উমাইয়া খিলাফত: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
WikitanvirBot (আলোচনা | অবদান)
বট বানান ঠিক করছে, কোনো সমস্যায় তানভিরের আলাপ পাতায় বার্তা রাখুন
আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
WikitanvirBot-এর সম্পাদিত সংস্করণ হতে Intakhab-এর সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণে ফেরত
২৯ নং লাইন:
|capital_exile = [[কর্ডোবা, স্পেন|কর্ডোবা]]<br /><small>(৭৫৬–১০৩১)</small>
|religion = [[ইসলাম]]
|common_languages = [[আরবি]] (সরকারি ভাষা) – [[কিবতি ভাষা|কিবতি]], [[গ্রিকগ্রীক ভাষা|গ্রিকগ্রীক]], [[ফারসি ভাষা|ফারসি]] (<small>[[আবদুল মালিক ইবনে মারওয়ান|আবদুল মালিকের]] শাসন পর্যন্ত কিছু অঞ্চলের সরকারি ভাষা</small>) – [[আরামায়িক ভাষা|আরামায়িক]], [[আর্মেনীয় ভাষা|আর্মেনীয়]], [[বার্বার ভাষা|বার্বার]], [[আফ্রিকান রোমান ভাষা|আফ্রিকান রোমান]], [[জর্জিয়ান ভাষা|জর্জিয়ান]], [[হিব্রু ভাষা|হিব্রু]], [[তুর্কি ভাষা|তুর্কি]], [[কুর্দি ভাষা|কুর্দি]]
|currency = [[স্বর্ণ দিনার]] ও [[দিরহাম]]
|leader1 = [[প্রথম মুয়াবিয়া]]
৪৫ নং লাইন:
|stat_pop2 = 34000000
|today = {{Collapsible list
|<br>{{flag|আফগানিস্তান}}<br>{{flag|আলজেরিয়া}}<br>{{flag|অ্যান্ডোরা}}<br>{{flag|আর্মেনিয়া}}<br>{{flag|আজারবাইজান}}<br>{{flag|বাহরাইন}}<br>{{flag|চীন}}<ref>{{cite web|url=http://books.google.com/books?id=KEOFGYie_MEC&pg=PA267&dq=%22Qutaiba's+scouts+reached+the+city+of+Kashgar+and+held+it+briefly%22&hl=en&sa=X&ei=jkO-UI7hM6m10AHlwoHQCg&ved=0CDIQ6AEwAA#v=onepage&q=%22Qutaiba's%20scouts%20reached%20the%20city%20of%20Kashgar%20and%20held%20it%20briefly%22&f=false |title=A History of Muslim Civilization: From late antiquity to the fall of the ... - Huseyin Abiva, Noura Durkee - Google Books |publisher=Books.google.com |date=2003-01-01 |accessdate=2014-05-26}}</ref><br>{{flag|সাইপ্রাস}}<br>{{flag|মিশর}}<br>{{flag|ইরিত্রিয়া}}<ref>{{cite web|url=http://books.google.com/books?id=PMFVeWTWF0YC&pg=PA100&lpg=PA100&dq=dahlak+archipelago+umayyad&source=bl&ots=xXmmUqyiBG&sig=dr0kQxuP6pk0aYAnd3uH0RMYCj8&hl=en&sa=X&ei=GP-iUIPhAcLf0gHT2YGgAw&ved=0CDQQ6AEwAQ#v=onepage&q=dahlak%20archipelago%20umayyad&f=false |title=Red Sea Citizens: Cosmopolitan Society and Cultural Change in Massawa - Jonathan Miran - Google Books |publisher=Books.google.com |date= |accessdate=2014-05-26}}</ref><br>{{flag|ফ্রান্স}}<br>{{flag|জর্জিয়া (রাষ্ট্র)}} <br>{{flag|জিব্রাল্টার}} ([[যুক্তরাজ্য]])<br>{{flag|গ্রিসগ্রীস}}<ref>{{cite web|url=http://books.google.com/books?id=pNGq6sU-xbgC&pg=PA286&dq=%22The+seven-year+occupation+of+Rhodes%22&hl=en&sa=X&ei=vUW-UJXeLcTG0AHaqYHgDQ&ved=0CDAQ6AEwAA#v=onepage&q=%22The%20seven-year%20occupation%20of%20Rhodes%22&f=false |title=The End of the Jihad State: The Reign of Hisham Ibn 'Abd al-Malik and the ... - Khalid Yahya Blankinship - Google Books |publisher=Books.google.com |date=1994-06-28 |accessdate=2014-05-26}}</ref><br>{{flag|ইরান}}<br>{{flag|ইরাক}}<br>{{flag|ইসরায়েল}}<br>{{flag|জর্দা‌ন}} <br>{{flag|কাজাখস্তান}}<br>{{flag|কুয়েত}}<br>{{flag|কিরগিজিস্তান}}<br>{{flag|লেবানন}}<br>{{flag|লিবিয়া}}<br>
{{flag|মৌরিতানিয়া}}<br>{{flag|মরক্কো}}<br>{{flag|ওমান}}<br>{{flag|পাকিস্তান}}<br>{{flagicon|ফিলিস্তিন}} [[ফিলিস্তিনি জাতিয়জাতীয় কর্তৃপক্ষ|ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ]]<br>{{flag|পর্তুগাল}}<br>{{flag|কাতার}}<br>{{flag|রাশিয়া}}<br>{{flag|সৌদি আরব}}<br>{{flag|সোমালিয়া}}<ref>{{cite web|url=http://books.google.com/books?id=XpdAzRYruCwC&pg=PA3&dq=somalia+umayyad&hl=en&sa=X&ei=Wf-iUMu8K-WS0QHd5YCwDg&ved=0CDAQ6AEwAA#v=onepage&q=somalia%20umayyad&f=false |title=The Invention of Somalia - Google Books |publisher=Books.google.com |date= |accessdate=2014-05-26}}</ref><br>{{flag|স্পেন}}<br>{{flag|সিরিয়া}}<br>{{flag|তাজিকিস্তান}}<br>{{flag|তিউনিসিয়া}}<br>{{flag|তুরস্ক}}<br>{{flag|তুর্কমেনিস্তান}}<br>{{flag|সংযুক্ত আরব আমিরাত}}<br>{{flag|উজবেকিস্তান}}<br>{{flag|ইয়েমেন}}<br>{{flag|পশ্চিম সাহারা}}
}}
}}
৫২ নং লাইন:
'''উমাইয়া খিলাফত''' ({{lang-ar|الخلافة الأموية}}, [[Arabic transliteration|trans.]] ''Al-Ḫilāfa al-ʾumawiyya'') ইসলামের প্রধান চারটি খিলাফতের মধ্যে দ্বিতীয় [[খিলাফত]]। এটি উমাইয়া রাজবংশকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠে। ইসলামের তৃতীয় খলিফা [[উসমান ইবন আফ্‌ফান|উসমান ইবন আফ্‌ফানের]] খিলাফত লাভের মাধ্যমে উমাইয়া পরিবার প্রথম ক্ষমতায় আসে। তবে উমাইয়া বংশের শাসন [[প্রথম মুয়াবিয়া|মুয়াবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ান]] কর্তৃক সূচিত হয়। তিনি দীর্ঘদিন সিরিয়ার গভর্নর ছিলেন। ফলে সিরিয়া উমাইয়াদের ক্ষমতার ভিত্তি হয়ে উঠে এবং দামেস্ক তাদের রাজধানী হয়। উমাইয়ারা মুসলিমদের বিজয় অভিযান অব্যাহত রাখে। [[ককেসাস]], [[ট্রান্সঅক্সানিয়া]], [[সিন্ধু প্রদেশ|সিন্ধু]], [[মাগরেব (অঞ্চল)|মাগরেব]] ও [[ইবেরিয়ান উপদ্বীপ]] ([[আন্দালুস]]) জয় করে মুসলিম বিশ্বের আওতাধীন করা হয়। সীমার সর্বোচ্চে পৌছালে উমাইয়া খিলাফত মোট ৫.৭৯ মিলিয়ন বর্গ মাইল (১,৫০,০০,০০০ বর্গ কিমি.) অঞ্চল অধিকার করে রাখে। তখন পর্যন্ত বিশ্বের দেখা সাম্রাজ্যগুলোর মধ্যে এটি সর্ববৃহৎ ছিল। অস্তিত্বের সময়কালের দিক থেকে এটি ছিল পঞ্চম।<ref name=Blankinship>{{citation|title=The End of the Jihad State, the Reign of Hisham Ibn 'Abd-al Malik and the collapse of the Umayyads|first=Khalid Yahya|last=Blankinship|publisher=[[State University of New York Press]]|year=1994|isbn=0-7914-1827-8|page=37}}</ref>
 
