অ্যান্টিবায়োটিক: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
WikitanvirBot (আলোচনা | অবদান)
বট বানান ঠিক করছে, কোনো সমস্যায় তানভিরের আলাপ পাতায় বার্তা রাখুন
১ নং লাইন:
[[চিত্র:Alexander Fleming.jpg|right|thumb|স্যার আলেকজান্ডার ফ্লেমিং, অ্যান্টিবায়োটিকের আবিষ্কারক]]
'''অ্যান্টিবায়োটিক([[:en:antibiotics|Antibiotics]])''' কয়েকধরণের জৈব-রাসায়নিক ঔষধ যা [[অণুজীব|অণুজীবদের]] (বিশেষ করে [[ব্যাক্টেরিয়া]]) নাশ করে বা বৃদ্ধিরোধ করে। সাধারানতঃ এক এক অ্যান্টিবায়োটিক এক এক ধরণেরধরনের [[অণুজীব]] তৈরি করে ও অন্যান্য অণুজীবের বিরুদ্ধে কাজ করে। বিভিন্ন [[ব্যাক্টেরিয়া]]([[:en:Bacteria|Bacteria]]) ও [[ছত্রাক]]([[:en:Fungi|Fungi]]) অ্যান্টিবায়োটিক তৈরি করে। "অ্যান্টিবায়োটিক" সাধারণভাবে ব্যাক্টেরিয়ার বিরুদ্ধে ব্যাবহারব্যবহার হয়, [[ভাইরাস|ভাইরাসের]] বিরুদ্ধে কাজ করে না। তবে অ্যান্টিবায়োটিক হল আরও বড় জীবাণু-নাশক শ্রেণীর সদস্য যার মধ্যে আছে নানা প্রকার অ্যান্টি-ভাইরাল (ভাইরাস-নাশক), অ্যান্টি-ফাঙ্গাল (ছত্রাক-নাশক) ইত্যাদি। প্রাকৃতিতেও বহু জীবাণু-নাশক আছে যাদের অনেককেই এখনও ঔষধ হিসাবে পরিক্ষা করে দেখা হয়নি, যেমন [[ব্যাক্টেরিওসিন]] ([[:en:Bacteriocin|Bacteriocin]])- ব্যাক্টেরিয়া দ্বারা নিসৃত কাছাকাছিকাছাঁকাছি ধরণেরধরনের ব্যাক্টেরিয়া-ঘাতক [[প্রোটিন]] টক্সিন (বিষ)। সাধারণভাবে অ্যান্টিবায়োটিক শব্দটি ক্ষুদ্র জৈব-রাসায়নিক পদার্থ বোঝায়, বৃহত প্রোটিন নয় বা অজৈব-রাসায়নিক অণু নয়, (যেমন আর্সেনিক)
 
== আবিষ্কারপূর্ব ইতিহাস ==
৬ নং লাইন:
সয়াবিনের [[ছত্রাক]]([[:en:Mould|Mould]]) আক্রান্ত ছানা (Moldy Soybean Curd) বিভিন্ন ফোঁড়ার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হত। চীনারা পায়ের ক্ষত সারাবার জন্য [[ছত্রাক]] [[:en:Mould|Mould]] আবৃত পাদুকা (স্যান্ডল) পরত। ১৮৮১ সালে [[ব্রিটিশ]] অণুজীব বিজ্ঞানী [[জন টিন্ডাল]] ([[:en:John Tyndall|John Tyndall]]) [[ছত্রাক|ছত্রাকের]] জীবাণু প্রতিরোধী ভূমিকা লক্ষ্য করেন। <ref name="ReferenceA">মাইক্রোবায়োলজি: কনসেপ্টস এন্ড আপ্লিকেশন্স; মাইকেল জে পেলচজার, ই. সি. চান, নোয়েল আর. ক্রেগ</ref>
 
