থিওডোর গোল্‌ড্‌স্ট্যুকর: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সন্দীপ সরকার (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
সন্দীপ সরকার (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
৪ নং লাইন:
[[File:HoraceHaymanWilson.jpg|thumb|প্রখ্যাত [[জার্মান]] শিক্ষাবিদ আলেকজাণ্ডার ফন হুমবোলত (Alexander von Humboldt)]]
 
১৮৪২ খ্রিস্টাব্দে তিনি তাঁর সংস্কৃতচর্চার প্রথম নিদর্শন হিসাবে [[কৃষ্ণ মিশ্র]] (১০৫০ -১১০০ খ্রিঃ) প্রণীত 'প্রবোধচন্দ্রোদয়' নাটকের একখানি [[জার্মান]] অনুবাদ প্রকাশ করেন; উল্লেখ্য, এ'গ্রন্থে তাঁর দর্শন অধ্যাপক রোজেন্‌-ক্রান্‌ৎসের মুল্যবান ভূমিকা সন্নিবেশিত হয়েছিলো। কিন্তু গ্রন্থের কোথাও তিনি অনুবাদকের নাম উল্লেখ করেননি। এই সময় তিনি [[প্যারিস|পারীতে]] এসে তিন বছর বসবাস করেন এবং বিখ্যাত [[ফরাসি]] মনীষী ও [[ভারততত্ত্ববিদ]] বুর্নুফের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা হয়। ১৮৪৪ সালে [[বুর্নুফ]] 'ভারতীয় বৌদ্ধধর্মের ইতিহাস' গ্রন্থখানি রচনা করেন এবং এ'ক্ষেত্রে তিনি গোল্‌ড্‌স্ট্যুকরের কাছ থেকে প্রভূত সাহায্য পেয়েছিলেন। ১৮৪৪ খ্রিষ্টাব্দে গোল্‌ড্‌স্ট্যুকর প্রথমবারের জন্য [[ইংলণ্ড]] গমন করেন এবং অক্সফোর্ডের বড্‌লিয়ান লাইব্রেরিতে ও লন্ডনের ইস্ট ইণ্ডিয়া হাউসে রক্ষিত প্রাচীন সংস্কৃত পুথিঁর বিপুল সম্ভার হাতে পান। এরপর তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং ১৮৪৭ থেকে ১৮৫০ পর্যন্ত [[বার্লিন|বার্লিনে]] বসবাস করেন। এখানে তিনি প্রখ্যাত [[জার্মান]] শিক্ষাবিদ আলেকজাণ্ডার ফন হুমবোলতের (Alexander von Humboldt) সঙ্গে পরিচিত হন। উল্লেখ্য, হুমবোলতের 'কস্‌মস্‌' শীর্ষক গ্রন্থের ভারতীয় প্রসঙ্গের সংকলনে তিনি সহায়তা করেন। কিন্তু তাঁর উদারনৈতিক রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে তৎকালীন জার্মান শাসকের বিষনজরে পতিত হন এবং ১৮৪৮ সালের [[জার্মান]] বিপ্লবের সময় তাঁকে [[জার্মান]] পরিত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। ১৮৫০ সালে [[ইংরেজ]] সংস্কৃতজ্ঞ মনীষী হোরেস হেম্যান উইলসন (Horace Hayman Wilson) যখন তাঁর প্রণীত সংস্কৃত অভিধানের একটি নতুন সংস্করণের প্রণয়ন-কার্যে গোল্‌ড্‌স্ট্যুকরের সাহায্য চেয়ে তাঁকে আহ্বান জানালেন তখন তিনি আনন্দের সঙ্গে সে আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন এবং [[ইংলণ্ড|ইংলণ্ডের]] স্থায়ী বাসিন্দা হতে এতটুকু ভুল করেন নি। ১৮৫২ খ্রিস্টাব্দে উইলসন সাহেবের প্রস্তাবক্রমে থিওডোর গোল্‌ড্‌স্ট্যুকর লণ্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যের অবৈতনিক অধ্যাপক নিযুক্ত হন এবং আমৃত্যু তিনি ঐ পদে আসীন ছিলেন। ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি উইলসনকৃত সংস্কৃত অভিধানের সম্পাদনের কাজ শুরু করেন; কিন্তু নিজ পরিকল্পনানুযায়ী তিনি এতে প্রচুর নতুন শব্দ ও তাদের বিচিত্র ব্যবহার সম্বলিত উদাহরণ সন্নিবেশিত করেন ; এর ফলে অভিধানের কলেবর অত্যাধিক বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়। তাই ১৮৫৬-৬৪ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে কেবল বর্ণমালার প্রথম অক্ষর 'অ'-সম্বলিত অংশটুকুই ৪৮০ পৃষ্ঠায় প্রকাশিত হয়েছিলো। সঙ্গত কারণে এই উদ্যোগ পরিতক্ত্যপরিত্যক্ত হয়েছিলো। <ref>'পণ্ডিতপ্রবর থিওডোর গোল্‌ড্‌স্ট্যুকর', দেশ, ২৩ আশ্বিন, ১৩৬৬ বঙ্গাব্দ; গৌরাঙ্গগোপাল সেনগুপ্ত, বিদেশীয় ভারত বিদ্যা পথিক, কলিকাতা, ১৯৬৫;</ref> ১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দে গোল্‌ড্‌স্ট্যুকরের সাধারণ সম্পাদনায় লণ্ডনে একটি সংস্কৃত-গ্রন্থপ্রকাশন সমিতি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে গোল্‌ড্‌স্ট্যুকর মাধবাচর্যের মীমাংসা দর্শন-বিষয়ক বিখ্যাত গ্রন্থ 'জৈমিনীয় ন্যায়মালাবিস্তরঃ' সম্পাদনা করতে শুরু করেন; কিন্তু এ'কাজও তিনি সমাপ্ত করে যেতে পারেননি। তাঁর মৃত্যুর পর অধ্যাপক [[এডওয়ার্ড বাইলস কাওয়েল]] (১৮২৬-১৯০৩) এই অসমাপ্ত কাজ সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করেন।
 
[[চিত্র:Portrait of Edward Byles Cowell by Charles Edmund Brock-1905.jpg|thumb|left|[[এডওয়ার্ড বাইলস কাওয়েল]]]]
 
১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দে গোল্‌ড্‌স্ট্যুকর 'মানবকল্পসূত্র' শীর্ষক একখানি প্রাচীন গ্রন্থ কুমারিলের টীকাসহ প্রকাশ করেন। এবং এর ভূমিকা হিসাবে সংস্কৃত বৈয়াকরণ পাণিনির প্রসিদ্ধ সংস্কৃত ব্যাকরণ-সম্পর্কিত তাঁর গবেষণা গ্রন্থটিও 'পাণিনি আণ্ড হিজ প্লেস ইন স্যান্‌স্‌ক্রিট লিটারেচার' নামে প্রকাশ পায়। পাণিনির ব্যাকরণ বিষয়ে গোল্‌ড্‌স্ট্যুকরের গবেষণা গ্রন্থটি তাঁর সংস্কৃত ব্যাকরণ বিষয়ে প্রগাঢ় জ্ঞানের পরিচায়ক। এ'বইয়ে তিনি ম্যাক্স মুলার, রোট্‌ ও ব্যটলিঙ্ক-প্রমুখ সমসাময়িক পাশ্চাত্য পণ্ডিতগণের মত খণ্ডন করার পাশাপাশি নিজের মৌলিকতার পরিচয় দিয়েছেন। মৃত্যুর কিছুদিন পূর্বে তিনি পতঞ্জলিকৃত মহাভাষ্যের একটি সংস্করণের কাজে ব্যস্ত ছিলেন; তাঁর মৃত্যুর পর অবশ্য এই গ্রন্থটি প্রকাশ পেয়েছিলো। প্রাচীন হিন্দু ব্যবহারশাস্ত্রে তাঁর অগাধ পাণ্ডিত্য থাকায় প্রয়োজনে প্রিভি কাউন্সিল হিন্দু আইনঘটিত প্রশ্নে তাঁর মতামত গ্রহণ করতো। তাঁর 'লিটারেরি রিমেন্‌স' শীর্ষক প্রবন্ধ সংগ্রহের দ্বিতীয় খণ্ডে হিন্দু আইনসংক্রান্ত বিষয়ে কয়েকটি আলোচনা সংকলিত হয়েছে। এ'ছাড়াও ভারতীয় সংস্কৃতি ও সাহিত্যের নানা দিক নিয়ে 'চেম্বার্স এন্‌সাইক্লোপিডিয়া' নামক ইংরাজী বিশেকোষে তিনি অনেকগুলি নিবন্ধ রচনা করেছেন।<ref>journal of the Royal Asiatic Society of Great Britain and Ireland, New series, Vol.V, 1873; </ref>
 
==তথ্যসূত্র==