চীনের ইতিহাস: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
WikitanvirBot (আলোচনা | অবদান)
বট বানান ঠিক করছে, কোনো সমস্যায় তানভিরের আলাপ পাতায় বার্তা রাখুন
৬ নং লাইন:
বহু রাজ্য ও যুদ্ধবাজ নেতাদের শাসনামলে চৈনিক রাজবংশগুলো চীনের একটি অংশ শাসন করত। যার সীমানা বর্তমান জিংজিয়ান এবং তিব্বত পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। ২২১ খ্রীস্টপূর্বাব্দে কিন শী হুয়াং বিভিন্ন যুদ্ধরত রাজ্যগুলোকে একত্রিত করে কীন বংশের একটি ক্ষুদ্র “সম্রাজ্য” (হুয়াংডি) প্রতিষ্ঠা করে, চৈনিক সম্রাজ্যের ইতিহাসে শুরু করেন। পরবর্তী রাজবংশগুলো একটি আমলাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল যা ক্রমে তৎকালিন চীনের বিশাল এলাকায় চৈনিক সম্রাটের নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠা করতে সাহায্য করে। চীনের সর্বশেষ রাজবংশ ছিল কিং রাজবংশ (১৬৪৪ থেকে ১৯১২), যার উচ্ছেদের পর ১৯১২ সালে [[রিপাবলিক অব চায়না]], এবং ১৯৪৯ সালে [[গণচীন|গনপ্রজাতন্ত্রী চীন]] প্রতিষ্ঠিত হয়।
 
প্রচলিত চৈনিক ইতিহাসে পর্যায়ক্রমে রাজনৈতিক ঐক্য এবং অনৈক্যের চিত্র দেখা যায়, আরো দেখা যায় যে স্তেপ জাতির মানুষেরা মাঝে মধ্যে চীন শাসন করেছেন পরবর্তীতেপরবর্তীকালে যারা চৈনিক [[হান জাতির]] জনগোষ্ঠীর সাথে মিশে গেছেন। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের সংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক প্রভাব, অভিবাসন, বৈদেশিক বানিজ্যবাণিজ্য ও চুক্তি ইত্যাদি আধুনিক চীনের সংস্কৃতি গঠনে ভূমিকা পালন করেছে।
 
{{TOClimit|3}}
৪৮ নং লাইন:
 
===শরৎ-বসন্ত যুগ (খ্রীঃ পুঃ ৭২২ থেকে ৪৭৬ অব্দ)===
খ্রীস্টপূর্ব ৮ম শতাব্দীতে, শরৎ ও বসন্তকালে রাজনৈতিক ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করা হয়। এ যুগের নামকরন করা হয় তৎকালিন প্রভাবশালী [[শরৎ বসন্ত ইতিবৃত্ত]] এর নামে। এই সময়ে, আঞ্চলিক সামরিক প্রধানরা চৌ সম্রাজ্যের বিভিন্ন ক্ষমতা লাভ করার জন্য পরস্পরের সাথে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়। পরিস্থিতির আরো অবনতি হয় যখন উত্তর পশ্চিম অঞ্চল থেকে কিছু বহিরাগতরা (যেমন কিন জা‌তি) আক্রমন শুরু করলে চৌরা তাদের রাজধানী আরো পূর্বে সরিয়ে নেয়। এভাবে চৌ রাজবংশের দ্বিতীয় ধারা: পূর্ব চৌ এর জন্ম হয়। শরৎ-বসন্ত যুগ ‌ছিল অবিভক্ত চৌ সম্রাজ্যের বিভক্ত হওয়ার কাল। এ সময়ে কয়েক শত ছোট ছোট রাজ্যের উত্থান হয়। এই রাজ্যগুলো নামে মাত্র চৌ রাজ্যের অন্তর্ভূক্তঅন্তর্ভুক্ত ছিল। প্রকৃত অর্থে তারা স্বাধীনভাবে শাসন করত। কিছু রাজ্যের শাসকগন রাজকীয় পদবীও গ্রহনগ্রহণ করেছিলেন। তখনকার চীন ছিল এসব ছোট ছোট রাজ্যের সমষ্টি। যাদের মধ্যে কিছু কিছু রাজ্যের আয়তন একটি গ্রাম এবং একটি কেল্লার মাঝেই সীমাবদ্ধ ছিল।
 
এই সময়ে অনেক দার্শনিক মতবাদের জন্ম হয়। এসব মতবাদ বুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলনের জন্ম দেয়। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল, [[কনফুসীয় ধর্ম|কনফুসিয়াসিজম]], [[তাওইজম]], [[লিগালিজম]] এবং [[মহিজম]]। তৎকালিন রাজনৈতিক ক্রমধারা ও ঘটনাপ্রবাহ আংশিকভাবে এসকল মতবাদের পিছনে কাজ করেছিল।
৬৯ নং লাইন:
 
