বাংলাদেশের সংবিধান: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
পরিমার্জন
WikitanvirBot (আলোচনা | অবদান)
বট বানান ঠিক করছে, কোনো সমস্যায় তানভিরের আলাপ পাতায় বার্তা রাখুন
১ নং লাইন:
{{বাংলাদেশের রাজনীতি}}
'''গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান''' স্বাধীন ও সার্বভৌম [[বাংলাদেশ|বাংলাদেশ রাষ্ট্রের]] সর্বোচ্চ আইন। এটি একটি লিখিত দলিল। ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দের ৪ঠা নভেম্বর তারিেখ বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে এই সংবিধান গৃহিতগৃহীত হয় এবং একই বছরের [[বিজয় দিবস (বাংলাদেশ)|১৬ই ডিসেম্বর অর্থাৎ বাংলাদেশের বিজয় দিবসের]] প্রথম বার্ষিকী হতে এটি কার্যকর হয়। মূল সংবিধান [[ইংরেজি ভাষা|ইংরেজি ভাষায়]] রচিত হয় এবং একে [[বাংলা ভাষা|বাংলায়]] অনুবাদ করা হয়{{তথ্যসূত্র প্রয়োজন}}। তাই এটি বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় বিদ্যমান। তবে ইংরেজী ও বাংলার মধ্যে অর্থগত বিরোধ দৃশ্যমান হলে বাংলা রূপ অনুসরণীয় হবে।<ref>গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১৫৩ অনুচ্ছেদের ৩ দফা।</ref>
 
১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সালের [[বাংলাদেশের সংবিধানের সংশোধনীসমূহ|ষোড়শ সংশোধনী]] সহ বাংলাদেশের সংবিধান সর্বমোট ১৬ বার সংশোধীত হয়েছে। এই সংবিধান সংশোধনের জন্য [[জাতীয় সংসদ|জাতীয় সংসদের]] সদস্যদের মোট সংখ্যার দুই তৃতীয়াংশ ভোটের প্রয়োজন হয়। তবে [[বাংলাদেশের সংবিধানের সংশোধনীসমূহ|ত্রয়োদশ সংশোধনী]] বাতিলের আদেশে [[বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট]] রায় দিয়েছে যে, সংবিধানের মূল কাঠামো পরিবর্তন হয়ে যায় এরূপ কোনো সংশোধনী এতে আনা যাবে না; আনা হলে তা হবে এখতিয়ার বহির্ভূত।<ref>Samarendra Nath Goshwami (ed), ''The Constitution (Thirteenth Amendment) Act's Case'', Supreme Bar Building, Dhaka-1000, 2012, Page: 208-209.</ref>
 
বাংলাদেশের সংবিধান কেবল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইনই নয়;- সংবিধানে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের মূল চরিত্র বর্ণিত রয়েছে। এতে বাংলাদেশের ভৌগলিকভৌগোলিক সীমারেখা বিধৃত আছে। দেশটি হবে প্রজাতান্ত্রিক, গণতন্ত্র হবে এদেশের প্রশাসনিক ভিত্তি, জনগণ হবে সকল ক্ষমতার উৎস এবং বিচার বিভাগ হবে স্বাধীন। জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস হলেও দেশ আইন দ্বারা পরিচালিত হবে। সংবিধানে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা -কে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।
 
