীয় ধারা: পূর্ব চৌ এর জন্ম হয়। শরৎ-বসন্ত যুগ ‌ছিল অবিভক্ত চৌ সম্রাজ্যের বিভক্ত হওয়ার কাল। এ সময়ে কয়েক শত ছোট ছোট রাজ্যের উত্থান হয়। এই রাজ্যগুলো নামে মাত্র চৌ রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল। প্রকৃত অর্থে তারা স্বাধীনভাবে শাসন করত। কিছু রাজ্যের শাসকগন রাজকীয় পদবীও গ্রহণ করেছিলেন। তখনকার চীন ছিল এসব ছোট ছোট রাজ্যের সমষ্টি। যাদের মধ্যে কিছু কিছু রাজ্যের আয়তন একটি গ্রাম এবং একটি কেল্লার মাঝেই সীমাবদ্ধ ছিল।
 
এই সময়ে অনেক দার্শনিক মতবাদের জন্ম হয়। এসব মতবাদ বুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলনের জন্ম দেয়। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল, [[কনফুসীয় ধর্ম|কনফুসিয়াসিজম]], [[তাওইজমতাও ধর্ম]], [[লিগালিজম]] এবং [[মহিজম]]। তৎকালিন রাজনৈতিক ক্রমধারা ও ঘটনাপ্রবাহ আংশিকভাবে এসকল মতবাদের পিছনে কাজ করেছিল।
 
===আন্তঃরাজ্য যুদ্ধাবস্থা (খ্রীঃপূঃখ্রিস্টপূর্ব ৪৭৬ থেকে ২২১ অব্দ)===
 
রাজনৈতিকভাকে একিভূত হবার পর, খ্রীঃ পূঃখ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর শেষে সাতটি প্রভাবশালী বৃহৎ রাজ্য স্বাধীনভাবে টিকে ছিল। বেশ কিছু বছর এই সাতটি রাজ্য পরস্পরের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত ছিল। এই সময়টিকে বলা হয় আন্তঃরাজ্য যুদ্ধাবস্থার যুগ বা Warring States period। খ্রীঃ পূঃখ্রিস্টপূর্ব ২৫৬ পর্যন্ত স্থায়ী হলেও চৌ রাজবংশ মূলত আলংকরিক রাজা ছিলেন। প্রকৃত ক্ষমতা তাদের হাতে ছিল না।
 
এই যুগের চূড়ান্ত সম্প্রসারণ শরু হয় কীন রাজা ইং জেং এর শাসনামলে। তিনি অন্য ছয়টি শক্তিশালী রাজ্যকে একত্রিত করেন। খ্রীঃ পূঃখ্রিস্টপূর্ব ২১৪ সালে তিনি পার্শবর্তী আরো এলাকা আধু‌নিক চীনের Zhejiang, Fujian, Guangdong এবং Guangxi তার রাজ্যের সাথে যোগ করেন। তার সম্রাজ্যের আকার বৃদ্ধি পায় এবং তিনি নিজেকে চীনের সম্রাট হিসাবে ঘোষনা করেন। চীনের ইতিহাসে তিনিই ছিলেন প্রথম সম্রাট (কীনকিন শি হুয়াং)।
 
==চীন সম্রাজ্যসাম্রাজ্য==
===কীনকিন রাজবংশসাম্রাজ্য (খ্রীঃ পূঃখ্রিস্টপূর্ব ২২১ থেকে ২০৬ অব্দ)===
[[File:Qinshihuang.jpg|thumb|[[কীনকিন শি হুয়াং]]]]
 
চীন তখন হান, ওয়েই, চাও, ছি, ছু এবং ইয়ান এই ছয়টি রাজ্যে বিভক্ত ছিল। রাজা [[কিন শি হুয়াং]] এই ছয়টি রাজ্যকে একত্রিত করেন।করে [[কিন সাম্রাজ্য]] গড়ে তুলেন। ইতিহাসে তিনি প্রথম চৈনিক সম্রাট হিসাবে পরিচিত (始皇帝) হিসেবে পরিচিত। দুর্ধর্ষ [[তাতার]] জাতির (মঙ্গল জাতি) হাত থেকে চীনকে রক্ষা করার জন্য তিনি সমগ্র চীনের উত্তর সীমান্ত জুড়ে প্রাচীর নির্মানের উদ্যোগ নেন। যা [[চীনের মহাপ্রাচীর]] নামে পরিচিতি। যদিও বর্তমানে সেই প্রাচীরের সামান্য কিছু অংশের অস্তিত্ব আছে। কীনকিন সি হুয়াং তার প্রথানমন্ত্রীপ্রধানমন্ত্রী [[লী সিং]]কে সাথে নিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার করন।<ref>ISMB0495050539</ref> এছাড়া শীশি হুয়াং এর অবদানগুলোর মধ্যে অন্যতম হল কেন্দ্রীয় সরকার ব্যবস্থা, একক আইন ও ধারা প্রনয়ন, লেখ্য ভাষার প্রবর্তন, এবং মুদ্রার প্রচলন।
 
