পৌরসভা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্পাদনা সারাংশ নেই
পশ্চিমবঙ্গের পুরসভার তালিকা নিবন্ধে তালিকা স্থানান্তর
১ নং লাইন:
'''পুরসভা''' বা '''পৌরসভা''' বা '''মিউনিসিপ্যালিটি''' [[বাংলাদেশের পৌরসভা সমূহের তালিকা|বাংলাদেশ]] এবং ভারতের [[পশ্চিমবঙ্গের পুরসভার তালিকা|পশ্চিমবঙ্গ]] রাজ্যের শহরাঞ্চলীয় স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ একক। বাংলাদেশে ''পৌরসভা'' এবং পশ্চিমবঙ্গে ''পুরসভা'' নামটি প্রচলিত। বাংলাদেশে মোট পৌরসভার সংখ্যা ৩১৫টি এবং পশ্চিমবঙ্গে মোট পুরসভার সংখ্যা ১১৯টি।
{{globalize|date=এপ্রিল ২০১৫}}
'''পুরসভা''' বা '''পৌরসভা''' বা '''মিউনিসিপ্যালিটি''' [[বাংলাদেশ]] এবং [[পশ্চিমবঙ্গ]] রাজ্যের শহরাঞ্চলীয় স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ একক।
[[কলকাতা]], [[আসানসোল]], [[দুর্গাপুর]], [[শিলিগুড়ি]], [[হাওড়া]] ও [[চন্দননগর]] মহানগরগুলি বাদে পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য শহরে এই ব্যবস্থা প্রচলিত। পশ্চিমবঙ্গে মোট পুরসভার সংখ্যা ১১৯টি। এর মধ্যে [[প্রেসিডেন্সি বিভাগ|প্রেসিডেন্সি বিভাগে]] ৫৫টি, [[বর্ধমান বিভাগ|বর্ধমান বিভাগে]] ৪৩টি ও [[জলপাইগুড়ি বিভাগ|জলপাইগুড়ি বিভাগে]] ২১টি পুরসভা বিদ্যমান।
 
== ইতিহাস ==
[[১৯৩২]] সালে অবিভক্ত বাংলায় প্রবর্তিত বঙ্গীয় পৌরসভা আইন বা বেঙ্গল মিউনিসিপ্যাল অ্যাক্ট অনুসারে ও সেই আইনের [[১৯৮০]], [[১৯৮২]][[১৯৯২]] সালের সংশোধনী অনুসারে পশ্চিমবঙ্গের পুরসভাগুলি পরিচালিত হত। [[১৯৯৩]] সালে পশ্চিমবঙ্গের পুরসভাগুলির পরিচালনার লক্ষ্যে পশ্চিমবঙ্গ পৌর আইন বা দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল মিউনিসিপ্যাল অ্যাক্ট চালু হয়। [[১৯৯৪]][[১৯৯৫]] সালে এই আইনের সংশোধন সাধন করা হয়। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের পুরসভাগুলি এই আইন মোতাবেক প্রতিষ্ঠিত আছে।
 
বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯ অনুসারে বাংলাদেশের পৌরসভাগুলো প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত।
== গঠন ==
নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলির নিরিখে রাজ্য সরকার কোনও অঞ্চলে পৌরসভা গঠন করতে পারে –
* নির্দিষ্ট অঞ্চলের জনসংখ্যা ২০,০০০-এর কম হবে না।
* নির্দিষ্ট অঞ্চলের জনঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ন্যূনতম ৭৫০ জন হতে হবে।
* প্রাপ্তবয়স্ক অধিবাসীদের অর্ধেকের বেশি লোক অকৃষিজীবী হবেন।
এছাড়াও রাজ্য সরকারকে নিশ্চিত হতে হয় যে, কোনও শহরকে পুরসভার অন্তর্গত করলে তা যথেষ্ট পরিমাণে কর ও অন্যান্য উৎস থেকে রাজস্ব সংগ্রহে সক্ষম হবে।
 
== পৌরসভা/পুরসভার তালিকা ==
== শ্রেণিবিভাগ ==
* [[বাংলাদেশের পৌরসভা সমূহের তালিকা]]
 