===ঝিন রাজবংশ===
৯ম খ্রীস্টাব্দে, দখলদার [[ওয়াং মাং]] দাবী করেন যে হান বংশের উপর স্বর্গাদেশ আর বলবৎ নেই। তিনি হান শাসনামলের সমাপ্তি ও স্বল্পস্থায়ী ‘ঝিন’ (নতুন) বংশ প্রতিষ্ঠার ঘোষান দেন। ওয়াং মাং ভূমি ও অর্থনৈতিক সংস্কারের পাশাপাশি দাস প্রথা রোহিতকরন এবং ভূমি জাতীয়করন পুনর্বন্টন সহ বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহনগ্রহণ করেন। সাধারন কৃষকদের স্বার্থে গৃহীত এ সকল প্রকল্প ভূমির মালিক ধনাঢ্য ব্যক্তি ও পরিবারের সমর্থন পায়নি। ক্ষমতার অস্থিরতা বিশৃঙ্খলা, বিদ্রোহের জন্ম দেয় সেই সাথে অনেক অঞ্চল সম্রাটের হাতছাড়া হয়ে যায়। হলুদ নদীর আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটায়; বন্যা ও পলিমাটির আস্তরন বিশাল এলাকায় কৃষক জনগোষ্ঠীকে বাস্তুচ্যুত করে। ২৩ খ্রিস্টাব্দে একদল ক্রুদ্ধ কৃষক, ওয়াং মাংকে তার Weiyang প্রাসাদে হত্যা করে।
 
===পূর্ব হান===
৭৮ নং লাইন:
 
===রাজ্যত্রয় (২২০ থেকে ২৮০ খ্রীস্টাব্দ)===
খ্রীস্টিয় দ্বিতীয় শতাব্দীতে ভূমি দখল, বিহঃশত্রুর আক্রমনআক্রমণ এবং বিভিন্ন গোত্র ও [[খোজা|খোজাদের]] মধ্যে দ্বন্দ্ব বিবাদের কারনে চৈনিক সম্রাজ্যের পতন শুরু হয়। ১৮৪ সালে ‘[[হলুদ পাগড়ি বিদ্রোহ]]’ দেখা দেয়, সেই সাথে সূচনা হয় যুদ্ধবাজ নেতাদের যুগ। এসব হাঙ্গামার সময়, তিনটি সম্রাজ্য তাদের আধিপত্য বিস্তারে সচেষ্ট ছিল। এই সময়টি চৈনিক ইতিহাসে রাজ্যত্রয় (Three Kingdoms) হিসাবে পরিচিত। ‘[[রোমান্স অব দ্যা থ্রি কিংডমস]]’ সাহিত্যকর্মে এসময়কার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
 
চাও কাও ২০৮ সালে চীনের উত্তর অংশ পুনঃএকত্রিকরন করেন। পরবর্তীতে তার পুত্র ২২০ সালে উই বংশ প্রতিষ্ঠার ঘোষনাঘোষণা দেন। উই এর প্রতিদ্বন্দ্বি শু এবং উ বংশ তাদের স্বাধীতা ঘোষনা করে। ফলস্রুতিতে চীন তিনটি স্বাধীন রাজ্যে বিভক্ত হয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে কিন ও হান শাসনামলের কেন্দ্রিয়কেন্দ্রীয় শাসন ব্যবস্থা ধীরে ধীরে ভেঙে পরে। এবং রাজনৈতিক ক্ষমতা কিছু বৃহৎ পরিবারের হাতে চলে আসে।
 
২৬৫ সালে জিন বংশ উইদের ক্ষমতা থেকে উৎখাত করে এবং ২৮০ সালে তারা চীনকে ঐক্যবদ্ধ করে। তবে এই ঐক্য ক্ষনস্থায়ী ছিল।
৯১ নং লাইন:
 
=== উত্তর ও দক্ষিনের রাজবংশ সমূহ (৪২০ থেকে ৫৮৯ খ্রীস্টাব্দ)===
পঞ্চম শতাব্দীর শুরুতে চীন নতুন একটি যুগে প্রবেশ করে যা উত্তর ও দক্ষিনের রাজবংশ (Northern and Southern dynasties) নামে পরিচিত। এ সময় উত্তর ও দক্ষিনদক্ষিণ চীনে সমান্তরাল কিন্তু পৃথক শাসনক্ষমতা বিরাজমান ছিল।
 
===সুই রাজবংশ (৫৮৯ থেকে ৬১৮ খ্রীস্টাব্দ)===
৯৮ নং লাইন:
===তাং রাজবংশ (৬১৮ থেকে ৯০৭ খ্রীস্টাব্দ)===
[[File:Tang horse.jpg|thumb|তাং বংশের আমলে নির্মিত একটি পোর্সালিনের ঘোড়ার মূর্তী]]
৬১৮ সালের ১৮ই জুন সম্রাট গাউজু তাং রাজবংশের প্রতিষ্ঠা করেন। এ শাসনামল ছিল কলা, সাহিত্য, বিশেষ করে কাব্য সাহিত্য এবং কারিগরী উৎকর্ষের স্বর্ণ যুগ। এ শাসনামলে বৌদ্ধ ধর্ম সাধারনসাধারণ মানুষের ধর্ম হিসাবে প্রতিষ্ঠা পায়। তাং সম্রাজ্যের রাজধনী Chang'an ছিল তৎকালিন বিশ্বের সর্ববৃহৎ নগরী।
 