===পশ্চিম হান===
লিউ বাং হান বংশ প্রতিষ্ঠা করেন। একগৃহযুদ্ধে স্বল্পস্থায়ী কীনকিন বংশের পতন হয়। হান শাসনামল ছিল চীনের ইতিহাসের স্বর্ণযুগ। হান শাসকরা রাজনৈতিক স্থায়ীত্ব ও উন্নতির পাশাপাশি পরবর্তি দুই সহস্রাব্দের জন্য চৈনিক সম্রাজ্যকে একটি কঠিন ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠা করার প্রয়াস পান। এই শাসনামলে চৈনিক সম্রাজ্য ’মূল চীন’ (China proper বা চীনের ১৮ প্রদেশ) পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। পশ্চিমের ভূখন্ডও চৈনিক সম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়।
কনফুশিয় মতবাদ সরকারিভাবে মৌলভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হয়। এই মতবাদ চৈনিক সভ্যতার সঠিক রূপায়নে অবদান রাখে। এই শাসনামলে কলা, সংস্কৃতি এবং বিজ্ঞানের অভূতপূর্ব উন্নতি সাধিত হয়। হান সম্রাজ্যের গভীর এবং দীর্ঘস্থায়ী প্রভাবের কারনে সমগ্র চীন জাতির মানুষ একসময় ‘‘হান” হিসাবে পরিচত ছিল। এই হান জাতি বর্তমান চীনের সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতিগোষ্ঠী।
 
===সিন সাম্রাজ্য ===
===ঝিন রাজবংশ===
৯ম খ্রীস্টাব্দে, দখলদার [[ওয়াং মাং]] দাবী করেন যে হান বংশের উপর স্বর্গাদেশ আর বলবৎ নেই। তিনি হান শাসনামলের সমাপ্তি ও স্বল্পস্থায়ী ‘ঝিন’‘সিন’ (নতুন) বংশ প্রতিষ্ঠার ঘোষান দেন। ওয়াং মাং ভূমি ও অর্থনৈতিক সংস্কারের পাশাপাশি দাস প্রথা রোহিতকরন এবং ভূমি জাতীয়করন পুনর্বন্টন সহ বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেন। সাধারন কৃষকদের স্বার্থে গৃহীত এ সকল প্রকল্প ভূমির মালিক ধনাঢ্য ব্যক্তি ও পরিবারের সমর্থন পায়নি। ক্ষমতার অস্থিরতা বিশৃঙ্খলা, বিদ্রোহের জন্ম দেয় সেই সাথে অনেক অঞ্চল সম্রাটের হাতছাড়া হয়ে যায়। হলুদ নদীর আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটায়; বন্যা ও পলিমাটির আস্তরন বিশাল এলাকায় কৃষক জনগোষ্ঠীকে বাস্তুচ্যুত করে। ২৩ খ্রিস্টাব্দে একদল ক্রুদ্ধ কৃষক, ওয়াং মাংকে তার Weiyang প্রাসাদে হত্যা করে।
 
===পূর্ব হান===
৭৭ ⟶ ৭৮ নং লাইন:
পূর্ব হান শাসনামল ছিল প্রাচীন চিনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রভূত উন্নতির কাল। বিশেষ করে [[কাই লুন|কাই লুনের]] কাগজের আবিষ্কার এবং বহুবিদ [[জ্যাং হেং]]এর অগনিত অবদান।
 