[[লুই পাস্তুর]] এবং জোবার্ট লক্ষ্য করেণ কিছু অণুজীবের উপস্থিতিতে প্রস্রাবে আন্থ্রাক্স ব্যাসিলি ([[:en:Anthrax|Anthrax]]) জন্মাতে পারেনা। ১৯০১ সালে এমারিখ (Emmerich) এবং লও (Low) দেখেন যে আন্থ্রাক্স ব্যাসিলি ( Anthrax bacili) আক্রমণ থেকে [[খরগোশ|খরগোশকে]] বাঁচানো সম্ভব যদি [[সিউডোমোনাস এরুজিনোসা]] [[:en:Pseudomonas aeruginosa|Pseudomonas aeruginosa]] নামক ব্যাক্টেরিয়ার তরল আবাদ (Liquid culture) খরগোশের দেহে প্রবেশ (Inject) করানো যায়। তাঁরা মনে করেণ ব্যাক্টেরিয়াটি কোনো উৎসেচক (enzyme)তৈরি করেছে যা জীবাণুর আক্রমণ থেকে খরগোশকে রক্ষা করছে। তাঁরা এই পদার্থের নাম দেন পাইওসায়ানেজ (Pyocyanase)। ১৯২০ সালে গার্থা ও দাথ কিছু গবেষণা করেন এই জাতীয়জাতিয় জীবাণু নাশক তৈরি করতে। তাঁরা [[অ্যাকটিনোমাইসিটিস]] ([[:en:Actinomycetes|Actinomycetes]]) দ্বারা প্রস্তুত একধরনের রাসায়নিক পদার্থ খুজে পান যার জীবাণুনাশী ক্ষমতা আছে। তাঁরা এর নাম দেন অ্যাকটিনোমাইসিন। কিন্তু কোনো রোগের প্রতিরোধে এই পদার্থ পরবর্তিতে ব্যবহৃত হয় নাই। এই জাতীয়জাতিয় আবিস্কারের পরও ১৯২৯ সালের আগে অ্যান্টিবায়োটিক এর যুগ শুরু হয় নাই। ১৯২৭ সালে [[আলেকজান্ডার ফ্লেমিং|স্যার আলেকজান্ডার ফ্লেমিং]] ([[:en:Alexander fleming|Alexander Fleming]]) প্রথম অ্যান্টিবায়োটিক [[পেনিসিলিন]] আবিষ্কার করেন।<ref name="ReferenceA"/>
 
== আবিষ্কার ==
১৬ নং লাইন:
১৯৪১ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি প্রথম পেনিসিলিন মানুষের দেহে প্রয়োগ হয়। অক্সফোর্ডের একজন [[পুলিশ]] কর্মকর্তা ''Staplylococcus'' দ্বারা আক্রান্ত ছিলেন। পেনিসিলিনের প্রয়োগে তার অবস্থার নাটকীয় উন্নতি ঘটে। কিন্তু পাঁচ দিন পর পেনিসিলিয়ামের সরবরাহ শেষ হয়ে গেলে তিনি আবার আক্রান্ত হয়ে পড়েন, এবং মারা যান। <ref name="ReferenceA"/>
 
১৯৪০-৪১ সালের দিকে বৃটেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে পেনিসিলিনের গবেষনারগবেষণার জন্য অর্থ বরাদ্দ কমে যায়। কিন্তু ব্রিটিশ বিজ্ঞানীদের এই আবিষ্কার আমেরিকান বিজ্ঞানীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ফলশ্রুতিতে, [[রকফেলার ফাউন্ডেশন]] ([http://en.wikipedia.org/wiki/rockefeller_foundation Rockefeller Foundation])ব্রিটিশ বিজ্ঞানী [[হ্যারল্ড ডাব্লিউ ফ্লোরে]] (Harold W. Florey) ও [[এন.জি. হিটলিকে]] (N. G. Heatly) আমেরিকায় আমন্ত্রানআমন্ত্রাণ জানান। ২ জুলাই ১৯৪১ সালে তারা আমেরিকায় পৌছেন এবং বিশ্ববিখ্যাত ছত্রাকবিদ চার্লস থম (Charles Thom) ও আমেরিকার কৃষি বিভাগের (U.S. Department of Agriculture) সাথে আলোচনা করেন। খুব দ্রুতই আমেরিকার কৃষি বিভাগের উত্তর অঞ্চলের গবেষণাগারে তাদের কাজ শুরু হয়। গবেষনাগারটিগবেষণাগারটি ছিল [[ইলিনয়|ইলিনয়ের]] (Illiniois) পিওরিয়াতে (Peoria)। ফ্লেমিং যে ছত্রাক পেয়েছিলেন তা ২একক/মিলিলিটার(unit/mililiter) পেনিসিলিন তৈরি করত, কিন্তু কয়েকমাসে আমেরিকাতে বিজ্ঞানীরা প্রায় ৯০০ একক/মিলিলিটার (unit/mililiter)পেনিসিলিন প্রস্তুত করতে সক্ষম হন। বর্তমানে প্রায় ৫০,০০০ একক/[[মিলিলিটার]] পেনিসিলিন প্রস্তুত করা সম্ভব হয়েছে। এই সময় অন্যান্য অনেক আন্টিবায়োটিক আবিস্কার হয়। <ref name="ReferenceA"/> রেনে ডিউবস (Rene Dubos) গ্রামিসিডিন (Gramicidin) ও টাইরসিডিন(Tyrocidine) আবিস্কার করেন যা [[গ্রাম পজিটিভ ব্যাক্টেরিয়ার]] (Gram Positive Bacteria) উপর কাজ করে। বর্তমানেও অনেক আন্টিবায়োটিক আবিস্কার হচ্ছে। এর মধ্যে শুধু ক্লোরামফেনিকলের (Chloramphenicol) [[চিত্র:Chloramphenicol-2D-skeletal.png|thumb|ক্লোরামফেনিকল]] রাসায়নিক সংশ্লেষন সম্ভব হয়েছে।
 
