বাংলাদেশ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

[অপরীক্ষিত সংশোধন][অপরীক্ষিত সংশোধন]
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
→‎সরকার ব্যবস্থা: উইকি সংযোগ,বানান ঠিক
ফুরকান ইবন্ সা'দাদ (আলাপ)-এর করা [[WP:AGF|আস্থা রা...
৯২ নং লাইন:
'''বাংলাদেশ''' ({{অডিও|En-Bangladesh.ogg|<small>শুনুন</small>}}) [[দক্ষিণ এশিয়া|দক্ষিণ এশিয়ার]] একটি জনবহুল রাষ্ট্র। বাংলাদেশের সাংবিধানিক নাম '''গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ'''। ভূ-রাজনৈতিকভাবে বাংলাদেশের পশ্চিম, উত্তর ও পূর্ব সীমান্তে [[ভারত]], দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তে [[মায়ানমার]] ও দক্ষিণ উপকূলের দিকে [[বঙ্গোপসাগর]] অবস্থিত। বাংলাদেশের ভূখণ্ড ভৌগোলিকভাবে একটি [[গাঙ্গেয় ব-দ্বীপ|উর্বর ব-দ্বীপের]] অংশ বিশেষ। পার্শ্ববর্তী দেশের রাজ্য [[পশ্চিমবঙ্গ]] ও [[ত্রিপুরা]]-সহ বাংলাদেশ একটি ভৌগোলিকভাবে [[বাঙালি জাতি|জাতিগত]] ও [[বাংলা ভাষা|ভাষাগত]] "[[বঙ্গ]]" অঞ্চলটির মানে পূর্ণ করে। "বঙ্গ" ভূখণ্ডের পূর্বাংশের অংশ [[পূর্ব বাংলা]] নামে পরিচিত, যা বর্তমানে বাংলাদেশ নামের দেশ। পৃথিবীতে যে ক'টি রাষ্ট্র [[জাতিরাষ্ট্র]] হিসেবে মর্যাদা পায় তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।
 
বাংলাদেশের বর্তমান সীমান্ত তৈরি হয়েছিল ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে যখন [[ব্রিটিশ সাম্রাজ্য|ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনাবসানে]], [[বঙ্গভঙ্গ (১৯৪৭)|বঙ্গ (বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি)]] এবং [[ভারত বিভাজন|ব্রিটিশ ভারত]] বিভাজন করা হয়েছিল। বিভাজনের পরে বর্তমান বাংলাদেশের অঞ্চল তখন [[পূর্ব বাংলা]] নামে পরিচিত, যেটি নবগঠিত দেশ [[পাকিস্তান|পাকিস্তানের]] পূর্ব অঞ্চল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছিল। [[পাকিস্তান অধিরাজ্য|পাকিস্তান অধিরাজ্যে]] থাকাকালীন "পূর্ব বাংলা" থেকে "[[পূর্ব পাকিস্তান]]"-এ নামটি পরিবর্তিত করা হয়েছিল। শোষণ, বৈষম্য ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে [[বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ|সশস্ত্র সংগ্রামের]] মধ্য দিয়ে [[১৯৭১]] খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দারিদ্র্যপীড়িত বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় ঘটেছে দুর্ভিক্ষ ও [[প্রাকৃতিক দুর্যোগ]]; এছাড়াও প্রলম্বিত [[রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা]] ও পুনঃপৌনিক [[বাংলাদেশে সামরিক অভ্যুত্থান|সামরিক অভ্যুত্থান]] এদেশের রাজনৈতিক সামগ্রিক স্থিতিশীলতা বারংবার ব্যাহত করেছে। গণসংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দে [[গণতান্ত্রিক]] শাসনব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে যার ধারাবাহিকতা অদ্যাবধি বর্তমান। সকল প্রতিকূলতা সত্বেও গত দুই দশকে [[বাংলাদেশের অর্থনীতি]] প্রগতি ও সমৃদ্ধি সারা বিশ্বে স্বীকৃতি লাভ করেছে।
 
বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশগুলোর তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান [[জনসংখ্যা অনুযায়ী রাষ্ট্রসমূহের তালিকা|অষ্টম]] যদিও আয়তনের হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বে [[আয়তন অনুসারে রাষ্ট্রসমূহের তালিকা|৯৪তম]]; ফলে বাংলাদেশ [[জনসংখ্যার ঘনত্ব অনুযায়ী রাষ্ট্রসমূহের তালিকা|বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশগুলোর]] নবম। মাত্র [[৫৬]] [[হাজার]] [[বর্গমাইল|বর্গমাইলেরও]] কম এই ক্ষুদ্রায়তন দেশের বর্তমান [[জনসংখ্যা]] ১৫.৫৯ কোটির বেশি অর্থাৎ প্রতি বর্গমাইলে জনবসতি ২৪৯৭ জন। <ref>{{cite web|url=http://worldpopulationreview.com/countries/bangladesh-population/ |title=ওয়ার্ল্ড পপ্যুলেশন রিভিয়্যু তথ্যতীর্থ। |publisher=Worldpopulationreview.com |date= |accessdate=2015-12-03}}</ref>
 
জনসংখ্যার ৯৮ শতাংশ মানুষের [[মাতৃভাষা]] [[বাংলা ভাষা|বাংলা]]; শিক্ষার হার ৬৫ শতাংশ। ২০১২-১৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) পরিমাণ ছিল ১১,৯৮,৯২৩ কোটি [[টাকা]] (চলতি বাজারমূল্যে) যা ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বৃদ্ধি লাভ করে ১৩,৫০,৯২০ টাকায় উন্নীত হয়েছে। একই সঙ্গে জনগণের মাথাপিছু বার্ষিক আয় পূর্ববর্তী বৎসরের ১,০৪৪ [[মার্কিন ডলার]] থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ১,১৯০ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে মর্মে সরকারী প্রাক্কলন করা হয়েছে, টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ ৯২,৫১০ টাকা।<ref>[http://www.prothom-alo.com/economy/article/234211/[[মাথাপিছু_আয়]]_এক_১১৯০_ডলারমাথাপিছু_আয়_এক_১১৯০_ডলার প্রথম আলোর ৫ জুন ২০১৪ তারিখের প্রতিবেদন]</ref> দারিদ্রের হার ২৬.২০ শতাংশ, অতিদরিদ্র মানুষের সংখ্যা ১১.৯০ শতাংশ, এবং বার্ষিক দারিদ্র হ্রাসের হার ১.৫ শতাংশ। এই [[উন্নয়নশীল দেশ]]টি প্রায় দুই দশক যাবৎ বার্ষিক ৫ থেকে ৬.২ শতাংশ হারে [[অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি|অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির]] অর্জনপূর্বক "[[পরবর্তী একাদশ]]" অর্থনীতিসমূহের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। রাজধানী [[ঢাকা]] ও অন্যান্য শহরের পরিবর্ধন বাংলাদেশের এই উন্নতির চালিকাশক্তিরূপে কাজ করছে। এর কেন্দ্রবিন্দুতে কাজ করেছে একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ত্বরিত বিকাশ এবং একটি সক্ষম ও সক্রিয় উদ্যোক্তা শ্রেণীর আর্বিভাব। [[বাংলাদেশের রপ্তানীমুখী]] [[পোশাক শিল্প]] সারা বিশ্বে বিশেষভাবে প্রসিদ্ধ। জনশক্তি রপ্তানীও দেশটির অন্যতম অর্থনৈতিক হাতিয়ার।
 
