রবীন্দ্রসঙ্গীত: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Soumyaksaha.dhrubo (আলোচনা | অবদান)
ট্যাগ: মোবাইল অ্যাপ সম্পাদনা
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১ নং লাইন:
[[চিত্র:Tagore manuscript6 c.jpg|thumb|right|200px|"[[গীতবিতান]]" সংকলনের ‘স্বদেশ’ পর্যায়ভুক্ত ‘[[বিধির বাঁধন কাটবে তুমি]]’ গানটির পাণ্ডুলিপি। এই গানটি একটি জনপ্রিয় রবীন্দ্রসংগীত।]]
[[চিত্র:Tagore manuscript6 c.jpg|thumb|right|"স্বদেশ" পর্যায়ের একটি গানের চিত্রিত পাণ্ডুলিপি]]
[[চিত্র:Rabindranath Tagore in 1909.jpg|thumb|200px|right|[[রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর]], [[১৯১৫কলকাতা]], [[কলকাতা]]১৯১৫]]
[[চিত্র:Evening on Tagore - Kolkata 2011-05-09 3068.JPG|200px|thumb|কলকাতায় রবীন্দ্রসংগীতের অনুষ্ঠান।একটি অনুষ্ঠান]]
'''রবীন্দ্রসংগীত''' হল বিশিষ্ট বাঙালি কবি [[রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর]] কর্তৃক রচিত ও সুরারোপিত গান। [[বাংলা সংগীত|বাংলা সংগীতের]] জগতে এই গানগুলি একএকটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ স্থানের অধিকারী। রবীন্দ্রনাথের ''[[জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে]]'' ও ''[[আমার সোনার বাংলা]]'' গানদুটি যথাক্রমে [[ভারত|ভারতীয় প্রজাতন্ত্র]] ও [[বাংলাদেশ|গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের]] [[জাতীয়রাষ্ট্রের সঙ্গীত|জাতীয় সংগীত]]।সংগীত। এছাড়া ভারতের জাতীয় স্তোত্র [[জাতীয়বঙ্কিমচন্দ্র সঙ্গীত|জাতীয় স্তোত্রচট্টোপাধ্যায়]] রচিত ''[[বন্দে মাতরম্‌]]'' রবীন্দ্রনাথেরইগানটিতে রবীন্দ্রনাথই সুরারোপ সুরারোপিত।করেছিলেন।
 
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কর্তৃক রচিত মোট গানের সংখ্যা ১৯১৫।<ref>''গীতবিতানের জগৎ'', সুভাষ চৌধুরী, প্যাপিরাস, কলকাতা, ২০০৬ সং, পৃ. ১৭১</ref> রবীন্দ্রনাথেরতাঁর গানের বাণীতেকথায় [[উপনিষদ্‌]], [[পুরাণ|হিন্দু পুরাণ]] ও [[সংস্কৃত সাহিত্য|সংস্কৃত কাব্যনাটক]], [[বৈষ্ণবধর্ম|বৈষ্ণব সাহিত্য]] ও [[বাউল]] দর্শনের প্রভাব সুস্পষ্ট। সুরেরঅন্যদিকে দিকতাঁর গানের থেকেসুরে [[ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীত|ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতের]] (হিন্দুস্তানি ও কর্ণাটকীকর্ণাটকি উভয় প্রকারইপ্রকার) [[ধ্রুপদ]], বাংলা[[খেয়াল]], লোকসংগীত[[ঠুমরি]], কীর্তন[[টপ্পা]], [[তারানা]], রামপ্রসাদী[[ভজন]] ইত্যাদি ধারার সুর এবং সেই সঙ্গে বাংলার লোকসংগীত, [[কীর্তন]], [[রামপ্রসাদী]], পাশ্চাত্য ধ্রুপদি সংগীতলোকসংগীতেরপাশ্চাত্য "ত্রিবেণীসংগম"লোকগীতির প্রভাব লক্ষ্য ঘটেছেকরা রবীন্দ্রসংগীতে।যায়।