দ্বিতীয় তাং সম্রাট তেইজং, যাযাবর জাতির বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান পরিচালনা করেন। চীন সম্রাজ্যের সীমানা আরো বিস্তার লাভ করে। তিনি প্রতিবেশী ছোট ছোট রাজ্যগুলোকে ট্রিবিউটারি ব্যবস্থার অন্তর্গত করেন। তা’রিম অববাহিকার সামরিক অভিযান সিল্ক রুট খোলা রাখে এবং মধ্য এশিয়ার সাথে চীনের যোগাযোগের পথ সুগম করে। দক্ষিনে গুয়াংজু বন্দরের মতো লাভজনক বানিজ্যিক সমুদ্রপথ চালু হয়। দূরবর্তী দেশগুলোর সঙ্গে ব্যাপক বাণিজ্য চলতে থাকে, এবং অনেক বিদেশী বণিকদের চীন বসতি স্থাপন করে যা একটি কসমোপলিটন বিশ্বজনীন সংস্কৃতিকে উৎসাহিত করে। তাংদের সামাজিক ও সংস্কৃতিক ব্যবস্থা জাপানের মতো প্রতিবেশী দেশগুলো অনুকরন করতে শুরু করে। অভ্যন্তরীনভাবে [[গ্রান্ড ক্যানেল|গ্রান্ড ক্যানেলের]] সম্প্রসারন, চীন সম্রাজ্যের রাজনৈতিক কেন্দ্র চ্যাংগা’নের সাথে কৃষি ও অর্থনীতির প্রানকেন্দ্র, চীনের পশ্চিম ও দক্ষিনদক্ষিণ অংশকে সংযু্ক্ত করে।
তাং রাজবংশের সমৃদ্ধির পিছনে ছিল একটি শক্তিশালী কেন্দ্রীয় আমলাতন্ত্র। তিনটি বিভাগ ও ছয় মন্ত্রনালয়ে বিভক্ত প্রশাসনযন্ত্র একই সাথে রাজপরিবারের সদস্য ও মেধাবী কর্মকর্তাদের দ্বারা পরিচালিত হত। রাজকীয় পরীক্ষার মাধ্যমে এ সব কর্মকর্তাদের বাছাই করা হত। এসকল প্রশাসনিক ব্যবস্থা পরবর্তী শাসকরাও বহাল রাখেন।
 
১১২ নং লাইন:
===ইউয়ান রাজবংশ (১ে২৭১ থেকে ১৩৬৮ খ্রীস্টাব্দ)===
[[File:Yuan chinese gun.jpg|thumb|right|ইউয়ান আমলের হাস্তচালিত কামান]]
Jurchen ছিলেন ঝিন বংশের প্রতিষ্ঠাতা যিনি মঙ্গলদের দ্বারা পরাজিত হয়েছিলেন। এরপর মঙ্গলরা দক্ষিন সং রাজ্যের দিকে অগ্রসর হয় এবং এক দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এটাই ছিল প্রথম যুদ্ধ যেখানে আগ্নেয়াস্ত্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই যুদ্ধের পরবর্তী সময়কে বলা হয় Pax Mongolica, এ সময় [[মার্কো পোলো]] ও অন্যান্য ইউরোপীয় পরিব্রাজকরা চীন ভ্রমনভ্রমণ করেন এবং চীন সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য ইউরোপে পৌছায়। ইউয়ান শাসনামলে, মঙ্গলদেরকে দুইটি অংশে ভাগ করা হয়, একটি অংশ স্তেপে থেকে যায় এবং আর একটি অংশ চৈনিক রীতিনীতি গ্রহন করে। [[চেঙ্গিস খান|চেঙ্গিস খানের]] পৌত্র [[কুবলাই খান]] ইউয়ান বংশ প্রতিষ্ঠা করেন। ইউয়ান শাসনামলে সর্ব প্রথম বেইজিং থেকে সমগ্র চীন সম্রাজ্য পরিচালিত হয়। এর আগে ঝিন সম্রাটদের রাজধানী ছিল বেইজিং। কিন্তু তারা সমগ্র চীনের শাসক ছিলেন না।
মঙ্গলদের আগ্রাসনের পূর্বে চীনের জনসংখ্যা ছিল ১২০ মিলিয়ন। ১২৭৯ সালে যুদ্ধ শেষ হবার পর চীনের জনসংখ্যা ছিল ৬০ মিলিয়নের মত।<ref>{{cite journal | first=Ping-ti |last= Ho | title=An Estimate of the Total Population of Sung-Chin China | journal = Études Song | series= 1 | issue=1 | year=1970 | pages=33–53}}</ref> Frederick W. Mote এর মতে যুদ্ধ জনসংখ্যার এই ব্যাপক হ্রাসের একমাত্কার করান ছিল না। পূর্বে জনসংখ্যার গননাগণনা সঠিক ছিল না বলে তিনি মনে করেন।
 
