ঘূর্ণিঝড়: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Dexbot (আলোচনা | অবদান)
Removing Link GA template (handled by wikidata)
WikitanvirBot (আলোচনা | অবদান)
বট বানান ঠিক করছে, কোনো সমস্যায় তানভিরের আলাপ পাতায় বার্তা রাখুন
৫২ নং লাইন:
শুনতে তিনটি পৃথক ঝড়ের নাম মনে হলেও আসলে এগুলো অঞ্চলভেদে ঘূর্ণিঝড়েরই ভিন্ন ভিন্ন নাম। সাধারণভাবে ঘূর্ণিঝড়কে [[সাইক্লোন]] বা [[ট্রপিক্যাল সাইক্লোন]] বলা হয়। সাইক্লোন শব্দটি এসেছে [[গ্রিক]] শব্দ '''কাইক্লোস''' (kyklos) থেকে, যার অর্থ [[বৃত্ত]] বা চাকা। এটা অনেক সময় সাপের বৃত্তাকার কুন্ডলী বুঝাতেও ব্যবহূত হয়। [[১৮৪৮]] সালে [[হেনরি পিডিংটন]] তার [[‘সেইলর’স হর্ণ বুক ফর দি ল’অফ স্টর্মস’]] বইতে প্রথম '''সাইক্লোন''' শব্দটি ব্যবহার করেন। তারপর থেকেই ঘূর্ণিঝড় বুঝাতে সাইক্লোন শব্দের ব্যবহার শুরু হয়।
[[আটলান্টিক]] মহাসাগর এলাকা তথা [[আমেরিকা]]র আশেপাশে ঘূর্ণিঝড়ে বাতাসের গতিবেগ যখন ঘন্টায় ১১৭ কি.মি.-এর বেশীবেশি হয়, তখন জনগণকে এর ভয়াবহতা বুঝাতে [[হারিকেন]] শব্দটি ব্যবহার করা হয়। [[মায়া]] দেবতা [[হুরাকান]]- যাকে বলা হত ঝড়ের দেবতা, তার নাম থেকেই হারিকেন শব্দটি এসেছে। তেমনিভাবে,[[প্রশান্ত]] মহাসাগর এলাকা তথা [[চীন]], [[জাপানে]]র আশেপাশে [[হারিকেন]]- এর পরিবর্তে [[টাইফুন]] শব্দটি ব্যবহূত হয়, যা ধারণা করা হয় চীনা শব্দ '''টাই-ফেং''' থেকে এসেছে, যার অর্থ প্রচন্ড বাতাস। অনেকে অবশ্য মনে করেন [[ফার্সি ভাষা|ফার্সি]] বা [[আরবি ভাষা|আরবি]] শব্দ '''তুফান''' থেকেও টাইফুন শব্দটি আসতে পারে।
 
== ঘূর্ণিঝড়ের শ্রেণীবিভাগ ==
 
সাতটি বেসিনেই বাতাসের গতিবেগ অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়কে কতগুলো শ্রেণীতে ভাগ করা হয়েছে। আটলান্টিক এলাকার জন্য, প্রাথমিক অবস্থায় বাতাসের গতিবেগ যখন ঘন্টায় ৬২ কি.মি.-র নীচেনিচে থাকে, তখন একে শুধু [[নিম্নচাপ]] (Tropical depression) বলা হয়। বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় ৬২ কি.মি.-এ উন্নীত হলে এটিকে একটি নাম দেয়া হয় এবং ঘন্টায় ৬২ কি.মি. থেকে ১১৭ কি.মি. ব্যবধানে এটিকে একটি ঝড় বা Tropical storm বলা হয়। বাতাসের গতিবেগ যখন ঘন্টায় ১১৭ কি.মি.-এর বেশীবেশি হয়, তখন এটি [[হারিকেন]] পর্যায়ে উন্নীত হয়। বাতাসের তীব্রতা এবং ধ্বংসক্ষমতা অনুযায়ী হারিকেনকে আবার এক থেকে পাঁচ মাত্রার ৫ টি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। আবিষ্কারকের নামানুসারে এটি [[সাফির-সিম্পসন স্কেল]] নামে পরিচিত।
[[ভারত]] মহাসাগর এলাকা এবং বাংলাদেশের জন্য ঘূর্ণিঝড়ের শ্রেণীবিন্যাস ভিন্ন। এখানে নিম্নচাপকে আবার শুধু [[নিম্নচাপ]] এবং [[গভীর নিম্নচাপ]] এই দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় ৬২ কি.মি. থেকে ১১৭ কি.মি.-এর মধ্যে ঘূর্ণিঝড় এবং [[প্রচন্ড ঘূর্ণিঝড়]] নামে আরো দুই ভাগ করা হয়েছে। বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় ১১৭ কি.মি.-এর বেশীবেশি হলে যে নামটি ঠিক করা হয়েছে তা বেশ লম্বা- [[হারিকেন ক্ষমতা সম্পন্ন প্রচন্ড ঘূর্ণিঝড়]]।
 