* [[পশ্চিমবঙ্গের পুরসভার তালিকা]]
পশ্চিমবঙ্গ পৌর আইন, ১৯৯৩ অনুসারে পুর অঞ্চলগুলিকে ৫টি প্রধান ভাগে ভাগ করা হয়। এগুলি হল –
* ‘ক’ বিভাগ – ২,০০,০০০-এর বেশি জনসংখ্যা বিশিষ্ট। ওয়ার্ড সংখ্যা সর্বাধিক ৩৫, সর্বনিম্ন ৯।
* ‘খ’ বিভাগ – ১,৫০,০০০ থেকে ২,০০,০০০ জনসংখ্যা বিশিষ্ট। ওয়ার্ড সংখ্যা সর্বাধিক ৩০, সর্বনিম্ন ৯।
* ‘গ’ বিভাগ –৭৫,০০০ থেকে ১,৫০,০০০ জনসংখ্যা বিশিষ্ট। ওয়ার্ড সংখ্যা সর্বাধিক ২৫, সর্বনিম্ন ৯।
* ‘ঘ’ বিভাগ –২৫,০০০ থেকে ৭৫,০০০ জনসংখ্যা বিশিষ্ট। ওয়ার্ড সংখ্যা সর্বাধিক ২০, সর্বনিম্ন ৯।
* ‘ঙ’ বিভাগ – ২৫,০০০-এর কম জনসংখ্যা বিশিষ্ট। ওয়ার্ড সংখ্যা সর্বাধিক ১৫, সর্বনিম্ন ৯।
 
== কর্তৃপক্ষ ==
পুরসভার দায়িত্বে আছেন –
* পুরসভা বা বোর্ড অব কাউন্সিলরস – এঁরা পুরসভার নির্বাচিত সদস্য।
* সপারিষদ-সভাপতি বা চেয়ারম্যান-ইন-কাউন্সিল – সপারিষদ-সভাপতিতে থাকবেন সভাপতি, সহসভাপতি ও অন্যান্য সদস্য। এঁদের ভূমিকা মন্ত্রীসভার ক্যাবিনেটের মতো। সপারিষদ-সভাপতির সদস্যসংখ্যা ‘ক’, ‘খ’, ‘গ’, ‘ঘ’ ও ‘ঙ’ এই পাঁচটি শ্রেণির জন্য সর্বাধিক যথাক্রমে ৫,৪,৩,২ ও ১টি।
* সভাপতি বা চেয়ারম্যান – পুরসভা নিজেদের মধ্যে একজনকে সভাপতি নির্বাচন করেন। সভাপতি পুরসভার শাসনতান্ত্রিক প্রধান ও পৌরপ্রশাসনের নিয়ন্ত্রক। সভাপতি পুরসভার সদস্যদের মধ্যে থেকে একজনকে সহসভাপতি ও সপারিষদ-সভাপতির সদস্যদের মনোনীত করেন ও তাঁদের মধ্যে কাজ বণ্টন করে দেন। সভাপতির ইচ্ছানুযায়ী সপারিষদ-সভাপতির সদস্যেরা ক্ষমতা ভোগ ও কাজ করেন। সভাপতি অথবা তাঁর অনুপস্থিতিতে সহসভাপতি সপারিষদ-সভাপতি ও পুরসভার সকল অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। পুরসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের প্রস্তাবের ভিত্তিতে সভাপতি অপসারণের প্রক্রিয়া শুরু করা যায় এবং এরপর সভার বিশেষ অধিবেশনে এক-তৃতীয়াংশ সদস্যের লিখিত দাবির ভিত্তিতে সভাপতি অপসারিত হন।
 
পুরসভা প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে ওয়ার্ড কমিটি গঠন করে। পশ্চিমবঙ্গ পৌর আইন অনুসারে পুর অঞ্চলে বসবাসকারী তপশিলি জাতি ও উপজাতিভুক্ত জনসংখ্যার অনুপাতে তপশিলি জাতি ও উপজাতিভুক্ত মানুষদের আসন সংরক্ষিত থাকবে। এই আইন অনুসারে কোনও পুরসভাকেই বাতিল করা যায় না, কেবলমাত্র ভেঙে দেওয়া যায়। কিন্তু ভেঙে দেবার ছয় মাসের মধ্যে নতুন করে নির্বাচন করতে হয়।
 
