ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
৬৪ নং লাইন:
 
১৯৩৪ সালে ভারতীয় বামপন্থী নেতারা [[কংগ্রেস সোশ্যালিস্ট পার্টি]] (সিএসপি) গঠন করলে সিপিআই এই দলটিকে [[সমাজতান্ত্রিক ফ্যাসিবাদ|সমাজতান্ত্রিক ফ্যাসিবাদী]] আখ্যা দেয়।<ref name="saha"/>
 
[[কমিনটার্ন]] [[জনপ্রিয় ফ্রন্ট]] রাজনীতির দিকে নীতি পরিবর্তন করলে ভারতীয় কমিউনিস্টরা [[ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস|ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের]] সঙ্গে তাঁদের সম্পর্কে পরিবর্তন আনেন। কমিউনিস্টরা কংগ্রেসের বামপন্থী শাখা কংগ্রেস সোশ্যালিস্ট পার্টিতে যোগ দেন। সিএসপিতে যোগদানের মাধ্যমে সিপিআই সিএসপির গণপরিষদের দাবি মেনে নেয়। এই দাবি দুই বছর আগে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল। যদিও সিপিআই-এর ব্যাখ্যা অনুসারে একটি গণপরিষদ [[সোভিয়েত (কাউন্সিল)|সোভিয়েতের]] সমতুল্য ছিল না।<ref name="mnroy">Roy, Samaren. ''M.N. Roy: A Political Biography''. [[Hyderabad, India|Hyderabad]]: Orient Longman, 1998. p. 113, 115</ref>
 
১৯৩৭ সালের জুলাই মাসে সিপিআই-এর প্রথম [[কেরল]] শাখাটি [[কালিকট|কালিকটে]] একটি গোপন বৈঠকে গঠিত হয়। এই বৈঠকে পাঁচ জন উপস্থিত ছিলেন। এঁরা হলেন [[পি. কৃষ্ণ পিল্লাই]], [[ই. এম. এস. নাম্বুদিরিপাদ]], এন. সি. শেখর, [[কে. দামোদরন]] ও এস. ভি. ঘাটে। এঁদের মধ্যে প্রথম চার জন ছিলেন কেরলে সিএসপি-এর সদস্য। ঘাটে ছিলেন সিপিআই-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। তিনি মাদ্রাজ থেকে এসেছিলেন।<ref>[[E.M.S. Namboodiripad]]. ''The Communist Party in Kerala – Six Decades of Struggle and Advance''. New Delhi: National Book Centre, 1994. p. 6</ref> কেরলে সিএসপি ও সিপিআই-এর মধ্যে যোগাযোগ শুরু হয়েছিল ১৯৩৫ সালে। সেই সময় পি. সুন্দরায়া (সেই সময় মাদ্রাজের বাসিন্দা ও সিপিআই-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য) নাম্বুদিরিপাদ ও কৃষ্ণ পিল্লাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। সুন্দরায়া ও ঘাটে কয়েকবার কেরলে আসেন এবং সেখানকার সিএসপি নেতাদের সঙ্গে দেখা করেন। কংগ্রেস, সিএসপি ও [[সারা ভারত কৃষক সভা|সারা ভারত কৃষক সভার]] জাতীয় সম্মেলনগুলিতে এই যোগাযোগ আরও দৃঢ় হয়।<ref name="ems7"/>
 
১৯৩৬-১৯৩৭ সালে সোশ্যালিস্ট ও কমিউনিস্টদের মধ্যে সহযোগিতার পরিমাণ সর্বাধিক বৃদ্ধি পায়। ১৯৩৬ সালের জানুয়ারি মাসে [[মিরাট|মিরাটে]] আয়োজিত সিএসপি-র ২য় কংগ্রেসে একটি তত্ত্ব গৃহীত হয় এবং এই তত্ত্ব অনুসারে ঘোষণা করা হয় ‘[[মার্ক্সবাদ-লেনিনবাদ|মার্ক্সবাদ-লেনিনবাদের]] ভিত্তিতে একটি সংযুক্ত ভারতীয় সমাজতান্ত্রিক দল’ গঠন করা দরকার।<ref>[[E.M.S. Namboodiripad]]. ''The Communist Party in Kerala – Six Decades of Struggle and Advance''. New Delhi: National Book Centre, 1994. p. 44</ref> [[ফৈজপুর|ফৈজপুরে]] আয়োজিত সিএসপি-র ৩য় কংগ্রেসে কয়েকজন কমিউনিস্ট সিএসপি-র জাতীয় কার্যনির্বাহী সমিতিতে স্থান পান।<ref>[[E.M.S. Namboodiripad]]. ''The Communist Party in Kerala – Six Decades of Struggle and Advance''. New Delhi: National Book Centre, 1994. p. 45</ref>
 