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় [[মিত্র বাহিনী|মিত্র বাহিনীর]] সৈন্যদের ক্ষত সারাতে প্রথম পেনিসিলিনের ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি হয়। ব্রিটেন, আমেরিকার বিজ্ঞানীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায়, ফ্লেমিং এর সেই ভুলের কারণে পাওয়া ছাতা এক "যাদু ঔষধ" তৈরে করতে থাকে যা অসংখ্য জীবন বাঁচায়। ১৯৪৫ সালে ফ্লেমিং, আর্নেস্ট চেইন, ও ফ্লোরে চিকিৎসাবিজ্ঞানে তাদের অবদানের জন্য [[নোবেল পুরস্কার]] ([http://en.wikipedia.org/wiki/Nobel_prize Nobel Prize]) লাভ করেন।<ref name="ReferenceA"/>
২৩ নং লাইন:
বিভিন্ন অ্যান্টিবায়োটিক অণুজীবের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ভাবে কাজ করে। তার মধ্যে প্রধান প্রধান উপায় গুলো হলঃ
 
* '''[[ব্যাক্টেরিয়া|ব্যাক্টেরিয়ার]] [[কোষপ্রাচীর|কোষপ্রাচীরের]] ([http://en.wikipedia.org/wiki/cell_wall Cell Wall]) [[পেপটিডোগ্লাইক্যান|পেপ্টাইডোগ্লাইকেন]] ([http://en.wikipedia.org/wiki/Peptidoglycan Peptidoglycan])সংশ্লেষণ বন্ধ করে দেয়''': [[বিটা-ল্যাক্টাম অ্যান্টিবায়োটিক|বিটা-ল্যাক্টাম]] (beta-lactam) অ্যান্টিবায়োটিক (যেমনঃ [[পেনিসিলিন]]) [[কোষ প্রাচীর|কোষ প্রাচীরের]] [[পেপ্টাইডোগ্লাইকেন]] সংশ্লেষন বন্ধ করে দেয়। <ref name="ReferenceA"/> দৃঢ়ঃ [[পেপটিডোগ্লাইকেন|পেপ্টাইডোগ্লাইকেন]] স্তরের অভাবে কোষ সাধারণত [[পানি]] শোষনের মাধ্যমে মরে যায়। তাছাড়া [[ব্যাক্টেরিয়া|ব্যাকটেরিয়ার]] [[কোষ প্রাচীর]] কিছু [[এনজাইম|উৎসেচক]] ([http://en.wikipedia.org/wiki/enzyme enzyme]) ধারণ করে যারা পেপ্টাইডোগ্লাইকেনের স্তরকে ভাঙে, যার ফলে নতুন পেপ্টাইডোগ্লাইকেন স্তর সৃষ্টি হতে পারে। কোষের নিজের এমন কিছু পদার্থ আছে যারা এই প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রনে রাখে, যেন প্রয়োজনের অতিরিক্ত এবং সবসময় পেপ্টাইডোগ্লাইকেন স্তর ক্ষয় হতে না পারে। পেনিসিলিনের জন্য অনেক ক্ষেত্রে এই সব নিয়ন্ত্রক পদার্থ কোষ থেকে হারিয়ে যায়। ফলশ্রুতিতে, কোষস্থ [[এনজাইম|উৎসেচক]] পেপটিডোগ্লাইকেন স্তর ভাঙতে থাকে। যে সকল ব্যাক্টেরিয়ার কোষ প্রাচীর নেই, তাদের উপর এই জাতীয়জাতিয় আন্টিবায়োটিক কাজ করতে পারে না। [[মাইকোপ্লাজমা]] ([[:en:Mycoplasma|Mycoplasma]] নামক ব্যাক্টেরিয়ার কোষ প্রাচীর [[পেপটিডোগ্লাইক্যান|পেপ্টাইডোগ্লাইকেন]] স্তর নেই, ফলে তা পেনিসিলিন-রোধী (Penicillin resistant-পেনিসিলিন রেজিস্ট্যান্ট)।
