গণেশপুরাণ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
৪৩ নং লাইন:
[[File:Ashtbhuja Ganpati.JPG|thumb|300px|গণেশ পূজামণ্ডপে সুসজ্জিত অষ্টভূজ গণেশমূর্তি; [[পুণে]], [[মহারাষ্ট্র]], [[ভারত]]।]]
''গণেশপুরাণ'' গ্রন্থের প্রথম ভাগ ‘উপাসনাখণ্ডে’ দুই ধরণের পূজার কথা বলা হয়েছে।<ref name=stevensongp320>R Stevenson, {{Google books|euhJAAAAcAAJ|Analysis of Ganesa Purana}}, Journal of the Royal Asiatic Society, Art 16, Vol 8, page 320</ref>{{Sfn|Bailey|1995|pp=89-91, 103-105}} একটিতে [[হিন্দু দর্শন|হিন্দু দর্শনের]] [[বেদান্ত]] শাখায় বর্ণিত সর্বোচ্চ [[ব্রহ্ম]] রূপে গণেশের ধ্যান ও আধ্যাত্মিক মননের উল্লেখ রয়েছে। এই মত অনুসারে, গণেশ সর্বোচ্চ ঈশ্বর ও ‘পরমাত্মা’ (নির্গুণ ও সর্বোচ্চ সত্ত্বা)। তিনি ও [[আত্মা (হিন্দুধর্ম)|আত্মা]] অভিন্ন।{{Sfn|Bailey|1995|pp=50-51, 104, 147-150, 255-259, 263-265, 458}} দ্বিতীয় উপাসনা পদ্ধতিতে গণেশের একটি সগুণ [[মূর্তি]] ফুল দিয়ে সাজিয়ে, উপচার নিবেদন করে ও উৎসব পালন করে তাঁকে [[পূজা (হিন্দুধর্ম)|পূজা]] করার কথা রয়েছে।<ref name=stevensongp320/>{{Sfn|Bailey|1995|pp=65-66, 104-118}} উপাসনাখণ্ডে এই ধারণাগুলি পর পর সজ্জিত উপাখ্যান ও সৃষ্টিরহস্য-সংক্রান্ত আলোচনার মাধ্যমে উপস্থাপিত হয়েছে। এগুলিতে প্রাচীন পৌরাণিক উপাখ্যানগুলিকে ক্রিয়াশীল অভিজ্ঞতাপ্রসূত সত্যজ্ঞান এবং গণেশকে বৈদান্তিক ব্রহ্ম বা সর্বোচ্চ অপরিবর্তনীয় সত্য রূপে দর্শানো হয়েছে।<ref>R Stevenson, {{Google books|euhJAAAAcAAJ|Analysis of Ganesa Purana}}, Journal of the Royal Asiatic Society, Art 16, Vol 8, page 321</ref>{{Sfn|Bailey|1995|pp=51-52, 65-68, 392-393}}
=== ক্রীড়াকাণ্ড: গণেশগীতা ===
‘ক্রীড়াকাণ্ড’ অংশের ১৩৮-৪৮ অধ্যায়গুলি ''গণেশগীতা'' নামে পরিচিত। এটি ''[[ভগবদ্গীতা]]'' গ্রন্থের আদলে রচিত। শুধু এই গ্রন্থে গণেশ ঈশ্বরের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন।<ref>Rocher, Ludo. "{{IAST|Gaṇeśa}}'s Rise To Prominence", p. 73 in: Ganesh: Studies of an Asian God, Robert L. Brown, editor. (State University of New York: Albany, 1991) ISBN 978-0-7914-0657-1</ref> এই অংশটি রাজা বরেণ্য ও গণেশের গজানন অবতারের কথোপকথনের আকারে রচিত।
 
{{Quote box
|quote = '''নিজ আত্মাকে জানো'''
<poem>
গণেশ বললেন, “যাঁরা নিজ আত্মায় সুখ পান এবং নিজ আত্মায় নিমগ্ন, তাঁরা আনন্দ ও অবিনশ্বর সুখ প্রাপ্ত হন। কারণ, ইন্দ্রিয়সুখে কোনো আনন্দই নেই। ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য বস্তুসকল হতে যে সুখ জন্মায়, তা দুঃখের কারণ হয়। তা জন্ম ও সংহারের সঙ্গে যুক্ত। জ্ঞানী ব্যক্তি সেই সুখে আকৃষ্ট হন না। (...)
 
