ধর্মের সমালোচনা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Roshu Bangal (আলোচনা | অবদান)
Roshu Bangal (আলোচনা | অবদান)
১৪ নং লাইন:
''Religion'' (উচ্চারণ: ''রিলিজিওন'', অর্থ: উপসনা ধর্ম) শব্দটির উৎপত্তি [[ফরাসি ভাষা|ফরাসি]] ''religion ''থেকে, যেমন, "religious community" (উচ্চারণ: ''রিলিজিয়াস কম্যুনিটি'', অর্থ: ধর্মীয় সম্প্রদায়)। আবার এটি এসেছে [[লাতিন ভাষা|লাতিন]] ''religionem'' থেকে (nom. ''religio'') যার অর্থ “পবিত্র বিষয়ের প্রতি শ্রদ্ধা, [[ঈশ্বর|ঈশ্বরদের]] প্রতি নিষ্ঠা” ("respect for what is sacred, reverence for the gods"),<ref>{{cite web | last = Harper | first = Douglas | url = http://www.etymonline.com/index.php?term=Religion | title = Religion | website = [http://www.etymonline.com/ Online Etymology Dictionary] | access-date = September 18, 2016}}</ref> এবং “বাধ্যতা, যা মানুষ ও ঈশ্বরদের মধ্যে সেতুবন্ধনস্বরূপ” ("obligation, the bond between man and the gods"),<ref>{{ cite book | title = Shorter Oxford English Dictionary | publisher = Oxford University Press | location = London | edition = 6th | date = September, 2007 | isbn = 978-0-199-23324-3 }}</ref> যেটি আবার লাতিন ''religiō'' থেকে পাওয়া।
 
প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় পৃথিবীতে, আধুনিক ‘religion’ শব্দের ব্যুৎপত্তিগত লাতিন শব্দমূল ''religio'' -কে বোঝা হতো ব্যক্তিবিশেষের উপাসনা করার গুণ হিসেবে; কখনই মতবাদ, চর্চা কিংবা [[জ্ঞান|জ্ঞানের]] উৎসকে নির্দেশ করতে ব্যবহৃত হতো না।<ref name="Harrison Territories">{{cite book | last1 = Harrison | first1 = Peter | title = The Territories of Science and Religion | date = 2015 | publisher = University of Chicago Press | location = Chicago, USA | isbn = 978-0-226-18448-7 | url = | website = | others = [http://press.uchicago.edu/books/excerpt/2015/Harrison_Territories.html Read excerpt]}}</ref> ধর্মের আধুনিক ধারণা এমন এক বিমূর্ততা, যা ধর্মকে কতকগুলো স্বতন্ত্র বিশ্বাস বা মতবাদের সমষ্টি হিসেবে উপস্থাপন করে। ধর্মের অর্থ হিসেবে এটি অতি সাম্প্রতিক একটি উদ্ভাবন, [[ইংরেজি ভাষায়]] যার ব্যাপক ব্যবহার সপ্তাদশ শতাব্দী থেকে লক্ষণীয়। এসময় ‘ধর্ম’ বলতে বোঝানো হতে থাকে ‘উপাসনা ধর্মকে’। ইতিহাসবেত্তারা এর কারণ হিসেবে প্রটেস্ট্যান্ট সংস্কারের সময়ে খ্রিষ্ট ধর্মের বিভাজন ও ভ্রমণের যুগে [[বিশ্বায়ন|বৈশ্বায়নকে]] দায়ী করে থাকেন।<ref name="Harrison Territories" /> এ যুগে, [[ইউরোপীয় ইউনিয়ন|ইউরোপীয়দের]] সাথে অসংখ্য ভিন্ন [[সংস্কৃতি|সংস্কৃতির]] ও ভাষার দেশী-বিদেশী জনপদের যোগাযোগ স্থাপন আরও সাধারণ একটি ব্যাপারে পরিণত হয়। আবার এসব জনগোষ্ঠীর মধ্যে অনেকেরই নিজ ভাষায় ধর্মীয় ভাব প্রকাশের জন্য ‘religion’ -এর সমতূল্য ধারণা বা সমার্থক শব্দ ছিল না।<ref name="Harrison Territories" /> সপ্তাদশ শতকই সেই সময়, যখন ধর্মের ধারণা আধুনিক আকার পেতে শুরু করে। যদিও [[বাইবেল]], [[কুরআন]] এবং অন্যান্য প্রাচীন পবিত্র [[ধর্মগ্রন্থ|ধর্মগ্রন্থসমূহের]] মূল ভাষায় লিখিত সংস্করণে ধর্মের ধারণার কোন সুস্পষ্ট উল্লেখ ছিল না। এমনকি যে সংস্কৃতিতে এই ধর্মগ্রন্হসমূহ লেখা হয় কিংবা যারা এই গ্রন্হগুলো অনুসরণ করতেন তাদেরও ধর্মের কোন সুস্পষ্ট ধারণা ছিল না।<ref name=Nongbri>{{cite book|last1=Nongbri|first1=Brent|title=Before Religion: A History of a Modern Concept|date=2013|publisher=Yale University Press|isbn=030015416X}}</ref> উদাহরণস্বরূপ, [[গ্রিক ভাষা|গ্রিক]] শব্দ ''threskeia ''(উচ্চারণ: ''থ্রেসকিয়া বা থ্রিসকিয়া'') -এর কথা বলা যায়, যেটি [[হিরোডোটাস]] ও জোসিফাসের মত প্রখ্যাত গ্রিক লেখকেরা ‘উপাসনা’ অর্থে ব্যবহার করতেন। অথচ আজকের দিনে [[নূতন নিয়ম|নিউ টেস্টামেন্টে]] এর অনুবাদ করা হয়েছে ‘ধর্ম’ হিসেবে। মধ্যযুগেও উক্ত শব্দটি ‘উপাসনা’ কিংবা এর সমার্থক ভাব প্রকাশে ব্যবহৃত হতো।