* '''[[কোষপর্দা|কোষপর্দায়]] ([http://en.wikipedia.org/wiki/cell_membrane Cell Membrane]) ছিদ্র করে''': বিভিন্ন [[পলিপেপটাইড]] আন্টিবায়োটিক (যেমন: [[পলিমিক্সিন]] (Polymyxin)) ব্যাক্টেরিয়ার [[কোষঝিল্লি]] ধবংস কররার ক্ষমতা আছে। এরা কোষঝিল্লির মুখ্য উপাদান [[ফসফোলিপিড]]([http://en.wikipedia.org/wiki/phospholipid Phospholipid]) নষ্ট করে দেয়। এর ফলে কোষঝিল্লির সাধারণ ভেদ্যতা নষ্ট হয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদার্থ কোষ থেকে বের হয়ে যায় এবং অবশেষে কোষটি মারা যায়।
[[চিত্র:Ribosomer i arbete.png|thumb|অনেকগুলি করে [[রাইবোজোম]] রেলগাড়ীর বগির মত একই [[এম-আরএনএ|mRNAর]] রেললাইনের উপর পেছন পেছন চলতে থাকে।এদের মধ্যে যেকোন একটি অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যের ফলে অবরুদ্ধ হলে তার পিছনের সব কটিও লাইন দিয়ে আটকে যাবে।]]
 
* '''[[রাইবোজোম|রাইবোজোমে]] [[প্রোটিন]] সংশ্লেষণে বাধা সৃষ্টি করে''': উদাহরন স্বরুপ, [[অ্যামাইনোগ্লাইকোসাইড]], [[ম্যাক্রোলাইড]], [[ক্লোরাম্ফেনিকল]] ও [[টেট্রাসাইক্লিন]] জাতীয়জাতিয় অ্যান্টিবায়োটিক। রাইবোজোমে ক্রিয়াকারী অ্যান্টিবায়োটিকের সুবিধা হল এদের বিরুদ্ধে রেজিস্টেন্স হওয়ার প্রবণতা অপেক্ষাকৃত কম, কারণঃ
** রাইবোজোমীয় [[আরএনএ]] [[জিন|জিনগুলির]] অনেকগুলি করে অনুলিপিঅণুলিপি (copy) থাকে, তাই একটি রেজিস্ট্যান্ট হয়ে গেলেও যতক্ষণ না অধিকাংশ অনুলিপিঅণুলিপি রেজিস্টান্ট না হচ্ছে ততক্ষণ অ্যান্টিবায়োটিকের ক্রিয়া বজায় থাকে।
** অনেকগুলি করে [[রাইবোজোম]] রেলগাড়ীর বগির মত একই [[এম-আরএনএ|mRNAর]] রেললাইনের উপর পেছন পেছন চলতে থাকে। এদের মধ্যে যেকোন একটি অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যের ফলে অবরুদ্ধ হলে তার পিছনের সব কটিও লাইন দিয়ে আটকে যাবে।
* '''[[নিউক্লিক এসিড]] ([http://en.wikipedia.org/wiki/Nucleic_acid Nucleic Acid]) সংশ্লেষণে বাধা দেয়''':বিভিন্ন অ্যান্টিবায়োটিক কোষের [[ডিএনএ]], [[আরএনএ]] সংশ্লেষণে বাধা দেয়। যেমন [[ক্যুইনোলোন]] জাতীয়জাতিয় অ্যান্টিবায়োটিক [[ডিএনএ জাইরেজ|ডিএনএ জাইরেজকে]] স্তব্ধ করে [[ডিএনএ]] সংশ্লেষণে বাধা দেয়। আসলে [[জাইরেজ]] একধরনের [[টোপোয়াইসোমারেজ-II]] উৎসেচক যা সাময়িক সুনিয়ন্ত্রিত দ্বিতন্ত্রীভঙ্গ দ্বারা (double strand breaks) [[ডিএনএ|ডিএনএর]] প্যাঁচ কম বা বেশি করে আবার জুড়ে দিতে পারে। জাইরেজের ক্রিয়ার যে দশায় [[ডিএনএ|ডিএনএর]] দ্বিতন্ত্রী অণুর দুটি তন্ত্রীতে ভঙ্গের সুচনা হয় সেই দশাতেই [[ক্যুইনোলোন]] অ্যান্টিবায়োটিক উৎসেচকটিকে আটকে দেয়, ফলে [[ডিএনএ]] অণুর মধ্যে অনেক দ্বিতন্ত্রীভঙ্গ (double strand breaks) জড়ো হয়, যা মেরামত না হলে মৃত্যু বা মারাত্মক [[মিউটেশন]] ঘটাতে পারে।
 
