অন্নপূর্ণা ১: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
বট বানান ঠিক করেছে
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে
২২ নং লাইন:
}}
 
'''অন্নপূর্ণা ১''' হল [[হিমালয়|হিমালয়ের]] [[অন্নপূর্ণা (পর্বতশৃঙ্গ)|অন্নপূর্ণা পর্বতশৃঙ্গের]] একটি পর্বত। এটি [[নেপাল|নেপালের]] উত্তর-মধ্যাংশে হিমালয়ের অন্তর্গত। অন্নপূর্ণা পর্বতশৃঙ্গের পর্বতগুলোর মধ্যে ১৩টি পর্বতের উচ্চতা ৭০০০ মিটারের অধিক এবং অন্নপূর্ণা ১ এর উচ্চতা ৮০৯১ মিটার। এছাড়া এই পর্বতশৃঙ্গে ৬০০০ মিটারের অধিক আরো ১৬টি পর্বত রয়েছে। অন্নপূর্ণা পর্বতশৃঙ্গের দৈর্ঘ্য ৫৫ মিলোমিটার। এই পর্বতশৃঙ্গের পশ্চিম পার্শ্ব দিয়ে [[কালি গান্ধাকি নদী]] প্রবাহিত হয়েছে, যার ফলে সৃষ্টি হয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে গভীর ঘাটের। উত্তর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে [[মারসিয়াংদি নদী]]। দক্ষিণে রয়েছে [[পোখারা উপত্যকা]]। পশ্চিম পাশে অন্নপূর্ণা পর্বতশৃঙ্গের মাধ্যমে তৈরি হয়েছে এক বিশাল অববাহিকা, যার নাম [[অন্নপূর্ণা অভয়ারণ্য]]।
 
অন্নপূর্ণা ১ পৃথিবীর দশম উচ্চতম পর্বত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা ৮০৯১ মিটার। অন্নপূর্ণা পর্বতশৃঙ্গের পুরো এলাকা ৭,৬২৯ বর্গ কিলোমিটার অন্নপূর্ণা সংরক্ষিণ অঞ্চল নামে একটি প্রকল্পের আওতায় সংরক্ষিত। এটি নেপালের প্রথম ও সবচেয়ে বড় সংরক্ষিত অঞ্চল। এই সংরক্ষিত অঞ্চলটি ট্রেকিং-এর জন্য বিশ্বখ্যাত। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ট্রেকাররা এই অঞ্চলে ট্রেকিং-এর উদ্দেশ্যে আসে।
 
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে, পর্বতারোহণের দিক থেকে পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন পর্বতগুলোর কয়েকটি এই অন্নপূর্ণা পর্বতশৃঙ্গের অন্তর্গত। তবে সাম্প্রতিককালে কাঞ্চনজঙ্ঘার মৃত্যুহার অন্নপূর্ণার চেয়ে কিছু বেশি বলে প্রতীয়মান হয়। মার্চ ২০১২ নাগাদ, অন্নপূর্ণা ১ পর্বতে ১৯১ জন পর্বতারোহী আরোহণের প্রচেষ্টা চালিয়েছে। এর মধ্যে ৬১ জন মৃত্যুবরণ করেছে। তাই অন্নপূর্ণার মৃত্যুহার ৩২%, যা পৃথিবীর অন্য যেকোন আট হাজারী পর্বতশৃঙ্গের চেয়ে বেশি। বহু পর্বতারোহীদের মতে, অন্নপূর্ণা ১ এর দক্ষিণ পার্শ্ব দিয়ে আরোহণ বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন। ২০১৪ সালের অক্টোবরে কমপক্ষে ৩৯ জন অভিযাত্রী অন্নপূর্ণা অঞ্চলে ট্রেকিং করার সময় তুষারঝড় ও হিমবাহের কবলে পড়ে মারা যান। ট্রেকিং-এর ক্ষেত্রে এটি নেপালের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা।
 
