ন্যানোপ্রযুক্তি: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
WikitanvirBot (আলোচনা | অবদান)
বট বানান ঠিক করছে, কোনো সমস্যায় তানভিরের আলাপ পাতায় বার্তা রাখুন
WikitanvirBot (আলোচনা | অবদান)
বট বানান ঠিক করছে, কোনো সমস্যায় তানভিরের আলাপ পাতায় বার্তা রাখুন
১৭ নং লাইন:
মিটার এককটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে জড়িত। বাড়িঘর আসবাবপত্র সবই আমরা মাপি এই মিটার এককে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগ পর্যন্ত মিলিমটার স্কেলে যন্ত্রপাতির সূক্ষতা মাপা হত। মিলিমিটার এর ছোট কোন কিছু নিয়ে চিন্তা ভাবনার অবকাশ ছিলনা। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হবার পরে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে এক নতুন যুগের সূচনা হল। সেমিকণ্ডাকটর তার পথযাত্রা শুরু করল। আর এর শুরুটা হল, ট্রানজিস্টর আবিষ্কার দিয়ে। তখন মাইক্রোমিটার একক দিয়ে আমাদের চিন্তভাবনা শুরু হল। বলা যায় যাত্রা শুরু হল, মাইক্রোটেকনোলজির।
 
এর পরে টেকনোলজি এগুতে লাগলো প্রচন্ড গতিতে। নানা জিনিসপত্র, যার মধ্যে টেলিভিশন, রেডিও, ফ্রিজ ইত্যাদি ইত্যাদি। আর তা কিভাবে আরো ছোট করা যায় তা নিয়েই প্রচন্ত যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল। কোন কম্পানি কত ছোট আকারের এই সমস্ত ভোগ্য জিনিস আমাদের কাছে পৌঁছাতে পারবে, তার প্রতিযোগীতাপ্রতিযোগিতা শুরু হল। আর এই সমস্ত ব্যাপারটা সম্ভব হল, সেমিকণ্ডাকটর সংক্রান্ত প্রযুক্তির কল্যাণে। প্রথম দিকের রেডিও কিংবা টিভির আকার দেখলে আমাদের এখন হাসি পাবে। এত বড় বড় জিনিস মানুষ ব্যাবহারব্যবহার করত কিভাবে? সেই প্রশ্নটি হয়তো এসে দাড়াবে। কিন্তু এখন বাজারে দেয়ালে ঝুলাবার জন্য ক্যালেন্ডারের মত পাতলা টিভি এসেছে। সামনে হয়তো আরো ছোট আসবে।
 
১৯৮০ সনে IBM এর গবেষকরা প্রথম আবিষ্কার করেন STM(Scanning Tunneling Microscope) এই যন্ত্রটি দিয়ে অণুর গঠন পর্য়ন্ত দেখা সম্ভব। এই যন্ত্রটির আবিষ্কারই ন্যানোপ্রযুক্তিকে বাস্তবে রূপ দিতে সক্ষম হয়েছে। কিভাবে কাজ করে এই STM। এই যন্ত্রে খুব সূক্ষ পিনের মত সুচাল টিপ আছে এবং তা যখন কোন পরিবাহী বস্তুর খুব কাছে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন তা থেকে টানেলিং নামে খুব অল্প পরিমাণে বিদ্যুৎ পরিবাহিত হয়। এবং এই বিদ্যুৎ এর পরিমাণ দিয়েই সেই বস্তুটির বাহিরের স্তরের অণুর চিত্র তৈরি করা হয়। তবে এই STM এর ক্ষেত্রে যা দেখতে চাইবো তাকে অবশ্যই বিদ্যুৎ পরিবাহী হতে হবে। কিন্তু বিদ্যুৎ অপরিবাহীর অণুর গঠন কিভাবে দেখা যাবে? না মানুষ বসে থাকেনি। অসম্ভবকে সম্ভব করেই মানুষ যেভাবে এতদূর এসেছে, তেমনি ভাবে এই অসম্ভবকে সম্ভব করা গেল AFM দিয়ে। STM এর ক্ষেত্রে টানেলিং বিদ্যুৎ দিয়ে কাজ করা হয় এবং AFM দিয়ে সুক্ষ্ম পিন দিয়ে অণুর গঠন দেখা সম্ভব।
২৫ নং লাইন:
ন্যানোটেকনোলজির ক্ষেত্র দুটি প্রক্রিয়া আছ। একটি হল উপর থেকে নীচে (Top to Bottom)ও অপরটি হল নীচ থেকে উপর (Bottom to top)। টপডাউন পদ্ধতিতে কোন জিনিসকে কেটে ছোট করে তাকে নির্দিষ্ট আকার দেয়া হয়। এই ক্ষেত্র সাধারণত Etching প্রক্রিয়াটি সর্ম্পকিত। আর ডাউনটুটপ হল ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আকারের ছোট জিনিস দিয়ে বড় কোন জিনিস তৈরি করা। আমাদেরর বর্তমান ইলেক্ট্রনিক্স হল, টপডাউন প্রযুক্তি। আর ন্যানোটেকনোলজির হল, বটমটপ প্রযুক্তি। ন্যানোমিটার স্কেলে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বস্তুর উপাদান দিয়ে তৈরি করা হবে এই ন্যানোপ্রযুক্তিতে। সহজে বুঝবার জন্য একটা উদাহরণ দেয়া যাক। মনে করুন, আপনার একটা বিশেষ ধরনের DNA এর প্রয়োজন। সুতরাং বটমটপ প্রযুক্তিতে, সেই DNA এর ছোট ছোট উপাদান গুলিকে মিশ্রন করে সেই কাঙ্খিত DNA টি তৈরি করা হবে। তবে নানোপ্রযুক্তিতে শুধু মাত্র বটমটুটপ প্রযুক্তিই নয়, বরং টপটুবটম প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই দুটির সংমিশ্রন করা হবে।
 
আমরা যারা কম্পিউটার ব্যবহার করছি তারা জানি যে, প্রতি বছরই কম্পিউটার এর মূল্য কমছে। প্রতিবছরই আগের তুলনায় সস্তায় আরো ভাল কার্যক্ষমতার কম্পিউটার পাওয়া যাচ্ছে। আসলে এই কম্পিউটার এর সাথেও ন্যানোটেকনোলজি সম্পর্কিত রয়েছে। কম্পিউটার এর ভিতর যে প্রসেসর আছে, আপনারা প্রায় সবাই ইন্টেল প্রসেসর এর নাম শুনে থাকবেন? এই প্রসেসর এর ভিতরে রয়েছে অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ন্যানোমিটার স্কেলের সার্কিট। আর তাতে ব্যবহৃত হচ্ছে ন্যানোটেকনলজি। ইন্টের প্রসেসরে, সিলিকন এর উপর প্যাটার্ণ করে সার্কিট বানান হয় তার বর্তমান সাইজ হল ১০০ ন্যানোমিটার। সামনের তিন বছরে এর আকার হবে ৭০ ন্যানোমিটার। এবং সাতবছরে এর আকার হবে ৫০ ন্যানোমিটার। ইন্টেল আশা করছে যে ২০১০ সনে তারা ৩০ ন্যানোমিটার সাইজে নিয়ে আনতে পারবে। আর আজকের থেকে তখন এই প্রসেসর এর আকার অর্ধেক হয়ে আসবে। সেই দিনটা খুব বেশীবেশি দূরে নয় যেদিন আপনার মোবাইলটি কাজ করবে কম্পিউটারের মত। (বর্তমানেই এই ধরনের কিছু মোবাইল বাজারে এসেছে)। এছাড়া রয়েছে কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক। এই হার্ডডিস্কের তথ্য সংরক্ষণের ক্ষমতা দিন দিন বড়ছে। এই হার্ডডিস্কেও ব্যবহৃত হচ্ছে ন্যানোটেকনলজি। এখন বাজারে ৪ টেরাবাইটের হার্ডডিস্ক পাওয়া যাচ্ছে। অথচ এই ব্যাপারটা আজ হতে ১০ বছর আগেও ছিল কল্পনার বাহিরে।
 
== স্থির বিদ্যুৎ ও তার কারসাজি ==
ন্যানোটেকনলজি দিয়ে সার্কিট বানান যতটা সোজা বলে মনে করা হয়, ব্যাপারটা ততটা সোজা নয়। সেইখানে প্রধান যে বাধা এসে দাড়াবে তা হল, স্থির বিদ্যুৎ। শীতের দিনে বাহির থেক এসে দরজার নবে হাত দিয়েছেন? এমনি সময় হাতে শক লাগল কিংবা অন্ধকারে সুয়েটার খুলতে গেছেন এমনি সময় বিদ্যুৎ এর মত কনাকণা সুয়েটারে দেখা গেল। এইগুলি সবই আমাদের প্রাত্যাহিক দিনে ঘটে, আর এইগুলিই হল স্থির বিদ্যুতের কারসাজি। সাধারণ ইলেক্ট্রিক সার্কিটের মধ্যে এই স্থির বিদ্যুৎ থেকে সার্কিটটিকে রক্ষা করার ব্যবস্থা থাকে। যদি তা না করা হত, তাহলে কোন একটা কারণে স্থির বিদ্যুৎ আপনার বৈদ্যুতিক সারঞ্জামকে নষ্ট করে দিত। কিন্তু ন্যানোটেকনলজির ক্ষেতে বৈদ্যুতিক সার্কিট কল্পনাতিত ছোট হয়ে যায় বলে গতানুগতিক পদ্ধতিতে রক্ষা করা সম্ভব নয়। কিভাবে ন্যানোস্কেলেও এই সার্কিটগুলিকে রক্ষা করা যায় তা নিয়ে বিজ্ঞানীরা গবেষনা করছেন। স্থির বিদ্যুৎ সার্কিটে কীরকম ক্ষতি করতে পারে? প্রকৃতপক্ষে ছোটসার্কিটে স্থিরবিদ্যুত প্রায় ১৫০০ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড এর মত তাপ সৃষ্টি করে। এই তাপে সার্কিট এর উপকরণ গলে, সেই সার্কিটটিকে নষ্ট করে দিতে পারে। এই কারণে ১৯৯৭ এর পরে IC সার্কিটে গতানুগতিক ভাবে ব্যবহৃত এলুমিনিয়ামের পরিবর্তে তামা ব্যবহৃত হয়। কেননা তামার গলনাঙ্ক ১০৮৩ যেখানে এলুমিনিয়ামের গলনাঙ্ক ৬৬০ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড। ফলে অধিক তাপমাত্রাতেও তামা এ্যালুমিনিয়ামের তুলনায় ভাল কাজ করবে।
 
== ন্যানোপ্রযুক্তির ব্যবসায় ==