অর্ধনারীশ্বর: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
৩৭ নং লাইন:
[[File:Shakta Ardhanari.jpg|thumb|left|শাক্ত অর্ধনারীশ্বর মূর্তির একটি দুষ্প্রাপ্য নিদর্শন। এই মূর্তিতে প্রধান ডানদিকটি নারী-অর্ধ।]]
১৬শ শতাব্দীর মূর্তিতত্ত্ব সংক্রান্ত গ্রন্থ [[শিল্পরত্ন]], [[মৎস্যপুরাণ]] এবং অংশুমাদভেদাগম, কামিকাগম, সুপ্রেদাগম ও কারণাগম প্রভৃতি [[আগম]] শাস্ত্রে অর্ধনারীশ্বরের মূর্তিতত্ত্বটি বর্ণিত হয়েছে। উল্লেখ্য, উপরিউক্ত আগমগুলি প্রধানত দক্ষিণ ভারতে রচিত হয়।<ref>Rao p. 323</ref><ref name = "matsya"/> শরীরের ডানদিকের ভাগটি প্রধান। এই ভাগটি সাধারণত শিবের। বাঁদিকের ভাগটি পার্বতীর। কোনো কোনো দুর্লভ বিবরণ অনুসারে, ডানদিকের প্রধান অংশটি পার্বতীর। এই বিবরণগুলি শাক্ত সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত।<ref name = "goldberg145">Goldberg pp. 145–8</ref> অর্ধনারীশ্বর মূর্তি সাধারণত চতুর্ভূজ, ত্রিভূজ বা দ্বিভূজ। কোনো কোনো দুষ্প্রাপ্য অষ্টভূজ মূর্তিও পাওয়া গিয়েছে। ত্রিভূজ মূর্তিগুলির ক্ষেত্রে পার্বতীর অংশে একটি মাত্র হাত রয়েছে। এর মাধ্যমে এই মূর্তিতে পার্বতীর ভূমিকা হ্রাসের আভাস দেওয়া হয়েছে।
 
===পুরুষার্ধ===
অর্ধনারীশ্বর মূর্তির পুরুষার্ধটির মস্তকে ‘জটামুকুট’ (মুকুটের আকারে জটা) দেখা যায়। এই জটামুকুটে শোভা পায় একটি অর্ধচন্দ্র। কোনো কোনো মূর্তিতে জটামুকুটে থাকে সর্প এবং সেই জটা থেকে দেবী [[গঙ্গা (দেবী)|গঙ্গাকে]] নির্গত হতে দেখা যায়। ডান কানে থাকে একটি ‘নক্রকুণ্ডল’, ‘সর্পকুণ্ডল’ (সাপের দুল) বা সাধারণ কুণ্ডল বা কানের দুল। কোনো কোনো মূর্তিতে নারী-অর্ধের তৃতীয় চক্ষুটির চেয়ে পুরুষার্ধের তৃতীয় চক্ষুটি ছোটো এবং পুরুষার্ধে দেখা যায় একটি অর্ধেক গোঁফ।<ref name = "Rao324ff"/><ref name = "Goldberg4"/> শাস্ত্রে পুরুষার্ধে একটি অর্ধ তৃতীয় নেত্রের উল্লেখ পাওয়া যায়। কোনো কোনো বর্ণনা অনুসারে, অর্ধনারীশ্বরের কপালের মধ্যস্থলে একটি পূর্ণাঙ্গ তৃতীয় নেত্রটি মাঝখান থেকে দুই ভাগে বিভক্ত। পার্বতীর সিন্দূর-বিন্দুর উপরে বা নিচে একটি অর্ধ নেত্রের উল্লেখও রয়েছে।<ref name = "Rao324ff"/><ref name = "Goldberg5"/> মাথার পিছনে একটি একক ডিম্বাকার জ্যোতিশ্চক্রও (‘প্রভামণ্ডল’ বা ‘প্রভাবলি’) দেখা যায়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই জ্যোতিশ্চক্রটি দিক অনুসারে ভিন্ন প্রকার।<ref name = "Goldberg5"/>
 
