জাপানি সাহিত্য: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
নতুন পৃষ্ঠা: {{কাজ চলছে}} {{জাপানের সংস্কৃতি}} '''জাপানি সাহিত্যের''' প্রাথমিক ন...
 
৭ নং লাইন:
== ইতিহাস ==
জাপানি সাহিত্যকে ঐতিহাসিকভাবে ছয় ভাগে ভাগ করা যায়, যথা: প্রাচীন, ধ্রুপদী, মধ্যযুগীয়, প্রাথমিক আধুনিক (এদো যুগ), আধুনিক ও যুদ্ধোত্তর সাহিত্য।
 
{{দেশের নিবন্ধ|জাপানের}}
=== প্রাচীন সাহিত্য (৭৯৪ খ্রিঃ পর্যন্ত) ===
[[চিত্র:Tosa Mitsuoki 001.jpg|thumb|''গেঞ্জির গল্পের'' রচয়িত্রী মুরাসাকি শিকিবু]]
চীন থেকে [[কাঞ্জি]] চিত্রাক্ষর আত্তিকরণের আগে অবধি জাপানি ভাষার কোনও লিখিত রূপ ছিল না। প্রথমে জাপানি গঠনের বাক্য চীনা অক্ষরে লেখা হত। ফলে যে লেখন সম্পন্ন হত তাকে দেখতে লাগত চীনার মত, কিন্তু পড়তে হত জাপানি উচ্চারণে। চীনা অক্ষরে ক্রমশ রদবদল করে তৈরি হয় মান্‌ইয়োগানা([[Wikt:万葉仮名|万葉仮名]]<sup>[[উইকিপিডিয়া:বাংলা ভাষায় জাপানি শব্দের প্রতিবর্ণীকরণ|?]]</sup>)। মান্‌ইয়োগানা ছিল আধুনিক কানা বা দল ভিত্তিক বর্ণের আদিরূপ। প্রথম সাহিত্যকর্মগুলি রচিত হয় [[নারা যুগ|নারা যুগে]]। এগুলোর মধ্যে আছে ''কোজিকি'' (古事記<sup>[[উইকিপিডিয়া:বাংলা ভাষায় জাপানি শব্দের প্রতিবর্ণীকরণ|?]]</sup>,৭১২ খ্রিঃ), একাধারে ইতিহাস, পুরাণ ও লোকগাথার একটি সংগ্রহ, ''নিহন শোকি'' (日本書紀<sup>[[উইকিপিডিয়া:বাংলা ভাষায় জাপানি শব্দের প্রতিবর্ণীকরণ|?]]</sup>,৭২০ খ্রিঃ), আরেকটি রচনাসংগ্রহ যা কোজিকির চেয়ে বেশি অনুপুঙ্খ, এবং ''মান্‌ইয়োশুউ'' (万葉集<sup>[[উইকিপিডিয়া:বাংলা ভাষায় জাপানি শব্দের প্রতিবর্ণীকরণ|?]]</sup>,৭৫৯ খ্রিঃ), যা একটি কাব্যসংগ্রহ।
 
=== ধ্রুপদী সাহিত্য (৭৯৪-১১৮৫ খ্রিঃ) ===
ধ্রুপদী জাপানি সাহিত্য বলতে সাধারণত [[হেইআন যুগ|হেইআন যুগের]] সাহিত্যকে বোঝায়। এই যুগ শিল্পকলা ও সাহিত্যের ক্ষেত্রে জাপানের স্বর্ণযুগ হিসেবে পরিচিত। মুরাসাকি শিকিবু রচিত ''গেঞ্জির গল্প'' (源氏物語<sup>[[উইকিপিডিয়া:বাংলা ভাষায় জাপানি শব্দের প্রতিবর্ণীকরণ|?]]</sup>, ''গেঞ্জি মোনোগাতারি'') হল একাদশ শতাব্দীর জাপানি কল্পসাহিত্যের শ্রেষ্ঠ কীর্তি ও তর্কযোগ্যভাবে বিশ্বের প্রাচীনতম [[উপন্যাস]]। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ লেখার মধ্যে আছে ওয়াকা কাব্যসংকলন ''কোকিন্‌ ওয়াকাশুউ'' (৯০৫ খ্রিঃ) এবং মুরাসাকি শিকিবুর সমসাময়িক সেই শোনাগোন্‌ রচিত ''বালিশ-কথা'' (枕草子<sup>[[উইকিপিডিয়া:বাংলা ভাষায় জাপানি শব্দের প্রতিবর্ণীকরণ|?]]</sup> ,''মাকুরা নো সোওশি,'' ৯৯০ এর দশক)। শেষোক্ত বইটি সমকালীন জাপানের রাজসভার সভাসদদের দৈনন্দিন জীবন বিষয়ক। বর্তমানে জাপানি বর্ণমালার অন্যতম প্রামাণ্য পদ্য ''ইরোহা কাব্যও'' এই যুগের প্রথম পর্বে তৈরি হয়েছিল।
 