===রাজ্যত্রয় (২২০ থেকে ২৮০ খ্রীস্টাব্দখ্রিস্টাব্দ)===
খ্রীস্টিয় দ্বিতীয় শতাব্দীতে ভূমি দখল, বিহঃশত্রুর আক্রমণ এবং বিভিন্ন গোত্র ও [[খোজা|খোজাদের]] মধ্যে দ্বন্দ্ব বিবাদের কারনে চৈনিক সম্রাজ্যের পতন শুরু হয়। ১৮৪ সালে ‘[[হলুদ পাগড়ি বিদ্রোহ]]’ দেখা দেয়, সেই সাথে সূচনা হয় যুদ্ধবাজ নেতাদের যুগ। এসব হাঙ্গামার সময়, তিনটি সম্রাজ্য তাদের আধিপত্য বিস্তারে সচেষ্ট ছিল। এই সময়টি চৈনিক ইতিহাসে রাজ্যত্রয় (Three Kingdoms) হিসাবে পরিচিত। ‘[[রোমান্স অব দ্যা থ্রি কিংডমস]]’ সাহিত্যকর্মে এসময়কার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
 
৮৪ ⟶ ৮৫ নং লাইন:
২৬৫ সালে জিন বংশ উইদের ক্ষমতা থেকে উৎখাত করে এবং ২৮০ সালে তারা চীনকে ঐক্যবদ্ধ করে। তবে এই ঐক্য ক্ষনস্থায়ী ছিল।
 
===জিন রাজবংশসাম্রাজ্য (২৬৫ থেকে ৪২০ খ্রীস্টাব্দখ্রিস্টাব্দ)===
[[File:Terracotta Army-China2.jpg|thumb| টেরাকোটা আর্মি]]
অ-হান অভিবাসিদের বিদ্রোহের পর উত্তর চীন হাতছাড়া হয়ে যায়। বিদ্রোহীরা Luoyang এবং Chang’an দখল করে নেয়। এছাড়া রাজপুত্রদের মধ্যে পারস্পরিক সংঘাত জিন শাসনকে ক্রমেই দূর্বল করে ফেলে। ৩১৭ সালে, একজন জিন রাজকুমার, নানজিং সম্রাট হন। ইতিহাসে এই নতুন সম্রাজ্য পূর্ব জিন সম্রাজ্য নামে পরিচিত। এই সম্রাজ্য পরবর্তী এক শতাব্দী পর্যন্ত টিকে ছিল।
৯০ ⟶ ৯১ নং লাইন:
উত্তর চীন কয়েকটি স্বাধীন রাজ্যে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এসব রাজ্যের বেশীরভাগই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল Xiongnu, Xianbei, Jie, Di এবং Qiang শাসকদের দ্বারা। এসব শাসকরা হান জাতিভূক্ত ছিল না। তারা ছিল তূর্কী, মঙ্গল এবং তিব্বতীয় জাতিগোষ্ঠীর মানুষ।
 
=== উত্তর ও দক্ষিনের রাজবংশ সমূহ (৪২০ থেকে ৫৮৯ খ্রীস্টাব্দখ্রিস্টাব্দ)===
পঞ্চম শতাব্দীর শুরুতে চীন নতুন একটি যুগে প্রবেশ করে যা উত্তর ও দক্ষিনের রাজবংশ (Northern and Southern dynasties) নামে পরিচিত। এ সময় উত্তর ও দক্ষিণ চীনে সমান্তরাল কিন্তু পৃথক শাসনক্ষমতা বিরাজমান ছিল।
 
===সুই রাজবংশসাম্রাজ্য (৫৮৯ থেকে ৬১৮ খ্রীস্টাব্দখ্রিস্টাব্দ)===
সুই রাজবংশ মাত্র ২৯ বছর টিকে ছিল। কিন্তু স্বল্পকালের শাসন চীনের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। সুইরা চীনকে পুনরায় একত্রিক করে। তারা রাষ্ট্রযন্ত্রে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছিল যেগুলো পরবর্তী শাসকরা পরিগ্রহন করেছিলেন। এ সময়কার গুরুত্বপূর্ণ অবদানগুলোর মধ্যে অন্যতম হল, তিনটি বিভাগ বিভক্ত সরকার ব্যবস্থা, ছয়টি মন্ত্রনালয় প্রতিষ্ঠা, মুদ্রাব্যবস্থা, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি, মহাপ্রাচীরের সম্প্রসারণ, এবং [[বৌদ্ধ]] ধর্মকে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা দান। কিনদের মতো সুই সম্রাটরাও প্রাপ্ত সম্পদের অতিরিক্ত ব্যবহার শুরু করেন যার ফলে তাদের পতন ত্বরান্বিত হয়।
 