চতুর্ভূজ মূর্তিগুলিতে ডান হাতে থাকে একটি ‘[[পরশু]]’ (কুঠার) এবং অন্য হাতটি ‘অভয় মুদ্রা’র ভঙ্গিতে থাকে। কোনো কোনো মূর্তিতে দেখা যায়, ডান হাতদুটির একটি সামান্য বেঁকে শিবের বাহন [[নন্দী|নন্দীর]] উপর স্থাপিত এবং অন্য হাতে দেখা যায় ‘অভয় মুদ্রা’। অন্য একটি ধরনে দেখা যায়, ডান হাতে একটি [[ত্রিশূল]] ও অপর হাতটিতে ‘[[বরমুদ্রা]]’। অপর একটি শাস্ত্রের বর্ণনা অনুসারে, ডান হাত দুটিতে থাকে ত্রিশূল ও [[অক্ষমালা]]। দ্বিভূজ মূর্তিতে ডান হাতে থাকে ‘কপাল’ বা নরকরোটির পাত্র অথবা বরমুদ্রা।<ref name = "Rao324ff">Rao pp. 324–5</ref><ref name = "Goldberg4">Goldberg p. 12</ref> কোনো কোনো মূর্তিতে শুধুমাত্র নরকরোটিও দেখা যায়।<ref name = "matsya"/> [[বাদামী]] ভাস্কর্যে চতুর্ভূজ মূর্তিতে দেখা যায়, অর্ধনারীশ্বর বাঁ হাত ও ডান হাতের সাহায্যে [[বীণা]] বাজাচ্ছেন। তাঁর অপর ডান হাতে একটি পরশু এবং নারী-অর্ধের হাতে একটি পদ্ম রয়েছে।<ref name = "Rao327ff">Rao pp. 327–8</ref>
 
[[File:Ardhanari.png|thumb|upright|ব্রোঞ্জনির্মিত ত্রিভূজ অর্ধনারীশ্বর মূর্তি]]
অর্ধনারীশ্বর মূর্তির শিব-অর্ধে দেখা যায় চ্যাপ্টা পুরুষালি বক্ষস্থল, ঋজু আনুভূমিক বক্ষস্থল, প্রসারিত কাঁধ, প্রসারিত কোমর ও পুরুষোচিত উরুদেশ।<ref name = "Goldberg4"/> তাঁর বুকে ঝোলে একটি [[যজ্ঞোপবীত]]। কোথাও কোথাও এই যজ্ঞোপবীতটি হল ‘নাগযজ্ঞোপবীত’ (সর্পনির্মিত যজ্ঞোপবীত) বা মুক্তো বা মণির মালা। কোথাও কোথাও যজ্ঞোপবীতটি দেহের মধ্যভাগটিকে পুরুষ ও নারী-অর্ধে বিভক্ত করেছে। পুরুষার্ধে শিবের মূর্তিতত্ত্ব অনুসারে, সর্পভূষণ সহ নানা অলংকার দেখা যায়।<ref name = "matsya"/><ref name = "Rao324ff"/><ref name = "Goldberg5"/><ref name="britannica"/>
 
কোনো কোনো উত্তর ভারতীয় মূর্তিতে<ref name = "Goldberg5"/> পুরুষার্ধটির পুরুষাঙ্গটি উন্নত। এটিকে বলা হয় ‘উর্ধলিঙ্গ’ বা ‘উর্ধরেতা’। কোনো কোনো মূর্তিতে পুরুষাঙ্গটি অর্ধেক এবং ডিম্বাশয়ও একটি।<ref name = "Goldberg30"/> যদিও দক্ষিণ ভারতে এমন কোনো মূর্তি পাওয়া যায়নি।<ref name = "Goldberg5">Goldberg p. 13</ref> মূর্তির কটিদেশে সাধারণত কাপড় (কোনো কোনো ক্ষেত্রে রেশম বা সূতির [[ধুতি]] অথবা বাঘ বা হরিণের চামড়া) থাকে। কাপড়টি হাঁটু অবধি ঝোলে। কোমরে থাকে ‘সর্পমেখলা’ বা সাপের তৈরি কোমরবন্ধনী বা অন্য অলংকার। ডান পাটি সামান্য বাঁকা। এটি অনেক ক্ষেত্রে ‘পদ্মপীঠ’ বা পদ্মের বেদীর উপর স্থাপিত অবস্থায় দেখা যায়। সমগ্র ডান-ভাগটি ভষ্মমাখা ও ভয়ংকর। এটি লাল বা সোনালি বা প্রবালের রঙের। যদিও এই ধরনের মূর্তিগুলির বিবরণ দুর্লভ।<ref name = "Rao324ff"/><ref name = "Goldberg5"/>
 
==আরও দেখুন==