দশম শতাব্দীর জাপানি কাহিনী ''বাঁশ কাঠুরের গল্প'' (竹取物語, ''তাকেতোরি মোনোগাতারি'') জাপানের প্রাচীনতম ফ্যান্টাসি গল্প। আরেকটি বৃহৎ গল্পসংগ্রহ হল ''অতীতের গল্পসংকলন'' (今昔物語集, ''কোঞ্জাকু মোনোগাতারিশুউ''), যার ৩১ টি খণ্ডে এক হাজারেরও বেশি কাহিনী নথিবদ্ধ আছে। এতে জাপান ছাড়াও ভারত ও চীনের নানা কাহিনী পাওয়া যায়। এই যুগে জাপানের রাজসভা কবিদের বিশেষ পৃষ্ঠপোষকতা করত, যাঁদের অনেকে নিজেরা ছিলেন সভাসদ বা তাঁদের সহকারী। কাব্য সংকলনের সম্পাদনা ছিল তাঁদের অন্যতম প্রিয় অবসর বিনোদন।
 
=== মধ্যযুগীয় সাহিত্য (১১৮৫-১৬০৩ খ্রিঃ) ===
মধ্যযুগের জাপানে বহু যুদ্ধবিগ্রহ লেগে থাকার কারণে এক বিশিষ্ট যোদ্ধা শ্রেণীর জন্ম হয়। সেইসঙ্গে যুদ্ধকেন্দ্রিক গল্প ও ইতিহাস-উপাখ্যান রচিত হতে থাকে। এই যুগের সাহিত্যের সাধারণ বৈশিষ্ট্য হল জীবন ও মৃত্যু সম্পর্কে চিন্তা, সরল জীবনযাত্রার গুণগান ও প্রতিশোধ-মূলক রসের আধিক্য। এই যুগের এক আদর্শ কাহিনী হল ''হেইকের গল্প'' (平家物語, ''হেইকে মোনোগাতারি'', ১৩৭১ খ্রিঃ)। এর উপজীব্য বিষয় হল দ্বাদশ শতাব্দীর শেষভাগে জাপানের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মিনামোতো ও তাইরা গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব। সমসাময়িক অন্যান্য উল্লেখযোগ্য কাহিনী হল কামো নো চোওমেই-এর রচিত ''হোওজোওকি'' (方丈記, ১২১২ খ্রিঃ) এবং য়োশিদা কেঙ্কো রচিত ''আলস্যের ফসল'' (徒然草, ''ৎসুরেযুরেগুসা,'' ১৩৩১ খ্রিঃ)।
 
এই যুগে আবিষ্কৃত সাহিত্যধারার মধ্যে পড়ে শৃঙ্খলিত কাব্য রেঙ্গা এবং নো নাটক। এই দুটি ধারাই [[মুরোমাচি যুগ|মুরোমাচি যুগের]] আরম্ভে মধ্য চতুর্দশ শতাব্দীতে দ্রুত উন্নতি করে।
 