[[গাঙ্গেয় ব-দ্বীপ|গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্রের উর্বর অববাহিকায়]] অবস্থিত এই দেশটিতে প্রায় প্রতি বছর মৌসুমী [[বন্যা]] হয়; আর [[ঘূর্ণিঝড়|ঘূর্ণিঝড়ও]] খুব সাধারণ ঘটনা। নিম্ন আয়ের এই দেশটির প্রধান সমস্যা পরিব্যাপ্ত দারিদ্র গত দুই দশকে অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে এসেছে সাক্ষরতার হার বৃদ্ধি পেয়েছে দ্রুত, জন্ম নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে অর্জিত হয়েছে অভূতপূর্ব সফলতা। এছাড়া [[আন্তর্জাতিক]] [[মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা|মানব সম্পদ উন্নয়ন]] সূচকে বাংলাদেশ দৃষ্টান্তমূলক অগ্রগতি অর্জনে সক্ষম হয়েছে।<ref>[http://www.un-bd.org/docs/Bangladesh%20Country%20Profile.pdf‎ Bangladesh - Country Profile]</ref>, তবে বাংলাদেশে এখনো বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে যার মধ্যে রয়েছে পরিব্যাপ্ত [[রাজনৈতিক]] ও প্রশাসনিক দুর্নীতি, [[বিশ্বায়ন|বিশ্বায়নের]] প্রেক্ষাপটে অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতা এবং [[জলবায়ু পরিবর্তন|জলবায়ু পরিবর্তনের]] ফলে [[সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতাবৃদ্ধি|সমুদ্রতলের উচ্চতা বৃদ্ধির]] ফলশ্রুতিতে তলিয়ে যাবার শঙ্কা। এছাড়া একটি সর্বগ্রহণযোগ্য নির্বাচন ব্যবস্থার রূপ নিয়ে নতুন ভাবে সামাজিক বিভাজনের সৃষ্টি হয়েছে।
 
বাংলাদেশে সংসদীয় গণতান্ত্রিক [[বাংলাদেশ সরকার|সরকার]] ব্যবস্থা প্রচলিত। বাংলাদেশ [[দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা]] ও [[বিমসটেক]]-এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। এছাড়া দেশটি [[জাতিসংঘ]], [[বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা]], [[বিশ্ব শুল্ক সংস্থা]], [[কমনওয়েলথ অফ নেশনস]], [[উন্নয়নশীল ৮টি দেশ]], [[জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলন]], [[ওআইসি]], ইত্যাদি আন্তর্জাতিক সংঘের সক্রিয় সদস্য।
১০৯ নং লাইন:
[[চিত্র:Awesome look of Lalbagh Fort.jpg|thumb|[[লালবাগের কেল্লা]], মোঘল আমলে স্থাপিত এই দুর্গ]]
 
২০০৬ খ্রিস্টাব্দে [[উয়ারী-বটেশ্বর]] অঞ্চলে প্রাপ্ত পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন অনুযায়ী বাংলাদেশ অঞ্চলে জনবসতি গড়ে উঠেছিলো প্রায় ৪ হাজার বছর আগে। ধারণা করা হয় [[দ্রাবিড়]] ও তিব্বতীয়-বর্মী জনগোষ্ঠী এখানে সেসময় বসতি স্থাপন করেছিল। পরবর্তীতে এই অঞ্চলটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যে বিভক্ত হয় এবং স্থানীয় ও বিদেশী শাসকদের দ্বারা শাসিত হতে থাকে। [[আর্য]] জাতির আগমনের পর খ্রিস্টীয় চতুর্থ হতে ষষ্ঠ শতক পর্যন্ত [[গুপ্ত রাজবংশ]] বাংলা শাসন করেছিল। এর ঠিক পরেই [[শশাঙ্ক]] নামের একজন স্থানীয় রাজা স্বল্প সময়ের জন্য এ এলাকার ক্ষমতা দখল করতে সক্ষম হন। প্রায় একশ বছরের অরাজকতার (যাকে ''মাৎসন্যায় পর্ব'' বলে অভিহিত করা হয়) শেষে [[বৌদ্ধ ধর্ম|বৌদ্ধ]] ধর্মাবলম্বী [[পাল রাজবংশ]] বাংলার অধিকাংশের অধিকারী হয়, এবং পরবর্তী চারশ বছর ধরে শাসন করে। এর পর [[হিন্দু]] ধর্মাবলম্বী [[সেন রাজবংশ]] ক্ষমতায় আসে। দ্বাদশ শতকে [[সুফিবাদ|সুফি]] ধর্মপ্রচারকদের মাধ্যমে বাংলায় [[ইসলাম|ইসলামের]] প্রবর্তন ঘটে। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে সামরিক অভিযান এবং যুদ্ধ জয়ের মাধ্যমে মুসলিম শাসকেরা ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন। ১২০৫-১২০৬ খ্রিস্টাব্দের দিকে [[ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বখতিয়ার খলজী]] নামের একজন তুর্কী বংশোদ্ভূত সেনাপতি রাজা [[লক্ষ্মণ সেন|লক্ষ্মণ সেনকে]] পরাজিত করে সেন রাজবংশের পতন ঘটান। ষোড়শ শতকে [[মুঘল]] সাম্রাজ্যের অধীনে আসার আগে পর্যন্ত বাংলা স্থানীয় সুলতান ও ভূস্বামীদের হাতে শাসিত হয়। মোঘল বিজয়ের পর [[ঢাকা|ঢাকায়]] বাংলার রাজধানী স্থাপিত হয় এবং এর নামকরণ করা হয় [[জাহাঙ্গীর নগর]]।
[[চিত্র:Rally on 21Feb1954 Abdul Hamid and Bangabandhu.jpg|thumb|200px|right|[[শেখ মুজিবুর রহমান]] (ডান পাশ থেকে তৃতীয় জন) এবং [[আবদুল হামিদ খান ভাসানী|মওলানা ভাসানী]] (ডান পাশ থেকে চতুর্থ জন) ১৯৫৩ সালে]]
 