কিছু মুসলিমের কাছে উমাইয়াদের কর সংগ্রহ ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা অনৈতিক ঠেকে। অমুসলিম জনগণ স্বায়ত্তশাসন ভোগ করত এবং তাদের বিচারিক কার্যক্রম তাদের নিজস্ব আইন ও ধর্মীয় প্রধান বা নিজেদের নিযুক্ত ব্যক্তি দ্বারা চালিত হত।<ref name="ReferenceA">A Chronology Of Islamic History 570-1000 CE, By H.U. Rahman 1999 Page 128</ref> তাদের কেন্দ্রীয় সরকারকে জিজিয়া কর দিতে হত।<ref name="ReferenceA"/> মুহাম্মদ (সা) এর জীবদ্দশায় বলেন যে প্রত্যের ধর্মীয় সম্প্রদায় নিজেদের ধর্মপালন করবে ও নিজেদের শাসন করতে পারবে। এ নীতি পরবর্তীকালেওপরবর্তীতেও বহাল থাকে।<ref name="ReferenceA"/> উমর কর্তৃক চালু হওয়া মুসলিম ও অমুসলিমদের জন্য [[কল্যাণ রাষ্ট্র]] ব্যবস্থা চলতে থাকে।<ref name="ReferenceA"/><ref name="ReferenceA"/> মুয়াবিয়ার স্ত্রী মায়সুম (ইয়াজিদের মা) ছিলেন একজন খ্রিষ্টান। রাষ্ট্রে মুসলিম ও খ্রিষ্টানদের মধ্যে সম্পর্ক ভাল ছিল। উমাইয়ারা [[বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য|বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের]] সাথে ধারাবাহিক যুদ্ধে জড়িত ছিল।<ref name="ReferenceA"/><ref name="ReferenceA"/><ref name="ReferenceA"/> গুরুত্বপূর্ণ পদে খ্রিষ্টানদের বসানো হয় যাদের মধ্যে কারো কারো পরিবার বাইজেন্টাইন সরকারে কাজ করেছিল। খ্রিষ্টানদের নিয়োগ অধিকৃত অঞ্চলে বিশেষত সিরিয়ার বিশাল খ্রিষ্টান জনগোষ্ঠীর প্রতি ধর্মীয় সহিষ্ণুতার নীতি হিসেবে গ্রহণ করা হয়। এ নীতি জনগণের সমর্থন আদায়ে সক্ষম হয় এবং সিরিয়াকে ক্ষমতার কেন্দ্র হিসেবে স্থিতিশীল করে তোলে।<ref>Middle East, Western Asia, and Northern Africa By Ali Aldosari Page 185 [http://books.google.co.uk/books?id=j894miuOqc4C&pg=PA185&dq=Muawiyah+syria+powerbase&hl=en&sa=X&ei=IgitUdCUNa-X0AWswoGIDg&ved=0CDEQ6AEwAA#v=onepage&q=Muawiyah%20syria%20powerbase&f=false]</ref><ref>The Tragedy of the Templars: The Rise and Fall of the Crusader States By Michael Haag Chapter 3 Palestine under the Umayyads and the Arab Tribe [http://books.google.co.uk/books?id=hTPC09XoKs0C&pg=PT20&dq=Muawiyah+syria+powerbase&hl=en&sa=X&ei=IgitUdCUNa-X0AWswoGIDg&ved=0CDYQ6AEwAQ]</ref>
 
