ইবনে সিনা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
অ "টেমপ্লেট:Persondata" অপসারণ |
WikitanvirBot (আলোচনা | অবদান) অ বট বানান ঠিক করছে, কোনো সমস্যায় তানভিরের আলাপ পাতায় বার্তা রাখুন |
||
২৩ নং লাইন:
| influences = আল-[[কুরআন]], [[মুহাম্মাদ]] (সা.), [[জাফর আল-সাদিক]], [[হিপোক্রাতিস]], [[সুশ্রুতা]], [[চারাকা]], [[গ্যালেন]], [[প্লটিনাস]], [[ভারতীয় গণিত শাস্ত্র]], [[ওয়াসিল ইবনে আতা]], [[আল-কিন্দি]], [[মুহাম্মাদ ইবনে জাকারিয়া আল-রাজি]], [[আবু রাইহান আল-বিরুনি]], [[জন ফিলোপোনাস]] [[এরিস্টটল]], [[নব্য-প্লেটোবাদ]], [[আল-ফারাবী]]
| influenced = [[ইবন রুশ্দ]], [[ওমর খৈয়াম]], [[টমাস একুইনাস]], [[আলবার্টাস
| notable_ideas = ইউরোপের মধ্যযুগীয় শিক্ষায় ইবন সিনা সৃষ্ট উপকরণ বহুল মাত্রায় ব্যবহৃত হয়
}}
'''আবু আলী হোসাইন ইবনে সিনা''' (বুআলি সিনা, [[৯৮০]] - [[১০৩৭]]) মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম সেরা চিকিৎসক, গণিতজ্ঞ, জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং দার্শনিক। তাকে সর্ববিদ্যায় পারদর্শী হিসেবে আখ্যায়িত করা যায়। তাকে একইসাথে [[ইরান]], [[তুরস্ক]], [[আফগানিস্তান]] এবং [[রাশিয়া|রাশিয়ার]] বিজ্ঞজনেরা তাদের
== জীবনী ==
=== জন্ম ও বংশপরিচয় ===
ইবনে সিনা [[বুখারা|বুখারার]] (বর্তমান [[উজবেকিস্তান]]) অন্তর্গত [[খার্মাতায়েন]] জেলার আফসানা নামক স্থানে [[৯৮০]] খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে (মতান্তরে, আগস্ট মাস) জন্মগ্রহণ করেন। আরবি পঞ্জিকা
=== শিক্ষা জীবন ===
জন্মের পর ইবনে সিনা সপরিবারে আফসানাতে বাস করছিলেন। তার দ্বিতীয় ভাইয়ের জন্মের পর আবদুল্লাহ ও সিতারা সবাইকে নিয়ে বুখারায় চলে আসেন এবং তাদের শিক্ষার জন্য যথোপযুক্ত গৃহশিক্ষক নিয়োগ করেন। এখান থেকেই সীনার শিক্ষার সূচনা ঘটে। সব ভাইয়ের মধ্যে সীনা শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রথম থেকেই বিশেষ মেধার স্বাক্ষর রাখেন। মাত্র ১০ বছর বয়সে সমগ্র [[কুরআন]]
আগে থেকেই আবদুল্লাহ সেখানকার এক [[মেওয়া]] বিক্রতার কথা জানতেন। এই বিক্রতা [[ভারতীয়
পরবর্তীতে সীনার শিক্ষক হিসেবে আরও দুজন নিযুক্ত হন: ''ইবরাহিম'' ও ''মাহমুদ মসসাহ''।<ref>'''রাষ্ট্র দর্শনে মুসলিম মনীষা''' - আবু জাফর; প্রকাশক - অধ্যাপক শাহেদ আলী, [[ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ]], প্রথম সংস্করণ: অক্টোবর, ১৯৭০, দ্বিতীয় প্রকাশ: জানুয়ারি, ১৯৭৯; পৃ. ৪৭</ref> এসময় শিক্ষক নাতেলী বুঝতে পারেন সীনাকে বেশী দিন শিক্ষা দেয়ার মত সামর্থ বা জ্ঞান তার নেই। তখন ইবন সীনা শিক্ষার বিষয়ে অনেকটা নিজের উপর নির্ভর করেই চলতে থাকেন। এসময় সম্বন্ধে তিনি তার আত্মজীবনীতে লিখেছেন:
৪৪ নং লাইন:
=== বাদশাহের দরবারে গমন ও সরকারি চাকরি ===