===তাং রাজবংশসাম্রাজ্য (৬১৮ থেকে ৯০৭ খ্রীস্টাব্দখ্রিস্টাব্দ)===
[[File:Tang horse.jpg|thumb|তাং বংশের আমলে নির্মিত একটি পোর্সালিনের ঘোড়ার মূর্তী]]
৬১৮ সালের ১৮ই জুন সম্রাট গাউজু তাং রাজবংশের প্রতিষ্ঠা করেন। এ শাসনামল ছিল কলা, সাহিত্য, বিশেষ করে কাব্য সাহিত্য এবং কারিগরী উৎকর্ষের স্বর্ণ যুগ। এ শাসনামলে বৌদ্ধ ধর্ম সাধারণ মানুষের ধর্ম হিসাবে প্রতিষ্ঠা পায়। তাং সম্রাজ্যের রাজধনী Chang'an ছিল তৎকালিন বিশ্বের সর্ববৃহৎ নগরী।
১০৩ ⟶ ১০৪ নং লাইন:
তাং রাজবংশের সমৃদ্ধির পিছনে ছিল একটি শক্তিশালী কেন্দ্রীয় আমলাতন্ত্র। তিনটি বিভাগ ও ছয় মন্ত্রনালয়ে বিভক্ত প্রশাসনযন্ত্র একই সাথে রাজপরিবারের সদস্য ও মেধাবী কর্মকর্তাদের দ্বারা পরিচালিত হত। রাজকীয় পরীক্ষার মাধ্যমে এ সব কর্মকর্তাদের বাছাই করা হত। এসকল প্রশাসনিক ব্যবস্থা পরবর্তী শাসকরাও বহাল রাখেন।
 
===পঞ্চ বংশ ও দশ রাজ্য (৯০৭ থেকে ৯৭০ খ্রীস্টাব্দখ্রিস্টাব্দ)===
 
৯০৭ থেকে ৯৭০ খ্রীস্টাব্দ পর্য়ন্ত চীনের ইতিহাসের রাজনৈতিক অনৈক্যকে বলা হয় ‘পঞ্চ বংশ ও দশ রাজ্যর শাসনামল’ (Five Dynasties and Ten Kingdoms period)। দীর্ঘ অর্ধশত বছর যাবত চীন ছিল একটি বহুরাজ্য শাসিত অঞ্চল। পাঁচটি রাজবংশ একের পর এক উত্তরাঞ্চলের সাবেক চীন সম্রাজ্যের কেন্দ্রসমূহের শাসন ক্ষমতা দখল করে। একই সময়ে দক্ষিন ও পশ্চিম চীনে দশটি রাজ্যের শাসন অপেক্ষাকৃত স্থয়ী ভাবে বিরাজমান ছিল।
 
===সং, লিয়াও, ঝিন এবং পশ্চিম সিয়া রাজবংশসাম্রাজ্য (৯৬০ থেকে ১২৩৪ খ্রীস্টাব্দখ্রিস্টাব্দ)===
৯৬০ সালে সং বংশ চীনের অধিকাংশ অঞ্জলের শাসন ক্ষমতা দখল করে এবং কাইফেং এ রাজধানী স্থাপন করে (পরবর্তীতে বিয়নজিং নামে পরিচিত)। এ সময় চীন অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হয়। এ সময় কিতাল লিয়াও মাঞ্চুরিয়া, মঙ্গলিয়া এবং উত্তর চীনের কিছু অংশ শাসন করত।
 
===ইউয়ান রাজবংশসাম্রাজ্য (১ে২৭১ থেকে ১৩৬৮ খ্রীস্টাব্দখ্রিস্টাব্দ)===
[[File:Yuan chinese gun.jpg|thumb|right|ইউয়ান আমলের হাস্তচালিত কামান]]
Jurchen ছিলেন ঝিন বংশের প্রতিষ্ঠাতা যিনি মঙ্গলদের দ্বারা পরাজিত হয়েছিলেন। এরপর মঙ্গলরা দক্ষিন সং রাজ্যের দিকে অগ্রসর হয় এবং এক দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এটাই ছিল প্রথম যুদ্ধ যেখানে আগ্নেয়াস্ত্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই যুদ্ধের পরবর্তী সময়কে বলা হয় Pax Mongolica, এ সময় [[মার্কো পোলো]] ও অন্যান্য ইউরোপীয় পরিব্রাজকরা চীন ভ্রমণ করেন এবং চীন সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য ইউরোপে পৌছায়। ইউয়ান শাসনামলে, মঙ্গলদেরকে দুইটি অংশে ভাগ করা হয়, একটি অংশ স্তেপে থেকে যায় এবং আর একটি অংশ চৈনিক রীতিনীতি গ্রহন করে। [[চেঙ্গিস খান|চেঙ্গিস খানের]] পৌত্র [[কুবলাই খান]] ইউয়ান বংশ প্রতিষ্ঠা করেন। ইউয়ান শাসনামলে সর্ব প্রথম বেইজিং থেকে সমগ্র চীন সম্রাজ্য পরিচালিত হয়। এর আগে ঝিন সম্রাটদের রাজধানী ছিল বেইজিং। কিন্তু তারা সমগ্র চীনের শাসক ছিলেন না।
১১৭ ⟶ ১১৮ নং লাইন:
১৪ শতাব্দীতে প্লেগে আক্রান্ত হয়ে ২৫ মিলিয়ন মানুষ মারা যায়। যা ছিল তৎকালিন জনসংখ্যার ৩০%।<ref>{{cite web|url = http://chip.med.nyu.edu/course/view.php?id=13&topic=1 |title = Course: Plague |archiveurl = https://web.archive.org/web/20071118121009/http://chip.med.nyu.edu/course/view.php?id=13&topic=1 | archivedate = 18 November 2007}}{{dead link|date=September 2012}}</ref>
 