আরব গোত্রগুলোর মধ্যকার বিরোধের কারণে সিরিয়ার বাইরের প্রদেশে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে বিশেষত [[দ্বিতীয় ফিতনা|দ্বিতীয় মুসলিম গৃহযুদ্ধ]] (৬৮০-৬৯২) ও [[বার্বার বিদ্রোহ|বার্বার বিদ্রোহের]] (৭৪০-৭৪৩) সময়। দ্বিতীয় গৃহযুদ্ধের সময় উমাইয়া গোত্রের নেতৃত্ব সুফয়ানি শাখা থেকে মারওয়ানি শাখার হস্তান্তর হয়। ক্রমাগত যুদ্ধবিগ্রহের ফলে সম্পদ ও লোকবল কমে আসায় [[তৃতীয় ফিতনা|তৃতীয় মুসলিম গৃহযুদ্ধের]] সময় দুর্বল হয়ে পড়ে এবং চূড়ান্তভাবে [[আব্বাসীয় বিপ্লব|আব্বাসীয় বিপ্লবের]] ফলে ক্ষমতাচ্যুত হয়। পরিবারের একটি শাখা [[উত্তর আফ্রিকা]] হয়ে আল-আন্দালুস চলে যায় এবং সেখানে [[কর্ডোবা খিলাফত]] প্রতিষ্ঠা করে। এ খিলাফত ১০৩১ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত টিকে ছিল এবং [[আন্দালুসের ফিতনা|আন্দালুসের ফিতনার]] পর এর পতন হয়।
৫৯ নং লাইন:
উমাইয়া পরিবার ([[বনু আবদ শামস]] নামেও পরিচিত) ও [[মুহাম্মদ]] (সা) উভয়েই [[আবদ মানাফ ইবনে কুসাই|আবদ মানাফ ইবনে কুসাইয়ের]] বংশধর এবং তারা মক্কার অধিবাসী ছিলেন। আবদ মানাফের পুত্র [[হাশিম ইবনে আবদ মানাফ|হাশিমের]] বংশে মুহাম্মদ (সা) জন্মগ্রহণ করেন। অন্যদিকে উমাইয়ারা আবদ মানাফের আরেক পুত্র [[আবদ শামস ইবনে আবদ মানাফ|আবদ শামশের]] বংশধর। উমাইয়া আবদ শামসের পুত্রের নাম। দুই পরিবার নিজেদের একই বংশ [[কুরাইশ বংশ|কুরাইশের]] দুটি ভিন্ন গোত্র হিসেবে বিবেচনা করত (যথাক্রমে হাশিম ও উমাইয়া)। শিয়াদের মতে উমাইয়া আবদ শামসের পালক পুত্র তাই তার সাথে আবদ শামসের কোনো রক্ত সম্পর্ক নেই। উমাইয়ারা পরবর্তীতে সম্ভ্রান্ত পরিবারের সম্মান হারায়।<ref name="wiki">{{cite web|url=http://www.muslimcongress.org/contentmc/services/muharram.aspx|title=Muslim Congress | accessdate=2008-06-30}}</ref>
 
উমাইয়া ও হাশিমিদের মধ্যে মুহাম্মদ (সা) এর আসার পূর্ব থেকেই দ্বন্দ্ব্বদ্বন্দ্ব চলছিল। [[বদরের যুদ্ধ|বদরের যুদ্ধের]] পর তা আরো বিরূপ অবস্থায় পড়ে। এ যুদ্ধে উমাইয়া গোত্রের তিনজন শীর্ষ নেতা [[উতবা ইবনে রাবিয়াহ]], [[ওয়ালিদ ইবনে উতবাহ]] ও শায়বা দ্বন্দ্ব্বযুদ্ধেরদ্বন্দ্বযুদ্ধের সময় হাশিমি গোত্রের [[আলী ইবন আবী তালিব]], [[হামজা ইবনে আবদুল মুত্তালিব]] ও [[উবাইদাহ ইবনুল হারিস|উবাইদাহ ইবনুল হারিসের]] হাতে নিহত হয়।<ref>[http://www.usc.edu/dept/MSA/fundamentals/hadithsunnah/abudawud/014.sat.html#014.2659 Sunan Abu Dawud: Book 14, Number 2659]</ref> এ ঘটনার ফলে উমাইয়ার নাতি [[আবু সুফিয়ান ইবনে হার্ব‌|আবু সুফিয়ান ইবনে হারবের]] মুহাম্মদ (সা) ও ইসলামের প্রতি বিরোধিতার মাত্রা আরো বৃদ্ধি পায়। বদর যুদ্ধের একবছর পর আবু সুফিয়ান আরেকটি যুদ্ধ মুসলিমদের উপর চাপিয়ে দিয়ে মদিনার মুসলিমদের উপর প্রতিশোধ নিতে চাইছিলেন। পন্ডিতদের মতে এই যুদ্ধটি মুসলিমদের প্রথম পরাজয় যেহেতু এখানে মক্কার তুলনায় মুসলিমদের ভালো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যুদ্ধের পর আবু সুফিয়ানের স্ত্রী ও [[উতবা ইবনে রাবিয়া|উতবা ইবনে রাবিয়ার]] মেয়ে হিন্দ হামজার লাশ কেটে তার কলিজা বের করে খাওয়ার চেষ্টা করে।<ref>Ibn Ishaq (1955) 380—388, cited in Peters (1994) p. 218</ref> উহুদের যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতির পাঁচ বছর পর মুহাম্মদ (সা) [[মক্কা বিজয়]] করেন<ref>Watt (1956), p. 66</ref> এবং সবার জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন। মক্কা বিজয়ের পর আবু সুফিয়ান ও তার স্ত্রী হিন্দ ইসলাম গ্রহণ করেন। এসময় তাদের পুত্র ও পরবর্তী খলিফা [[প্রথম মুয়াবিয়া|মুয়াবিয়াও]] ইসলাম গ্রহণ করেন।
 
