বাঘা যতীন: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Anisieb11-এর সম্পাদিত সংস্করণ হতে NahidSultanBot-এর সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণে ফেরত
৮২ নং লাইন:
[[১৯১৪]] সালের [[নভেম্বর]] মাসে [[সানফ্রান্সিসকো]] থেকে প্রত্যাবর্তন করলেন [['গদর']]-নেতা [[সত্যেন সেন]]; সংগে এলেন [[বিষ্ণুগণেশ পিংলে]], [[কর্তারসিং সরাংগা]] ও বিরাট একদল 'গদর'-কর্মী। সত্যেন জানালেন যে, [[বার্লিন|বার্লিনে]] [[বীরেন চট্টোপাধ্যায়]] পরিচালিত বিপ্লবীরা খোদ [[কাইজার|কাইজারের]] সংগে চুক্তি সই করেছেন ভারতে অস্ত্রশস্ত্র ও অর্থ পৌঁছে দেবে [[ক্যালিফোর্নিয়া]] থেকে পাঠানো কয়েকটি [[জাহাজ]]; এর দায়িত্ব নিয়েছেন ওয়াশিংটনে জার্মান [[রাষ্ট্রদূত]] [[ব্যার্নস্টর্ফ]] ও তাঁর মিলিটারী আতাশে [[ফন্‌পাপেন]]। কাইজারের সনদ নিয়ে একটি বিপ্লবী মিশন রওনা হচ্ছে [[কাবুল]] অভিমুখে; পথে তারা জার্মানীর হাতে বন্দী ব্রিটিশ সৈন্যবহরের ভারতীয় জওয়ানদের নিয়ে গড়ে তোলা বাহিনী নিয়ে কাবুল থেকে [[কুচকাওয়াজ]] করে হাজির হবে [[দিল্লী|দিল্লীতে]], যোগ দেবে সশস্ত্র অভ্যুত্থানে। [[মায়ানমার|বার্মা]] সীমান্তেও [[সৈন্যবাহিনী]] প্রস্তুত থাকছে কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম দখল করে বিদ্রোহ ঘোষণা করবে বলে। দূরপ্রাচ্যে বিভিন্ন জার্মান [[দূতাবাস]] ও কনস্যুলেট সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত।
 
যতীনের চিঠি নিয়ে পিংলে ও কর্তারসিং গেলেন রাসবিহারী'র সংগে দেখা করতে। টেগার্টের রিপোর্টে দেখা যায়, এই সময়ে সত্যেন সেনকে নিয়ে যতীন কলকাতার বিভিন্ন রেজিমেন্টের অফিসারদের সংগে আলোচনায় ব্যস্ত।<ref>Terrorism........, Vol. III, p. 505 (Tegart's Report)</ref> ভারতের এই যজ্ঞ-অনলে ইন্ধন দেবার জন্য সাজসাজ পড়ে গেল [[দূরপ্রাচ্য|দূরপ্রাচ্যে]] [[আমেরিকা|আমেরিকায়]], [[ইউরোপ|ইউরোপে]], [[মধ্যপ্রাচ্য|মধ্যপ্রাচ্যে]]। [[ভূপতি মজুমদার]] স্পষ্ট লিখে গিয়েছেন যে, আন্তর্জাতিক এই সহযোগিতার উদ্ভাবন করেন স্বয়ং যতীন মুখার্জি। ইতিহাসে একে অভিহিত করা হয় [[হিন্দু-জার্মান ষড়যন্ত্র|"ভারত-জার্মান ষড়যন্ত্র"]] নামে।
 
সমাগত 'গদর' কর্মীরা কাজে নামতে চান, জার্মান অস্ত্র আসার জন্য তাদেঁর তর সইছে না। যতীনের সঙ্গে পরামর্শ করে রাসবিহারী দিন ধার্য্য করলেন [[২১ ফেব্রুয়ারী]] অভ্যুত্থানের জন্য। মিঞাসির (মহীসুর), [[লাহোর]], [[ফিরোজপুর]], [[রাওয়ালপিণ্ডি]], [[জব্বলপুর]], [[বেনারস]]-সর্বত্র [[তেরংগা]] [[ঝাণ্ডা]] উড়িয়ে দেওয়া হবেঃ [[নীল]] হবে মুসলমান কর্মীদের প্রতীক; হলদে [[শিখ]]; [[লাল]] হিন্দু। কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম দখল করে সমস্ত [[রেলপথ]] উড়িয়ে দেওয়া হবে, যাতে করে সরকার পক্ষ প্রত্যুত্তরের জন্য সৈন্যবাহিনী না আনাতে পারে। ইতিমধ্যে [[২৬ আগস্ট ১৯১৪]] সালে কলকাতার [[রডা কোম্পানী]] থেকে বিপ্লবীরা যথেষ্ট শক্তিশালী [[মাউজার পিস্তল]] সংগ্রহ করেছেন, প্রয়োজনমতো যা দূরপাল্লার [[রাইফেল|রাইফেলের]] মতো ব্যবহার করা চলে। রাসবিহারী'র অনুরোধে অর্থ সংগ্রহ করতে যতীন নতুন একপ্রস্থ হিংসাত্মক অভিযানের শরণ নিলেন- মোটরচালিত [[ট্যাক্সি|ট্যাক্সির]] সাহায্যে অভিনব এই ডাকাতির পদ্ধতি অবিলম্বে [[ফ্রান্স|ফ্রান্সে]] দেখা যাবে, প্রখ্যাত নৈরাজ্যবাদী সর্দার "বোনো"র পরিচালনায়। পরিশীলিত, শৃংখলাবদ্ধ দুঃসাহসিক এই কীর্তির সামনে মুগ্ধ আতঙ্কে ইংরেজ সরকার হতবুদ্ধি হয়ে রইল।<ref>Rowlatt Report, p. 68-71 ("Notable leaders, Jatin Mukherjee and Bepin Ganguli")</ref> আর পুলকে মুগ্ধ দেশবাসী প্রত্যয় ফিরে পেল বিপ্লবীদের কর্মক্ষমতায়। ১২/২/১৯১৫, ২২/২/১৯১৫ - দুই দু'টো চোখ ধাঁধানো [[ডাকাতি|ডাকাতির]] সংবাদ ছড়িয়ে পড়ল সারাদেশে। ২৪/২/১৯১৫ যতীন এক গুপ্ত বৈঠকে কর্মসূচী নির্ধারণ করছেন, এমন সময়ে এক সরকারী [[গোয়েন্দা]] সেখানে উপস্থিত দেখে নেতার ইংগিতক্রমে [[চিত্তপ্রিয়]] তাকে [[গুলি]] করেন। গুপ্তচরটি তখনো মরেনি। মরার আগে সে যতীনকে তার হত্যাকারী বলে সনাক্ত করে।