== হারিকেনের নামকরণ ==
 
[[আটলান্টিক]] মহাসাগর এলাকায় বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় ৬২ কি.মি.-এ উন্নীত হলে অর্থাৎ [[নিম্নচাপ]] যখন ঝড়ে পরিণত হয়, তখন এটিকে চিহ্নিত করার জন্য একটি নাম দেয়া হয়। [[হারিকেন]] অবস্থাতেও এগুলো এ নামেই পরিচিত হয়। ইংরেজি বর্ণমালা অনুসারে ২১ টি নাম (৫ টি অক্ষর বাদ দিয়ে) এক বছরের জন্য বাছাই করা হয় যেগুলো সাধারণত পর্যায়ক্রমিকভাবে ছেলে ও মেয়েদের নাম দিয়ে রাখা হয়। যেমন-[[২০০৬]] সালের প্রথম হারিকেনটির নাম [[আলবার্টো]], দ্বিতীয়টি [[বেরিল]] ইত্যাদি। এক বছরে ২১ টির বেশীবেশি হারিকেন উৎপন্ন হলে (২০০৫ সালে যেমন হয়েছিল), গ্রিক বর্নমালা অনুযায়ী নামকরণ করা হয়- হারিকেন আলফা, বিটা ইত্যাদি। এরকম ছয় বছরের জন্য নাম আগেই নির্ধারণ করে রাখা হয় এবং ছয় বছর পর পর একই নামগুলো আবার ফিরে আসে। যেমন [[২০০৫]] সালের নামগুলো আবার [[২০১১]] সালে ফিরে আসবে। তবে [[ক্যাটরিনা]] নাম আর কখনো ফিরে আসবে না, কারণ ধ্বংসাত্মক হারিকেনের নামগুলো তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয় এবং নতুন নাম নির্ধারণ করা হয়। [[২০১১]] সালে [[ক্যাটরিনা]]র জায়গায় তাই নতুন হারিকেনের নাম হবে [[ক্যাটিয়া]] (Katia)।
[[বাংলাদেশ]] তথা [[উত্তর ভারত মহাসাগর]] এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হয় না। তার পরিবর্তে, [[আরব সাগর]] এলাকায় উৎপন্ন ঝড়গুলোকে '''A''' এবং [[বঙ্গোপসাগরে]] উৎপন্ন ঝড়গুলোকে '''B''' অক্ষর দিয়ে চিহ্নিত করা হয়। [[১৯৯১]] সালের [[২৯]] শে [[এপ্রিল]] যে ঘূর্ণিঝড় [[বাংলাদেশে]] আঘাত হেনেছিল তার পরিচয় TC-02B হিসেবে, তার মানে এটি ছিল ১৯৯১ সালে [[বঙ্গোপসাগরে]] উৎপন্ন দ্বিতীয় ঘূর্ণিঝড়। সম্প্রতি সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের নাম [[মালা]] হলেও আসলে এটি কোন নাম নয়। একাধিক ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের সৃষ্টি হওয়াতে বিজ্ঞানীরা একে ঘূর্ণিমালা বলছিলেন, সেটাই সংক্ষেপে মালা নামে পরিচিত হয়েছিল। পৃথিবীর অন্যান্য মহাসাগরে উৎপন্ন ঘূর্ণিঝড়গুলিরও বিভিন্ন নাম দেয়া হয়।
৭৪ নং লাইন:
== ঘূর্ণিঝড়ে সৃষ্ট দুর্যোগসমূহ ==
 
[[বাংলাদেশে]] [[১৯৭০]] সালের ১২ই [[নভেম্বর]] ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে প্রায় ৩ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ লোক মৃত্যুবরণ করেছিল। [[পৃথিবী]]র ইতিহাসে ঘূর্ণিঝড়ে এত বেশীবেশি লোক আর কখনো মারা যায় নি। [[চিত্র:1991 Bangladesh cyclone track.png|thumb|right|[[১৯৯১]] সালের ২৯শে [[এপ্রিল]] ঘূর্ণিঝড় ]] [[১৯৯১]] সালের ২৯শে [[এপ্রিল]] ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় এক লক্ষ চল্লিশ হাজার লোক নিহত হয়েছিল এবং [[চট্টগ্রাম]] সমুদ্র বন্দর ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল। [[১৮৭৬]] সালের বিখ্যাত '''বাকেরগঞ্জ''' সাইক্লোনে প্রায় ২ লক্ষ লোক নিহত হয়েছিল, এর মধ্যে প্রায় এক লক্ষ লোক মারা গিয়েছিল [[দুর্ভিক্ষ]] ও [[মহামারী]]তে। [[আইন-ই-আকবরী]] গ্রন্থে আমরা [[১৫৮২]] খ্রীষ্টাব্দে বাকেরগঞ্জ তথা বর্তমান [[বরিশালে]] আঘাত হানা আরেকটি ঘূর্ণিঝড়ের কথা জানতে পারি, যেটিতেও প্রায় ২ লক্ষ লোক নিহত হয়েছিল।
 
[[চিত্র:Galveston - 1900 wreckage.jpg|thumb|300px|right|গ্যালভেস্টন ঘূর্ণিঝড়]]