[[File:Map of expansion of Caliphate.svg|thumb|305px||উমাইয়াদের অধীনে খিলাফতের বিস্তার: {{legend|#a1584e|মুহাম্মদ (সা) এর অধীনে বিস্তৃতি, ৬২২-৬৩২}} {{legend|#ef9070|রাশিদুন খিলাফতের অধীনে বিস্তৃতি, ৬৩২-৬৬১}} {{legend|#fad07d|উমাইয়া খিলাফতের অধীনে বিস্তৃতি, ৬৬১-৭৫০}}]]
৬৭ নং লাইন:
৬৩৯ খ্রিষ্টাব্দে [[আবু উবাইদা ইবনুল জাররাহ]] [[প্লেগ|প্লেগে]] আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করলে [[প্রথম মুয়াবিয়া]] সিরিয়ার গভর্নর হিসেবে নিযুক্ত হন। এসময় আরো ২৫,০০০ মানুষ প্লেগে মারা যায়।<ref>Wilferd Madelung, The Succession to Muhammad: A Study of the Early Caliphate, [http://books.google.co.uk/books?id=2QKBUwBUWWkC&printsec=frontcover&dq=death+of+muhammad+and+the+beginning+of+islam&hl=en&sa=X&ei=0JX-UMysC62Y0QWOsICIDQ&ved=0CDkQ6AEwAQ#v=onepage&q=death%20of%20muhammad%20and%20the%20beginning%20of%20islam&f=false p.61]</ref><ref>{{Harvtxt|Rahman|1999|p=40}}</ref> [[আরব-বাইজেন্টাইন যুদ্ধ|আরব-বাইজেন্টাইন যুদ্ধের]] সময় সমুদ্রের দিক থেকে বাইজেন্টাইন আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য ৬৪৯ খ্রিষ্টাব্দে মুয়াবিয়া [[মনোফিসিটবাদ|মনোফিসিট]] খ্রিষ্টান, [[কপ্ট]] ও [[জেকোবাইট সিরিয়ান খ্রিষ্টান চার্চ|জেকোবাইট সিরিয়ান খ্রিষ্টান]] নাবিক ও মুসলিম সৈনিকদের নিয়ে একট নৌবাহিনী গড়ে তোলেন। ৬৫৫ তে [[মাস্তুলের যুদ্ধ|মাস্তুলের যুদ্ধে]] বাইজেন্টাইন নৌবাহিনী পরাজিত হয় এবং ভূমধ্যসাগরের দিক উন্মুক্ত হয়ে পড়ে।<ref>European Naval and Maritime History, 300-1500 By Archibald Ross Lewis, Timothy J. Runyan Page 24 [http://books.google.co.uk/books?id=OzIRDbARyWIC&pg=PA24&dq=Muawiyah+set+up+navy&hl=en&sa=X&ei=OjsJUdy1GcSS0QXV-YCwCw&ved=0CD4Q6AEwAQ#v=onepage&q=Muawiyah%20set%20up%20navy&f=false]</ref><ref>Leonard Michael Kroll, History of the Jihad, [http://books.google.co.uk/books?id=aAPc3mYwZpIC&pg=PA123&dq=Muawiyah+Battle+of+the+Masts&hl=en&sa=X&ei=RTwJUbbaOOG60QWV0ICIBQ&ved=0CC4Q6AEwAA#v=onepage&q=Muawiyah%20Battle%20of%20the%20Masts&f=false p.123]</ref><ref>Jim Bradbury, The Medieval Siege, [http://books.google.co.uk/books?id=KIFJiOCSYc8C&pg=PA183&dq=Muawiyah+Battle+of+the+Masts&hl=en&sa=X&ei=RTwJUbbaOOG60QWV0ICIBQ&ved=0CDQQ6AEwAQ#v=onepage&q=Muawiyah%20Battle%20of%20the%20Masts&f=false A History of Byzantium By Timothy E. Gregory page 183]</ref><ref>Prophets and Princes: Saudi Arabia from Muhammad to the Present By Mark Weston Page 61 [http://books.google.co.uk/books?id=EEEFsVYLko4C&pg=PA61&dq=Muawiyah+Battle+of+the+Masts&hl=en&sa=X&ei=RTwJUbbaOOG60QWV0ICIBQ&ved=0CDoQ6AEwAg#v=onepage&q=Muawiyah%20Battle%20of%20the%20Masts&f=false]</ref><ref>[http://books.google.co.uk/books?id=fKFRvUiLEQYC&pg=PA11&dq=Muawiyah+Battle+of+the+Masts&hl=en&sa=X&ei=RTwJUbbaOOG60QWV0ICIBQ&ved=0CEoQ6AEwBQ#v=onepage&q=Muawiyah%20Battle%20of%20the%20Masts&f=false p.11]</ref>
 
[[প্রথম মুয়াবিয়া]] একজন সফল গভর্নর ছিলেন। তিনি সাবেক রোমান সিরিয়ান সেনাবাহিনীর সদস্যদের নিয়ে একটি অণুগতঅনুগত ও নিয়মানুবর্তী বাহিনী গড়ে তোলেন। তিনি [[আমর ইবনুল আস|আমর ইবনুল আসের]] বন্ধু ছিলেন। আমর ইবনুল আস মিশর জয় করেন ও পরবর্তীকালে খলিফা তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেন।
 