১৪ শতাব্দীতে প্লেগে আক্রান্ত হয়ে ২৫ মিলিয়ন মানুষ মারা যায়। যা ছিল তৎকালিন জনসংখ্যার ৩০%।<ref>{{cite web|url = http://chip.med.nyu.edu/course/view.php?id=13&topic=1 |title = Course: Plague |archiveurl = https://web.archive.org/web/20071118121009/http://chip.med.nyu.edu/course/view.php?id=13&topic=1 | archivedate = 18 November 2007}}{{dead link|date=September 2012}}</ref>
১২২ নং লাইন:
ইউয়ান বংশ এক শতাব্দীরও কম সময়ে চীনের শাসন ক্ষমতায় ছিল। মঙ্গলদের শাসনের বিরুদ্ধে এ সময়ে চৈনিক জনগনের মনে অষোন্তষ ‌তৈরী হ‌য়েছিল। ঘন ঘন প্রাকৃতিক দূর্যোগ আঘাত হানার পর এই অষোন্তোষ ১৩৪০ সালে ব্যাপক কৃষক বিদ্রোহে রূপ নেয়। ১৩৪৮ সালে [[মিং বংশ]] ইউয়ান বংশকে উৎখাত করে। ব্যাপক নগরায়ন হতে থাকে। সেই সাথে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায়। জটিল শ্রম বিভাজন প্রক্রিয়া শুরু হয়। নানজিং ও বেইজিং এর মতো নগর কেন্দ্রগুলো বেসরকারী শিল্পের প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে, কাগজ, সিল্ক, তুলা এবং পোর্সালিনকে কেন্দ্র করে ক্ষুদ্রাকার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। সমগ্র সম্রাজ্য জুড়ে ছোট ছোট নগর-বানিজ্য কেন্দ্র গড়ে ওঠে।
 
ভিনদেশী আতঙ্ক বা জেনোফোবিয়া অথবা নব্য-কনফুসিয়াসম ধারনার ব্যাপক প্রচলন সত্যেও মিং শাসিত চীন বহিঃবিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল না। বৈদেশিক বানিজ্যবাণিজ্য ও অন্যান্য যোগাযোগ বিশেষ করে জাপানের সাথে জোড়াল কূটনৈতিক ও বানিজ্যিক যোগাযোগ ছিল। চৈনিক বনিকরা ভারত মহাসাগরে অনুসন্ধান পরিচালনা করে, চৈনিক পর্যটক জেং হি পূর্ব আফ্রিকার উপকূলে পৌছান।
 
মিং বংশের প্রতিষ্ঠাতা সম্রাট হংওউ বানিজ্যের চেয়ে কৃষির উপর কর আরোপে বেশী উৎসাহি ছিলেন। সম্ভাব্য কারন ছিল এই যে এ রাজবংশের পূর্বপুরুষরা কৃষক ছিলেন। পূর্বতন সং ও মঙ্গোলিয়ান শাসকদের মতো তাদের কর ব্যবস্থা বানিজ্য নির্ভর ছিল না। মিং শাসকরা তাদের পূর্বসূরী সং ও মঙ্গলদের নব্য-সামান্ত ব্যবস্থার আমলের ভূ-স্বামীদের কাছ থেকে ভূমি বাজেয়াপ্ত করেন। সকল ভূমি এস্টেট গুলো জব্দ করা হয় এবং প্রকৃত কৃষকদেরকে লীজ প্রদান করা হয়। ব্যক্তিগত দাসপ্রথা রোহিত করা হয়। ফলশ্রুতিতে চীনে স্বাধীন কৃষকশ্রেণীর আবির্ভাব হয়। মিং শসকদের এসকল কর্মকান্ডের ফলে কৃষি নির্ভর চীন সমাজে ধীরে ধীরে দারিদ্র কমতে থাকে।
 
মিং শাসকরা একটি দৃঢ় এবং জটিল কেন্দ্রিয়কেন্দ্রীয় শাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিল। ক্রমেই মিং শাসকরা একচ্ছত্র স্বৈরশাসকে পরিনত হয়।
 
=== কিং রাজবংশ (১৬৪৪ থেকে ১৯১১)===
[[File:Museum für Ostasiatische Kunst Dahlem Berlin Mai 2006 041.jpg|left|thumb|কিং আমলের তীর্থযাত্রীদের ফ্লাস্ক। সময়কাল ১৮ শতাব্দী]]
কিং রাজবংশ চীনের ইতিহাসের সর্বশেষ রাজবংশ। মাঞ্চুসরা এই বংশ প্রতিষ্ঠা করে। অ-হান চৈনিক কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত দ্বিতীয় রাজবংশ যারা সমগ্র চীন শাসন করেছিল। মাঞ্চুরা পূর্বে Jurchens নামে পরিচিত ছিল। যারা উত্তর পশ্চিম চীনে মিং শাসিত এলাকার বাইরে মহাপ্রাচীরের অপর প্রান্তে বসবাস করত। মিং বংশের শেষ শাসকদের নিকট তারা একসময় বড় রকম হুমকি ছিল। বিশেষ করে [[নুরচাই]] যথন সকল জুরচেন উপজাতিদেরকে সংঘবদ্ধ করে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে। যদিও, শেষ মং সম্রাট চংজেন, এক কৃষক বিদ্রোহের ১৬৪৪ সালে সিংহাসনচ্যুত হবার পর আত্মহত্যা করেন। মাঞ্চুরা একজন প্রাক্তন মিং সেনাপতির সাথে সন্ধিবদ্ধ হয়ে চীন আক্রমনআক্রমণ করেন। প্রথমে বেইজিং দখল করে রাজধানী হিসাবে ঘোষনা করেন। পরে ধীরে ধীরে দক্ষিনের এলাকাগুলো দখল করেন। মাঞ্চু শাসনামলে প্রচুর প্রানহানি ঘটে এবং চীনের অর্থনীতির ব্যাপক ক্ষতি হয়। সর্বমোট ২৫ মিলিয়ন মানুষ প্রান হারান।<ref>John M. Roberts (1997). ''[https://books.google.com/books?id=3QZXvUhGwhAC A Short History of the World]''. Oxford University Press. p. 272. ISBN 0-19-511504-X.</ref> যাইহোক, মাঞ্চুসরা ঐতিহ্যগত চীনা সরকারের কনফুশিয়ানর নিয়ম গ্রহণ করে। একারনে তাদের চীনা রাজবংশ হিসেবে বিবেচনা করা হতো।
 