===মিং রাজবংশসাম্রাজ্য (১৩৬৮ থেকে ১৬৪৪ খ্রীস্টাব্দ)===
[[File:Court Ladies of the Former Shu by Tang Yin.jpg|thumb|upright|তাং ইং (১২৭০-১৫২৩) অঙ্কিত ''শু রাজদরবারে রমনী'']]
[[File:明太祖.jpg|left|thumb|upright|সম্রাট হংওউ, মিং বংশের প্রতিষ্ঠাতা]]
১২৮ ⟶ ১২৯ নং লাইন:
মিং শাসকরা একটি দৃঢ় এবং জটিল কেন্দ্রীয় শাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিল। ক্রমেই মিং শাসকরা একচ্ছত্র স্বৈরশাসকে পরিনত হয়।
 
=== কিং রাজবংশসাম্রাজ্য (১৬৪৪ থেকে ১৯১১)===
[[File:Museum für Ostasiatische Kunst Dahlem Berlin Mai 2006 041.jpg|left|thumb|কিং আমলের তীর্থযাত্রীদের ফ্লাস্ক। সময়কাল ১৮ শতাব্দী]]
কিং রাজবংশ চীনের ইতিহাসের সর্বশেষ রাজবংশ। মাঞ্চুসরা এই বংশ প্রতিষ্ঠা করে। অ-হান চৈনিক কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত দ্বিতীয় রাজবংশ যারা সমগ্র চীন শাসন করেছিল। মাঞ্চুরা পূর্বে Jurchens নামে পরিচিত ছিল। যারা উত্তর পশ্চিম চীনে মিং শাসিত এলাকার বাইরে মহাপ্রাচীরের অপর প্রান্তে বসবাস করত। মিং বংশের শেষ শাসকদের নিকট তারা একসময় বড় রকম হুমকি ছিল। বিশেষ করে [[নুরচাই]] যথন সকল জুরচেন উপজাতিদেরকে সংঘবদ্ধ করে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে। যদিও, শেষ মং সম্রাট চংজেন, এক কৃষক বিদ্রোহের ১৬৪৪ সালে সিংহাসনচ্যুত হবার পর আত্মহত্যা করেন। মাঞ্চুরা একজন প্রাক্তন মিং সেনাপতির সাথে সন্ধিবদ্ধ হয়ে চীন আক্রমণ করেন। প্রথমে বেইজিং দখল করে রাজধানী হিসাবে ঘোষনা করেন। পরে ধীরে ধীরে দক্ষিনের এলাকাগুলো দখল করেন। মাঞ্চু শাসনামলে প্রচুর প্রানহানি ঘটে এবং চীনের অর্থনীতির ব্যাপক ক্ষতি হয়। সর্বমোট ২৫ মিলিয়ন মানুষ প্রান হারান।<ref>John M. Roberts (1997). ''[https://books.google.com/books?id=3QZXvUhGwhAC A Short History of the World]''. Oxford University Press. p. 272. ISBN 0-19-511504-X.</ref> যাইহোক, মাঞ্চুসরা ঐতিহ্যগত চীনা সরকারের কনফুশিয়ানর নিয়ম গ্রহণ করে। একারনে তাদের চীনা রাজবংশ হিসেবে বিবেচনা করা হতো।