কুরআনে ও মুহাম্মদ (সা) এর হাদিসে জাতিগত সমতা ও ন্যায়বিচারের ব্যাপারে উল্লেখ করা আছে এবং [[বিদায় হজ্জের ভাষণ|বিদায় হজ্জের ভাষণেও]] তিনি একথা বলেন।<ref>The Spread of Islam: The Contributing Factors By Abu al-Fazl Izzati, A. Ezzati Page 301</ref><ref>Islam For Dummies By Malcolm Clark Page</ref><ref>Spiritual Clarity By Jackie Wellman Page 51</ref><ref>The Koran For Dummies By Sohaib Sultan Page</ref><ref>Quran: The Surah Al-Nisa, Ch4:v2</ref><ref>Quran: Surat Al-Hujurat [49:13]</ref><ref>Quran: Surat An-Nisa' [4:1]</ref> গোত্রীয় ও জাতিভিত্তিক পার্থক্যকে নিরুৎসাহিত করা হয়। কিন্তু মুহাম্মদ (সা) এর মৃত্যুর পর পুরনো গোত্রীয় ভেদাভেদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠে। [[রোমান-পারসিয়ান যুদ্ধ]] ও [[বাইজেন্টাইন-সাসানীয় যুদ্ধ|বাইজেন্টাইন-সাসানীয় যুদ্ধের]] পর পূর্বে [[সসনিয়ন সাম্রাজ্য|সাসানীয় সাম্রাজ্য]] কর্তৃক শাসিত ইরাক ও [[বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য]] কর্তৃক সিরিয়ার মধ্যকার বিরোধ তখনও বহাল ছিল। প্রত্যেকেই নতুন প্রতিষ্ঠিত ইসলামি রাষ্ট্রের রাজধানী নিজেদের অঞ্চলে পেতে আগ্রহী ছিল।<ref>Iraq a Complicated State: Iraq's Freedom War By Karim M. S. Al-Zubaidi Page 32</ref> পূর্ববর্তী খলিফা [[উমর ইবনুল খাত্তাব|উমর]] গভর্নরদের ব্যাপারে খুবই সতর্ক ছিলেন এবং তার গোয়েন্দারা তাদের উপর নজর রাখত। গভর্নর বা কমান্ডাররা সম্পদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে উঠছে এমন প্রতীয়মান হলে তিনি তাদেরকে তাদের অবস্থান থেকে সরিয়ে দিতেন।<ref>Arab Socialism. [al-Ishtirakiyah Al-?Arabiyah]: A Documentary Survey By Sami A. Hanna, George H. Gardner Page 271 [http://books.google.co.uk/books?id=zsoUAAAAIAAJ&pg=PA271&dq=Umar+wealth+and+luxury&hl=en&sa=X&ei=OBQYUcXSOYWM0wWajIHQCg&ved=0CC4Q6AEwAA#v=onepage&q=Umar%20wealth%20and%20luxury&f=false]</ref>
৮৯ নং লাইন:
পরবর্তী বছরগুলোতে এবং বিশেষত ১০৩১ খ্রিষ্টাব্দে ইবেরিয়ার তাইফা পদ্ধতির আওতায় গ্রানাডা আমিরাত স্বাধীনতা বজায় রাখে। উত্তরের খ্রিষ্টান রাজ্যগুলোকে কর প্রদানের মাধ্যমে তারা টিকে ছিল। ১০৩১ থেকে তারা দক্ষিণে বিস্তৃত হতে শুরু করে।
 
১৪৯২ খ্রিষ্টাব্দের ২ জানুয়ারি কর্ডোবার [[নাসরি রাজবংশ|নাসরি]] রাজ্যের পতনের মাধ্যমে ইবেরিয়ায় মুসলিম শাসনের সমাপ্তি হয়। গ্রানাডার শেষ মুসলিম শাসক দ্বাদশ মুহাম্মদ যিনি বোয়াবদিল নামে পরিচিত, আরাগণেরআরাগনের রাজা দ্বিতীয় ফার্ডিনেন্ড ও কাস্টিলের রাণী প্রথম ইসাবেলার কাছে আত্মসমর্পণ করেন।
 
==ইতিহাস==
১০২ নং লাইন:
৬৮০ খ্রিষ্টাব্দে মুয়াবিয়ার মৃত্যুর পর তার পুত্র [[প্রথম ইয়াজিদ]] তার উত্তরাধিকারি হন। অনেক নামকরা মুসলিম ইয়াজিদের ক্ষমতালাভের বিরোধী ছিলেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন মুহাম্মদ (সা) এর এক সাহাবির ছেলে [[আবদুল্লাহ ইবনুল জুবায়ের]] ও চতুর্থ খলিফার পুত্র [[হুসাইন ইবনে আলি]]। ফলশ্রুতিতে ঘটে যাওয়া সংঘাত দ্বিতীয় ফিতনা বলে পরিচিত।
 