এ সময় বুখারার বাদশাহ [[নুহ বিন মনসুর]] এক দুরারোগ্য ব্যাধীতে আক্রান্ত হন। দেশ এবং বিদেশের সকল চিকিৎসক এর চিকিৎসায় ব্যর্থ হয়। ততদিনে সীনার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ায়, বাদশাহের দরবারে তার ডাক পড়ে। তিনি বাদশাহকে সম্পূর্ণ সাড়িয়ে তুলেন। তার খ্যাতি এ সময় দেশে বিদেশে ছড়িয়ে পড়ে। আরোগ্য লাভের পর বাদশাহ সীনাকে পুরস্কার দেয়ার আকাঙ্ক্ষা পোষণ করেন। এসময় সীনা চাইলে বিপুল সম্পদ ও উচ্চপদ লাভ করতে পারতেন। কিন্তু তিনি কেবল বাদশাহ্র কাছে ''শাহী কুতুবখানায়'' (বাদশাহ্র দরবারের গ্রন্থাগার) প্রবেশ করে পড়াশোনার
[[১০০১]] সালে ইবন সিনার পিতা মৃত্যুবরণ করেন। সুলতান নুহ বিন মনসুরও ততদিনে পরলোকে চলে গেছেন। নুহ বিন মনসুরের উত্তরাধিকারী নতুন সুলতান ইবন সিনাকে তার পিতার স্থলাভিষিক্ত করেন। এভাবে সিনা বুখারা অঞ্চলের শাসনকর্তার অধীনে সরকারী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন শুরু করেন। কিন্তু রাজনীতিতে তিনি ছিলেন নতুন। অভিজ্ঞতার অভাবে কার্য সম্পাদনে তাকে হিমশিম খেতে হয়। কিছুদিনের মধ্যেই রাজ্যের পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত [[ট্রান্সঅকসিনিয়া|ট্রান্সঅকসিনিয়ায়]] বিদ্রোহ দেখা দেয়। [[খার্মাতায়েন|খার্মাতায়েনের]] পূর্বপ্রান্ত দিয়ে ঐতিহাসিক [[অক্সাস নদী]] ([[আমু দরিয়া]]) প্রবাহিত হয়ে গেছে যা [[বুখারা]] এবং [[তুর্কীস্তান|তুর্কীস্তানের]] মধ্যবর্তী সীমারেখা হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকে। ট্রান্সঅকসিনিয়া তথা খার্মাতায়েনের লোকেরা তাই বেশ দুর্ধর্ষ প্রকৃতির ছিল। তাদের বিদ্রোহ দমন ছিল খুবই কষ্টসাধ্য। ইবন সিনা এই বিদ্রোহ দমনে ব্যর্থ হন এবং এতে সুলতান তার উপর বেশ বিরক্ত হন। আত্মসম্মানবোধ থেকেই ইবন সিনা চাকরি ছেড়ে দিয়ে নিরুদ্দেশ যাত্রায় বেরিয়ে পড়েন। এই যাত্রায় তার বিচিত্র অভিজ্ঞতা হয়েছিল। কখনও রাজার হালে থেকেছেন কখনও আবার কারাগারে নিক্ষিপ্ত হয়েছেন। তবে সকল কিছুর মধ্যেও তার মূল অবলম্বন ছিল [[চিকিৎসা বিজ্ঞান]]। এই বিজ্ঞানের বলেই তিনি সবসময় সম্মানিত হয়েছেন। এর বদৌলতেই চরম দুর্দিনের মধ্যেও আনন্দের দেখা পেয়েছেন।
=== বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ ===
ইবন সিনা অনেক দেশ ভ্রমণ করেছেন। তার অভিজ্ঞতার ঝুলিও ছিল সমৃদ্ধ। তৎকালীন মুসলিম বিশ্বের অন্যতম সমৃদ্ধ নগরী [[খোয়ারিজম|খোয়ারিজমে]] গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি পণ্ডিত [[আল বেরুনি|আল বেরুনির]] সাথে সাক্ষাৎ করেন। আল বেরুনির মূল উৎসাহ ছিল [[ভারতবর্ষ]]। কিন্তু ইবন সিনা কখনও ভারত অভিমুখে আসেননি। তিনি যাত্রা করেছিলেন পশ্চিম দিকে। তার মূল উৎসাহও ছিল পশ্চিমের দিকে। এ কারণেই হয়তো তার চিকিৎসাবিজ্ঞান সংক্রান্ত বইগুলো প্রাচ্যের সীমানা ছাড়িয়ে পাশ্চাত্য
=== ইরানে গমন ও শেষ জীবন ===
ইরানে যাওয়ার পথে ইবন সিনা তার সমসাময়ীক কবি [[ফেরদৌসী|ফেরদৌসীর]] জন্মস্থান বিখ্যাত [[তুস]] নগরী পরিদর্শন করেছিলেন। এখান থেকে তিনি ইরানের সুপ্রাচীন শহর [[হামাদান|হামাদানে]] গমন করেন। ঐশ্বর্যশালী এবং ঐতিহাসিক এই নগরীটিকে ভাল লেগে গিয়েছিল সিনার। এখানে অনেকদিন ছিলেন। দেশ-বিদেশ ভ্রমণ করে তিনি ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। বয়সও হয়েছিল অনেক। তাই তিনি মানসিক ও শারীরিক প্রশান্তি খুঁজছিলেন। হামাদানে তিনি এই প্রশান্তি খুঁজে পান। এখানে তিনি ধীর-স্থার মনে চিন্তা করার সময় সুযোগ লাভ করেন। হামাদেনের সম্রাট তার থাকা খাওয়া ও নিরাপদ চলাচলের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। তিনি এখানে চিকিৎসা সেবার মাধ্যমে স্বাধীন জীবিকা উপার্জন করতেন। এর সাথে তিনি ধ্যান করতেন অধিবিদ্যা, ধর্মতত্ত্ব এবং দর্শনের মৌলিক বিষয়ে। এখানেই তিনি বিখ্যাত দার্শনিক গ্রন্থ ''কিতাব আল শিফা'' রচনা করেন। এই বইটি কবি [[উমর খৈয়াম|উমর খৈয়ামের]] খুব প্রিয় ছিল। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত এটি তার সাথে ছিল বলে কথিত আছে। যাহোক, হামাদানে তিনি অনেক কাজ করার সুযোগ পেয়েছেণ। সারাদিন পরীশ্রেমের পর রাতে তিনি অভিজাত ব্যক্তিবর্গের সাথে আমোদ-প্রমোদে লিপ্ত হতেন। সুবিশেষ দার্শনিক প্রজ্ঞার অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও গম্ভীর মূর্তিতে বসে থাকা তার স্বভাবে ছিলনা। তাই বলে কখনও আবার আমোদ আহ্লাদে একেবারে মজে যেতেননা। নিজের ধীশক্তি সবসময় সক্রিয় রাখতে পারতেন। কখনই বিস্মৃত হতেননা যে, তিনি একজন জ্ঞানপিপাসু এবং জ্ঞান চর্চাই তার মুখ্য কাজ।
হামাদানের সুলতান অসুস্থ হলে ইবন সিনা তার চিকিৎসা করেন। এতে সম্রাট আরোগ্য লাভ করেন। এই চিকিৎসায় খুশি হয়ে সম্রাট তাকে প্রধানমন্ত্রীর পদে নিয়োগ দেন। কিন্তু রজানীতিতে তিনি বরাবরের মতই ছিলেন
ইবন সীনার পলায়নের কিছুদিন পরই ইরানের ইস্পাহান নগরীতে এক ছদ্মবেশী সাধুর আবির্ভাব হয়েছিল। ইস্পাহানের সম্রাট জানতে পারেন যে এই সাধু আসলে ইবন সিনা। তিনি তাকে নিজ দরবারে নিয়ে আসেন এবং রাজসভায় আশ্রয় দান করেন। সিনাকে আশ্রয় দিতে পেরে সম্রাট নিজেও সম্মানিত বোধ করেছিলেন। ইস্পাহানে বেশ কিছুকাল তিনি শান্তিতে দিনাতিপাত করেন। হামাদানের কেউ তাকে এসময় বিরক্ত করত না। এখানে বসেই তিনি তার জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ [[কিতাব আল ইশারাৎ]] রচনা করেন। কিন্তু এখানেও বেশিদিন শান্তিতে থাকতে পারেননি সিনা। অচিরেই হামাদান এবং ইস্পাহাসের মধ্যে যুদ্ধ বেধে যায়। ইসপাহানের সম্রাট হমাদানের বিরুদ্ধে অভিযান প্রস্তুত করেন। এসময় সম্রাট ইবন সিনাকে সাথে নেয়ার ইচ্ছ প্রকাশ করেন। চিকিৎসা সেবা প্রদানের কারণেই তাকে নেয়ার ব্যাপারে সম্রাট মনস্থির করেন। নিজে অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও সম্রাটের
== চিকিৎসা বিজ্ঞানে অবদান ==
|