মাঞ্চুরা ‘বেনী আদেশ’ বলে সকল হান-চৈনিকদের চুলে বেনী বাঁধতে বাধ্য করে। সকল সরকারীসরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের মাঞ্চুদের প্রথাগত পোশাক পরিধান করার আদেশ দেয়া হয়। যদিও সাধারনসাধারণ হান বংশদ্ভুত চীনারা তাদের পছন্দমতো পোশাক পরিধান করতে পারত।
 
কিয়ালং সম্রাটের শাসনামলে, কিং সম্রাজ্য সমৃদ্ধির সর্ব্বোচ্চ শীখরে পৌছায়। চীন সম্রাট তখন পৃথিবীর এক-তৃতীয়াংশ জনগনকে শাসন করত। এবং একই সাথে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ অর্থনীতি হিসাবে স্বীকৃত ছিল।
১৯ শতকে এসে চীন সম্রাজ্য ক্রমেই দূর্বল হয়ে পরে। এবং পশ্চিমা শক্তির দ্বারা নানা হুমকির সম্মুখিন হয়। ১৮৪০ সালে [[প্রথম আফিম যুদ্ধ|প্রথম আফিম যুদ্ধে]] চীন বৃটিশ সম্রাজ্যের কাছে পরাজিত হয়। ১৮৪২ সালে [[নানকিং চুক্তির|নানকিং চুক্তির]] মাধ্যমে [[হংকং]] তাদের হাতছাড়া হয়ে যায়।
 
এসময়ে চীন [[তাইপিং বিদ্রোহ]] (১৮৫১-১৮৬৪) দখা দেয়। আপাতদৃষ্টে একটি খ্রীস্টান ধর্মালম্বীদের বিদ্রোহ যারা এক যুগেরও বেশীবেশি সময় ধরে এক-তৃতীয়াংশ চৈনিক ভূমি শাসন করত। ১৮৬৪ সালে [[তৃতীয় নানকিং যুদ্ধ|তৃতীয় নানকিং যুদ্ধে]] তারা পরাজিত ও নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। সৈন্যবাহিনীর সংখ্যা বিবেচনায় এটি ছিল ১৯ শতকের সবচেয়ে বড় যুদ্ধ। এ যুদ্ধে ২০ মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু হয়।<ref>{{cite web | first=Matthew | last=White |url = http://necrometrics.com/wars19c.htm | title = Statistics of Wars, Oppressions and Atrocities of the Nineteenth Century |accessdate=11 April 2007}}</ref> এসময়ে বেশ কিছু ধারাবাহিক বেসামরিক অষোন্তষ দেখা যায়। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল, [[পুন্টি-হাক্কার যুদ্ধ]], [[নিয়ান বিদ্রোহ]], [[দুঙ্গা বিদ্রোহ]] (১৮৬২-১৮৭৭) এবং [[প্যান্থে বিদ্রোহ]]<ref>{{cite book | first=Damsan |last=Harper | first2=Steve |last2=Fallon |first3=Katja |last3=Gaskell |first4=Julie |last4=Grundvig |first5= Carolyn |last5=Heller | first6=Thomas |last6=Huhti |first7=Bradley |last7=Maynew |first8=Christopher | last8=Pitts | title=Lonely Planet China | edition=9 | year=2005 | ISBN=1-74059-687-0}}</ref>
 
এসব বিদ্রোহ সফলভাবে দমন করা হলেও, তার জন্য প্রচুর মূল্য দিতে হয়েছিল। হতাহতের সংখ্যা ছিল প্রচুর। এসব কারনে কেন্দ্রিয় রাজকীয় কর্তৃপক্ষ দূর্বল হয়ে পড়ে।
১৪৫ নং লাইন:
[[File:Sunyatsen1.jpg|thumb|upright|[[সান ইয়াত-সেন]], চীন প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি]]
[[File:Puyi (1922).jpg|thumb|left|সর্বশেষ চৈনিক সম্রাট পুয়েই ১৯২২ সালের ছবি]]
কিং রাজদরবারের দূর্বলতার কারনে তরুন রাজকীয় সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা এবং ছাত্রসমাজ সম্রাটকে উৎখাত করে একটি প্রজাতন্ত্র গঠন করতে প্রয়াসী হন। ১২ই মার্চ ১৯১২ সালে নানজিংএ একটি অন্তর্বর্তী কালিন সরকার গঠিত হয়। সমাপ্ত হয় চীনের ২০০০ বছরের রাজকীয় শাসনের। কিন্তু সান শীঘ্রই সম্রাটকে ক্ষমতাচ্যুত করায় সাহয্য করার বিনিময়ে (যে সিদ্ধান্তের জন্য পরবর্তীতেপরবর্তীকালে তিনি অনুশোচনা করেন) চুক্তি অনুসারে, ইউয়ান সিকাই এর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে বাধ্য হন। ইউয়ান সিকাই ছিলেন নব গঠিত সেনাবাহিনী প্রধান এবং ভূতপূর্ব সম্রাটের প্রধানমন্ত্রী। পরবর্তী পাঁচ বছরে, ইউয়ান জাতীয় ও প্রাদেশিক আইনসভা ভেঙে দেন এবং ১৯১৫ সালে নিজেকে সম্রাট হিসাবে ঘোষনা ক‌রেন। সম্রাট হবার উচ্চাভিলাস তার অধিনস্ত কর্মচারীরা মেনে নেননি। ১৯১৬ সালের মার্চ মা‌সে তাকে উৎখাত করা হয় এবং একই বছর জুন মাসে তিনি মারা যান। ইউয়ানের অপসারন ও মৃত্যু চীনের রাষ্ট্র ক্ষমতায় শূন্যতার সৃষ্টি হয়। প্রজাতান্ত্রিক সরকার ছিন্ন বিচ্ছন্ন হয়ে পরে। এ পরিস্থিতিতে কিছু যুদ্ধবাজ নেতার উত্থান হয়। তারা চীনের অনেক অঞ্চল এসকল নেতারা শাসন করতেন।
 
১৯১৯ সালে [[ভার্সাইলিস চুক্তি|ভার্সাইলিস চুক্তির]] বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়। এ চুক্তিতে চীনের উপর কিছু শর্ত আরোপ করা হয়েছিল। মন্ত্রী পরিষদ এই চুক্তির স্বাক্ষরের বিপক্ষে মত দেয়।
পশ্চিমা পুঁজিবাদী দর্শনের প্রতি অশ্রদ্ধা, চীনের বামপন্থী নেতাদের চিন্তাধারায় ব্যাপক পরিবর্তন আসে। এছাড়া বলিসেভিক বিপ্লবীরা ও মস্কো থেকে প্রেরিত রুশ বিপ্লবীদের প্রতিনিধিরাও এর পিছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
 
১৯২০ সালে সান ইয়েত-সেন দক্ষিনদক্ষিণ চীনে একটি বিপ্লবী ভিত্তি গড়ে তোলেন, বিভক্ত চীনকে একত্রিত করার চেষ্টা করেন। সোভিয়েত বিপ্লবীদের সাহায্য নিয়ে তিনি [[চীনের কমিউনিস্ট পার্টি|চীনের কমিউনিস্ট পার্টির]] সাথে মৈত্রী চুক্তি করেন। ১৯২৫ সালে তার মৃত্যুর পর চিয়াঙ কাই সেং কুমিনটাং (চীনের রিপাবলিকান পার্টি) এর নিয়ন্ত্রন গ্রহনগ্রহণ করেন। তিনি [[উত্তর অভিযান]] (১৯২৬-১৯২৭) নামের সামরিক অভিযানের মাধ্যমে মধ্য ও দক্ষিনদক্ষিণ চীনে তাদের নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠা করেন। দক্ষিন ও মধ্য চীনের যুদ্ধবাজ নেতাদের দমন করে উত্তরের নেতাদের সাথে নামমাত্র মৈত্রী চুক্তি করেন। ১৯২৭ সালে, চিয়াং কমিউনিস্ট পার্টির বিরুদ্ধে সোচ্চার হন। পূর্ব ও দক্ষিনদক্ষিণ চীনের কমিউনিস্ট সেনাদের ঘাঁটিতে আক্রমন করে তাদের উত্তর পশ্চিমের দূর্গম এলাকায় বিতাড়িত করেন। এ সময় কমিউনিস্টদের নতুন নেতা [[মাও সেতুং]] এর আবির্ভাব হয়।
 
[[File:Chinese civilians to be buried alive.jpg|thumb|210px| বেসামরিক চীনা নাগরিকদের জীবন্ত কবর দেয়া হচ্ছে ১৯৪৭ সালের [[নানকিং হত্যাকান্ড]]]]
১৪ বছর যাবত চীন-জাপান যুদ্ধের পর (১৯৩১-৪৫) রিপাবলিকান ও কমিউনিস্টদের মধ্যে এই তিক্ততা চলতেই থাকে। জাপানের সেনাবাহিনী চীনের বিভিন্ন অংশ আক্রমনআক্রমণ করে। [[দ্বিতীয় সিনো-জাপান যুদ্ধ|দ্বিতীয় সিনো-জাপান যুদ্ধের]] সময় এই দুই চীনা রাজনৈতিক দল ১৯৩৭ সালে একটি মৈত্রী চুক্তি করে। এই যুদ্ধ পরবর্তীতে [[দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ|দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের]] একটি অংশে পরিনত হয়। জাপানী সেনাবাহিনী নিরীহ বেসামরিক চীনাদের উপর নজিরবিহীন বিভৎস নৃশংসতা প্রদর্শন করে। তাজীবানু অস্ত্রও ব্যবহার করা হয়। (দেখুন [[Unit 731]]) এবং [[থ্রি অল পলিসি]] (''Sankō Sakusen''), থ্রি অল পলিসি বলতে বুঝান হত, “সবাইকে হত্যা কর, সবকিছু পুড়িয়ে দাও এবং সবকিছু লুট কর।”<ref>{{cite book |last1=Fairbank |first1=J. K. |last2=Goldman |first2=M. |year=2006 |title=China: A New History |edition=2nd |publisher=Harvard University Press |page=320 |isbn=9780674018280 |url=https://books.google.com/books?id=nBDC2cqb6I0C&pg=PA320}}</ref>
 
১৯৪৫ সালে বিশ্বযুদ্ধে জাপানের পরাজয়ের পর চীনের দুই দলের মধ্যে যুদ্ধ পুনরায় শুরু হয়। যদিও বহুবার বিভিন্নভাবে সমোঝতার চেষ্টা করা হয়েছিল। ১৯৪৯ সালের মধ্যে চীনের অধিকাংশ অঞ্চল কমিউনিস্ট পার্টির দখলে চলে যায়। গৃহযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে রিপাবলিকান পার্টি এবং কমিউনিষ্ট উভয় দলের কর্মী সমর্থকরা বিভিন্ন সহিংস ঘটনায় নিহত হয়।<ref>Rummel, Rudolph (1994), Death by Government.</ref> বাধ্যতামূলকভাবে সেনাবা‌হিনী‌তে ভর্তি এবং নানকিং হত্যাকান্ডে উভয় দ‌লের অ‌নেক কর্মী মারা যায়। <ref>Valentino, Benjamin A. Final solutions: mass killing and genocide in the twentieth century Cornell University Press. December 8, 2005. p88</ref> ১৯৪৯ সালে রিপাবলিকান পার্টি চীনের মূল ভূখন্ডে পরাজিত হয়। বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী মূল ভূখন্ড ছেড়ে তাইওয়ানে পালিয়ে যায়। তাদের ক্ষমতা তাইওয়ান ও তার আশেপাশের দ্বীপের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পরে। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ সমাপ্ত হবার পর জাপানের সেনাবাহিনী রিপাবলিকান পার্টি সেনাবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পন করে।<ref>[http://www.taiwandocuments.org/ghq.htm Surrender Order of the Imperial General Headquarters of Japan], 2 September 1945, "(a) The senior Japanese commanders and all ground, sea, air, and auxiliary forces within China (excluding Manchuria), [[Formosa]], and [[French Indochina]] north of 16 degrees north latitude shall surrender to Generalissimo Chiang Kai-shek."</ref>
 
===গনপ্রজাতন্ত্রী চীন (১৯৪৯ থেকে বর্তমান)===
[[চীনের গৃহযুদ্ধ|চীনের গৃহযুদ্ধের]] মূল যুদ্ধ ১৯৪৯ সালে সমাপ্ত হয়। রিপাবলিকানদের চীনের মূল ভূ-খন্ড থেকে তাইওয়ানে বিতাড়িত করা হয়। মূল চীনে কমিউনিস্ট পার্টির ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৪৯ সালের ১ লা অক্টোবর [[মাও সেতুং]] গনপ্রজাতান্ত্রিক চীন প্রতিষ্ঠার ঘোষনাঘোষণা দেন।<ref name="Ref_c">[http://www.isop.ucla.edu/eas/documents/mao490921.htm The Chinese people have stood up]. UCLA Center for East Asian Studies. Retrieved 16 April 2006. {{wayback|url=http://www.isop.ucla.edu/eas/documents/mao490921.htm |date=20130725014026 }}</ref> গনচীনের দুইটি জনপ্রিয় নাম ছিল “কমিউনিস্ট চীন” বা “লাল চীন”<ref name="Ref_d">Smith, Joseph; and Davis, Simon. [2005] (2005). The A to Z of the Cold War. Issue 28 of ''Historical dictionaries of war, revolution, and civil unrest''. Volume 8 of ''A to Z guides''. Scarecrow Press publisher. ISBN 0-8108-5384-1, ISBN 978-0-8108-5384-3.</ref>
[[File:Mao proclaiming the establishment of the PRC in 1949.jpg|thumb|left| ১ লা অক্টোবর ১৯৪৯ [[মাও সেতুং]] গনপ্রজাতান্ত্রিক চীন প্রতিষ্ঠার ঘোষনার ছবি]]
রাজনৈতিক অভিযানের তালিকা এবং [[পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার|পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার]] মধ্য দিয়ে গনচীনের গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়। [[অগ্রসরের মহালম্ফন]] বা Great Leap Forward এর কারনে ৪৫ মিলিয়ন মানুষকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়।<ref name="Akbar2010">{{Cite news|url =http://www.independent.co.uk/arts-entertainment/books/news/maos-great-leap-forward-killed-45-million-in-four-years-2081630.html |title= Mao's Great Leap Forward 'killed 45 million in four years'|accessdate=30 October 2010 |publisher=The Independent|location=London|first=Arifa|last=Akbar|date=17 September 2010}}</ref> মাও সরকার অগনিত ভূস্বামীদের গনহারে মৃত্যদন্ড কার্যকর করে। মৃত্যদন্ড ও বাধ্যতামূলক শ্রমদানে বিপুল সংখ্যক প্রানহারি ঘটনা ঘটে। ১৯৬৬ সালে মাও এবং তার মিত্ররা [[সাংস্কৃতিক আন্দোলন]] শুরু করে।, একদশক পরে মাও এর মৃত্যুর পরও এই আন্দোলন চলতে থাকে। দলের মধ্যে ক্ষমতার প্রতিযোগিতা আর [[সোভিয়েত ইউনিয়ন]]ভীতি ছিল এই সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মূল প্রেষনা।
১৬৫ নং লাইন:
১৯৭৬ সালে মাও এর মৃত্যুর পর কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব শুরু হয়। অতিরিক্ত সাংস্কৃতিক আন্দোলনের চর্চার জন্য [[চার জনের দল|চার জনের দলকে]] বা Gang of Four কে গ্রেফাতার করা হয়। সেই সাথে রাজনৈতিক ডামাডোলের অবসান হয়। [[দেং জিয়াওপিং]] সুকৌশলে চেয়ারম্যান [[হুয়া গাওফেং]]এর স্থলাভিষিক্ত হন এবং পরবর্তী কয়েক বছরের জন্য কমিউনিস্ট পার্টির একচ্ছত্র নেতা হিসাবে আবির্ভূত হন। দেং জিয়াওপিং ১৯৭৮ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত চীনের নেতা ছিলেন। যদিও তিনি কখনও পার্টি প্রধান কিংবা রাষ্ট্রপ্রধান ছিলেন না। তথাপি কমিউনিস্ট পার্টিতে তার দৃঢ় প্রভাব ছিল। তার প্রভাবে [[চীনের অর্থনৈতিক সংস্কার|চীনে অর্থনৈতিক সংস্কার]] সূচীত হয়। কমিউনিস্ট পার্টি ধীরে ধীরে জনগনের ব্যক্তিগত জীবনের উপর নিয়ন্ত্রন হারাতে থাকে। [[প্রজাসভা]] বা কমিউনগুলো থেকে প্রচুর জমি বিযুক্ত করে কৃষকদের নিকট লীজ দেয়া হয়। এর ফলে কৃষি উৎপাদন ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। এই পরিবর্তন চীনের অর্থনীতিকে একিপ পরিকল্পিত অর্থনীতি থেকে মিশ্র অর্থনীতির দিকে নিয়ে যায়।<ref name="Ref_e">{{cite web | last=Hart-Landsberg | first=Martin | last2=Burkett | first2=Paul | url= http://www.monthlyreview.org/chinaandsocialism.htm | title =China and Socialism: Market Reforms and Class Struggle | publisher = Monthly Review Press | ISBN=1-58367-123-4 | date=March 2010 | accessdate=30 October 2008}}</ref> কমিউনিস্ট পার্টির ভাষায় যাকে বলা হয় [[চৈনিক পদ্ধতির সমাজতন্ত্র]]।
 
১৯৮৯ সালে পার্টির প্রাক্তন সেক্রেটারি জেনারেল, [[হু ইয়াওব্যাং]] এর মৃত্যুর চীনে [[তিয়েনমেন স্কায়ার আন্দোলন|তিয়েনমেন স্কায়ার আন্দোলনের]] সূচনা হয়। এই আন্দোলনে ছা্ত্র ও সাধারনসাধারণ জনতা কয়েকমাস ব্যাপী এই আন্দোলনে বাকস্বাধীনতা ও গনতান্ত্রিক অধিকার, রাজনৈতিক সংস্কার ও দূর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়। ৪ জুন [[পিপলস লিবারেশন আর্মি]] তিয়েনমনে স্কয়ারে এই প্রতিবাদ সমাবেশ বলপূর্বক বন্ধ করে দেয়। এ সময়ে প্রচুর হতাহতের ঘটনা ঘটে। এঘটনা বিশ্বজুড়ে সমালোচিত হয়।<ref name="Ref_f">Youngs, R. ''The European Union and the Promotion of Democracy.'' Oxford University Press, 2002. ISBN 978-0-19-924979-4.</ref><ref name="Ref_g">Carroll, J. M. ''A Concise History of Hong Kong.'' Rowman & Littlefield, 2007. ISBN 978-0-7425-3422-3.</ref> [[ট্যাংক ম্যান]] নামের একটি ছায়াছবিতে তখনকার ঘটনা চিত্রিত হয়েছে।
 
==তথ্যসূত্র==