==সংবিধান প্রণয়ন ও মুদ্রণের ইতিহাস==
সংবিধান প্রণয়নের উদ্দেশ্যে ১৯৭২ সালের ১১ই এপ্রিল [[কামাল হোসেন|ড. কামাল হোসেনকে]] সভাপতি করে ৩৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। তাঁরা হলেন ড. কামাল হোসেন (ঢাকা-৯, জাতীয় পরিষদ), মো. লুৎফর রহমান (রংপুর-৪, জাতীয় পরিষদ), অধ্যাপক আবু সাইয়িদ (পাবনা-৫, জাতীয় পরিষদ), এম আবদুর রহিম (দিনাজপুর-৭, প্রাদেশিক পরিষদ), [[এম আমীর-উল ইসলাম]] (কুষ্টিয়া-১, জাতীয় পরিষদ), মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম মনজুর (বাকেরগঞ্জ-৩, জাতীয় পরিষদ), আবদুল মুনতাকীম চৌধুরী (সিলেট-৫, জাতীয় পরিষদ), ডা. ক্ষিতীশ চন্দ্র (বাকেরগঞ্জ-১৫, প্রাদেশিক পরিষদ), [[সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত]] (সিলেট-২, প্রাদেশিক পরিষদ), [[সৈয়দ নজরুল ইসলাম]] (ময়মনসিংহ-১৭, জাতীয় পরিষদ), [[তাজউদ্দীন আহমদ]] (ঢাকা-৫, জাতীয় পরিষদ), [[খন্দকার মোশতাক আহমেদ]] (কুমিল্লা-৮, জাতীয় পরিষদ), [[এ এইচ এম কামরুজ্জামান]] (রাজশাহী-৬, জাতীয় পরিষদ), আবদুল মমিন তালুকদার (পাবনা-৩, জাতীয় পরিষদ), আবদুর রউফ (রংপুর-১১, ডোমার, জাতীয় পরিষদ), মোহাম্মদ বায়তুল্লাহ (রাজশাহী-৩, জাতীয় পরিষদ), বাদল রশীদ, বার অ্যাট ল, খন্দকার আবদুল হাফিজ (যশোর-৭, জাতীয় পরিষদ), শওকত আলী খান (টাঙ্গাইল-২, জাতীয় পরিষদ), মো. হুমায়ুন খালিদ, আছাদুজ্জামান খান (যশোর-১০, প্রাদেশিক পরিষদ), এ কে মোশাররফ হোসেন আখন্দ (ময়মনসিংহ-৬, জাতীয় পরিষদ), আবদুল মমিন, শামসুদ্দিন মোল্লা (ফরিদপুর-৪, জাতীয় পরিষদ), শেখ আবদুর রহমান (খুলনা-২, প্রাদেশিক পরিষদ), ফকির সাহাব উদ্দিন আহমদ, অধ্যাপক খোরশেদ আলম (কুমিল্ল্না-৫, জাতীয় পরিষদ), অ্যাডভোকেট সিরাজুল হক (কুমিল্লা-৪, জাতীয় পরিষদ), দেওয়ান আবু আব্বাছ (কুমিল্লা-৫, জাতীয় পরিষদ), হাফেজ হাবিবুর রহমান (কুমিল্লা-১২, জাতীয় পরিষদ), আবদুর রশিদ, নুরুল ইসলাম চৌধুরী (চট্টগ্রাম-৬, জাতীয় পরিষদ), মোহাম্মদ খালেদ (চট্টগ্রাম-৫, জাতীয় পরিষদ) ও বেগম রাজিয়া বানু (নারী আসন, জাতীয় পরিষদ)। <ref>[http://www.kalerkantho.com/print_edition/print_news.php?pub_no=334&cat_id=3&menu_id=85&news_type_id=1&index=1]</ref>
 
একই বছরের ১৭ই এপ্রিল থেকে ৩রা অক্টোবর পর্যন্ত এই কমিটি বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক করে। জনগণের মতামত সংগ্রহের জন্য মতামত আহবান করা হয়। সংগ্রহীত মতামত থেকে ৯৮টি সুপারিশ গ্রহণ করা হয়। ১৯৭২ সালের ১২ অক্টোবর গণপরিষদের দ্বিতীয় অধিবেশনে তৎকালীন আইনমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন খসড়া সংবিধান বিল আকারে উত্থাপন করেন। ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর গণপরিষদে বাংলাদেশের সংবিধান গৃহিতগৃহীত হয় এবং ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭২ (বিজয় দিবস) থেকে কার্যকর হয়। গণপরিষদে সংবিধানের উপর বক্তব্য রাখতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেন, {{quotation | এই সংবিধান শহিদের রক্তে লিখিত, এ সংবিধান সমগ্র জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার মূর্ত প্রতীক হয়ে বেঁচে থাকবে।<ref>পৃষ্ঠা-২৮, অধ্যায়- স্বাধীন বাংলাদেশ, NCTB প্রকাশিত বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বই।</ref>}}
 
সংবিধান লেখার পর এর বাংলা ভাষারূপ পর্যালোচনার জন্য [[আনিসুজ্জামান|ড. আনিসুজ্জামানকে]] আহবায়ক, [[সৈয়দ আলী আহসান]] এবং [[মযহারুল ইসলাম|মযহারুল ইসলামকে]] ভাষা বিশেষজ্ঞ হিসেবে একটি কমিটি গঠন করে পর্যালোচনার ভার দেয়া হয়।
 
গণপরিষদ ভবন, যা বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর সরকারীসরকারি বাসভবন, সেখানে সংবিধান প্রণয়ন কমিটির বৈঠকে সহযোগিতা করেন ব্রিটিশ আইনসভার খসড়া আইন-প্রণেতা আই গাথরি।
 
সংবিধান ছাপাতে ১৪ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছিলো। [[হাশেম খান|শিল্পী হাশেম খান]] অলংকরণের দায়িত্বে ছিলেন। ১৯৪৮ সালে তৈরী ক্র্যাবটি ব্রান্ডের দুটি অফসেট মেশিনে সংবিধানটি ছাপা হয়।