৬৮০ খ্রিষ্টাব্দে আবদুল্লাহ ইবনুল জুবায়ের মক্কার উদ্দেশ্যে মদিনা ত্যাগ করেন। ইয়াজিদের বিপক্ষে হুসাইনের অবস্থানের কথা শুনে কুফার জনগণ হুসাইনের কাছে তাদের সমর্থন নেয়ার জন্য আবেদন জানায়। হুসাইন তার চাচাত ভাই মুসলিম বিন আকিলকে এর সত্যতা যাচাইয়ের জন্য পাঠান। এ খবর ইয়াজিদের কাছে পৌছলে তিনি বসরার শাসক উবায়দুল্লাহ বিন জিয়াদকে কুফার জনগণকে হুসাইনের নেতৃত্বে সমবেত হওয়া থেকে নিবৃত্ত করার দায়িত্ব দেন। উবায়দুল্লাহ বিন জিয়াদ মুসলিম বিন আকিলের পাশে থাকে জনতাকে প্রতিহত করতে সক্ষম এবং তাকে গ্রেপ্তার করেন। উবায়দুল্লাহ বিন জিয়াদের উপর হুসাইনকে প্রতিহত করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে শুনে মুসলিম বিন আকিল তাকে অণুরোধঅনুরোধ করেন যাতে হুসাইনকে কুফায় না আসার ব্যাপারে জানিয়ে চিঠি দেয়া হয়। তার অণুরোধঅনুরোধ প্রত্যাখ্যান করা হয় এবং উবায়দুল্লাহ বিন জিয়াদ মুসলিম বিন আকিলকে হত্যা করেন। আবদুল্লাহ ইবনুল জুবায়ের আমৃত্যু মক্কায় থেকে যান। হুসাইন সিদ্ধান্ত নেন যে তিনি তার পরিবারসহ কুফায় যাবেন। সমর্থনের অভাবের বিষয়ে তার এসময় জানা ছিল না। হুসাইন ও তার পরিবারকে ইয়াজিদের সেনাবাহিনী রুখে দেয়। এসময় সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন আমরু বিন সাদ, শামার বিন জিয়ালজোশান ও হুসাইন বিন তামিম। তারা হুসাইন ও তার পরিবারের পুরুষ সদস্যদের সাথে লড়াই করে হত্যা করে। হুসাইনের দলে ২০০ জন মানুষ ছিল যাদের অধিকাংশ ছিল নারী। এদের মধ্যে হুসাইনের বোন, স্ত্রী, মেয়ে ও তাদের সন্তানরা ছিল। নারী ও শিশুদেরকে যুদ্ধবন্ধী হিসেবে দামেস্কে ইয়াজিদের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। হুসাইনের মৃত্যু ও তার পরিবারের বন্দী হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে জনগণের সমর্থন তার দিক থেকে যাওয়ার আগ পর্যন্ত তাদের বন্দী করে রাখা হয়। এরপর তাদের মদিনা ফিরে যেতে দেয়া হয়। বেঁচে যাওয়া একমাত্র পুরুষ সদস্য ছিলেন [[আলি ইবনে হুসাইন জয়নুল আবেদিন]]। অসুস্থতার কারণে কাফেলা আক্রান্ত হওয়ার সময় তিনি লড়াই করতে পারেননি।<ref>''Kitab Al-Irshad'' by Historian Sheikh Mufid</ref>
 
মক্কায় অবস্থান করলেও হুসাইনের মৃত্যুর পর আবদুল্লাহ ইবনুল জুবায়ের আরো দুটি প্রতিপক্ষ দলের সাথে যুক্ত হন। এর একটি মদিনা ও অন্যটি বসরা ও আরবের খারিজিরা সংঘটিত করে। মদিনা ছিল হুসাইনসহ মুহাম্মদ (সা) ও তার পরিবারের বাসস্থান, তার মৃত্যু ও পরিবারের বন্দী হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে বিরাট আকারে প্রতিপক্ষ সৃষ্টি হয়। ৬৮৩ খ্রিষ্টাব্দে ইয়াজিদ আন্দোলন দমন করতে সেনাবাহিনী পাঠান। [[হাররাহর যুদ্ধে]] সেনারা মদিনার প্রতিপক্ষকে পরাজিত করে। মদিনার মসজিদে নববী ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়। ইয়াজিদের সেনারা এগিয়ে গিয়ে মক্কা অবরোধ করে। অবরোধের এক পর্যায়ে আগুনে কাবার ক্ষতি হয়। কাবা ও মসজিদে নববীর ক্ষতিসাধনের ঘটনা পরবর্তী ইতিহাসবিদদের কাছে বেশ সমালোচনার বিষয়ে পরিণত হয়।
১৫৬ নং লাইন:
[[আব্বাসীয় খিলাফত|আব্বাসীয় পরিবার]] কর্তৃক পরিচালিত [[হাশিমিয়া]] আন্দোলন উমাইয়া খিলাফতকে উৎখাত করে। আব্বাসীয়রা হাশিমি গোত্রের সদস্য ছিল। তবে হাশিমিয়া শব্দটি আলির নাতি ও মুহাম্মদ ইবনুল হানাফিয়ার পুত্র আবু হাশিম থেকে এসেছে বলে মনে হয়। কিছু সূত্রমতে আব্বাসীয় পরিবারের প্রধান আবু হাশিম ৭১৭ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর আগে তিনি মুহাম্মদ ইবনে আলি তার উত্তরসুরি মনোনীত করে যান। [[আল-মুখতার|আল-মুখতারের]] ব্যর্থ বিদ্রোহের সমর্থকদের নিয়ে আব্বাসীয়রা এগিয়ে যায়। তারা নিজেদেরকে মুহাম্মদ ইবনুল হানাফিয়ার সমর্থক হিসেবে তুলে ধরে।
 
৭১৯ খ্রিষ্টাব্দে শুরু হওয়া হাশিমিয়া কর্মকাণ্ড খোরাসানে অণুগতঅনুগত লোক খুজতে থাকে। তারা মুহাম্মদ (সা) এর পরিবারের একজন সদস্যের জন্য সমর্থনের ডাক দেয়। তবে আব্বাসীয়দের কথা বলা হয়নি। এই কার্যক্রম আরব ও অনারব ([[মাওয়ালি]]) উভয়ের মধ্যেই সফল হয়। তবে দ্বিতীয় দলটি আন্দোলনের বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
 
