পদার্থবিজ্ঞান: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Joyotu (আলোচনা | অবদান)
Rahul amin roktim (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
২ নং লাইন:
 
'''পদার্থবিজ্ঞান''' ({{lang-en|Physics}}) [[পদার্থ]] ও তার [[গতি|গতির]] [[বিজ্ঞান]]।<ref>
[[R. P. Feynman]], [[R. B. Leighton]], [[M. Sands]] (1963), ''[[The Feynman Lectures on Physics]]'', ISBN 0-201-02116-1 Hard-cover. p.1-1 ফাইনম্যান [[পারমাণবিক অনুকল্প]] দিয়ে আরম্ভ করেছেন।</ref> এর ইংরেজি পরিভাষা Physics শব্দটি [[গ্রিক ভাষা|গ্রিক]] ''φύσις'' (''ফুসিসফুঁসিস'') অর্থাৎ "প্রকৃতি", এবং ''φυσικῆ'' (''ফুসিকেফুঁসিকে'') অর্থাৎ "প্রকৃতি সম্পর্কিত জ্ঞান" থেকে এসেছে। অত্যন্ত বিমূর্তভাবে বলতে গেলে, পদার্থবিজ্ঞান হল সেই বিজ্ঞান যার লক্ষ্য আমাদের চারপাশের [[বিশ্ব (দর্শন)|বিশ্বকে]] বোঝার চেষ্টা করা।<ref>H.D. Young & R.A. Freedman, ''University Physics with Modern Physics'': 11th Edition: International Edition (2004), Addison Wesley. Chapter 1, section 1.1, page 2 -এ বলা হয়েছে: "Physics is an ''experimental'' science. Physicists observe the phenomena of nature and try to find patterns and principles that relate these phenomena. These patterns are called physical theories or, when they are very well established and of broad use, physical laws or principles."</ref>
 
পদার্থবিজ্ঞান জ্ঞানের প্রাচীনতম শাখাগুলির একটি এবং এটির সবচেয়ে প্রাচীন উপশাখার আধুনিক নাম [[জ্যোতির্বিজ্ঞান]]।<ref>Evidence exists that the earliest civilizations dating back to beyond 3000BC, such as the [[Sumer]]ians, [[Ancient Egyptians]], and the [[Indus Valley Civilization]], all had a predictive knowledge and a very basic understanding of the motions of the Sun, Moon, and stars.</ref> [[প্রকৃতি]] নিয়ে [[গবেষণা]] মানুষের আদিমতম কাজের একটি, তবে পদার্থবিজ্ঞান বলতে বর্তমানে যাকে বোঝানো হয় তার জন্ম ১৬শ শতাব্দীর [[বৈজ্ঞানিক বিপ্লব|বৈজ্ঞানিক বিপ্লবোত্তরকালেবিপ্লবোত্তর-কালে]], যখন এটি [[বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি]] অনুসরণকারী একটি [[বিজ্ঞান|বিজ্ঞানে]] পরিণত হয়<ref>[[ফ্রান্সিস বেকন]] (১৬২০) তাঁর ''Novum Organum'' গ্রন্থে [[বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির ইতিহাস|বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির প্রচলনের]] বিরোধী ছিলেন।</ref> তার আগে প্রকৃতি নিয়ে গবেষণার সাধারণ নাম ছিল [[প্রাকৃতিক দর্শন]], যাকে ঠিক বিজ্ঞান বলা যায় না।
 
[[জড়পদার্থ|জড়পদার্থের]] ধর্ম সম্পর্কে জ্ঞানদায়ক বিদ্যা বা শাস্ত্র হিসেবে পদার্থবিজ্ঞান গবেষণার সাথে জড়িত ব্যক্তি [[পদার্থবিজ্ঞানী|পদার্থবিজ্ঞানীরূপেপদার্থবিজ্ঞানী-রূপে]] পরিচিত। পদার্থবিজ্ঞানীরা আমাদের চারপাশের বস্তুজগৎ কীকি আচরণ করে আর কেনই বা সেইসব আচরণ করে, তা বোঝার চেষ্টা করেন। তাঁরা এ উদ্দেশ্যে অনুকল্প প্রস্তাব করেন, এবং সেগুলি বাস্তবে পর্যবেক্ষণসম্ভব উপাত্তের সাথে মিলিয়ে দেখেন। এই দৃষ্টিকোণ থেকে পদার্থবিজ্ঞান [[রসায়ন]] ও [[জীববিজ্ঞান|জীববিজ্ঞানের]] সাথে সম্পর্কিত। আবার শাস্ত্রটি [[দর্শন]] ও [[গণিত|গণিতের]] সাথেও সম্পর্কিত। উল্লিখিত সমস্ত শাস্ত্রগুলির পারস্পরিক সম্পর্ক ও নির্ভরশীলতা সুসংজ্ঞায়িত নয়, বরং জটিল। প্রকৃতিকে ভালভাবে বিশ্লেষণ করার জন্য এ সংক্রান্ত বৈজ্ঞানিক গবেষণাকে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও জীববিজ্ঞান এই তিনটি প্রধান বিজ্ঞানে ভাগ করে নেয়া হয়েছে। রসায়নে [[মৌলিক পদার্থ|মৌলিক]] ও [[যৌগিক পদার্থ]] আলোচিত হয়, জীববিজ্ঞানে [[জীবন]] ও জীবিত বস্তুসমূহ নিয়ে আলোচনা করা হয়, আর বাকী সব কিছু আলোচনা করা হয় পদার্থবিজ্ঞানে। দর্শন ও গণিতের সাথে পদার্থবিজ্ঞানের সম্পর্ক আরোআরও জটিল। আধুনিক বিজ্ঞান হিসেবে জন্মলাভের আগ পর্যন্ত পদার্থবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু [[দর্শন|দর্শনশাস্ত্রে]] আলোচিত হত এবং বর্তমান দর্শনের নানা শাখায় অধীত বিষয়সমূহ পদার্থবিজ্ঞানীরা ভবিষ্যতে ব্যাখ্যা করার ইচ্ছা রাখেন (যেমন - [[অস্তিত্ত্বঅস্তিত্ব|অস্তিত্ত্বেরঅস্তিত্বের]] মত [[অধিবিদ্যা|অধিবিদ্যামূলক]] ধারণাসমূহ), যদিও তা সম্ভব না-ও হতে পারে। পদার্থবিজ্ঞানের ধারণা ও [[তত্ত্ব|তত্ত্বগুলি]] প্রায় সার্বজনীনভাবে গাণিতিক [[সমীকরণ|সমীকরণের]] সাহায্যে প্রকাশ করা হয়। তাই গণিতকে প্রায়ই পদার্থবিজ্ঞানের ভাষা বলে অভিহিত করা হয়।<ref>"Philosophy is written in that great book which ever lies before our eyes. I mean the universe, but we cannot understand it if we do not first learn the language and grasp the symbols in which it is written. This book is written in the mathematical language, and the symbols are triangles, circles and other geometrical figures, without whose help it is humanly impossible to comprehend a single word of it, and without which one wanders in vain through a dark labyrinth." -- [[গ্যালিলিও]] (১৬২৩), ''[[The Assayer]]'', G. Toraldo Di Francia (1976), ''The Investigation of the Physical World'' ISBN 0-521-29925-X p.10-এ উদ্ধৃত।
</ref> আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে উপরের সবগুলি শাস্ত্রের মধ্যে গণিতের সাথেই পদার্থবিজ্ঞানের সম্পর্ক সবচেয়ে নিবিড়। পদার্থবিজ্ঞান গণিতের কিছু শাখার উন্নয়নে সরাসরি সহায়তা করেছে, যেমন - [[ভেক্টর বিশ্লেষণ]]। আবার বিজ্ঞানের ইতিহাসে এরকম অনেক ব্যক্তি আছেন যারা গণিত ও পদার্থবিজ্ঞান উভয়ক্ষেত্রেই পারদর্শী ছিলেন, যেমন - [[আইজাক নিউটন|নিউটন]], [[লিওনার্ড অয়লার|অয়লার]], [[কার্ল ফ্রিড্‌রিশ গাউস|গাউস]], [[অঁরি পোয়াঁকারে|পোয়াঁকারে]] প্রমুখ। পদার্থবিজ্ঞান ও গণিতের আন্তঃসম্পর্ক পদার্থবিজ্ঞানকে [[তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞান]] ও [[পরীক্ষামূলক পদার্থবিজ্ঞান]] নামের দুইটি প্রধান শাখায় ভাগ করেছে।
 