অন্নপূর্ণা একটি সংস্কৃত শব্দ, যার আভিধানিক অর্থ “খাদ্যময়”। তবে অন্নপূর্ণা দ্বারা ''ফসলের দেবী''কে বুঝানো হয়। অন্নপূর্ণা দেবী হল সার্বজনীন অন্নের বিধাতা। তিনি অন্ন দান করেন। তিনি ছাড়া পৃথিবীতে দুর্ভিক্ষ নেমে আসে। দেবী অন্নপূর্ণার সবচেয়ে জনপ্রিয় মন্দির [[ভারত|ভারতের]] [[বারাণসী|বারাণসীতে]] [[গঙ্গা|গঙ্গার]] তীরে অবস্থিত।
 
==ভূগোল==
৫৯ নং লাইন:
==পর্বতারোহণ অভিযান==
[[File:Annapurna Massif Aerial View.jpg|250px|thumb|বিমান থেকে দৃশ্যমান অন্নপূর্ণা পর্বতশৃঙ্গ।]]
অন্নপূর্ণা ১ প্রথম কোন ৮০০০-মিটার পর্বত যেটার চূড়ায় মানুষ সফলভাবে আরোহণ করতে সমর্থ হয়। ফরাসী পর্বতারোহী মাউরিস হার্যোগ এবং লুইস ল্যাচেনাল ১৯৫০ সালের ৩ জুন অন্নপূর্ণা ১-এর চূড়ায় আরোহণ করেন। তাদের এই অভিযানে আরো ছিলেন লিওনেল টেরা, গ্যাস্টন রেবুয়াত, মার্সেল ইচাখ, ইয়ান কোজি, মার্সেল শাটজ, জ্যাকস উডোট এবং ফ্রান্সিস নোয়েল। এই অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন মাউরিস হার্যোগ। ইচাখ এই অভিযানের একটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেন। পরবর্তী তিন বছরে এটিই ছিল মানুষের জয় করা সর্বোচ্চ পর্বত।
 
অন্নপূর্ণার দক্ষিণ পার্শ্ব দিয়ে সর্বপ্রথম আরোহণ করেন পর্বতারোহী ডন উইলিয়ামস এবং ডগলাস হ্যাস্টন, ১৯৭০ সালে। এই ব্রিটিশ অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেঙ্ক্রিস বোনিংটন এবং ইয়ান ক্লাউ। ইয়ান ক্লাউ চূড়া থেকে অবতরণের সময় মৃত্যুবরণ করেন।
 
১৯৭৮ সালে আমেরিকান উইমেন্স হিমালায়ান এক্সপিডিশন-এর একটি দল অন্নপূর্ণা জয় করে। এর ফলে প্রথমবারের মত আমেরিকান কোন দল অন্নপূর্ণা জয়ের গৌরব লাভ করে। এই অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন আর্লিন ব্লুম। এই অভিযানের প্রথম দলে ছিলেন ভেরা কোমারকোভা, আইরিন মিলার, শেরপা মিংমা সেরিং ও চেওয়াং রিঙিং। এই দলটি ১৯৭৮ সালের ১৫ অক্টোবর অন্নপূর্ণা ১-এর চূড়ায় আরোহণ করে। অভিযানের দ্বিতীয় দলে ছিলেন অ্যালিসন চ্যাডউইক এবং ভেরা ওয়াটসন। এই দলটি পর্বতে আরোহণের সময়ই মৃত্যুমুখে পতিত হয়।
 
১৯৮১ সালে একটী পোলিশ অভিযাত্রীর দল অন্নপূর্ণায় আরোহণের নতুন একটি পথ আবিষ্কার করে। এই দলে ছিলেন মাসিয়াজ বারবেকা এবং বোগুসলো প্রোবুলস্কি। তাদের আবিষ্কৃত পথটি ১৯৮১ সালে হিমালয়ের সেরা অর্জন হিসেবে স্বীকৃত হয়।