বাকাটক রাজবংশ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্পাদনা সারাংশ নেই
+
৪১ নং লাইন:
 
== প্রতিষ্ঠা ==
বাকাটক রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা [[বিন্ধ্যশক্তি]] সম্বন্ধে বিশেষ কিছু জানা যায় না। অজন্তার ষোল নম্বর গুহার শিলালিপিতে তাঁকে দ্বিজ বা ব্রাহ্মণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এই লিপি থেকে জানা যায় যে, তাঁর বিশাল অশ্বারোহী বাহিনী ছিল এবং তাঁকে প্রচণ্ড লড়াই করে ক্ষমতা লাভ করতে হয়েছিল। যদিও পুরাণে তাঁকে [[বিদিশা|বিদিশার]] শাসক হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, তবে ঐতিহাসিকরা তা সত্য বলতে মানেননি।<ref name=Mahajan>Mahajan V.D. (1960, reprint 2007) ''Ancient India'', New Delhi: [[S.Chand]], ISBN 81-219-0887-6</ref>{{rp|৫৮৭-,৫৮৮}} [[বিন্ধ্যশক্তি|বিন্ধ্যশক্তির]] পরে তাঁর পুত্র [[প্রথম প্রবরসেন]] সিংহাসনলাভ করেন এবং দক্ষিণ ও উত্তর ভারত ধিকার করে তিনি সম্রাট উপাধি গ্রহণ করেন। তিনি [[নর্মদা নদী]] পেরিয়ে সিসুক নামক এক রাজার শাসনাধীন পুরিক রাজ্য অধিকার করেন। মনে করা হয়, তিনি দক্ষিণ কোশল, কলিঙ্গ ও অন্ধ্রের বিস্তীর্ণ অঞ্চল নিজ অধিকারে আনেন। [[প্রথম প্রবরসেন]] ব্রাহ্মণ্য ধর্মানুলম্বী ছিলেন, যিনি অগ্নিষ্টোম, অপ্তোর্যম, উখথ্য, শোদাসিন, অতিরাত্র, বাজপেয়, বৃহস্পতিসব, সদ্যস্ক্র ও চার বার [[অশ্বমেধ]] যজ্ঞ সম্পাদন করেন। তাঁর পুত্র গৌতমীপুত্রের সঙ্গে রাজা ভবনাগের কন্যার বিবাহ হয়, কিন্তু [[প্রথম প্রবরসেন|প্রথম প্রবরসেনের]] মৃত্যুর পূর্বেই গৌতমীপুত্রের মৃত্যু হলে, গৌতমীপুত্রের পুত্র [[প্রথম রুদ্রসেন (বাকাটক)|প্রথম রুদ্রসেন]] পরবর্তী রাজাসম্রাট হন।হন, যিনি নন্দীবর্ধনকে রাজধানী করে রাজত্ব করেন। [[প্রথম প্রবরসেন|প্রথম প্রবরসেনের]] অপর পুত্র [[সর্বসেন]] [[ওয়াশিম|বৎসগুল্ম]] নামক স্থানে রাজধানী অপরস্থাপন একটিকরে পৃথক ভাবে রাজ্য স্থাপনশাসন করেন।<ref name=Mahajan/>{{rp|৫৮৮}}
 
== প্রবরপুর নন্দীবর্ধন শাখা ==
[[প্রথম প্রবরসেন|প্রথম প্রবরসেনের]] পৌত্র [[প্রথম রুদ্রসেন (বাকাটক)|প্রথম রুদ্রসেন]] সম্বন্ধে বিশেষ কিছু জানা যায় না। [[গুপ্ত সাম্রাজ্য|গুপ্ত সম্রাট]] [[সমুদ্রগুপ্ত|সমুদ্রগুপ্তের]] [[এলাহাবাদ স্তম্ভ|এলাহাবাদ স্তম্ভলিপিতে]] রুদ্রদেব নামক এক রাজার উল্লেখ রয়েছে। রুদ্রদেব ও [[প্রথম রুদ্রসেন (বাকাটক)|প্রথম রুদ্রসেন]] একই ব্যক্তি কি না সেই নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে সন্দেহ রয়েছে। [[প্রথম রুদ্রসেন (বাকাটক)|প্রথম রুদ্রসেনের]] পরে [[প্রথম পৃথ্বীসেন]] ও তাঁর পরে [[দ্বিতীয় রুদ্রসেন (বাকাটক)|দ্বিতীয় রুদ্রসেন]] সিংহাসনলাভ করেন। [[দ্বিতীয় রুদ্রসেন (বাকাটক)|দ্বিতীয় রুদ্রসেন]] [[গুপ্ত সাম্রাজ্য|গুপ্ত সম্রাট]] [[দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত|দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের]] কন্যা [[প্রভাবতীগুপ্ত|প্রভাবতীগুপ্তকে]] বিবাহ করেন। [[দ্বিতীয় রুদ্রসেন (বাকাটক)|দ্বিতীয় রুদ্রসেনের]] মৃত্যুর পর [[প্রভাবতীগুপ্ত]] তাঁর দুই নাবালক পুত্র [[দিবাকরসেন]] ও [[দামোদরসেন|দামোদরসেনের]] অভিভাবক ও রাজপ্রতিনিধি হয়ে কুড়ি বছর রাজ্যভার সামলান। এই সময় এই রাজ্য বস্তুতঃ [[গুপ্ত সাম্রাজ্য|গুপ্ত সাম্রাজ্যের]] শাসনতন্ত্রের অংশ হয়ে যায়।<ref name=ahoi>{{cite book|last1=Kulke|first1=Hermann|last2=Rothermund|first2=Dietmar|authorlink1=Hermann Kulke|authorlink2=Dietmar Rothermund|title=A History of India|url=http://www.routledge.com/books/details/9780415485432/|edition=Fourth|publisher=Routledge|accessdate=1 October 2014|year=2004|pages=91–92}}</ref> [[দামোদরসেন]], যিনি দ্বিতীয় প্রবরসেন নামেও পরিচিত ছিলেন, তাঁর রাজধানী নন্দীবর্ধন থেকে প্রবরপুরে সরিয়ে নিয়ে যান।<ref name=Mahajan/>{{rp|৫৮৯}} [[দামোদরসেন|দামোদরসেনের]] পরে [[নরেন্দ্রসেন]] শাসনভার লাভ করেন, যার রাজত্বকালে মধ্য ভারতের বেশ কিছু রাজ্য তাঁর অধীনতা স্বীকার করে নিতে বাধ্য হয়। [[নরেন্দ্রসেন|নরেন্দ্রসেনের]] পর তাঁর পুত্র [[দ্বিতীয় পৃথ্বীসেন]] রাজত্ব লাভ করেন। তাঁর মৃত্যুর পর এই রাজবংশের [[ওয়াশিম|বৎসগুল্ম]] শাখার [[হরিষেণ]] কর্তৃক এই রাজ্য অধিকৃত হয়।
 