== অ্যান্টিবায়োটিকের ধরণধরন ==
রাসায়নিক গঠনের উপর ভিত্তি করে আন্টিবায়োটিককে নানা ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভাগ গুলো হল <ref>স্টেডম্যান'স মেডিক্যাল ডিক্সনারি, সপ্তবিংশ সংস্করণ</ref>,
# [[বিটা-ল্যাক্টাম]] জাতীয়জাতিয় (beta-lactum)
## [[পেনিসিলিন]] জাতীয়জাতিয়
## [[সেফালোস্পোরিন]] জাতীয়জাতিয়
### [[প্রথম প্রজন্মের সেফালোস্পোরিন]]
### [[দ্বিতীয় প্রজন্মের সেফালোস্পোরিন]]
৪২ নং লাইন:
### [[চতুর্থ প্রজন্মের সেফালোস্পোরিন]]
### [[পঞ্চম প্রজন্মের সেফালোস্পোরিন]]
## [[কার্বাপেনেম]] জাতীয়জাতিয়
### [[ইমিপেনেম]]
### [[মেরোপেনেম]], ইত্যাদি
## [[মোনোব্যাক্টাম]] জাতীয়জাতিয়
### [[অ্যাজট্রিওনাম]]
# [[সালফোনামইড]] জাতীয়জাতিয়
# [[ক্লোরাম্ফেনিকল]] জাতীয়জাতিয়
## [[ক্লোরাম্ফেনিকল]],
## [[থিয়াম্ফেনিকল]],
## [[আজিডাম্ফেনিকল]], ইত্যাদি
# [[কুইনোলোন]] জাতীয়জাতিয়
## [[ন্যালিডিক্সিক অ্যাসিড]]
## [[ফ্লুরোকুইনোলোন]] জাতীয়জাতিয়
### [[নরফ্লক্সাসিন]]
### [[সিপ্রোফ্লক্সাসিন]] ইত্যাদি
# [[ম্যাক্রোলাইড]] জাতীয়জাতিয় (Macrolides),
## [[এরিথ্রোমাইসিন]],
## [[অ্যাজিথ্রোমাইসিন]],
## [[স্পাইরামাইসিন]]
## [[ক্লারিথ্রোমাইসিন]], ইত্যাদি
# [[অ্যামিনোগ্লাইকোসাইড]] জাতীয়জাতিয় (Aminoglycosides),
## [[স্ট্রেপ্টোমাইসিন]],
## [[জেন্টামাইসিন]],
## [[সিসোমাইসিন]],
## [[টোব্রামাইসিন]], ইত্যাদি
# [[টেট্রাসাইক্লিন]] জাতীয়জাতিয় (Tetracyclin)
## [[টেট্রাসাইক্লিন]],
## [[ডক্সিসাইক্লিন]],
## [[মিনোসাইক্লিন]], ইত্যাদি
# [[পলিপেপটাইড]] জাতীয়জাতিয়(Polypeptide)
## [[পলিমিক্সিন বি]], [[পলিমিক্সিন ই]],
## [[ব্যাসিট্রাসিন]],
## [[ক্যাপ্রিয়োমাইসিন]],
## [[ভ্যাঙ্কোমাইসিন]], ইত্যাদি
# [[পলিয়িন]] জাতীয়জাতিয়
## [[অ্যাম্ফোটেরিসিন বি]],
## [[নাইস্টাটিন]] ইত্যাদি
৮২ নং লাইন:
## [[ফ্লুকোনাজোল]],
## [[ইট্রাকোনাজোল]], ইত্যাদি
# [[বেঞ্জোফুরান]] জাতীয়জাতিয়
## গ্রিসোফুল্ভিন ইত্যাদি
# [[আন্সামাইসিন]] জাতীয়জাতিয়
## [[রিফামাইসিন]] ইত্যাদি
# [[লিনোসামাইড]] জাতীয়জাতিয়
## [[ক্লিন্ডামাইসিন]],
## [[লিঙ্কোমাইসিন]], ইত্যাদি
৯৩ নং লাইন:
 