৭৪৬ এর দিকে [[আবু মুসলিম]] খোরাসানে হাশিমিয়াদের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। ৭৪৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কালো পতাকার অধীনে উমাইয়াদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য বিদ্রোহ শুরু করেন। তিনি শীঘ্রই খোরাসানে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন, এর উমাইয়া গভর্নর [[নাসর ইবনে সায়ার|নাসর ইবনে সায়ারকে]] বহিষ্কার করেন এবং পশ্চিমদিকে একটি সেনাবাহিনী পাঠানো হয়। ৭৪৯ খ্রিষ্টাব্দে কুফা হাশিমিয়াদের হস্তগত হয়। এটি ইরাকে উমাইয়াদের শেষ শক্ত ঘাঁটি ছিল। [[ওয়াসিত|ওয়াসিতে]] [[ওয়াসিত অবরোধ|অবরোধ]] করা হয় এবং সে বছরের নভেম্বরে [[আবুল আবাস]] কুফার মসজিদে খলিফা হিসেবে অধিষ্ঠিত হন। এর ফলে মারওয়ান তার সেনাদেরকে হারান থেকে ইরাকের দিকে পরিচালিত করেন। ৭৫০ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি দুই বাহিনী [[জাবের যুদ্ধ|জাবের যুদ্ধে]] মুখোমুখি হয় এবং উমাইয়ারা পরাজিত হয়। এপ্রিলে দামেস্ক আব্বাসীয়দের হাতে এসে পড়ে এবং আগস্টে মারওয়ানকে মিশরে হত্যা করা হয়।
[[File:Spain Andalusia Cordoba BW 2015-10-27 13-54-14.jpg|thumb|right|250px|উমাইয়াদের তৈরী [[কর্ডো‌বা মসজিদ]], স্পেন।]]
 
বিজয়ীরা সিরিয়ায় উমাইয়াদের কবরগুলোকে অবমাননা করা শুরু করে। শুধু দ্বিতীয় উমরের কবরের প্রতি কিছু করা হয়নি। উমাইয়া পরিবারের বাকি সদস্যদের অণুসরণঅনুসরণ করা হয় ও হত্যা করা হয়। আব্বাসীয়রা উমাইয়া পরিবারের সদস্যদের জন্য ক্ষমা ঘোষণা করলে আশিজন ক্ষমা গ্রহণ করতে আসে এবং সবাইকে হত্যা করা হয়। হিশামের একজন নাতি [[প্রথম আবদুল রহমান]] বেঁচে যান এবং [[আল-আন্দালুস]] রাজ্য স্থাপন করেন এবং [[কর্ডোবা খিলাফত]] প্রতিষ্ঠা করেন।
 
প্রেভিট-অরটনের মতে উমাইয়াদের পতনের কারণ ছিল ইসলামের দ্রুত প্রসার। উমাইয়া শাসনামলে ব্যাপক মাত্রায় ধর্মান্তরের কারণে পারসিয়ান, বার্বার, কপ্ট ও আরামায়িকরা ইসলাম গ্রহণ করে। এই অনারবরা যারা [[মাওয়ালি]] বলে অবিহিত হত, প্রায় সময় তাদের আরব শাসকদের চেয়ে অধিক শিক্ষিত ও মার্জিত হত। নতুন ধর্মান্তরিতদের প্রতি সব মুসলিমের জন্য সমতার নীতির কারণে রাজনৈতিক মানচিত্র বদলে যায়। প্রেভিট-অরটনের এও বলেন যে সিরিয়া ও ইরাকের মধ্যকার জাতিবিদ্বেষের কারণে সাম্রাজ্য দুর্বল হয়ে পড়ে।<ref>Previté-Orton (1971), vol. 1, pg. 239</ref>
১৭২ নং লাইন:
 
===সরকারি কর্মচারী===
সাম্রাজ্যের দ্রুত বৃদ্ধির সাথে সাথে দক্ষ আরব কর্মীদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কমে যায়। ফলে মুয়াবিয়া বিজিত অঞ্চলগুলোতে পূর্ববর্তী সরকারি কর্মীদের দায়িত্বে বহাল রাখেন। ফলে স্থানীয় সরকারের অধিকাংশ দলিল [[গ্রিকগ্রীক ভাষা|গ্রিকগ্রীক]], [[কপ্টিক ভাষা|কপ্টিক]] ও [[ফার্সি ভাষা|ফার্সিতে]] লিপিবদ্ধ হত। [[আবদুল মালিক ইবনে মারওয়ান|আবদুল মালিকের]] সময় নিয়মিতভাবে সমস্ত সরকারি দলিলপত্র আরবিতে লেখা শুরু হয়।<ref name="Ochsenwald 2004 57"/>
 
===মুদ্রা===
১৯১ নং লাইন:
 
====দিওয়ান আল খাতাম====
রাষ্ট্রীয় দলিলপত্রের সংরক্ষণের জন্য মুয়াবিয়া এ বিভাগটি সৃষ্টি করেন। স্বাক্ষর ও গণ্তব্যেগন্তব্যে পাঠানোর আগে প্রতিটি দাপ্তরিক নথিপত্রের একটি কপি সংরক্ষণ করে রাখা হত। এর ফলে আবদুল মালিকের সময় দামেস্কে একটি আর্কাইভ গড়ে উঠে। আব্বাসীয় শাসনের মধ্যভাগ পর্যন্ত এ বিভাগটি টিকে ছিল।
 
====দিওয়ান আল বারিদ====
২০০ নং লাইন:
 
====দিওয়ান আল জুন্দ====
উমরের সময় আরব ও অন্য জাতিগোষ্ঠীর মুসলিম সৈনিকদের ভাতা প্রদানের নীতি উমাইয়াদের সময় পরিবর্তন হয়। উমাইয়ারা সক্রিয় ভূমিকা না রাখলেও ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা রাখে। হিশাম এ ব্যবস্থার সংস্কার করেন এবং যারা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে শুধু তাদের ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা করেন। বাইজেন্টাইনদের আদলে সেনাবাহিনীকে সংস্কার করা হয় এবং পাঁচটি অংশে বিভক্ত করা হয়, যথাক্রমে, মধ্যভাগ, দুই প্রান্ত, সম্মুখভাগ ও পশ্চাতভাগ। কুচকাওয়াচ বা যুদ্ধক্ষেত্রে একই গঠনবিন্যাস অণুসরণঅনুসরণ করা হত। দ্বিতীয় মারওয়ান পুরনো বিভাগ বাতিল করেন এবং নতুন প্রথায় কুরদুস নামক সুসংঘটিত দলের সৃষ্টি করেন। উমাইয়া সেনারা তিনটি ভাগে বিভক্ত থাকত, যথাক্রমে, পদাতিক, অশ্বারোহী ও গোলন্দাজ। আরব সেনারা গ্রিকগ্রীক কায়দায় পোশাকপোষাক ও অস্ত্রে সজ্জিত থাকত। উমাইয়া অশ্বারোহীরা সমান ও গোলাকার সেডল ব্যবহার করত। গোলন্দাজরা আরাদাহ (বেলিস্টা), মেনজানিক (মানগোনাল) ও দাবাবাহ বা কাবশ (বেটারিং রেম) ব্যবহার করত। ভারি যন্ত্রপাতি ও মালামাল উটের পিঠে করে সেনাবাহিনীর পিছনে থাকত।
 