<ref>''রবীন্দ্রসংগীতের ত্রিবেণীসংগম'', ইন্দিরা দেবী চৌধুরানীচৌধুরাণী, বিশ্বভারতী গ্রন্থনবিভাগ, কলকাতা, ১৪০৫ মুদ্রণ, পৃ. ২১, ৩৭-৩৮</ref> রবীন্দ্রনাথের সমুদয়সকল গান তাঁর ''[[গীতবিতান]]'' গ্রন্থেরনামক অন্তর্ভুক্ত।সংকলন গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে। উক্ত গ্রন্থের প্রথম১মদ্বিতীয়২য় খণ্ডে কবিরবীন্দ্রনাথ নিজেই তাঁর গানগুলিকে "পূজা"‘পূজা’, "স্বদেশ"‘স্বদেশ’, "প্রেম"‘প্রেম’, "প্রকৃতি"‘প্রকৃতি’, "বিচিত্র"‘বিচিত্র’ও "আনুষ্ঠানিক",‘আনুষ্ঠানিক’ – এই ছয়টি "পর্যায়ে" বিন্যস্ত করেছিলেন।<ref>''গীতবিতানের জগৎ'', সুভাষ চৌধুরী, প্যাপিরাস, কলকাতা, ২০০৬ সং, পৃ. ১২২</ref> কবিরতাঁর প্রয়াণেরমৃত্যুর পর ''গীতবিতান'' গ্রন্থের প্রথম দুটিদুই খণ্ডে অগ্রন্থিতঅসংকলিত গানগুলি নিয়ে ''গীতবিতান''১৯৫০ সংকলনেরসালে তৃতীয়উক্ত গ্রন্থের ৩য় খণ্ড প্রকাশিত হয়। এই খণ্ডে প্রকাশিত গানগুলি "গীতিনাট্য"‘গীতিনাট্য’, "নৃত্যনাট্য"‘নৃত্যনাট্য’, "ভানুসিংহ‘ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী"পদাবলী’, "নাট্যগীতি"‘নাট্যগীতি’, "জাতীয়‘জাতীয় সংগীত"সংগীত’, "পূজা‘পূজাপ্রার্থনা"প্রার্থনা’, "আনুষ্ঠানিক"‘আনুষ্ঠানিক সংগীত, "প্রেম‘প্রেমপ্রকৃতি"প্রকৃতি’ ইত্যাদি পর্বেপর্যায়ে বিন্যস্ত হয়।বিন্যস্ত।<ref>''গীতবিতানের জগৎ'', সুভাষ চৌধুরী, প্যাপিরাস, কলকাতা, ২০০৬ সং, পৃ. ১২৪</ref> ৬৪ খণ্ডে প্রকাশিত ''স্বরবিতান'' গ্রন্থে তাঁররবীন্দ্রনাথের সমুদয়যাবতীয় গানের স্বরলিপি প্রকাশিত হয়েছে।
 
রবীন্দ্রনাথের [[জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি|পরিবারেজোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে]] সংগীতেরসংগীতচর্চার চর্চাব্যাপক ছিলপ্রচলন মজ্জাগত।ছিল। পিতারবীন্দ্রনাথের বাবা [[দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর|দেবেন্দ্রনাথ]] এবং রবীন্দ্রনাথের অন্যান্য দাদারা নিয়মিত সংগীতচর্চা করতেন। তবে কিশোর বয়সে রবীন্দ্রনাথের সংগীতশিক্ষায় সর্বাধিক প্রভাব ছিলবিস্তার করেছিলেন তাঁর "নতুনদাদা" [[জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর|জ্যোতিরিন্দ্রনাথের]]।<ref>''রবীন্দ্রজীবনকথা'', প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাঃপ্রাইভেট লিঃলিমিটেড, কলকাতা, ১৪১৪ মুদ্রণ, পৃ. ২০-২৩</ref> তেরোএগারো বছর বয়সে লেখা "‘[[গগনের থালে রবি চন্দ্র দীপক জ্বলে"]]’ গানটি সম্ভবত রবীন্দ্রনাথেররবীন্দ্রনাথ প্রথমকর্তৃক রচিত প্রথম গান।<ref>''গীতবিতানের জগৎ'' সুভাষ চৌধুরী, প্যাপিরাস, কলকাতা, ২০০৬ সং, পৃ. ৫৮০</ref> এরপর প্রায় সত্তর৭০ বছর ধরে তিনি অবিশ্রামনিয়মিত গীতিরচনাগান করেন।