== অণুজীবের অ্যান্টিবায়োটিক তৈরির কারণ ==
সাধারণতঃ অণুজীবরা অন্য অণুজীবদের সঙ্গে প্রতিযোগীতায়প্রতিযোগিতায় জয়লাভের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক তৈরি করে থাকে।
 
== রোগ প্রতিরোধে অ্যান্টিবায়োটিক ==
৯৯ নং লাইন:
বিভিন্ন সংক্রামক রোগ প্রতিরোধে আন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে কিছু উদাহরণ দেওয়া হল:
 
* মূত্রনালির সংক্রমন([http://en.wikipedia.org/wiki/Urinary_Tract_Infection Urinary Tract Infection]): গ্রাম নেগেটিভ ব্যাক্টেরিয়া প্রধানত দায়ী, এর প্রতিরোধে বিটা-ল্যাক্টাম জাতীয়জাতিয় আন্টিবায়োটিক যেমন, পেনিসিলিন, সেফালোস্পোরিন, কার্বাপেনেম ব্যবহার করা হয়।
* [[যক্ষা]](Tuberculosis): অ্যামিনোগ্লাইকোসাইড জাতীয়জাতিয় আন্টিবায়োটিক যেমন স্ট্রেপটোমাইসিন ব্যবহার করা হয়।
* ছত্রাকের সংক্রমন ([http://en.wikipedia.org/wiki/Fungal_Infection Fungal Infection]): নিস্টাটিন, অ্যাম্ফোটেরিসিন, গ্রাইসিওফালভিন ব্যবহার করা যায়।
 
১২৩ নং লাইন:
 