==সামাজিক সংগঠন==
[[File:Humeima ivory.jpg|thumb|200px|হুমিয়ায় ([[জর্দা‌ন|জর্ডান]]) আব্বাসীয়দের বাসস্থানে আবিষ্কৃত হাতির দাঁতের তৈরি বস্তু (আনুমানিক ৮ম শতক। গঠনশৈলী অণুযায়ীঅনুযায়ী এটির উৎপত্তিস্থল উত্তর পূর্ব [[ইরান]] যা একসময় হাশিমিয়াদের সামরিক ক্ষমতার কেন্দ্র ছিল।.<ref>R.M. Foote ''et al.'', Report on Humeima excavations, in V. Egan and P.M. Bikai, "Archaeology in Jordan", ''American Journal of Archaeology'' 103 (1999), p. 514.</ref>]]
 
উমাইয়া খিলাফতের সময় প্রধান চারটি সামাজিক শ্রেণী ছিলঃ
২১৩ নং লাইন:
মুসলিম আরবরা সমাজের সর্বোচ্চ স্থানে অবস্থান করত। ইসলামে সকল মুসলিমের সমান অবস্থান থাকলেও আরব মুসলিমরা নিজেদের সমাজের উপরের অবস্থানে রাখে।
 
মুসলিমদের মধ্যে এ বিভাজন সাম্রাজ্যজুড়ে সমস্যার সৃষ্টি করে। ইসলাম ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে মুসলিমদের মধ্যে অনারব জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায়। আরব মুসলিমদের মত সমান অধিকার না থাকার ফলে নতুন ইসলাম গ্রহণকারীদের মধ্যে বিরূপ মনোভাব তৈরী হয়। সে সাথে ধর্মান্তরিত মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে অমুসলিমদের কাছ থেকে সংগৃহীতসংগৃহিত করের পরিমাণ কমে আসে। ৭৪০ এর দশকে আব্বাসীয় বিপ্লবের আগ পর্যন্ত এ সমস্যা চলতে থাকে।<ref>{{cite book|last=Ochsenwald|first=William|title=The Middle East, A History|year=2004|publisher=McGraw Hill|isbn=0-07-244233-6|pages=55–56}}</ref>
 
===অমুসলিম===
অমুসলিমদের মধ্যে ছিল খ্রিষ্টান, ইহুদি, জরস্ট্রিয়ান ও পৌত্তলিক [[বার্বা‌র জাতি|বার্বার]] যাদের [[জিম্মি]] বলা হত। মুসলিম শাসনের প্রতি অণুগতঅনুগত থাকার শর্তে তারা তাদের সামাজিক অধিকার ভোগ করত। তাদের নিজস্ব আদালত ছিল এবং সাম্রাজ্যজুড়ে ধর্মীয় স্বাধীনতা বহাল ছিল। সরকারি দপ্তরে সর্বোচ্চ পদ না পীও অনেক অমুসলিম প্রশাসনিক পদে আসীন ছিল। খ্রিষ্টান ও ইহুদিদের মধ্যে এসময় অনেক বড় মাপের ধর্মতাত্ত্বিকের আবির্ভাব হয়। কিন্তু পরবর্তীতে অনেকেই ইসলাম গ্রহণ করে ফলে অমুসলিমদের মধ্যে চিন্তাবিদের সংখ্যা কমে যায়।<ref>{{cite book|last=Ochsenwald|first=William|title=The Middle East, A History|year=2004|publisher=McGraw Hill|isbn=0-07-244233-6|page=56}}</ref>
 
==অবদান==
২২৬ নং লাইন:
উমাইয়া শাসনের সময় আরবি প্রশাসনিক ভাষা হিসেবে স্বীকৃত হয়। রাষ্ট্রীয় দলিল ও মুদ্রা আরবিতে জারি করা হত। ব্যাপক মাত্রায় ধর্মান্তরকরণ সমাজে বিশাল সংখ্যক মুসলিম জনসংখ্যার জন্ম দেয়। উমাইয়ারা [[জেরুজালেম|জেরুজালেমের]] ডোম অব দ্য রক ও [[দামেস্ক|দামেস্কের]] [[উমাইয়া মসজিদ]] নির্মাণ করে।<ref name=Previte-Orton236/>
 
পরবর্তী ইসলামি ইতিহাসবিদদের কাছে উমাইয়ারা নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেয়েছেন। তারা উমাইয়াদের প্রকৃত খিলাফতের পরিবর্তে রাজতন্ত্র চালুর জন্য দোষারোপ করেন। তবে আধুনিক [[আরব জাতীয়তাবাদ|আরব জাতীয়তাবাদীরা]] উমাইয়া শাসনের সময়কে আরবদের স্বর্ণযুগ বলে থাকে। এটি বিশেষত সিরিয়ান জাতীয়তাবাদী ও বর্তমানের সিরিয়া রাষ্ট্রের সাথে মেলে যাদের কেন্দ্র উমাইয়াদের মতই দামেস্ক। [[প্যান আরব রং]] হিসেবে যে চারটি রং বিভিন্ন আরব দেশের জাতিয়জাতীয় পতাকায় অঙ্কিত আছে তাকেও উমাইয়াদের প্রতিনিধিত্বশীল ধরা হয়।
 
==উমাইয়াদের নিয়ে ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি==