বরেন্দ্র: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
বট বানান ঠিক করেছে
মুসফিক মুন্না (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১৫ নং লাইন:
 
এক কথায় বলা যায় উত্তরবংগউত্তরবঙ্গ নামে পরিচিত সমগ্র ভূ-ভাগটিই আসলে বরেন্দ্র।সম্প্রতি এপ্রিল/১৯৯৮ সালে রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনার মহোদয়বৃন্দেরমহোদয়গনের উদ্যোগে প্রকাশিত এবং বিখ্যাত প্রত্নতত্ববিদ আ, কা, ম, যাকারিয়া কর্তৃক সম্পাদিত '''বরেন্দ্র''' অঞ্চলের ইতিহাস নামক পুস্তক অনুযায়ী সমগ্র রাজশাহী বিভাগকেই বরেন্দ্র অঞ্চল নামে অভিহিত করা হয়েছে।
 
এই বিভাগ [[১৭৬৫]] সনের পরবর্তীতে দিওয়ানী প্রাপ্ত [[ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী]] কর্তৃক বিভাজিত হয়ে ‘রাজশাহী বিভাগ’ হলে সে সময় সমগ্র বাঙলারবাংলার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল নিয়ে গঠিত আটটি জেলা এই রাজশাহী বিভাগের অর্š—ভূক্তঅঅন্তর্ভুক্ত ছিল। সেগুলি হলÑহল ১। দার্জিলিং ২।জলপাইগুড়ি ৩। মালদহ ৪। দিনাজপুর ৫। রংপুর ৬। বগুড়া ৭। পাবনা এবং ৮। বৃহত্তর রাজশাহী জেলা সমূহ ([[রাজশাহী]], [[নাটোর]], [[নওগাঁ]], [[চাপাইনবাবগঞ্জ]]) <ref>আ,কা,ম, যাকারিয়া,(বরেন্দ্র অঞ্চলের ইতিহাস) পৃঃÑ৪</ref>
 
আ,কা,ম, যাকারিয়া দুই বঙ্গের অংশ সমন্বিত বৃহত্তর দিনাজপুর ও মালদহ জেলা এবং রংপুর, বগুড়া পাবনা ও বৃহত্তর রাজশাহী জেলা নিয়ে গঠিত রাজশাহী বিভাগকেই বরেন্দ্র ভূমি হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন এবং এর আয়তন ১৩,৩৬৯ বর্গমাইল বা ৩৪,৬৫৪ বর্গ কিলো মিটারকিলোমিটার এবং ১৯৮১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ীঅনুযায় লোকসংখাজনসংখ্যা ২,১৮,৯৬,৮৯১ জন বলে বর্ণনা করেছেন। <ref>আ,কা,ম, যাকারিয়া,(বরেন্দ্র অঞ্চলের ইতিহাস) পৃঃÑ৩পৃঃ৩</ref>
 
বরেন্দ্র ভূমির আয়তন বা সীমানা সর্ম্পকে যাকারিয়া সাহেবের বক্তব্য প্রায় সকল খ্যাতনামা পন্ডিতবর্গের দ্বারা সমর্থিত এবং প্রামানিক হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে বিধায় তাকে সর্বজনসম্মত মতামত হিসেবে গ্রহণ করা যেতে পারে।তবে কখনো পুন্ড্র কখনো পুন্ড্রবর্ধন কখনো গৌড় বা কখনো নিবৃত হিসেবে বরেন্দ্রভূমির আয়তন যুগে যুগে কালে কালে কমবেশী হয়েছে এ কথা নিশ্চিত করেই বলা যায়।
 