== ক্ষমতা ও কার্যাবলি ==
যেসব ক্ষমতা ও দায়িত্ব পুরসভাগুলির হাতে সমর্পণ করা হয়েছে সেগুলি হল –
* রাস্তা, সেতু, বাগান, জলাশয়, ঘাট, কুয়ো, নর্দমা, শৌচাগার, ইত্যাদির নির্মান, বৈচিত্রায়ন, রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন,
* রাস্তায় জল দেওয়া ও ধুয়ে পরিচ্ছন্ন রাখা,
* আলোর ব্যবস্থা করা,
* জল সরবরাহ,
* জঞ্জাল অপসারণ করে পরিবেশ রক্ষা করা,
* উন্মুক্ত স্থানগুলিকে ব্যবহারোপযোগী করে তোলা ও সেগুলি রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন করা,
* বৃক্ষরোপন ও রক্ষণাবেক্ষণ,
* বাসযোগ্য গৃহ নির্মান,
* শিক্ষার প্রসার
* হাসপাতাল, চিকিৎসালয়, অনাথ আশ্রম, প্রসূতি ভবন, ধর্মশালা ও অতিথিনিবাসের সংখ্যা বৃদ্ধি।
* রোগ-প্রতিষেধক টীকাকরণ আয়োজন,
* ভয়াবহ ব্যাধি সংক্রমণ প্রতিহত করা,
* পৌর বাজার ও কসাইখানা নির্মান ও রক্ষণাবেক্ষণ,
* সরকারি গ্রন্থাগারগুলির উন্নয়ণ,
* দুর্ভিক্ষ, খরা, বন্যা ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগের কালে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া।
* মৃত জন্তুর দেহ অপসারণ,
* শ্মশানঘাট, গোরস্থান ও কবরখানা নির্মান ও রক্ষণাবেক্ষণ,
* জেলা পরিকল্পনার অঙ্গ হিসাবে পৌর অঞ্চলে পরিকল্পনা রূপায়ণ
* বস্তি উন্নয়ন, ইত্যাদি।
 
== আয় ==
পুরসভাগুলির আয়ের প্রধান উৎস রাজ্য সরকারের দেয় অনুদান। পুরসভার মোট খরচের ৬০% বহন করে রাজ্য সরকার। দ্বিতীয় উৎস, জাতীয় অর্থ কমিশনের সুপারিশে কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক হস্তান্তরিত রাজস্ব। তৃতীয় উৎস, পুরসভাগুলির নিজস্ব রাজস্ব।
পুরসভার নিজস্ব রাজস্বগুলি হল –
* বার্ষিক মূল্যের ইজারার উপর কর,
* জলকর,
* বিদ্যুতকর,
* শৌচাগারের উপর আরোপিত কর,
* যানবাহনের উপর আরোপিত কর,
* ব্যবসায়ী ও চাকুরিজীবীদের আরোপিত কর,
* গাড়ি রেজিস্ট্রেশনের উপর আরোপিত কর,
* সেতু ও ফেরির কর,
* ঘাট বা পুরসভার নিজস্ব জায়গাগুলি ব্যবহারের উপর কর।
 
পশ্চিমবঙ্গ পৌর আইন, ১৯৯৩ অনুসারে প্রত্যেক পুরসভার জন্য একটি করে পৌর তহবিল বা মিউনিসিপ্যাল ফান্ড গঠন করা হবে ও পৌর খাতে আদায়ীকৃত সব অর্থ সেই তহবিলে জমা পড়বে।
 
== পশ্চিমবঙ্গের পুরসভার তালিকা ==
{{col-begin}}
{{col-2}}
'''প্রেসিডেন্সি বিভাগ'''
* [[উত্তর ২৪ পরগণা জেলা|উত্তর ২৪ পরগনা]] –
[[বারাসাত]], [[বরানগর]], [[বাদুড়িয়া]], [[বনগাঁ]], [[অশোকনগর-কল্যানগড়]], [[ব্যারাকপুর]], [[গোবরডাঙা]], [[বসিরহাট]], [[দমদম]], [[ভাটপাড়া]], [[গারুলিয়া]], [[হাবড়া]], [[কামারহাটী]], [[নৈহাটি]], [[খড়দহ]], [[কাঁচড়াপাড়া]], [[নিউ ব্যারাকপুর]], [[উত্তর ব্যারাকপুর]], [[দক্ষিণ দমদম]], [[উত্তর দমদম]], [[পানিহাটি]], [[টাকি]], [[টিটাগড়]], [[হালিশহর]]।
* [[দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা|দক্ষিণ ২৪ পরগনা]] –
[[রাজপুর]], [[বারুইপুর]], [[জয়নগর]], [[মজিলপুর]], [[বজবজ]], [[ডায়মণ্ড হারবার]], [[মহেশতলা]]।
* [[হাওড়া জেলা|হাওড়া]] –
[[উলুবেড়িয়া]], [[বালি]]।
* [[নদিয়া জেলা|নদিয়া]] –
[[রানাঘাট]], [[কৃষ্ণনগর]], [[শান্তিপুর]], [[বীরনগর]], [[নবদ্বীপ]], [[চাকদহ]], [[কল্যাণী]], [[গয়েশপুর]], [[কুপার্স ক্যাম্প]], [[তাহেরপুর]]।
* [[মুর্শিদাবাদ জেলা|মুর্শিদাবাদ]] –
[[মুর্শিদাবাদ]], [[কান্দি]], [[জিয়াগঞ্জ]], [[আজিমগঞ্জ]], [[জঙ্গীপুর]], [[বহরমপুর]], [[ধুলিয়ান]], [[বেলডাঙা]]।
{{col-2}}
 