বাংলায় [[ইউরোপীয় ব্যবসায়ী|ইউরোপীয় ব্যবসায়ীদের]] আগমন ঘটে পঞ্চদশ শতকের শেষভাগ থেকে। ধীরে ধীরে তাদের প্রভাব বাড়তে থাকে। ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে [[ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি]] [[পলাশীর যুদ্ধ|পলাশীর যুদ্ধে]] জয়লাভের মাধ্যমে বাংলার শাসনক্ষমতা দখল করে।<ref>[[#ব্যাক্সটার|ব্যাক্সটার]], পৃ. ২৩-২৮</ref> ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের [[সিপাহী বিপ্লব|সিপাহী বিপ্লবের]] পর কোম্পানির হাত থেকে বাংলার শাসনভার [[ব্রিটিশ সাম্রাজ্য|ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের]] সরাসরি নিয়ন্ত্রণে আসে। ব্রিটিশ রাজার নিয়ন্ত্রণাধীন একজন ভাইসরয় প্রশাসন পরিচালনা করতেন।<ref>[[#ব্যাক্সটার|ব্যাক্সটার]], পৃ. ৩০-৩২</ref> ঔপনিবেশিক শাসনামলে [[ভারতীয় উপমহাদেশ|ভারতীয় উপমহাদেশে]] বহুবার ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। এর মধ্যে [[ছিয়াত্তরের মন্বন্তর]] নামে পরিচিত ১৭৭০ খ্রিস্টাব্দের দুর্ভিক্ষে আনুমানিক ৩০ লাখ লোক মারা যায়।<ref name=sen>{{cite book | last = সেন | first = অমর্ত্য | year = ১৯৭৩ | title = Poverty and Famines | publisher = অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস | id = ISBN 0-19-828463-2}}</ref>
 