* আন্টিবায়োটিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রনে রাখা, অন্তত যে সব ক্ষেত্রে খুব কম আন্টিবায়োটিক দরকার বা একেবারেই দরকার নাই। মনে রাখতে হবে যে কোনো আন্টিবায়োটিক শুধু মাত্র অণুজীবের বিরুদ্ধে কাজ করে; অর্থাৎ যে সকল রোগ অণুজীবের সংক্রমনের সাথে সম্পর্কযুক্ত নয়, সেই সব রোগ নিরাময়ে আন্টিবায়োটিক ব্যবহার করে কোনো লাভ হবে না। বরং, দেহে ঐ বিশেষ আন্টিবায়োটিক-রোধী ব্যাক্টেরিয়ার বিস্তার ঘটবে এবং পরবর্তিতে কোনো রোগ ঐ ব্যাক্টেরিয়া দ্বারা ঘটে থাকলে তখন রোগ নিরাময়ে ঐ আন্টিবায়োটিক কোনো কাজে আসবে না।
* [[ভাইরাস|ভাইরাসঘটিত]] রোগে আন্টিবায়োটিকের অপব্যাবহার বন্ধ করা। ভাইরাসের বিরুদ্ধে আন্টিবায়োটিক কোনো কাজে আসে না, কারণ আন্টিবায়োটিক শুধু মাত্র [[ব্যাক্টেরিয়া]] ও [[ছত্রাক|ছত্রাকের]] বিরুদ্ধে কাজ করে। যেমন, আমাদের যে সাধারণ হাঁচি কাশি জাতীয়জাতিয় ঠান্ডা লাগা ([http://en.wikipedia.org/wiki/Common_cold Common Cold]), সেটা মূলত ভাইরাস ঘটিত- [[করোনাভাইরাস]] ([http://en.wikipedia.org/wiki/Coronavirus Coronavirus]), [[রাইনোভাইরাস]] ([http://en.wikipedia.org/wiki/Rhinovirus Rhinoviurs]) ইতাদি সাধারণতঃ এজন্য দায়ী; এদের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করে না।
* ঠিক যেই আন্টিবায়োটিক দরকার সেই আন্টিবায়োটিকই প্রয়োজন মাফিক ব্যবহার করতে হবে।
* ডাক্তার যখন আন্টিবায়োটিক গ্রহণ করতে পরামর্শ দেবে, তখন ডাক্তারের পরামর্শ মতো সঠিক সময়ের ব্যাবধানেব্যবধানে সঠিক পরিমাণে এবং সঠিক সময় পর্যন্ত অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করতে হবে।
* [[টিবি]] ইত্যাদি রোগের ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময় দুই বা ততোধিক আন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা প্রয়োজন, এতে আন্টিবায়োটিক-রোধী ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধির সম্ভাব্যতা অনেকাংশে কমে যায়।
* যখনই কোনো কোনো ব্যক্তির দেহের ব্যাক্টেরিয়া একটি বিশেষ আন্টিবায়োটিক-রোধী হয়ে যায়, তখনই যত শীঘ্র সম্ভব অন্য আন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা উচিত।
 
== আন্টিবায়োটিক-রোধী ব্যাক্টেরিয়া ও বর্তমান পরিস্থিতি ==
বিশ্বের অনুন্নতঅণুন্নত অঞ্চলে আন্টিবায়োটিকের সবচেয়ে অপব্যবহার ঘটে। এই সব দেশে বিশেষভাবে গ্রামাঞ্চলে দক্ষ লোকের অভাবে আন্টিবায়োটিক প্রায় সর্বত্রই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া গ্রহণ করা হয়। এক জরিপে দেখা যায়, বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে মাত্র ৮% আন্টিবায়োটিক ডাক্তারের উপদেশে বিক্রি করা হয়। পৃথিবীর অনেক অঞ্চলেই সাধারণ মাথা ব্যাথা, পেটের ব্যাথা, জ্বর ইত্যাদির জন্য আন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে ডাক্তাররা আন্টিবায়োটিক খেতে বলার সময়, ঐ আন্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে রোগির শরীরের ব্যাক্টেরিয়া আগেই প্রতিরোধী হয়ে গেছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখা হয় না, আবার অনেক সময় রোগের শুরুতেই আন্টিবায়োটিক গ্রহণের উপদেশ দেওয়া হয়, কিন্তু হয়ত আন্টিবায়োটিক ছাড়া রোগ নিরাময় সম্ভব ছিল। এসব কারণই আন্টিবায়োটিক-রোধী ব্যাক্টেরিয়ার টিকে থাকার সম্ভবনা বাড়িয়ে দেয়। <ref name="ReferenceA"/>
 
উন্নত বিশ্বেও এই সমস্যা বিদ্যমান। [[আমেরিকা]]র রোগ নিয়ন্ত্রন কেন্দ্র ([http://www.cdc.gov Center For Diseases Control]) সি.ডি.সির এক জরিপে দেখা গেছে, সেখানে ডাক্তাদের আন্টিবায়োটিক প্রেসক্রিপসনের কানের সংক্রমনের জন্য ৩০%, সাধারাণ ঠান্ডার জন্য ১০০%, গলা ব্যাথারব্যথার জন্য ৫০% প্রেসক্রিপসন অপ্রয়োজনীয়। তাছাড়া যারা হাসপাতালে কাজ করে তাদের মধ্যে সাধারণত আন্টিবায়োটিক-রোধী ব্যাক্টেরিয়া উপস্থিতি থাকে বেশি। <ref name="ReferenceA"/>
== তথ্যসূত্র ==
<references />