ণত্ব বিধান ও ষত্ব বিধান: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Zahidul71 (আলোচনা | অবদান)
→‎দন্ত্য-ন এর মূর্ধন্য-ণ তে পরিবর্তনের নিয়মসমূহ: বানান ঠিক করা হয়েছে, ব্যাকরণ ঠিক করা হয়েছে
ট্যাগ: মোবাইল অ্যাপ সম্পাদনা
RHJihan (আলোচনা | অবদান)
তথ্যসূত্র সংযোজন ও পরিমার্জন
১ নং লাইন:
'''ণত্ব বিধান ও ষত্ব বিধান''' হলো বাংলা ব্যাকরণের একটি বিশেষ নিয়ম। [[বাংলা ভাষা|বাংলা ভাষার]] তৎসম শব্দে দন্ত্য-ন এর মূর্ধন্য-ণ তে পরিবর্তনের নিয়মসমূহকে ণত্ব বিধান এবং দন্ত্য-স এর মূর্ধন্য-ষ তে পরিবর্তনের নিয়মসমূহকে ষত্ব বিধান বলা হয়।<ref>বাংলা ভাষার ব্যাকরণ<br><small>''মুনীর চৌধুরী, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী<br>জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড''</small></ref>
{{উৎসহীন }}
 
==ণত্ব বিধান==
'''ণত্ব বিধান ও ষত্ব বিধান''' হলো বাংলা ব্যাকরণের একটি বিশেষ নিয়ম। [[বাংলা ভাষা|বাংলা ভাষার]] শব্দে দন্ত্য-ন এর মূর্ধন্য-ণ তে পরিবর্তনের নিয়মসমূহকে ণত্ব বিধান এবং দন্ত্য-স এর মূর্ধন্য-ষ তে পরিবর্তনের নিয়মসমূহকে ষত্ব বিধান বলা হয়।
<p>বাংলা ভাষায় সাধারণত মূর্ধণ্য-ণ ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। সেজন্য বাংলা (দেশি), তদ্ভব, বিদেশি, বানানে মূর্ধণ্য বর্ণ (ণ) লেখার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু বাংলায় বহু তৎসম বা সংস্কৃত শব্দে মূর্ধণ্য-ণ এবং দন্ত্য-ন এর ব্যবহার আছে। তা বাংলায় অবিকৃতভাবে রক্ষিত হয়। তৎসম শব্দের বানানে ণ এর সঠিক ব্যবহারের নিয়মই ণত্ব বিধান।</p>
 
===ণ ব্যবহারের নিয়ম===
== দন্ত্য-ন এর মূর্ধন্য-ণ তে পরিবর্তনের নিয়মসমূহ ==
* ঋ, র, ষ বর্ণের পরে দন্ত্য-ন মূর্ধন্য-ণ হয়। যেমন-: ঋণ, বর্ণ, বিষ্ণু, বরণ, ঘৃণা।
* যদি ঋ, র, ষ বর্ণের পরে [[স্বরবর্ণ]], ক-বর্গ, প-বর্গ, য, ব, হ অথবা অনুস্বার (ং) থাকে, তার পরবর্তী দন্ত্য-ন মূর্ধন্য-ণ হয়ে যায়। যেমন-: কৃপণ, নির্বাণ, গ্রহণ।
* ট-বর্গের পূর্বের দন্ত্য-ন মূর্ধন্য-ণ হয়। যেমন-: বণ্টন, লুণ্ঠন, খণ্ড।
* প্র, পরা, পরি, নির্‌- [[উপসর্গ (বাংলা ব্যাকরণ)|উপসর্গের]] এবং 'অন্তর' শব্দের পরে নদ্‌, নম্‌, নশ্‌, নহ্‌, নী, নুদ্‌, অন্‌, হন্‌- কয়েকটি [[ধাতু (বাংলা ব্যাকরণ)|ধাতুর]] দন্ত্য-ন মূর্ধন্য-ণ নয়। যেমন-: প্রণাম, পরিণাম, প্রণাশ, পরিণতি, নির্ণয় ইত্যাদি।
* প্র, পরা প্রভৃতির পর 'নি' উপসর্গের দন্ত্য-ন মূর্ধন্য-ণ হয়। যেমন-: প্রণিপাত, প্রণিধান ইত্যাদি।
* কতগুলো শব্দে স্বভাবতই মূর্ধন্য-ণ হয়। যেমন-: চাণিক্য, মাণিক্য, কণা, গৌণ, নিপুণ, বাণিজ্য,লবণ প্রভৃতি।
 