ক্রমপরম্পরায় বরেন্দ্রের অর্ন্তগত ভূভাগের বর্ণনা করতে গেলে প্রথমেই পুন্ড্র বা পুন্ড্র বর্ধনেরপুন্ড্রবর্ধনের প্রসংগ চলে আসবে।এ প্রসংগে রমেশচন্দ্র মজুমদারের অভিমত হলÑ “পুন্ড্রহল“পুন্ড্র একটি প্রাচীন জাতিমূলক নাম।ইহারা উত্তÍ বংগেউত্তরবঙ্গে বাস করিত বলিয়াইবলি য়াই এ অঞ্চল পুন্ড্রদেশ ও পুন্ড্রবর্ধন নামে খ্যাত ছিল।" ভবিষৎ পুরানে উক্ত হইয়াছে যে নিম্নলিখিত সাতটি দেশ পুন্ড্র দেশের অর্ন্তভূক্ত ছিলÑ১।ছিল ১। গৌড়; ২। বরেন্দ্র; ৩। নীবিতি; ৪। সুম্ম (রাঢ়) ৫। ঝারিখন্ডঝাড়খন্ড (সাঁওতাল পরগণা;) ৬। বরাহভূমি (মানভূম জেলার বরাভূম) এবং ৭। বর্ধমান। প্রাচীন তাম্রশাসনেও আছে‘পুন্ড্রবর্ধনআছে ‘পুন্ড্রবর্ধন ভূক্ত্যন্তঃপাতী-বঙ্গে বিক্রমপুর ভাগে’ অর্থাৎ এককালে পুন্ড্রবর্ধন নামক ভূক্তি(দেশের সর্বোচ্চ শাসন-বিভাগ) গঙ্গা নদীর পূর্বভাগে স্থিত বর্তমান বাংলাদেশের প্রায় সমস্ত ভূখণ্ডকেই বুঝাইত, অর্থাৎ রাজশাহী, প্রেসিডেন্সি, ঢাকা ও চট্টগ্রাম- বাংলার ভূতপূর্ব এই চারিটিচারটি বিভাগ কোন না কোন সময়ে পুন্ড্রবর্ধন ভূক্তির অর্ন্তগত ছিল। <ref>রমেশচন্দ্র মজুমদার। বাংলাদেশের ইতিহাস।পৃঃ-১০</ref>
 
পুন্ড্রজনদের সর্বপ্রাচীন উল্লেখ রয়েছে ঐতরেয় ব্রাহ্মণে(কালসীমা খ্রীষ্টপূর্ব ১৪০০-১০০০) এবং তারপর বৌধায়ন ধর্মসূত্রে(কালসীমা খ্রীষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতক) প্রথমোক্ত গ্রন্থের মতে পুন্ড্র জনপদের অবস্থান ছিল আর্যভূমির প্রাচ্য-প্রত্যন্ত দেশে এবং দ্বিতীয় গ্রন্থের মতে বঙ্গ এবং কলিঙ্গ দেশের প্রতিবেশী হিসেবে। এই তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রাতঃস্মরণীয় ঐতিহাসিক নীহাররঞ্জন রায় মন্তব্য করেছেন যে ঐ জনপদের অবস্থান ছিল মুঙ্গেরের পূর্বদিকে এবং কোশীতীর সংলগ্ন। এই সমস্ত বিশ্লেষণে আদিকাল থেকেই পুন্ড্র আর অধুনা উত্তরবঙ্গ যে এক বা অভিন্ন ভূভাগ সমৃদ্ধ এই ইঙ্গিতই পাওয়া যায়।
প্রাপ্ত বিশিষ্ট প্রতœতাত্বিকপ্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এবং তথ্যের প্রেক্ষিতে নীহাররঞ্জন আরো বলেছেনÑ “ক্রমবর্ধমান সমৃদ্ধির সংগেসঙ্গে সংগেসঙ্গে পুন্ড্র পঞ্চম-ষষ্ঠ শতকে পুন্ড্রবর্ধনে রুপান্তরিত হইয়াছে,এবং গুপ্ত রাষ্ট্রের একটি প্রধান ভূক্তিতে পরিণত হইয়াছে। ধনাইদহ, বৈগ্রাম, পাহাড়পুর এবং দামোদরপুর তাম্রপট্টোলী কয়টিতে এবং য়ুয়ান চোয়াঙের বিবরণে এই পুন্ড্রবর্ধন নামই পাওয়া যাইতেছে। উপরোক্ত পট্টোলীগুলিতে উল্লিখিত বিভিন্ন স্থানের নাম হইতে এ তথ্য আজ নিঃসংশয় যে,তদানীন্তনত দানীন্তন পুন্ড্রবর্ধনভূক্তি অন্ততঃ বগুড়া দিনাজপুর এবং রাজশাহী জেলা জুড়িয়া বিস্তৃত ছিল। মোটামুটি সমগ্র উত্তরবংগইউত্তরবঙ্গই বোধহয় ছিল পুন্ড্রবর্ধনের অধীন, একেবারে রাজমহল-গঙ্গা-ভাগিরথী তীর হইতে আরম্ভ করিয়া করতোয়া পর্যন্ত, কারণ য়ুয়ান চোয়াঙ কজংগল হইতে আসিয়াছিলেন পুন্ডবর্ধনে এবং করতোয়া পার হইয়া গিয়াছিলেন কামরুপ। কজঙ্গল এবং করতোয়া মধ্যবর্তী ভূভাগই তাহা হইলে পুন্ড্রবর্ধন; উত্তরে হিমবচ্ছিখর; দক্ষিণে সীমা কালে কালে বিভিন্ন।পরবর্তী কালে পৌন্ড্রভূক্তি, পুন্ড্র বা পৌন্ড্রবর্ধনভূক্তির রাষ্ট্রসীমা উত্তরোত্তর বাড়িয়াই গিয়াছে। ধর্মপালের (অষ্টম শতক) খালিমপুর লিপিতেই দেখিতেছি পুন্ড্রবর্ধনার্ন্তগত বাঘ্রতটিমন্ডলের উল্লেখ। এই বাঘ্রতটিমন্ডল যে দক্ষিণ-সমুদ্রতীরবর্তী ব্যাঘ্রাধ্যুষিত বনময় প্রদেশ হওয়া অসম্ভব নয়, সে কথা আগেই বলিয়াছি।সেন আমলে দেখিতেছি পুন্ড্রবর্ধনের দক্ষিণতম সীমা পশ্চিম দিকে খাড়িবিষয়-খাড়িমন্ডল(বর্তমান খাড়ি পরগণা, ২৪ পরগণা) অন্যদিকে ঢাকা-বাখরগঞ্জের সীমা পর্যন্ত। বঙ্গের নাক্ষ্য এবং বিক্রমপুর ভাগও তখন পুন্ড্রবর্ধনের অর্ন্তগত। <ref>নীহাররঞ্জন রায়,বাঙ্গালীর ইতিহাস।পৃঃ-১১৫</ref>
 