'''বর্ধমান বিভাগ'''
* [[বর্ধমান জেলা|বীরভূম]] –
[[কাটোয়া]], [[দাঁইহাট]], [[কালনা]], [[রাণীগঞ্জ]], [[বর্ধমান]], [[গুসকরা]], [[মেমারি]], [[কুলটি]], [[জামুরিয়া]]।
* [[বীরভূম জেলা|বীরভূম]] –
[[সিউড়ি]], [[রামপুরহাট]], [[বোলপুর]], [[দুবরাজপুর]], [[সাঁইথিয়া]], [[নলহাটি]]।
* [[বাঁকুড়া]] -
[[বাঁকুড়া]], [[বিষ্ণুপুর]], [[সোনামুখী]]
* [[পূর্ব মেদিনীপুর]] –
[[তমলুক]], [[কাঁথি]], [[এগরা]], [[হলদিয়া]]।
* [[পশ্চিম মেদিনীপুর]] –
[[মেদিনীপুর]], [[খড়গপুর]], [[ঘাটাল]], [[চন্দ্রকোনা]], [[ক্ষীরপাই]], [[ঝাড়গ্রাম]], [[রামজীবনপুর]]।
* [[হুগলি জেলা|হুগলি]] –
[[বাঁশবেড়িয়া]], [[ভদ্রেশ্বর]], [[বৈদ্যবাটি]], [[শ্রীরামপুর]], [[আরামবাগ]], [[চাপদানি]], [[রিষড়া]] [[হুগলি-চুঁচুড়া|চুঁচুড়া]], [[কোন্নগর]], [[উত্তরপাড়া-কোতরং|উত্তরপাড়া]], [[তারকেশ্বর]]।
* [[পুরুলিয়া জেলা|পুরুলিয়া]] –
[[পুরুলিয়া]], [[ঝালদা]], [[রঘুনাথপুর]]।
{{col-end}}
 
'''জলপাইগুড়ি বিভাগ'''
* [[দার্জিলিং জেলা|দার্জিলিং]] –
[[দার্জিলিং]], [[কার্শিয়াং]], [[কালিম্পং]], [[মিরিক]]।
* [[জলপাইগুড়ি জেলা|জলপাইগুড়ি]] –
[[জলপাইগুড়ি]], [[আলিপুরদুয়ার]], [[মাল]], [[ধুপগুড়ি]]।
* [[কোচবিহার]] –
[[কোচবিহার]], [[মাথাভাঙ্গা]], [[দিনহাটা]], [[মেখলিগঞ্জ]], [[হলদিবাড়ি]], [[তুফানগঞ্জ]]।
* [[উত্তর দিনাজপুর]] –
[[রায়গঞ্জ]], [[কালিয়াগঞ্জ]], [[ইসলামপুর]]।
* [[দক্ষিণ দিনাজপুর]] –
[[বালুরঘাট]], [[গঙ্গারামপুর]]।
* [[মালদহ জেলা|মালদহ]] –
[[মালদহ]], [[ইংলিশবাজার]]।
 
== তথ্যসূত্র ==
{{Reflist}}
ভারতীয় প্রশাসন, শিউলি সরকার, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুস্তক পর্ষৎ, [[কলকাতা]], [[২০০৫]]
 
[[বিষয়শ্রেণী:পশ্চিমবঙ্গের পুরসভাপৌরসভা]]