== =কোথায় কোথায় ণত্ব বিধান নিষেধ বা খাটে না ===
* ত-বর্গযুক্ত দন্ত্য-ন মূর্ধন্য-ণ হয় না। যেমন-: বৃন্ত, বৃন্দ, গ্রন্থ।
* বাংলা [[ক্রিয়াপদ (বাংলা ব্যাকরণ)|ক্রিয়াপদের]] অন্তঃস্থিত দন্ত্য-ন মূর্ধন্য-ণ হয় না। যেমন-: ধরেন , মারেন, করেন, যাবেন, খাবেন, হবেন, নিবেন, দিবেন।
* বিদেশী শব্দের দন্ত্য-ন মূর্ধন্য-ণ হয় না। যেমন-: কোরআন, জার্মান, জবান, নিশান, ফরমান, রিপন।
* পূর্বপদে ঋ, র, ষ থাকলে পরপদে দন্ত্য-ন মূর্ধন্য-ণ হয় না। যেমন-: মৃগনাভি, দুর্নাম, ত্রিনেত্র, মৃন্ময়।
* [[পদ (বাংলা ব্যাকরণ)|পদের]] শেষের দন্ত্য-ন মূর্ধন্য-ণ হয় না। যেমন-: কর্মন্‌, ব্রাহ্মন্‌।
 
==ষত্ব বিধান==
== দন্ত্য-স এর মূর্ধন্য-ষ তে পরিবর্তনের নিয়মসমূহ ==
যেসব তৎসম শব্দে ‘ষ’ রয়েছে তা বাংলায় অবিকৃত আছে। তৎসম শব্দের বানানে ষ এর সঠিক ব্যবহারের নিয়মই ষত্ব বিধান।
* ঋ-কারে পরে মূর্ধন্য-ষ হয়। যেমন- ঋষি, বৃষ, বৃষ্টি।
* অ, আ, বাদে অন্য স্বরবর্ণ, ক এবং র বর্ণের পরের প্রত্যয়াদির দন্ত্য-স এর মূর্ধন্য-ষ হয়। যেমন- ভবিষ্যৎ, পরিষ্কার, মুমূর্ষ।
* 'অতি', 'অভি' এমন শব্দের শেষে ই-কার উপসর্গ এবং 'অনু' আর 'সু' উপসর্গের পরে কতগুলো ধাতুর দন্ত্য-স এর মূর্ধন্য-ষ হয়। যেমন- অতিষ্ঠ, অনুষ্ঠান, নিষেধ, অভিষেক, বিষণ্ন('ণ্ন' মূর্ধ-ণ পরে দন্ত্য-ন), সুষম।
* নিঃ, দুঃ, বহিঃ, আবিঃ, চতুঃ, প্রাদুঃ এ শব্দগুলোর পর ক্‌, খ্‌, প্‌, ফ্‌ থাকলে বিসর্গ (ঃ) এর জায়গায় মূর্ধন্য-ষ হয়। যেমন- নিঃ + কাম > নিষ্কাম, দুঃ + কর > দুষ্কর, বহিঃ + কার > বহিষ্কার, নিঃ + পাপ > নিষ্পাপ।
* কিছু শব্দ স্বভাবতই মূর্ধন্য-ষ হয়। যেমন- আষাঢ়, নিষ্কর, পাষাণ, ষোড়শ ইত্যাদি।
* কতগুলো শব্দ বিশেষ নিয়মে মূর্ধন্য-ষ হয়। যেমন- সুষুপ্তি, বিষম, বিষয়, দুর্বিষহ, যুধিষ্ঠির ইত্যাদি।
 