নীহাররঞ্জনের মতামতকে সমর্থন করে আর এক প্রাজ্ঞ ইংরেজ পন্ডিত আলেকজান্ডার কানিংহামও একই মত প্রকাশ করে বলেছেন যেÑ“প্রাচীনকালেযে “প্রাচীনকালে হিমালয়ের পাদদেশ থেকে আরম্ভ করে বঙ্গোপসাগরের উপকুল পর্যন্ত বিস্তৃত ভূখন্ড পুন্ড্রদেশ নামে অভিহিত হত।” <ref name="ReferenceA">এ,কে এম, ইয়াকুব আলী।(ব, অ, ই, )পৃঃ-১৮৪</ref>
তিনি আরো অভিমত প্রকাশ করেছেন যেÑযে “পরবর্তী কোন এক সময় হতে পুন্ড্রবর্ধনের স্থলে তার একটি মন্ডল বা প্রশাসনিক বিভাগ‘বরেন্দ্রী’দ্বিভাগ ‘বরেন্দ্রী’ জনগণের নিকট অধিক পরিচিত হয়ে ওঠে। <ref name="ReferenceA"/>
 
অনুমান করা যেতে পারে যে সপ্তম শতকের পর থেকে পুন্ড্রবর্ধনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে বরেন্দ্রের পরিচিতি ঘটেছে।বরেন্দ্রীরঘটেছে। বরেন্দ্রীর ভূভাগ সর্ম্পকে রমেশচন্দ্র মজুমদার বলেছেনÑ“বরেন্দ্রবলেছেন “বরেন্দ্র অথবা বরেন্দ্রী উত্তরবংগেরউত্তরবঙ্গের আর একটি সুপ্রসিদ্ধ জনপদ। রামচরিত কাব্যে বরেন্দ্রী মন্ডল গঙ্গা ও করতোয়া নদের মধ্যে অবস্থিত বলিয়া বর্ণিত হইয়াছে। <ref>রমেশচন্দ্র মজুমদার।প্রাগুক্ত।পৃঃÑ১১</ref>
 
নীহাররঞ্জন বলেছেন-----<blockquote>“পুন্ড্রবর্ধনের কেন্দ্র বা হৃদয়স্থানের ্একটিএকটি নূতন নাম পাইতেছি দশম শতক হইতে। এ নাম বরেন্দ্র অথবা বরেন্দ্রী----কবি সন্ধ্যাকর বরেন্দ্রীকে পাল রাজাদের ‘জনকভূ ’ অর্থাৎ পিতৃভূমি বলিয়া ইঙ্গিত করিয়াছেন, এবং গঙ্গা করতোয়ার মধ্যে ইহার অবস্থিতি নির্দেশ করিয়াছেন---সিলিমপুর শিলালিপি, তর্পণদিঘী এবং মাধাইনগর পট্টোলি তিনটিতে স্পষ্ট উল্লেখিত আছে যে বরেন্দ্রী পুন্ড্রবর্ধনভূক্তির অর্ন্তভুক্ত ছিল। ---সেন রাজাদের পট্টোলিগুলিতে বরেন্দ্রীর অর্ন্তগত স্থানগুলির অবস্থিতি হইতে এ অনুমান নিঃসংশয়ে করা যায় যে বর্তমান বগুড়া, দিনাজপুর ও রাজশাহী জেলা এবং হয়তো পাবনাও(পদুম্বা?) প্রাচীন বরেন্দ্রীর বর্তমান প্রতিনিধি”</blockquote> <ref>নীহাররঞ্জন রায়। প্রাগুক্ত।পৃঃÑ১১৬প্রাগুক্ত।পৃঃ১১৬</ref>
 
বরেন্দ্রের আয়তন সর্ম্পকে ইংরেজ পন্ডিত আলেকজান্ডার কানিংহাম যে সুষ্পষ্ট অভিমত প্রদান করেছেন তা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে- “পশ্চিমে গঙ্গা ও মহানন্দার স্রোতধারা, পূর্বে করতোয়া, দক্ষিণে পদ্মা এবং উত্তরে কুচবিহার ও তরাইয়ের মধ্যস্থিত বিরাট বিস্তৃত ভূমি প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় বরিন্দের বর্তমান প্রতিনিধি।” <ref>এ,কে,এম,ইয়াকুব আলী ।প্রাগুক্ত।পৃঃÑ১৮৪।প্রাগুক্ত।পৃঃ১৮৪</ref>
 
মধ্যযুগে এর প্রধান শহর হিসেবে লক্ষণাবতী বা গৌড়, দেউকোট বা দেবকোট(কোটিবর্ষ/বাণগড়) বর্ধণকোট, পান্ডুয়া এবং মহাস্থানের নাম করা যেতে পারে। মোগল আমলের প্রশাসনিক ইক্তাগুলিকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে সেগুলির মধ্যে সরকার ঘোড়াঘাট ও সরকার বারবকাবাদের সমগ্র এবং সরকার তাজপুর, পিনজারা এবং বাযুহার কিছু কিছু অংশ বরেন্দ্রর অন্তর্ভুক্ত ছিল বলে মনে হয়।
 
প্রাচীন বাংলার ইতিহাসের একমাত্র প্রামাণ্য গ্রন্থ হিসেবে স্বীকৃত সন্ধ্যাকরনন্দীর রামচরিতে সর্বপ্রথম বরেন্দ্র মন্ডলের স্পষ্ট ভৌগোলিক সীমারেখা পাওয়া যায় গঙ্গা ও করতোয়ার মধ্যবর্তী ভূমি হিসাবে। যার হৃদয় স্থানে বা কেন্দ্রভূমিতে ছিল অপুর্ণভবা। পালরাজকবি সন্ধ্যাকরনন্দী রামচরিত কাব্যের কবি প্রশস্তিতে লিখেছেনÑলিখেছেন-
 
“বসুধাশিরোবরেন্দ্রী মন্ডল
৪৮ নং লাইন:
অর্থাৎ- পুন্ড্রবর্ধনপুরের কাছে বৃহদ্বটু নামে পুণ্যভূমিতে কবির বাস। এটি ধরণীর শির বরেন্দ্র মন্ডলের মুকুটমণি।
 
ষোড়শ শতাব্দিতে রচিত আর এক বিখ্যাত গ্রন্থ দিগি¦জয়প্রকাশেদিগিঃজয়প্রকাশে বলা হয়েছেÑ হয়েছে-
 
পদ্মানদ্যাঃ পূর্বধারে ব্রহ্মপুত্রস্য পশ্চিমে।
৫৭ নং লাইন:
অর্থা পদ্মানদীর পূর্বধারে এবং ব্রহ্মপুত্রের পশ্চিমে নানা নদ নদী যুক্ত বরেন্দ্র নামক দেশ। উপবঙ্গের কাছে এবং মলদের দক্ষিণে অবস্থিত শতার্ধ যোজন বিস্তৃত এ দেশটি তৃণময়।
 
ষোড়শ শতাব্দিতে রচিত ভবিষৎ পুরাণের ব্রহ্মখন্ড মতেও বরেন্দ্র পদ্মা নদীর পূর্বভাগস্থ এক দেশ। সেখানে বলা হয়েছেÑ হয়েছে-
 
পদ্মাবত্যাঃ পূর্বভাগে দেশো জলময়োমহান
৬৪ নং লাইন:
অর্থা পদ্মাবতী(পদ্মা) নদীর পূর্বভাগে বরেন্দ্র দেশ নামে সদাশস্যশালী এক জলময় মহান দেশ আছে।
 
বরেন্দ্র বা বরিন্দের অবস্থান সর্ম্পকে সর্বশেষ প্রামাণিক তথ্য দিয়েছেন মধ্যযুগীয় মুসলমান ঐতিহাসিকেরা। ১২৬০ সনে রচিত মিনহাজ-ই-সিরাজের তবকাত-ই-নাসিরি অনুযায়ী বরিন্দ হচ্ছে গঙ্গার পূর্ববর্তী এবং লক্ষণাবতীর পূর্বপ্রান্তের ভূখণ্ড। তিনি লিখেছেনÑলিখেছেন- “লাখণাবতীর দুটি অংশÑপশ্চিমাংশঅংশ পশ্চিমাংশ লাড়(রাঢ়) এবং পূর্বাংশ বরিন্দ।”Ñ১৩বরিন্দ।”১৩
 
বরিন্দ এবং বরিন্দের অবস্থান সর্ম্পকে নীহাররঞ্জন বলেছেনÑ“উত্তরবংগেরবলেছেন- “উত্তরবংগের রাঙামাটি প্রসঙ্গ আগেই বলিয়াছি। তাহা ছাড়া বগুড়া- রাজশাহীর উত্তর, দিনাজপুরের পূর্ব, এবং রংপুরের পশ্চিম স্পর্শ করিয়া এই রেখার একটি বিস্তৃত স্ফীতি- উচ্চ গৈরিক ভূমি- দেখিতে পাওয়া যায়; ইহাই মুসলমান ঐতিহাসিকদের বরিন্দ, বরেন্দ্রভূমির কেন্দ্রভূমি।----বরেন্দ্রীর কেন্দ্রবিন্দু বরিন্দের গৈরিক ভূমি অনুর্বর, পুরাভূমি; কিন্তু পূর্ব-পশ্চিম- দক্ষিণ ঘিরিয়া তঙ্গন-আত্রাই, মহানন্দা-কোশী, পদ্মা-করতোয়ার জল ও পলিমাটি দ্বারা গঠিত নবভূমি।---বরিন্দ জনবিরল--- এবং মাটির রং গৈরিক।”Ñ১৪গৈরিক।”১৪
সর্বশেষে বলা যায়Ñবাংলাদেশেরযায় বাংলাদেশের বৃহত্তর রাজশাহী জেলা যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ ও চাপাই নবাবগঞ্জ এছাড়া রংপুর, বগুড়া, ও পাবনা জেলা সহ ৪৭ পূর্ব অর্থাৎ অবিভক্ত দিনাজপুর এবং মালদহ জেলার সমন্বয়ে গঠিত প্রায় ৩৫,০০০(পয়ত্রিশ) হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা বরেন্দ্র ভূমির অন্তর্গত বলে সর্বজনস্বীকৃত হয়েছে।
 
এই অঞ্চলের ভূমিকে মোটামুটি তিন ভাগে বিভক্ত করে আলোচনা করা যায়, সেগুলি হল- ১। লালমাটিতে গঠিত প্রাচীন ভূমি ২। পলিমাটি দ্বারা গঠিত মোটামুটি প্রাচীন ও উঁচু ভূমি ৩। বিভিন্ন নদীবাহিত পলিমাটি দ্বারা গঠিত নিম্নভূমি।
৭৩ নং লাইন:
বরেন্দ্রভুমির বিভিন্ন স্থানে জনমত জরিপে দেখা গেছে যে লাল মাটিতে গঠিত প্রাচীন ভুমিকেই মূলতঃ সাধারণ জনগণ বরিন্দ বা বরিন্ বা বরেন্দ্র হিসেবে জানে এবং মূল্যায়ন করে।এবং সম্ভবতঃ এই ভূখণ্ডই হল মুসলমান ঐতিহাসিকদের বর্ণিত বরিন্দ যার বিবরণ নীহাররঞ্জনও প্রদান করেছেন ।
 
]বিদেশী পণ্ডিতরাও এই ভূখণ্ডকেই মূলতঃ বরেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করে আলোচনা করেছেন। তাই দেখা যায় পন্ডিত এফ,জে, মনাহাম ১৯১৪ সালে রয়েল এশিয়াটিক সোসাইটির সাময়িকিতে বরেন্দ্রর সীমারেখার বর্ণনা দিয়েছেন এভাবেÑএভাবে- --.”-This”This belt of land runs east and west comprising western bogra,south western rangpur, southern dinajpur, and northern Rajshahi, but on the west the belt takes a turn south-ward and extends almost to the ganges at godagari,embracing the eastern portion of malda and part of western Rajshahi.”- ১৫”১৫
 
এই ভূমি সর্ম্পকে বিশিষ্ট পন্ডিতবর্গের গবেষনায় জানা গেছে যে এই ভূমি অববাহিকার অন্যান্য ভূমি থেকে অনেক প্রাচীন, প্রায় ১৮ থেকে ২০ লক্ষ বছরের পুরনো এবং বিভিন্ন অনন্য বৈশিষ্ট্যে পরিপূর্ণ । স্থাণীয় ভাবে ‘ভাঙর’ নামে পরিচিত এই প্রাচীন পলিমাটির স্বাভাবিক রঙ ঈষৎ বিবর্ণ লালচে, ঈষৎ পিঙ্গল বর্ণের এবং নতুন করে অনাবৃত হলে তা কিছুটা হলুদ বর্ণের দেখা যায়।
== তথ্যসূত্র ==
{{reflist}}
<references/>
== বহিঃসংযোগ ==
 
<!--
 
২। প্রাগুক্ত। পৃঃÑ৩পৃঃ৩
 
৩। রমেশচন্দ্র মজুমদার। বাংলাদেশের ইতিহাস।পৃঃ-১০
৯৩ নং লাইন:
৬। তথ্যসূত্র। প্রাগুক্ত। পৃঃ-১৮৪
 
৭। রমেশচন্দ্র মজুমদার।প্রাগুক্ত।পৃঃÑ১১মজুমদার।প্রাগুক্ত।পৃঃ-১১
 
৮। নীহাররঞ্জন রায়। প্রাগুক্ত।পৃঃÑ১১৬প্রাগুক্ত।পৃঃ-১১৬
 
৯। তথ্যসূত্র। এ,কে,এম,ইয়াকুব আলী ।প্রাগুক্ত।পৃঃÑ১৮৪।প্রাগুক্ত।পৃঃ-১৮৪
 
১০। The Ramacharitam of Sandhyakaranandi (The Varendra Research Society,Rajshahi,1939)p-153. তথ্যসূত্র।সমর পাল বরেন্দ্র অঞ্চলের সাহিত্যঃ প্রাচীন যুগ(ব,অ,ই,) পৃঃ-৮৮৫
 
১১। শ্রী নগেন্দ্রনাথ বসু।বিশ্বকোষবসু। বিশ্বকোষ,অষ্টাদশভাগ পৃঃÑ৩৯৬।পৃঃ-৩৯৬।
 
১২। তথ্যসূত্র,সমর পাল,বরেন্দ্র অঞ্চলের সাহিত্য(ব,অ,ই-৮৮৫)
 
১৩। তথ্যসূত্র।ডঃ সাইফুদ্দীন চৌধুরী। প্রাচীন বরেন্দ্রভূমির পরিচয় (বরেন্দ্র অঞ্চলের ইতিহাস) পৃঃ-৫২৬
 
১৪। নীহাররঞ্জন রায় ।রায়। প্রাগুক্ত। পৃঃ-১০১
 
১৫। F.J.Monaham,`Varendra’-Journal of the Royal Asiatic Society,London-1914,P-97-98. তথ্যসূত্র। ডঃ সাইফুদ্দীন চৌধুরী। প্রাচীন বরেন্দ্রভূমির পরিচয় (বরেন্দ্র অঞ্চলের ইতিহাস) পৃঃ-৫২৬ -->