মেঘনাদ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
rjioty kooky op po pu upluiiop
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
Matiia (আলোচনা | অবদান)
180.234.53.246-এর সম্পাদিত সংস্করণ হতে NahidSultanBot-এর সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণে ফেরত
২১ নং লাইন:
[[কৃত্তিবাস ওঝা]] বিরচিত [[কৃত্তিবাসি রামায়ণ|বাংলা রামায়ণে]] বর্ণিত মেঘনাদের উপাখ্যান অবলম্বনে ঊনবিংশ শতাব্দীর বিশিষ্ট [[বাঙালি]] কবি [[মাইকেল মধুসূদন দত্ত]] একটি বাংলা মহাকাব্য রচনা করেন। [[মেঘনাদবধ কাব্য]] নামক এই মহাকাব্যটি বাঙালি সমাজে আজও বিশেষ জনপ্রিয়।
 
== পৌরাণিক উপাখ্যান ==
Tere are all false history.
মেঘনাদের জননী ছিলেন [[মায়াসুর|মায়াসুরের]] কন্যা তথা রাবণের রাজমহিষী [[মন্দোদরী]]। জন্মের সময় মেঘনাদ বজ্রনাদের ন্যায় চিