চাভিন সংস্কৃতি: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
নতুন পাতার সূচনা
 
লিঙ্কযোগ
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
১ নং লাইন:
[[চিত্র:Chavín - Feline-and-Cactus Stirrup Vessel - Walters 482832.jpg|thumb|200px|চাভিন মৃৎপাত্র]]
'''চাভিন সংস্কৃতি''' হল [[দক্ষিণ আমেরিকা|দক্ষিণ আমেরিকার]] এক সুপ্রাচীন সংস্কৃতি। বস্তুত ১৯৯০'এর দশকে [[কারাল সভ্যতা|কারাল-সুপে সভ্যতার]] আগে পর্যন্ত এই সংস্কৃতিকেই [[আন্দিজ পর্বতমালা|আন্দিজ পার্বত্য অঞ্চল]] তথা সমগ্র আমেরিকা মহাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন সংস্কৃতি বলে মনে করা হত, যারা সভ্যতার পথে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ঘটাতে সক্ষম হয়েছিল।<ref name="Haas">[http://www.nature.com/nature/journal/v432/n7020/full/nature03146.html Haas, Jonathan; Winifred Creamer; Alvaro Ruiz. "Dating the Late Archaic occupation of the Norte Chico region in Peru". ''Nature'' 432, 1020-1023 (23 December 2004). doi:10.1038/nature03146.] সংগৃহীত ১ জুলাই, ২০১৫।</ref> এই সভ্যতার সর্বোত্তম বিকাশের সময়কাল মোটামুটি খ্রিষ্টপূর্ব ৮০০ অব্দ থেকে ২০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত প্রায় হাজার বছর ব্যাপী সময়কাল। এদের ভাষা আমাদের জানা নেই এবং যতদূর সম্ভব সেই ভাষা আজ সম্পূর্ণ বিলুপ্ত। তাই এরা নিজেরা নিজেদের কী বলতো সে সম্পর্কে কিছুই জানতে পারা যায় না।<ref>Wolfson, Nessa; Manes, Joan. ''Language of Inequality''. 1985. ISBN 978-3110099461 পৃঃ - ১৮৬।</ref> আন্দিজ পর্বতের উপর প্রায় ১০০০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত [[পেরু|পেরুর]] চাভিন দে উয়ান্তার'এ এই সভ্যতার সব থেকে বড় কেন্দ্রটি আবিস্কৃত হয়েছে বলে, সেই জায়গার নাম অনুসারে তাদের ''চাভিন সংস্কৃতি'' বলে উল্লেখ করা হয়। কারাল-সুপে সভ্যতার আবিষ্কারের আগে পর্যন্ত এই সভ্যতাকেই দক্ষিণ আমেরিকার সবচেয়ে প্রাচীন সভ্যতা বলে মনে করা হত। আন্দিজ পর্বতের উচ্চভূমিতে এদের মূল কেন্দ্রগুলি অবস্থিত হলেও উপকূলের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে এদের প্রভাব ছড়িয়ে পড়েছিল।<ref name="Das১">সুমিতা দাস: কলম্বাস-পূর্ব আমেরিকা: মুছে দেওয়া সভ্যতার ইতিহাস. পিপলস বুক সোসাইটি: কলকাতা, ২০১৪। ISBN 81-85383-62-6. পৃঃ - ৭৮ - ৭৯।</ref>
 
[[চিত্র:Lombards Museum 148.JPG|thumb|200px|সোনার নেকলেস, চাভিন সংস্কৃতি|left]]
পেরুর বর্তমান রাজধানী [[লিমা|লিমার]] কাছে অবস্থিত এই [[চাভিন দে উয়ান্তার]] শহরটি খ্রিস্টপূর্ব ৯০০ অব্দ নাগাদ নির্মিত হয়। তবে তার আগেও এখানে বসবাসের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এই কেন্দ্রের মন্দিরটিকে চাভিন স্থাপত্যের একটি প্রধান নিদর্শন বলে মনে করা হয়। এটি দীর্ঘদিন ধরে ধাপে ধাপে তৈরি করা হয়েছে। এই অঞ্চলে প্রচূর বৃষ্টিপাত হয়। তাই বৃষ্টির জলের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য মন্দিরটিকে ঘিরে অত্যন্ত সুন্দর নিকাশী ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছিল। তাছাড়া মন্দির তৈরি করতে যে সাদা ও কালো পাথরের ব্যবহার করা হয়েছিল, তা বয়ে আনা হয়েছিল দূর থেকে। এর থেকে এক ধরণের সাংগঠনিক ক্ষমতার অস্তিত্ব টের পাওয়া যায়, যার থেকে বোঝা যায় চাভিনদের কেন্দ্রীয় শাসক গোষ্ঠী ছিল যথেষ্ট শক্তিশালী।<ref name="Das১" /> তবে তাদের প্রশাসনিক কেন্দ্র হিসেবে তেমন কিছুই আবিস্কৃত হয়নি। [[চাভিন দে উয়ান্তার]] ছিল মূলত একটি ধর্মীয় কেন্দ্র। তবে এর অবস্থান ছিল পার্বত্য ও উপকুলীয়উপকূলীয় অঞ্চলের যোগাযোগের রাস্তা ও উত্তর দক্ষিণে যোগাযোগের রাস্তার একরকম সংযোগস্থলে। সেই কারণে আন্দাজ করা হয়, রাজনৈতিক দিক থেকেও এর যথেষ্ট গুরুত্ব ছিল।<ref>Burger, Richard L. ''Chavin and the Origins of Andean Civilization''. New York: Thames and Hudson, 1992.</ref>
 
চাভিন সভ্যতা ছিল মূলত কৃষিভিত্তিক। এরা [[ভুট্টা]], কিনোয়া, মেইজ ও [[আলু]] চাষ করতো। চাষের জন্য জল সেচের বন্দোবস্তও ছিল। স্থানীয় পশু ইয়ামাকে তারা পোষ মানিয়েছিল। তাদের মাংস খাওয়া হত, পোশাক তৈরির জন্য তাদের লোম ব্যবহৃত হত, আবার মালবহনের কাজেও তাদের ব্যবহার করা হত।<ref name="Tello">Tello, Julio C. (1943) "Discovery of the Chavín Culture in Peru", ''American Antiquity'' 9(1, Countries South of the Rio Grande). পৃঃ - ১৩৫ - ১৬০। </ref><ref name="Das১" /> পূর্ববর্তী কারাল সভ্যতার সাথে তাদের এক উল্লেখযোগ্য পার্থক্য হল, মৃৎপাত্রের ব্যবহার তারা জানতো। উপকুলীয় অঞ্চলে তাদের ব্যবহৃত সুন্দর সুন্দর মৃৎপাত্র আবিষ্কৃত হয়েছে, যার থেকে তাদের শিল্পবোধের পরিচয় মেলে। এছাড়া মন্দিরগাত্রে ও দেওয়ালেও তারা খোদাই করে অনেক শিল্পকর্ম রচনা করেছিল। এগুলির সাথে তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের যোগ ছিল বলে মনে করা হয়।<ref name="Tello" /> ধাতুবিদ্যাতেও তাদের যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় মেলে। ধাতু গলিয়ে তারা কাজ করতে জানতো। সোনার কাজেও তাদের দক্ষতার পরিচয় পাওয়া যায়।<ref name="Das১" />
 
==তথ্যসূত্র==