১৯০৫ থেকে ১৯১১ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত [[বঙ্গভঙ্গ|বঙ্গভঙ্গের]] ফলশ্রুতিতে পূর্ববঙ্গ ও [[আসাম|আসামকে]] নিয়ে একটি নতুন প্রদেশ গঠিত হয়েছিল, যার [[রাজধানী]] ছিল [[ঢাকা|ঢাকায়]]।ঢাকায়।<ref>[[#ব্যাক্সটার|ব্যাক্সটার]], পৃ. ৩৯-৪০</ref> তবে [[কলকাতা|কলকাতা-কেন্দ্রিক]] রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবীদের চরম বিরোধিতার ফলে ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গভঙ্গ রদ হয়ে যায়। ভারতীয় উপমহাদেশের দেশভাগের সময় ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে [[ধর্ম]] গরিষ্ঠতার ভিত্তিতে পুনর্বার বাংলা প্রদেশটিকে ভাগ করা হয়। হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ [[পশ্চিমবঙ্গ]] ভারতের অংশভুক্ত হয়; অন্যদিকে [[মুসলিম]] সংখ্যাগরিষ্ঠ পূর্ববঙ্গ পাকিস্তানের অংশভুক্ত হয়। ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে পূর্ববঙ্গের নাম পরিবর্তন করে [[পূর্ব পাকিস্তান]] করা হয়।<ref name=collins>{{cite book
| last1 = Collins
| first1 = L
১৯২ নং লাইন:
{{বাংলাদেশের প্রতীক}}
[[চিত্র:Flag of Bangladesh and tree.jpg|thumb|150px|[[বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা]]]]
[[বাংলাদেশের সংবিধান]] ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে প্রণীত হয়। পরবর্তীতে ২০১৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সর্বমোট ১৬টি সংশোধনী আনা হয়েছে।<ref name=amendments/> বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশে [[সংসদীয় গণতন্ত্র]] ব্যবস্থার সরকার পদ্ধতি প্রচলিত। রাষ্ট্রযন্ত্রের তিনটি শাখা: সংসদ, প্রশাসন এবং বিচার ব্যবস্থা। বাংলাদেশের [[জাতীয় সংসদ]] এক কক্ষবিশিষ্ট। এতে [[ভোট|জনগনেরজনগণের সরাসরি ভোটে]] নির্বাচিত ৩০০ জন সদস্য ছাড়াও মহিলাদের জন্য ৫০টি সংরক্ষিত আসন আছে। প্রতিটি সংসদের নির্ধারিত মেয়াদকাল ৫ বছর। বাংলাদেশের প্রধান দুইটি [[রাজনীতি|রাজনৈতিক]] দল হল [[আওয়ামী লীগ|বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ]] ও [[বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল]]। এছাড়াও, [[জাতীয় পার্টি (এরশাদ)|জাতীয় পার্টি]] রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। ১৮ বছর বা তারচেয়ে বয়সে বড় সব নাগরিকের ভোটাধিকার রয়েছে।
 
১৯৯১ খ্রিস্টাব্দ থেকে নির্বাচনের পূর্বে [[তত্ত্বাবধায়ক সরকার]] গঠনের পদ্ধতি চালু হয় যা ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দে সংশোধনক্রমে সংবিধানে গৃহীত হয়। ২০০৮ খ্রিস্টাব্দের ৯ম জাতীয় [[নির্বাচন]] পর্যন্ত নির্বাচনের পূর্বে কেয়ারটেকার বা [[তত্ত্বাবধায়ক সরকার]] গঠিত হয়েছে। এই ব্যবস্থায় সরকারের মেয়াদ শেষে [[তত্ত্বাবধায়ক সরকার]] গঠিত হতো। এ সময় সরকারী ক্ষমতা নিয়ন্ত্রিত হয় নির্দলীয় নিরপেক্ষ উপদেষ্টামণ্ডলীর মাধ্যমে। সর্বশেষ [[অবসর|অবসরপ্রাপ্ত]] প্রধান বিচারপতি প্রধান উপদেষ্টা হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন মর্মে সংবিধানে প্রবিধান রয়েছে। সংসদীয় নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়।<ref name=amendments>{{cite encyclopedia| url = http://banglapedia.search.com.bd/HT/C_0336.htm| title = Constitutional Amendments| encyclopedia = [[বাংলাপিডিয়া]]| publisher = Asiatic Society of Bangladesh| accessdate = 2006-07-14}}</ref> ২০১১-এ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সংবিধানের ১৫শ সংশোধনীর মাধ্যমে নির্বাচনপূর্ব নির্দলীয়নিদর্লীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের পদ্ধতি বাতিল করা হয়।
আবার, ২০১৫ সালে সংবিধানের ১৬শ সংশোধনীর মাধ্যমে প্রধান বিচারপতিদের অভিশংসন প্রথা চালু হয়। প্রধান বিজারপতিদের ইচ্ছে করলে সংসদ অভিশংসন করতে পারবে।
 
'''[[বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি|রাষ্ট্রপতি]]''' এদেশের রাষ্ট্রপ্রধান। তাঁর সীমিত ক্ষমতা রয়েছে; কেননা কয়েকটি ক্ষেত্র ব্যতীত '''[[প্রধানমন্ত্রী|প্রধানমন্ত্রীর]]''' পরামর্শের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নিতে তিনি সাংবিধানিকভাবে বাধ্য। [[জাতীয় সংসদ|জাতীয় সংসদের]] সদস্যদের ভোটে '''[[রাষ্ট্রপতি]]''' নির্বাচিত হন পাঁচ বছর মেয়াদের জন্য। তবে সংসদ নির্বাচনের সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে রাষ্ট্রপতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। রাষ্ট্রযন্ত্রের মূল ক্ষমতার অধিকারী হলেন '''[[প্রধানমন্ত্রী]]''', যিনি "'''সরকার প্রধান'''" হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। প্রধানমন্ত্রীকে অবশ্যই [[সংসদ সদস্য]] হতে হয়। মন্ত্রীসভার মন্ত্রীরা প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক মনোনীত এবং রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত হন।
 