<ref name="Nongbri" /> আবার কুরঅানের ক্ষেত্রে, অধিকাংশ সময়ই [[আরবী]] শব্দ دين (উচ্চারণ: ''দ্বীন'') -এর আধুনিক ইংরেজি অনুবাদ করা হয় ‘religion’ বা ধর্ম হিসেবে, কিন্তু সপ্তাদশ শতকের মধ্যভাগ পর্যন্ত অনুবাদকেরা এই শব্দটি ব্যবহার করতেন ‘[[আইন]]’ বোঝাতে।<ref name="Nongbri" /> এমনকি খ্রিষ্টপূর্ব ১ম শতকেও গ্রিক দার্শনিক জোসিফাস গ্রিক শব্দ ''ioudaismos ''(উচ্চারণ: ''ইউদাইসমোস'') -কে ‘সম্প্রদায়’ অর্থে ব্যবহার করতেন, যার সাথে আধুনিককালের এক সেট বিমূর্ত ধারণা ও বিশ্বাসের সমাহার হিসেবে ধর্মের যে সংজ্ঞা প্রণীত হয়েছে তার কোন সম্পর্ক নেই। যদিও বর্তমানকালে অনেকেই&nbsp;''ioudaismos'' -কে ‘ইহুদি ধর্ম’ (Judaism) হিসেবে অনুবাদ করেন।<ref name="Nongbri" /> উনবিংশ শতকেই প্রথম চলিত ভাষায় ‘বৌদ্ধ ধর্ম’ (Buddhism), ‘[[হিন্দু ধর্ম]]’ (Hinduism), ‘তাওবাদ’ (Taoism), ‘কনফুসিয়ানিজম’ (Confucianism) প্রভৃতি শব্দের উন্মেষ ঘটে।<ref name="Harrison Territories" /><ref name="Invention Japan">{{cite book | last1 = Josephson | first1 = Jason Ānanda | title = The Invention of Religion in Japan | date = 2012 | publisher = University of Chicago Press | isbn = 0226412342}}</ref> [[জাপান|জাপানের]] সুদীর্ঘ ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা যায়, [[জাপানের ধর্মবিশ্বাস|জাপানে কখনই কোথাও ‘ধর্মের’ কোন ধারণা ছিল না]]। যেহেতু [[জাপানি ভাষা|জাপানী ভাষায়]] ‘ধর্ম’ বোঝাতে কোন শব্দ ছিল না, এমনকি এর কাছাকাছি ভাব প্রকাশ করে এমন কোন শব্দও না থাকায়, যখন ১৮৫৩ সালে [[মার্কিন]] রণতরীগুলো জাপানের উপকূলে এর জলসীমায় অবস্থান নেয় এবং তৎকালীর জাপান [[সরকার|সরকারকে]] অন্যান্য অনেক বিষয়ের সাথে ধর্মের স্বাধীনতাকেও রাষ্ট্রনীতি হিসেবে স্বীকার করে সন্ধিপত্রে স্বাক্ষরের জন্য চাপ দিতে থাকে, তখন জাপান সরকার বাধ্য হয় এই পশ্চিমা ধারণা গ্রহন করতে।<ref name="Invention Japan" />
 
উনিশ শতকের প্রখ্যাত [[ভাষাবিজ্ঞান|ভাষাতত্ত্ববিদ]] [[ম্যাক্স মুলার|ম্যাক্স মুলারের]] মতে, ইংরেজি ভাষায় ব্যবহৃত ‘religion’ শব্দটির শব্দমূল, লাতিন ''religio'' (উচ্চারণ: ''রিলিজিও'') শব্দটি মূলত ব্যবহৃত হতো “ঈশ্বর কিংবা ঈশ্বরবর্গের প্রতি নিষ্ঠা, পবিত্র বিষয়সমূহ সম্পর্কে সাবধানী চিন্তা ও [[ভক্তি]] (যেটিকে পরবর্তীতে [[সিসারো]] ‘অধ্যাবসায়’ হিসেবে ব্যাক্ত করেন)” অর্থে।<ref>{{cite book|first=Max|last=Müller|title=Natural Religion|publisher=Longmans, Green, and Co.|location=London, UK; New York, USA|page=33|year=1889|oclc=560888}}</ref><ref>[http://www.perseus.tufts.edu/hopper/text?doc=Perseus%3Atext%3A1999.04.0059%3Aentry%3D%2340976 Lewis & Short, ''A Latin Dictionary'']</ref> ম্যাক্স মুলার পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের বহু সংস্কৃতিকে ইতিহাসের এই সন্ধিক্ষণে অনুরূপ ক্ষমতা-কাঠামোর অধিকারী হিসেবে চিন্হিত করেন, যেগুলোর মধ্যে [[প্রাচীন মিশরীয় ধর্ম|মিশরীয়]], [[পারস্য|পারস্যীয়]] ও [[ভারতের ইতিহাস|ভারতীয়]] সংস্কৃতিও অন্তর্ভূক্ত। তার মতে আজ যেগুলোকে আদিম ধর্মমত বলা হয়, তৎকালীন মানুষের কাছে সেগুলো ছিল কেবলই ‘আইন’ মাত্র।<ref>{{cite book|first=Friedrich Max|last=Müller|title=Introduction to the science of religion|year=1978|url=https://books.google.com/books?pg=PA28&id=aM0FAAAAQAAJ&as_brr=4||publisher=Arno Press|location=New York, USA|page=28|oclc=3447055|isbn=978-0405-10554-8|others=Reprint of the 1873 ed. published by Longmans, Green, London.}}</ref>