চার্লস থম: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
২৬ নং লাইন:
==প্রাথমিক জীবন==
 
থমের জন্ম ১৮৭২ সালে ইলিনয়ের মিনঙ্কে। তিনি ছিলেন ছয় ভাইয়ের মধ্যে পঞ্চম। তার পিতা-মাতা অ্যানগাস সাথারল্যান্ড থম এবং লুইসা (হেরিক) থম ছিলেন স্কটিশ/আইরিশ কৃষক যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গৃহযুদ্ধের কিছু পূর্বে ইলিনয়ে বসবাস শুরু করেন। চার্লস থমের পরিবার ছিল খুবই ধার্মিক। তার বাবা প্রেসবাইটেরিয়ান চার্চের একজন এল্ডার ছিলেন। থম তার জীবন জুড়ে প্রেসবাইটেরিয়ান রীতিনীতি ধরে রাখেন,চার্চের কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ছিলেন এবং কঠোর অ্যালকোহল বিরোধী হয়ে উঠেন। প্রাথমিক জীবনে তার বাবার খামারে কাজ করার অভিজ্ঞতা তার মধ্যে শক্তিশালী নৈতিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করে এবং এ সময় তিনি কৃষিজাত বিভিন্ন বিষয়ে ব্যবহারিক জ্ঞান লাভ করেন যা পরবর্তী জীবনে তার কাজে লেগেছিল।<ref name="Raper 1965"/>
 
হাই স্কুল থেকে গ্র্যাজুয়েট করার পর ১৮৮৯ সালে থম লেক ফরেস্ট অ্যাকাডেমীতে যোগ দেন। এটি ছিল কলেজের প্রস্তুতির জন্য একটি প্রতিষ্ঠান। ১৮৯৫ সালে তিনি লেক ফরেস্ট কলেজ থেকে ব্যাচেলরস ডিগ্রী অর্জন করেন। পরবর্তী বছর তিনি একজন বিজ্ঞান শিক্ষক হিসেবে ডানভিল হাই স্কুলে শিক্ষকতা করেন। ১৮৯৭ সালে তিনি লেক ফরেস্ট কলেজে ফেরত আসেন তার মাস্টার্স ডিগ্রীর জন্য।<ref name="Raper 1965"/> ১৮৯৯ সালে তিনি হাওয়ার্ড এয়ার্স এর তত্ত্বাবধানে কাজ করার সময় ইউনিভার্সিটি অফ মিসৌরি থেকে পিএইচডি লাভ করেন। তার পিএইচডির বিষয় ছিল অ্যাসিপিডিয়ামAspidium এবং অ্যাডিয়ান্টামAdiantum ফার্ণের নিষেক।<ref name="Raper 1957"/> এটি ছিল এই প্রতিষ্ঠানটির দেওয়া প্রথম ডক্টরেট।<ref name="Raper 1965"/><ref name="Rogers 1977"/> ১৯০৬ সালে তিনি ইথেল উইনিফ্রেড স্লেটার কে বিয়ে করেন। তাদের তিন সন্তান ছিল ( একজন প্রসাবস্থায় মারা যায় )। ইথেল থম ১৯৪২ সালের অক্টোবরে মারা যান, তার অবসরের কিছু আগে। ১৯৪৪ সালে তিনি পুনরায় বিয়ে করেন, চালোরেট জে বেলেস কে, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তার সাথেই ছিলেন তিনি। চালোরেটের মৃত্যুর দুই বছর পর, ১৯৫৬ সালে ২৪ মে, নিউ ইয়র্কের পোর্ট জেফারসনে নিজ বাসায় থম মৃত্যুবরণ করেন।<ref name="Raper 1965"/>
 
==পেশা==
 
১৯০২ সালে থম, জর্জ এফ. অ্যাটকিনসনের সাথে কর্নেল ইউনিভার্সিটিতে পড়াশুনা করতে যান। তাদের দুইজন সহকর্মী ছিলেন বেনজামিন ডুগগার এবং হার্বার্ট হাইস ওয়েটজেল। এ দুইজন পরবর্তীতে উদ্ভিদবিদ হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। দুই বছর পর থম একজন দুগ্ধজাত ছত্রাকবিদ্যা বিশেষজ্ঞ হিসেবে কানেটিকাটের ‘স্টোরস এগ্রিকালচারাল এক্সপেরিমেন্ট স্টেশন’ যোগদান করেন। সেখানে তিনি হার্বার্ট উইলিয়াম কন এর সাথে ‘পনির তদারকি’র দায়িত্বে ছিলেন। এই প্রতিষ্ঠানটি ছিল ইউএস খাদ্য মন্ত্রণালয়ের (ইউএসডিএ) একটি শাখা। এখানে তিনি গবেষণা ও প্রশাসনিক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন ছিলেন ১৯৪২ সালে তার অবসরের পূর্ব পর্যন্ত। এখানে চাকরিকালীন সময়ে, থম পনির পাকা করার প্রক্রিয়ার উপর গবেষণা চালান এবং পনিরে বিভিন্ন স্বাদ যোগ করার উপর অণুজীব উদ্ভিদকুলের সংযুক্তির প্রভাব বুঝার প্রয়াস চালান। তার কাজের মাধ্যমে তিনি Penicillium camemberti ও Penicillium roqueforti ছত্রাক দুইটিকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করেন।<ref name="Raper 1956"/>
 