১৩ নং লাইন:
প্রযুক্তিগত দৃষ্টিকোণ থেকে পদার্থবিজ্ঞান একটি গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞানের শাখা। পদার্থবিজ্ঞানীদের কাজ [[বিদ্যুৎ]], [[মোটর পরিবহন]], [[চিকিৎসা]] (বিশেষ করে [[এক্স-রশ্মি|এক্স-রশ্মির]] ব্যবহার), ইত্যাদি নানা ক্ষেত্রে কাজে লেগেছে। তবে অনেক সময় পদার্থবিজ্ঞানকে [[পারমাণবিক বোমা]] তৈরির মত অনৈতিক কাজেও ব্যবহার করা হয়েছে।
 
পদার্থবিজ্ঞানীরা যদিও গত প্রায় ৪০০ বছর যাবৎযাবত প্রকৃতিকে বোঝার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, তা সত্ত্বেও প্রকৃতিতে এখনও অনেক সমস্যা রয়ে গেছে যেগুলোর যথাযথ ব্যাখ্যা আজও খুঁজে পাওয়া যায়নি। ফলে পদার্থবিজ্ঞান এখনও একটি সক্রিয় শাস্ত্র; বিশ্ব জুড়ে হাজার হাজার [[গবেষক]] পদার্থবিজ্ঞানের গবেষণায় রত। অতীতের যেকোনযেকোনো সময়ের তুলনায় বর্তমানে পদার্থবিজ্ঞানে গবেষণার পরিমাণ ও পরিসর দুই-ই অনেক বেশি। পদার্থবিজ্ঞানের আধুনিক তত্ত্বগুলি কেবল প্রকৃতির আরও গভীরতর বর্ণনাই দেয়নি, এর অনন্য ও রহস্যময় রূপ আমাদের কাছে আরও পরিষ্কার করে তুলেছে।
 
== পদার্থবিজ্ঞানের প্রধান শাখাসমূহ ==
পদার্থবিজ্ঞান শাস্ত্রের পরিপক্বতার সাথে সাথে প্রকৃতিতে পর্যবেক্ষণযোগ্য ভৌত ঘটনাগুলিকে এর কতগুলি বিশেষ বিশেষ শাখার অধীনে বণ্টন করে নেওয়া হয়েছে। যদিও পদার্থবিজ্ঞানের সমস্ত ক্ষেত্রগুলিকে একত্রে একক একটি তত্ত্বের অধীন হিসেবে মনে করা হয়ে থাকে, এ ধারণাটি এখনও প্রমাণ করা সম্ভব হয়নি। পদার্থবিজ্ঞানের মূল শাখাগুলি এরকম:
 
* [[চিরায়ত বলবিজ্ঞান]]: চিরায়ত বলবিজ্ঞানে বস্তুসমূহের উপর বলের ক্রিয়ার পদার্থবৈজ্ঞানিকপদার্থ-বৈজ্ঞানিক মডেল আলোচিত হয়। এই মডেল নিষ্পত্তিমূলক (deterministic)। চিরায়ত বলবিজ্ঞানকে কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞানের সীমা হিসবে গণ্য করা হয়, যদিও এটা প্রমাণ করা এখনও সম্ভব হয়নি। চিরায়ত বলবিজ্ঞানকে আবার দুই ভাগে ভাগ করা যায়:
** [[নিউটনীয় চিরায়ত বলবিজ্ঞান]], আইজাক নিউটন ও তাঁর গতি সংক্রান্ত বিধিগুলির নাম অনুসারে।
** [[আপেক্ষিক বলবিজ্ঞান]], আলবার্ট আইনস্টাইন এবং তাঁর [[সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব]] ও [[বিশেষ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব]] অনুসারে।
 
* [[কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞান]]: এই শাখায় পারমাণবিক ও অতিপারমাণবিকঅতি-পারমাণবিক ব্যবস্থাসমূহ এবং বিকিরণের সাথে এদের সম্পর্ক পর্যবেক্ষণযোগ্য রাশির সাপেক্ষে আলোচনা করা হয়। কোয়ান্টাম [[বলবিজ্ঞান|বলবিজ্ঞানের]] ভিত্তি পর্যবেক্ষণটি হচ্ছে সব ধরনের শক্তি কিছু বিচ্ছিন্ন এককের গুচ্ছ আকারে নিঃসরিত হয়, যে গুচ্ছগুলির নাম কোয়ান্টা (বহুবচনে)। কোয়ান্টাম তত্ত্বে পর্যবেক্ষণযোগ্য কণাগুলির বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের কেবল সম্ভাবনাভিত্তিক বা পরিসংখ্যানিক গণনা সম্ভব, এবং এগুলি তরঙ্গ ফাংশনের আকারে আলোচনা করা হয়।
 
* [[তড়িৎ-চুম্বকত্ব]]: এই শাখায় তড়িৎ-চুম্বকীয় ক্ষেত্রের পদার্থবিজ্ঞান আলোচিত হয়। তড়িৎ-চুম্বকীয় ক্ষেত্র এমন একটি ক্ষেত্র যা সর্বত্র বিস্তৃত এবং বৈদ্যুতিক চার্জযুক্তচার্জ-যুক্ত কণার উপর এটি বল প্রয়োগ করতে পারে। একইভাবে বৈদ্যুতিক চার্জের উপস্থিতি ও চলন কোন তড়িৎ-চুম্বকীয় ক্ষেত্রকে উল্টো প্রভাবিত করতে পারে।
 
* [[পরিসংখ্যানিক বলবিজ্ঞান]] ও [[তাপগতিবিজ্ঞান]]: এই শাখাগুলিতে [[তাপ]], [[কাজ]] ও [[এনট্রপি]] আলোচিত হয়। তাপগতিবিজ্ঞানে বড় আকারের (macroscopic) ব্যবস্থার শক্তি নিয়ে আলোচনা করা হয় এবং এর উপর [[তাপমাত্রা]], [[চাপ]], [[আয়তন]], [[যান্ত্রিক কাজ]] ইত্যাদির প্রভাব গবেষণা করা হয়। পরিসংখ্যানিক বলবিজ্ঞানে macroscopic ব্যবস্থার microscopic উপাদানগুলিতে [[পরিসংখ্যান|পরিসংখ্যানের]] পদ্ধতি প্রয়োগ করে তাপগতিবিজ্ঞানের macroscopic দৃষ্টিভঙ্গি এবং চিরায়ত বা কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞানে ব্যাখ্যাকৃত পদার্থের পারমাণবিক আচরণের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন করা হয়।
৩১ নং লাইন:
<references/>
 
== গ্রন্থপঞ্জী ==
== গ্রন্থপঞ্জি ==
=== জনপ্রিয় রচনা ও গ্রন্থ ===
* Hawking, Stephen (1988). ''A Brief History of Time''. Bantam. ISBN 0-553-10953-7.