=== প্রাথমিক আধুনিক সাহিত্য (১৬০৩-১৮৬৮ খ্রিঃ) (এদো যুগ) ===
এই সাহিত্য প্রধানত শান্তিপূর্ণ তোকুগাওয়া যুগ বা এদো যুগে রচিত সাহিত্য। নতুন রাজধানী [[এদো]] নগরে (অধুনা [[টোকিও|তোকিও]]) শ্রমজীবী ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর উত্থানের ফলে লোকপ্রিয় বিভিন্ন ধরণের নাটকের সৃষ্টি হয় যা পরবর্তীকালে [[কাবুকি|কাবুকির]] জন্ম দেয়। জোওরুরি সঙ্গীতজ্ঞ ও কাবুকি নাট্যকার চিকামাৎসু মোন্‌যাএমোন সপ্তদশ শতাব্দীর শেষভাগে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। তাঁকে জাপানের শেক্সপিয়ার বলা হয়। মাৎসুও বাশো রচনা করেন ভ্রমণকাহিনী ''সরু গহন পথ'' (奥の細道, <small>মূল সংস্করণে</small> おくのほそ道, ''ওকু নো হোসোমিচি'')। জিপ্পেন্‌শা ইক্কু ছিলেন বিখ্যাত রম্য রচনাকার।
 
=== আধুনিক সাহিত্য (১৮৬৮-১৯৪৫ খ্রিঃ) ===
মেইজি যুগে জাপান দীর্ঘ স্বেচ্ছা-বিচ্ছিন্নতার অবসান ঘটীয়ে বহির্বিশ্বের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে এবং অতি দ্রুত শিল্পায়নের পথে অগ্রসর হয়। ইউরোপীয় সাহিত্যের সাথে পরিচিতির ফলে জাপানি সাহিত্যে মুক্ত পদ্যের প্রবেশ ঘটে। তরুণ জাপানি সাহিত্যিক ও কবিরা অজস্র নতুন চিন্তার প্রকাশভঙ্গি ও আত্তীকরণের জন্য সচেষ্ট হন, কিন্তু ঔপন্যাসিকরাই এই কাজে প্রথম সাফল্য পান।
 
নাৎসুমে সোওসেকির হাসির ব্যঙ্গাত্মক উপন্যাস ''আমি একটা বিড়াল'' (吾輩は猫である,''ওয়াগাহাই ওয়া নেকো দে আরু'', ১৯০৫ খ্রিঃ) এক বিড়ালকে কথক হিসেবে আশ্রয় করে। ঐ লেখকেরই অন্যান্য রচনার মধ্যে পড়ে ''বোচ্চান'' (坊っちゃん, ১৯০৬) ও ''কোকোরো'' (こころ, ১৯১৪)। নাৎসুমে ও তাঁর সমসাময়িক মোরি ওওগাই ও শিগা নাওয়্যা বিভিন্ন পাশ্চাত্য সাহিত্য-কৌশলের জাপানিকরণে মূল ভূমিকা নেন। শিগা নাওয়্যা স্বদেশী সাহিত্যে উত্তম পুরুষ কথকের পরিচয় ঘটান এবং তাঁকে জাপানের 'উপন্যাসের দেবতা' আখ্যাও দেওয়া হয়।
 
জাপানি সাহিত্যে রোমান্টিকতাবাদের আগমন ঘটে মোরি ওওগাইয়ের অনূদিত কবিতা সংকলনের (১৮৮৯) মাধ্যমে এবং সমৃদ্ধির শিখর স্পর্শ করে তোওসোন শিমাযাকি প্রমুখ লেখক ও ''মিয়োজো'' ও ''বুংগাকু-কাই'' ইত্যাদি সাময়িকী পত্রিকার পৃষ্ঠপোষকতায় বিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে।
 
১৯২০ ও ১৯৩০ এর দশকে সর্বহারার সাহিত্য আন্দোলনে তাকিজি কোবায়াশি, দেঞ্জি কুরোশিমা, য়ুরিকো মিয়ামোতো এবং ইনেকো সাতা এক রাজনৈতিকভাবে স্বতন্ত্র সাহিত্যের জন্ম দেন যা সমাজের বঞ্চিত ও শোষিত শ্রেণীর মানুষের দুঃখ দুর্দশার কথা তুলে ধরে। {{দেশের নিবন্ধ|জাপানের}}