১৯১৪ সালে ইউএসডিএ এর রসায়ন দপ্তরের অণুজীব গবেষণাগারের প্রধান হন থম। এখানে তার কাজ ছিল খাদ্য পরিচালনা ও প্রক্রিয়াজাতকরণের সমস্যা চিহ্নিত করা এবং পিউর ফুড এন্ড ড্রাগ এক্ট, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি ফেডেরাল আইন যা খাদ্যপণ্যের ফেডেরাল পরিদর্শন জারি করে, প্রয়োগ করা। খাদ্যশিল্পে উচ্চ মান ধরে রাখার জন্য তিনি সচেষ্ট ছিলেন। তিনি “ক্ষয়িষ্ণু খাদ্য পরিচালনা ও প্রক্রিয়াজাতকরণে স্যানিটারি চর্চার পক্ষ সমর্থনে” আদালতের মামলার তর্ক উপভোগ করতেন।<ref name="Raper 1956"/> টমেটো কেচাপের ভেজাল সংক্রান্ত এরকম একটি মামলায়, তিনি আংশিক পচা টমেটো জুরির সামনে উপস্থাপন করেন এবং সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে তাদের জিজ্ঞাসা করেন, “আমেরিকার মানুষদের কী তাদের কেচাপে এই খাওয়া উচিত?”<ref name="Raper 1965"/>
 
ইউএসডিএতে কাজ করার সময় তিনি Aspergillus ও Penicillium বর্গের উপর সারাবিশ্বে সবচেয়ে পণ্ডিত ব্যক্তিতে পরিণত হন। <ref name="Raper 1957"/><ref name="Raper 1956"/> তিনি পুনরায় ব্যবহারযোগ্য কালচার মিডিয়া ব্যবহার করে অণুজীব উৎপাদনের উপায় উদ্ভাবন করেন। তার বর্ণিত বেশির ভাগ ট্যাক্সা এখনও ব্যবহৃত হচ্ছে।<ref name="Raper 1965"/> মার্গারেট বি চার্চের সাথে তিনি ১৯২৫ সালে প্রতিষ্ঠিত আমেরিকান টাইপ কালচার কালেকশন এর জন্য ছত্রাক কালচার সংগ্রহ করতেন।<ref name="Ainsworth 1976"/> পেনিসিলিন আবিষ্কারের এক বছর পর, ১৯২৯ সালে<ref name="Fleming 1929"/>, অ্যালেকজান্ডার ফ্লেমিং একটি বিখ্যাত পেপার প্রকাশ করেন যেখানে তিনি Penicillium rubrum এর ছাঁচ, অ্যান্টিবায়োটিক তৈরির জন্য দায়ী বলে উল্লেখ করেন। হ্যারল্ড রাইসট্রিক একটি সাধারণ কালচার মিডিয়ামে অণুজীব জন্মাতে সক্ষম হন কিন্তু এই উপায়ে তিনি ছাঁচ থেকে তৈরি হওয়া পেনিসিলিন পৃথক করতে পারেন নি।<ref name="Mann 2004"/> থমের সাহায্যে নিয়ে তারা সঠিকভাবে Penicillium notatum অণুজীব চিহ্নিত করতে সক্ষম হন এবং ১৯৪১ সালে এমন একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন যা ইলিনয়ের পিওরিতে অবস্থিত খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উত্তরাঞ্চলীয় গবেষণাগারে উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়। ফলশ্রুতিতে, সুলভ মূল্যে ওষুধটির সরবরাহ নিশ্চিত হয়।<ref name="ACS"/>
{{quote box|width=25%|bgcolor=#c6dbf7|align=right|quote="খাদ্য মন্ত্রণালয়ে তার সক্রিয় কর্মজীবনে [থম] বিশ্বজুড়ে অন্যান্য গবেষকদের জন্য হাজারো কালচার চিহ্নিত করেন। এই কাজের কৃতিত্ব পাবেন কিনা তা নিয়ে তিনি বিন্দুমাত্র ভাবেননি। তিনি ছিলেন একজন নিঃস্বার্থ ও একনিষ্ঠ বিজ্ঞানী এবং জনগণের সেবক।"|salign=right|source=কেনেথ বি রাপের<ref name="Raper 1965"/>}}
 
১৯১৬-১৭ সালের দিকে খাদ্য রসায়নবিদ জেমস এন কুরি এর সাথে তিনি Aspergillus ব্যবহার করে বিপুল পরিমাণে সাইট্রিক এসিড উৎপাদনের একটি উপায় উদ্ভাবন করেন। এর কয়েক বছর পরই নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিনে প্রথম বৃহদাকারে ছাঁচ গাজন কারখানা স্থাপিত হয়। তাদের পূর্বেকার এই কাজের ফলে খাদ্য মন্ত্রণালয় ১৯৩৮ সালে চারটি আঞ্চলিক গবেষণাগার স্থাপন করে যারা শুধু বাণিজ্যিক ছাঁচ গাজন নিয়ে কাজ করত।<ref name="Raper 1965"/>
 