===ষ ব্যবহারের নিয়ম===
== কোথায় কোথায় ষত্ব বিধান নিষেধ বা খাটে না ==
* ঋ-কারে পরে মূর্ধন্য-ষ হয়। যেমন-: ঋষি, বৃষ, বৃষ্টি।
* সাৎ [[প্রত্যয় (বাংলা ব্যাকরণ)|প্রত্যয়ের]] দন্ত্য-স এর মূর্ধন্য-ষ হয় না। যেমন-
* অ, আ, বাদে অন্য স্বরবর্ণ, ক এবং র বর্ণের পরের প্রত্যয়াদির দন্ত্য-স এর মূর্ধন্য-ষ হয়। যেমন-: ভবিষ্যৎ, পরিষ্কার, মুমূর্ষ।
* 'অতি', 'অভি' এমন শব্দের শেষে ই-কার উপসর্গ এবং 'অনু' আর 'সু' উপসর্গের পরে কতগুলো ধাতুর দন্ত্য-স এর মূর্ধন্য-ষ হয়। যেমন-: অতিষ্ঠ, অনুষ্ঠান, নিষেধ, অভিষেক, বিষণ্ন('ণ্ন' মূর্ধ-ণ পরে দন্ত্য-ন), সুষম।
* নিঃ, দুঃ, বহিঃ, আবিঃ, চতুঃ, প্রাদুঃ এ শব্দগুলোর পর ক্‌, খ্‌, প্‌, ফ্‌ থাকলে বিসর্গ (ঃ) এর জায়গায় মূর্ধন্য-ষ হয়। যেমন-: নিঃ + কাম > নিষ্কাম, দুঃ + কর > দুষ্কর, বহিঃ + কার > বহিষ্কার, নিঃ + পাপ > নিষ্পাপ।
* কিছু শব্দ স্বভাবতই মূর্ধন্য-ষ হয়। যেমন-: আষাঢ়, নিষ্কর, পাষাণ, ষোড়শ ইত্যাদি।
* কতগুলো শব্দ বিশেষ নিয়মে মূর্ধন্য-ষ হয়। যেমন-: সুষুপ্তি, বিষম, বিষয়, দুর্বিষহ, যুধিষ্ঠির ইত্যাদি।
 
== =কোথায় কোথায় ষত্ব বিধান নিষেধ বা খাটে না ===
* সাৎ [[প্রত্যয় (বাংলা ব্যাকরণ)|প্রত্যয়ের]] দন্ত্য-স এর মূর্ধন্য-ষ হয় না। যেমন-:
** ভূমিসাৎ, ধূলিসাৎ, আকস্মাৎ।
* খাঁটি বাংলা ও বিদেশী শব্দে মূর্ধন্য-ষ হয় না। যেমন-:
** টেক্স, পুলিশ, জিনিস, মিসর, গ্রিস, স্টেশন, মুসাবিদা।
* অঃ বা আঃ থাকলে তার পরে ক্‌, খ্‌, প্‌, ফ্‌ সন্ধিযুক্ত হলে বিসর্গ (ঃ) এর জায়গায় দন্ত্য-স হয়। যেমন-:
** পুরঃ + কার = পুরস্কার, ভাঃ + কর = ভাস্কর, তিরঃ + কার = তিরস্কার, পরঃ+ পর= পরস্পর, স্বতঃ + ফূর্ত= স্বতঃস্ফূর্ত
* অঃ বা আঃ থাকলে তার পরে ক্‌, খ্‌, প্‌, ফ্‌ ছাড়াও ত থাকলেও স হতে পারে {{সত্যতা}}, যেমন-:
** মনঃ+ তাপ = মনস্তাপ, শিরঃ + ত্রাণ= শিরস্ত্রাণ
 
৪৩ ⟶ ৪৭ নং লাইন:
 
== তথ্যসূত্র ==
<references/>
{{reflist}}
 
[[বিষয়শ্রেণী:বাংলা ব্যাকরণ]]