== বৎসগুল্ম শাখা ==
[[প্রথম প্রবরসেন|প্রথম প্রবরসেনের]] পুত্র [[সর্বসেন]] [[ওয়াশিম|বৎসগুল্ম]] নামক স্থানে রাজধানী স্থাপন করেন ও সেখান থেকে রাজ্য শাসন করেন।<ref name=Mahajan/>{{rp|৫৮৮}} তিনি ''ধর্মমহারাজা'' উপাধি গ্রহণ করেন ও ''হরিবিজয়'' নামক একটি প্রাকৃত গ্রন্থ রচনা করেন। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র [[বিন্ধ্যসেন]] রাজত্ব লাভ করেন।<ref name="singh1">{{cite book|last=Singh|first=Upinder|title=A History of Ancient and Early Medieval India: From the Stone Age to the 12th Century|year=2008|publisher=Pearson Education|location=New Delhi|isbn=978-81-317-1677-9|page=484}}</ref> যিনিও ''ধর্মমহারাজা'' উপাধি গ্রহণ করেন এবং কুন্তল রাজ্যকে পরাজিত করেন। তাঁর মৃত্যুর পর [[দ্বিতীয় প্রবরসেন]] খুব অল্প সময়ের জন্য রাজত্ব করেন। [[দ্বিতীয় প্রবরসেন|দ্বিতীয় প্রবরসেনের]] পুত্র তথা পরবর্তী শাসকের নাম জানা যায় না। এই অজ্ঞাত শাসকের পর তাঁর পুত্র [[দেবসেন]] রাজত্বলাভ করেন, কিন্তু মূলত তাঁর মন্ত্রী হস্তীভোজ তাঁর হয়ে শাসনকার্য্য পরিচালনা করতেন।<ref name=Mahajan/>{{rp|৫৯০,৫৯১}}
 
[[দেবসেন|দেবসেনের]] পরে তাঁর পুত্র [[হরিষেণ]] সিংহাসনে আরোহণ কুরেন। তিনি বৌদ্ধ সংস্কৃতি ও শিল্পকলার পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। তাঁর শাসনকালে [[অজন্তা গুহাসমূহ|অজন্তা গুহার]] ষোল, সতেরো ও উনিশ নম্বর গুহার বিহার নির্মিত হয় ও চিত্র ও ভাস্কর্য্য দিয়ে তা সজ্জিত করা হয়, যদিও ওয়াল্টার স্পিঙ্ক নামক এক শিল্প-ঐতিহাসিকের মতে, [[অজন্তা গুহাসমূহ|অজন্তা গুহার]] নয়, দশ, বারো, তেরো ও পনেরো নম্বর গুহা বাদ দিয়ে সকল গুহা ভাস্কর্য্যই [[হরিষেণ|হরিষেণের]] রাজত্বকালে নির্মিত হয়েছিল।<ref>Spink, Walter, M. (2009). ''Ajanta: Defining Features'', in ''Indica'', Vol.46, No.1, Mumbai: Heras Institute of Indian History and Culture, pp.3-38</ref> এর মধ্যে তাঁর মন্ত্রী বরাহদেব [[অজন্তা গুহাসমূহ|অজন্তার ষোড়শ গুহাটি]] বিহার নির্মাণ করেন।<ref name=Mahajan/>{{rp|৫৯০,৫৯১}} [[অজন্তা গুহাসমূহ|এই গুহার]] একটি শিলালিপি থেকে জানা যায় যে, [[হরিষেণ]] [[অবন্তী]], [[কোশল]], [[কলিঙ্গ]], [[অন্ধ্র]], [[গুজরাট|লাট]], [[নাসিক জেলা|ত্রিকূট]] এবং কুন্তল রাজ্য অধিকার করেন।
 
== তথ্যসূত্র ==