১৯২৭ সালে রসায়ন দপ্তরে তার পদটি বিলুপ্ত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত থম সেখানে কাজ চালিয়ে যান। এরপর তিনি নতুন প্রতিষ্ঠিত রসায়ন ও ভূমি দপ্তরের ভূমি অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ছত্রাক বিশেষজ্ঞ নিযুক্ত হন। থম ভূমি অণুজীববিজ্ঞানের একজন পণ্ডিতে পরিণত হন এবং প্রায়শই তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অধিবেশনে পেপার উপস্থাপন করতেন। এইক্ষেত্রে থমের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি অবদান হচ্ছে, তিনি তুলোর মূল পচন, যা দক্ষিণ-পশ্চিম যুক্তরাষ্ট্রে একটি বড় সমস্যা ছিল, তা নিয়ন্ত্রণ করার উপায় আবিষ্কার করে যে গবেষণা দল তার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তার শিষ্যের সাথে তিনি Manual of Penicillin প্রকাশ করেন ১৯৪০ সালে। ১৯৪২ সালে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে অবসর গ্রহণ করেন, যদিও তিনি তার মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত একজন উপদেষ্টা ও অতিথি বক্তা হিসেবে সক্রিয় ছিলেন।<ref name="Raper 1965"/>
 
১৯২৭ সালে রসায়ন দপ্তরে তার পদটি বিলুপ্ত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত থম সেখানে কাজ চালিয়ে যান। এরপর তিনি নতুন প্রতিষ্ঠিত রসায়ন ও ভূমি দপ্তরের ভূমি অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ছত্রাক বিশেষজ্ঞ নিযুক্ত হন। থম ভূমি অণুজীববিজ্ঞানের একজন পণ্ডিতে পরিণত হন এবং প্রায়শই তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অধিবেশনে পেপার উপস্থাপন করতেন। এইক্ষেত্রে থমের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি অবদান হচ্ছে, তিনি তুলোর মূল পচন, যা দক্ষিণ-পশ্চিম যুক্তরাষ্ট্রে একটি বড় সমস্যা ছিল, তা নিয়ন্ত্রণ করার উপায় আবিষ্কার করে যে গবেষণা দল তার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তার শিষ্যের সাথে তিনি Manual of Penicillin প্রকাশ করেন ১৯৪০ সালে। ১৯৪২ সালে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে অবসর গ্রহণ করেন, যদিও তিনি তার মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত একজন উপদেষ্টা ও অতিথি বক্তা হিসেবে সক্রিয় ছিলেন।
 
==সদস্যপদ ও সম্মান==
 
১৯০৫ সালে ফ্রান্সের প্যারিসে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ডেইরি কংগ্রেসে থম ছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি। তিনি ইউএসডিএ তে একটি স্নাতক শিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে সাহায্য করেন। ১৯০৭ সালে তিনি ডেইরি অ্যাসোসিয়েশন অফ আমেরিকার একজন চার্টার সদস্য হন এবং ১৯১৮ সালে তিনি ব্যাকটেরিওলজিকাল অ্যাসোসিয়েশন অফ ওয়াশিংটন এর প্রেসিডেন্ট নিযুক্ত হন। তিনি ১৯৩৫ সালে ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ডে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সয়েল কংগ্রেসে যোগদান করেন এবং ১৯৩৯ সালে নিউ ইয়র্কে আন্তর্জাতিক মাইক্রোবায়োলজিকাল কংগ্রেস এর ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তিনি ন্যাশনাল অ্যাকাডেমী অফ সায়েন্সেস এর সদস্য , মাইকোলজিকাল সোসাইটি অফ আমেরিকার চার্টার সদস্য এবং সোসাইটি অফ আমেরিকান ব্যাকটেরিওলজিস্টস এর প্রেসিডেন্ট ( ১৯৪০ ) এবং সোসাইটি অফ ইন্ডাস্ট্রিয়াল মাইক্রোবায়োলজি এর প্রেসিডেন্ট (১৯৫০) ছিলেন। ১৯৩৬ সালে লেক ফরেস্ট কলেজ তাকে সম্মানজনক ডক্টর অফ সায়েন্স ডিগ্রি প্রদান করে। পেনিসিলিন এর উপর তার কাজের জন্য, তাকে এবং তার গবেষণা দলকে ১৯৪৬ সালে লাস্কের গ্রুপ অ্যাওয়ার্ড এবং ১৯৪৭ সালে ইউএসডিএ ডিশটিংগুইশড সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। একই বছর তিনি অণুজীববিজ্ঞান ও চিকিৎসাবিদ্যায় অবদানের জন্য স্প্যানিশ ন্যাশনাল রিসার্চ কাউন্সিল থেকে গোল্ড মেডেল পান।<ref name="Raper 1965"/>
 
==বর্ণিত ট্যাক্সা==