কেরলে কমিউনিস্টরা সিএসপি-র উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ অর্জন করে। অল্প কিছু সময়ের জন্য সেখানে তারা কংগ্রেসকেও নিয়ন্ত্রণ করে। নাম্বুদিরিপাদ ও জেড. এ. আহমেদ – এই দুই কমিউনিস্ট সিএসপির সর্বভারতীয় যুগ্ম সচিব হন। সিএসপি-র কার্যনির্বাহী সমিতিতে সিপিআই-এর আরও সদস্য ছিলেন।<ref name="mnroy"/>
 
১৯৪০ সালে সিপিআই-এর রামগড় কংগ্রেস কনফারেন্সে দল ‘প্রলেতারিয়ান পথে’র কথা ঘোষণা করে। এর মাধ্যমে যুদ্ধের সময় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের দুর্বল অবস্থার সুযোগ নিয়ে সাধারণ ধর্মঘট, সরকারকে আর্থিক সুযোগসুবিধা দান বন্ধ করা এবং শসস্ত্র বিদ্রোহে মানুষকে উৎসাহিত করার ডাক দেওয়া হয়। সিএসপি জাতীয় কার্যনির্বাহী সমিতি [[রামগড় ক্যান্টনমেন্ট|রামগড়ে]] সমবেত হয়ে সকল কমিউনিস্টকে সিএসপিকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়।<ref>Ralhan, O.P. (ed.). ''Encyclopedia of Political Parties – India – Pakistan – Bangladesh – National -Regional – Local. Vol. 24. Socialist Movement in India''. New Delhi: Anmol Publications, 1997. p. 82</ref>
 
১৯৪২ সালের জুলাই মাসে সিপিআই আইনি স্বীকৃতি লাভ করে।<ref>[[Harkishan Singh Surjeet|Surjeet, Harkishan Surjeet]]. ''March of the Communist Movement in India – An Introduction to the Documents of the History of the Communist Movement in India''. [[Calcutta]]: National Book Agency, 1998. p. 55</ref> অল ইন্ডিয়া ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের উপর কমিউনিস্টদের কর্তৃত্ব বৃদ্ধি পায়। একই সময় কমিউনিস্টরা তাঁদের [[ভারত ছাড়ো আন্দোলন|ভারত ছাড়ো আন্দোলনের]] বিরোধিতা সম্পর্কে রাজনৈতিকভাবে সচেতন ছিলেন।
 
১৯৪৬ সালে সিপিআই একক শক্তিতে প্রাদেশিক আইনসভা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। ১৫৮৫টি আসনের মধ্যে ১০৮টি আসনে লড়ে তারা আটটি আসন পায়। সিপিআই-এর প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ছিল ৬৬৬,৭২৩। উল্লেখ্য, ভারতের প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার ৮৬% এই নির্বাচনে অংশ নেয়নি। দল বাংলায় তিনটি আসনে জয় লাভ করে তিনটি আসনেই জয় লাভ করে। সিপিআই প্রার্থী সোমনাথ লাহিড়ী গণপরিষদে নির্বাচিত হন।<ref>M.V. S. Koteswara Rao. ''Communist Parties and United Front – Experience in Kerala and West Bengal''. [[Hyderabad, India|Hyderabad]]: Prajasakti Book House, 2003. p. 207.</ref>
১৯৪৬ সালে সিপিআই [[তেভাগা আন্দোলন]] নামে বাংলায় সামন্ত্রতন্ত্রের বিরুদ্ধে একটি জঙ্গি আন্দোলন শুরু করে।
 
===স্বাধীন ভারতে কমিউনিস্ট আন্দোলন===