বাংলাদেশের সরকারি প্রশাসন যন্ত্রের কেন্দ্রবিন্দু হলো [[বাংলাদেশ সচিবালয়]] রাষ্ট্রের বিভিন্ন কার্যাবলী পরিচালনার জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয় রয়েছে। '''[[প্রধানমন্ত্রী]]''' কর্তৃক নিযুক্ত মন্ত্রী, [[প্রতিমন্ত্রী ]]বা উপমন্ত্রীরা মন্ত্রণালয়ের কর্মকাণ্ডের নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন। ২০০৯ খ্রিস্টাব্দে সরকার গঠনের পর '''[[শেখ হাসিনা|প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা]]''' মন্ত্রী পদমর্যাদায় বেশ কয়েকজন উপদেষ্টা নিয়োগ দিয়েছেন। উপদেষ্টাবৃন্দ মন্ত্রী সভার বৈঠকে অংশ গ্রহণ করেন। ২০১৪ খ্রিস্টাব্দে সরকার গঠনের পরও প্রধানমন্ত্রীর চার জন উপদেষ্টা নিয়োগ দেয়া হয়েছে। প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব পালন করেন একজন [[সচিব|স্থায়ী সচিব]]। ২০১৫ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশে ৪১ টি মন্ত্রণালয় রয়েছে। বড় মন্ত্রণালয়, যেমন অর্থ মন্ত্রণালয়, একাধিক “বিভাগ”-এ বিভক্ত যা কার্যতঃ মন্ত্রণালয় বটে। প্রতিটি [[জেলা]] এবং [[উপজেলা|উপজেলায়]] সরকারী প্রশাসন ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা। মন্ত্রণালয়ের মূল কাজ নীতিমালা প্রণয়ন যা বিভিন্ন সংযুক্ত বিভাগ, সংস্থা, বোর্ড, কমিশন, একাডেমী প্রভৃতির মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়ে থাকে। প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতির জন্য পৃথক কার্যালয় রয়েছে। ২০১১-এর হিসাবে দেখা যায়, সরকারি চাকরিতে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীর [[সংখ্যা]] ১১ লাখ ৮২ হাজার ৭৬৫।, এর বাইরে শূন্যপদ রয়েছে প্রায় দেড় লাখ। কর্মরতদের মধ্যে প্রথম শ্রেণীর সংখ্যা ১ লাখ ১৯ হাজার ৫২২, দ্বিতীয় শ্রেণীর ৭৩ হাজার ৩২১, তৃতীয় শ্রেণীর ৭ লাখ ৫৫ হাজার ৩১১ এবং চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীর সংখ্যা ২ লাখ ৩৪ হাজার ৬১১ জন।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|url=http://jugantor.us/enews/issue/2011/12/18/news0447.htm|title=Daily Jugantor|publisher=}}</ref>
 
[[বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট|সুপ্রিম কোর্ট]] বাংলাদেশের সর্বোচ্চ [[আদালত]]।আদালত। এর দুটি স্তর রয়েছে যথা হাইকোর্ট ডিভিশন ও আপীল ডিভিশন। রাষ্ট্রপতি '''[[প্রধান বিচারপতি]]''' ও অন্যান্য বিচারকদের নিয়োগ দিয়ে থাকেন। দেশের আইন-কানুন অনেকটা প্রচলিত ব্রিটিশ আইনের আদলে প্রণীত; তবে [[বিবাহ]] এবং উত্তরাধিকার সংক্রান্ত আইনগুলো ধর্মভিত্তিক। ২০০৮ খ্রিস্টাব্দে বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণরূপে প্রশাসন থেকে পৃথক করা হয়েছে।
 
== বৈদেশিক সম্পর্কসমূহ ==