যিনি আত্মায় নিবদ্ধ, যিনি আত্মায় উজ্জ্বল, যিনি আত্মায় আনন্দিত, যিনি আত্মসুখে মগ্ন, তিনি অবশ্যই অবিনশ্বর ব্রহ্মজ্ঞান প্রাপ্ত হন এবং সকল লোকের হিতকর কর্মসাধন করবেন। (...)
 
শোনো! যাঁরা নিজ আত্মাকে জানেন, তাঁরা সর্বত্র ব্রহ্মদর্শন করে থাকেন। (...)
</poem>
|source = —''গণেশপুরাণ'', ক্রীড়াকাণ্ড, ১৪২। ২১ – ১৪২।{{Sfn|Bailey|2008|pp=386-387}}
|width = 36%
|bgcolor=#FFE0BB
|align = right
}}
যুবরাজ কৃষ্ণনের মতে, ''গণেশগীতা'' গ্রন্থের নব্বই শতাংশ শ্লোকই ''[[ভগবদ্গীতা]]'' থেকে সামান্য পরিমার্জনা সহকারে গৃহীত।<ref name="Krishan 1999 79–80">{{Harvnb|Krishan|1999|pp=79–80}}</ref> উভয় গ্রন্থের আলোচ্য বিষয়বস্তুও এক। তা হল [[কর্মযোগ]], [[জ্ঞানযোগ]] ও [[ভক্তিযোগ]]। শুধু ''গণেশগীতা'' গ্রন্থে গণেশ [[কৃষ্ণ|কৃষ্ণের]] পরিবর্তে ঈশ্বরের ভূমিকায় অবতীর্ণ।<ref name="Krishan 1999 79–80"/>
 
অন্যদিকে গ্রেগ বেইলির মতে, খুব সম্ভবত ''ভগবদ্গীতা'' গ্রন্থটি ''গণেশগীতা'' গ্রন্থের উৎস হলেও, ''গণেশগীতা'' গ্রন্থে মাত্র ৪১২টি শ্লোক রয়েছে। এই গ্রন্থে ''ভগবদ্গীতা'' গ্রন্থে উল্লিখিত একটি বড়ো অংশই অনুল্লিখিত রয়ে গিয়েছে। তাই উভয় গ্রন্থ সব দিক থেকে একই ধরণের এবং ''গণেশগীতা'' গ্রন্থে শুধুমাত্র গণেশকে কৃষ্ণের স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে বললে ভুল হবে।{{Sfn|Bailey|2008|p=617}} এই গ্রন্থে গণেশ ও রাজা বরেণ্যর কথোপকথনের ভক্তিটি অন্যরকম। ''ভগবদ্গীতা'' গ্রন্থে দেখা যায় [[অর্জুন]] অনুসন্ধিৎসু হয়ে কৃষ্ণকে দর্শন-সংক্রান্ত প্রশ্ন করছেন। কিন্তু ''গণেশগীতা'' গ্রন্থে বরেণ্য গণেশ সম্বন্ধেই প্রশ্ন করছেন। তাই এই চরিত্রটি অর্জুন চরিত্র থেকে দুর্বলতর। যদিও বেইলি এই কথা স্বীকার করেছেন যে, উভয় গ্রন্থে যে ধর্মতত্ত্ব আলোচিত হয়েছে, তা বস্তুত এক।{{Sfn|Bailey|2008|p=617}}
 
== তথ্যসূত্র ==