সূরা ফীল: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
WikitanvirBot (আলোচনা | অবদান)
বট বানান ঠিক করছে, কোনো সমস্যায় তানভিরের আলাপ পাতায় বার্তা রাখুন
WikitanvirBot (আলোচনা | অবদান)
বট বানান ঠিক করছে, কোনো সমস্যায় তানভিরের আলাপ পাতায় বার্তা রাখুন
৬ নং লাইন:
হাবশা (বর্তমান [[ইথিওপিয়া|ইথিয়োইপিয়া]]) সম্রাটের কাছ থেকে যখন [[ইয়েমেন|ইয়ামনের]] একজন সরদার ইয়ামনের গভর্ণর হবার পরোয়ান হাসিল করে। তখন হাবশী [[মিলিটারি|সৈন্যরা]] তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করে। তারা আবরাহাকে তার জাগায় গভর্ণর পদে অধিষ্ঠিত করে। আবরাহা ছিল হাবশার আদুলিস বন্দরের একজন [[গ্রীস|গ্রীক]] ব্যবসায়ীর ক্রীতদাস। নিজের বুদ্ধিমত্তার জোরে সে ইয়ামন দখলকারী হাবশী সেনাদলে ব্যাপক প্রভাব সৃষ্টিতে সহ্মম হয়। হাবশা সম্রাট তাকে দমন করার জন্য [[মিলিটারি|সেনাবাহিনী]] পাঠায়। কিন্তু এই সেনাদল হয় তার সাথে যোগ দেয় অথবা সে এই সেনাদলকে পরাজিত করে। অবশেষে হাবশা সম্রাটের মৃত্যুর পর তার উত্তরাধিকারী তাকে ইয়ামনে নিজের গভর্ণর হিসাবে স্বীকার করে নেয়। (আবরাহা সম্ভবত [[হাবশী ভাষা|হাবশী]] উচ্চারণ কারণ [[আরবি ভাষা|আরবীতে]] এর উচ্চারণ ইবরাহীম।) পরে সে ধীরে ধীরে ইয়ামনের স্বাধীন বাদশাহ হয়ে বসে। ৫৪৩ খৃষ্টাব্দে [[সদ্দে মাআরিব]] এর সংস্কার কাজ শেষ করে সে একটি বিরট উৎসবের আয়োজন করে। এই উৎসবের বিভিন্ন [[দেশ]] থেকে লোক আসে। সদ্দে মাআরিবে আবরাহা স্থাপিত শিলালিপিতে এ সম্পর্কিত পূর্ণ আলোচনা সংরহ্মিত রয়েছে।<ref name="তাফহীমুল">তাফহীমুল কোরআন।</ref>
 
সে ইয়ামনের [[রাজধানী]] [[সানা|সান্‌আ'য়]] একটি বিশাল গীর্জাগির্জা নির্মাণ করে। আরব ঐতিহসিকগণ একে 'আল কালীস' বা 'আল কুলীস' অথবা 'আল কুল্লাইস' নামে উল্লেখ করেছেন। মুহাম্মদ ইবনে ইসহাকের বর্ণনা মতে, একাজটি সম্পন্ন করার পর সে হাবশার বাদশাহ্‌কে লিখে জানায়, আমি আরবদের [[হজ্জ|হজ্জকে]] মক্কার কা'বার পরিবর্তে সানআর গীর্জার দিকে ফিরিয়ে না দিয়ে হ্মান্ত হবো না। সে মক্কা আক্রমণ এবং কুরাইশদেরকে ধ্বংস ও সমগ্র [[সৌদি আরব|আরববাসীকে]] ভীত-সন্ত্রস্ত করে দিতে সফলকাম হতে পারবে বলে মনে করছিল। আবরাহার কাছে যখন এ রিপোর্ট পৌঁছুল যে, কাবার ভক্ত অনুরক্তরা তার গীর্জার অবমাননা করেছে তখন সে কসম খেয়ে বসে, কা'বাকে গুঁড়িয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে না দেয়া পর্যন্ত আমি স্থির হে বসবোনা।
 
তারপর [[৫৭০]] বা [[৫৭১]] খৃষ্টাব্দে সে ৬০ [[হাজার]] পদাতিক, ১৩টি [[হাতি]] (অন্য বর্ণনা মতে ৯টি হাতি) সহকারে মক্কার পথে রওয়ানা হয়। পথে প্রথমে যু-নফর মানক ইয়ামনের একজন সরদার আবরদের একটি সেনাদল সংগ্রহ করে তাকে বাধা দেয়। কিন্তু [[যুদ্ধ|যুদ্ধে]] সে পরাজিত ও ধৃত হয়। তারপর খাশ'আম এলাকায় নুফাইল ইবনে খাশ'আমী তার [[জাতি|গোত্রের]] লোকদের নিয়ে তার পথ রোধ করে। সেও পরাজিত ও গ্রেফতার হয়ে যায়। সে নিজের প্রাণ বাঁচাবার জন্য আবরাহার সেনাদলের পথ প্রদর্শনের দায়িত্ব গ্রহণ করে। এ সেনাদল তায়েফের নিকটবর্তী হলে বনু সকীফ অনুভব করে যে এত বড় শক্তির মোকাবিলা করার হ্মমতা তাদের নেই এবং এই সংগে তারা এ আশঙ্কাও করতে থাকে যে, হয়তো তাদের লাত দেবতার [[মন্দির|মন্দিরও]] তারা ভেঙে ফেলবে। ফলে তাদের সরদার মাসউদ একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে আবরাহার সাথে দেখা করে। তারা তাকে বলে, আপনি যে উপাসনালয়টি ভাঙতে এসেছেন আমাদের এ মন্দিরটি সে উপাসনালয় নয়। সেটি মক্কায় অবস্থিত। কাজেই আপনি আমাদেরটায় হাত দেবেন না। আমরা মক্কার পথ দেখাবার জন্য আপনাকে পথ প্রদর্শক সংগ্রহ করে দিচ্ছি। আবরাহা তাদের এ প্রস্তাব গ্রহণ করে। ফলে বনু সাকীফ আবু রিগাল নামক এক ব্যক্তিকে তার সাথে দিয়ে দেয়। মক্কা পৌঁছতেই যখন আর মাত্র তিন ক্রোশ পথ বাকি তখন আলমাগান্মাস বা আল মুগান্মিস নামক স্থানে পৌঁছে আবু রিগাল মারা যায়। আরবরা দীর্ঘকাল পর্যন্ত তার কবরে পাথর মেরে এসেছে। এরপর সে মক্কাবাসীদের কাছে নিজের একজন [[দূত|দূতকে]] পাঠায়। তার মাধ্যমে মক্কাবাসীদের কাছে এই মর্মে বাণী পাঠায়ঃ আমি তোমাদের সাথে যুদ্ধ করতে আসিনি। আমি এসেছি শুধুমাত্র এই ঘরটি (কাবা) ভেঙে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে। যদি তোমরা যুদ্ধ না করো তাহলে তোমাদের প্রাণ ও ধন-সম্পত্তির কোনো হ্মতি আমি করবোনা। তাছাড়া তার এক দূতকেও মক্কাবাসীদের কাছে পাঠায়। মক্কাবাসীরা যদি তার সাথে কথা বলতে চায় তাহলে তাদের সরদারকে তার কাছে নিয়ে আসার নির্দেশ দেয়।
২৫ নং লাইন:
}}
 
এ দোয়া করার পর আবদুল মুত্তালিব ও তার সাথীরাও পাহাড়ে গিয়ে আশ্রয় নেন। পরের দিন আবরাহা মক্কায় প্রবেশ করার জন্য এগিয়ে যায়। কিন্তু তার বিশেষ হাতি মাহমুদ ছিল সবার আগে, সে হঠাৎ বসে পড়ে। কুড়ালের বাঁট দিয়ে তার গায়ে অনেকহ্মণ আঘাত করা হয়। তারপর বারবার অঙ্কুশাঘাত করতে করতে তাকে আহত করে ফেলা হয়। কিন্তু এত বেশীবেশি মারপিট ও নির্যাতনের পরেও সে একটুও নড়েনা। তাকে উত্তর, দহ্মিণ, পূর্ব দিকে মুখ করে চালাবার চেষ্টা করলে সে ছুটতে থাকে কিন্তু মক্কার দিকে মুখ ফিরিয়ে দিলে সংগে সংগেই গ্যাঁট হয়ে বসে পড়ে। কোনো রকমে তাকে আর একটুও নড়ানো যায় না। এ সময় ঝাকে ঝাকে [[পাখি|পাখিরা]] ঠোঁটে ও পাঞ্জায় পাথর [[কণিকা|কণা]] নিয়ে উড়ে আসে। তারা সেনাদলের ওপর পাথর বর্ষণ করতে থাকে। যার ওপর পাথর কণা পড়তো তার দেহ সংগে সংগে গলে যেতে থাকতো। ইবনে আব্বাসের (রাঃ) বর্ণনা মতে, যার ওপরই পাথর কণা পড়তো তার সারা গায়ে ভীষণ চুলকানি শুরূ হতো এবং চুলকাতে চুলকাতে চামড়া ছিঁড়ে গোশত ঝরে পড়তে থাকতো। আবরাহা নিজেও এই অবস্থার সম্মুখীন হয়। তার শরীর টুকরো টুকরো হয়ে খসে পড়তো এবং যেখান থেকে এক টুকরো গোশত খসে পড়তো সেখান থেকে রক্ত ও পুঁজ ঝরে পড়তে থাকতো। বিশৃংখলা ও হুড়োহুড়ি ছুটাছুটি মধ্যে তারা ইয়ামনের দিকে পালাতে শুরু করে। খাশ'আম এলাকা থেকে যে নুফাইল ইবনে হাবীব খাশ'আমীকে তারা পথ প্রদর্শক হিসাবে নিয়ে আসে তাকে খুঁজে পেয়ে সামনে নিয়ে আসা হয় এবং তাকে ফিরে যাবার পথ দেখিয়ে দিতে বলা হয়। কিন্তু সে সরাসরি অস্বীকার করে বসে। আবরাহা খাশ'আম এলাকায় পৌঁছে মারা যায়।<ref name="তাফহীমুল">তাফহীমুল কোরআন।</ref>
 
== নাযিল হওয়ার সময় ও স্থান ==