রচনা করে গিয়েছিলেন। স্বরচিত গানগীতিকবিতা ছাড়াও সুরারোপ করেনকয়েকটি [[বেদ|বৈদিক]] স্তোত্র, ও [[বৌদ্ধধর্ম|বৌদ্ধ]] মন্ত্র এবং [[বিদ্যাপতি]], [[গোবিন্দদাস]], [[বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়]], [[সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর]], [[অক্ষয়কুমার বড়াল]], [[সুকুমার রায়]]অন্যান্যদের[[হেমলতা রচনায়।দেবী]] তাঁরকর্তৃক শেষরচিত গানকয়েকটি "হেগানে নূতনসুরারোপ দেখাকরেছিলেন।<ref>''গীতবিতান'', দিক৩য় আরখণ্ড, ‘গ্রন্থপরিচয়’, বিশ্বভারতী গ্রন্থনবিভাগ, কলকাতা, ১৪০৭ সং, পৃ. ১০২৮-বার"২৯</ref> তাঁর লেখা শেষ গানটি হল ‘[[হে নূতন]]’। ১৯৪১ সালে কবিরবীন্দ্রনাথের জীবদ্দশায় তাঁর জীবনের শেষ জন্মদিনজন্মদিনে উপলক্ষেএটি রচনাপরিবেশিত করেছিলেন।হয়েছিল।<ref>''রবীন্দ্র-সঙ্গীত-কোষ'', সুরেন মুখোপাধ্যায়, সাহিত্য প্রকাশ, কলকাতা, ১৪১৬ সং, পৃ. ৩৫০</ref>
 
রবীন্দ্রনাথ নিজেও ছিলেনসুগায়ক সুগায়ক।ছিলেন। বিভিন্ন সভা-সমিতিতেসভাসমিতিতে তিনি স্বরচিত গান গেয়েপরিবেশন শোনাতেন।করতেন। কয়েকটি গান গ্রামাফোনতিনি ডিস্কেগ্রামোফোন রেকর্ডওডিস্কেও প্রকাশ করেছিলেন। সংগীত প্রসঙ্গে একাধিককয়েকটি প্রবন্ধও তিনি রচনা করেছিলেনকরেন। কবি।এছাড়া স্বরচিত নাটকেও তিনি নিজের গান ব্যবহার করতেন। সংগীতকে তিনি বিদ্যালয়-শিক্ষার পরিপূরক এক বিদ্যা মনে করতেন।<ref>''রবীন্দ্রনাথের পূর্ণাঙ্গ শিক্ষাদর্শে সঙ্গীত ও নৃত্য'', শান্তিদেব ঘোষ, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাঃপ্রাইভেট লিঃলিমিটেড, কলকাতা, ১৯৮৭, পৃ. ৯</ref> রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর পর তাঁর রচিত গানগুলি বাঙালি সমাজে ব্যাপকবিশেষ জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
 
রবীন্দ্রনাথ নিজেও ছিলেন সুগায়ক। বিভিন্ন সভা-সমিতিতে তিনি স্বরচিত গান গেয়ে শোনাতেন। কয়েকটি গান গ্রামাফোন ডিস্কে রেকর্ডও করেছিলেন। সংগীত প্রসঙ্গে একাধিক প্রবন্ধও রচনা করেছিলেন কবি। সংগীতকে তিনি বিদ্যালয়-শিক্ষার পরিপূরক এক বিদ্যা মনে করতেন।<ref>''রবীন্দ্রনাথের পূর্ণাঙ্গ শিক্ষাদর্শে সঙ্গীত ও নৃত্য'', শান্তিদেব ঘোষ, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাঃ লিঃ, কলকাতা, ১৯৮৭, পৃ. ৯</ref> রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর পর তাঁর গানগুলি বাঙালি সমাজে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
==সংজ্ঞা==
"রবীন্দ্রসংগীত" বলতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-কর্তৃক রচিত এবং রবীন্দ্রনাথ অথবা তাঁর দাদা [[জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর]]-কর্তৃক সুরারোপিত গানগুলিকেই বোঝায়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতায় অন্যের সুরারোপিত গানগুলিকে রবীন্দ্রসংগীত হিসেবে ধরা হয় না।<ref>গ্রন্থপরিচয়, ''গীতবিতান'', রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিশ্বভারতী গ্রন্থনবিভাগ, কলকাতা, পৃ. ১০২৬-২৭</ref>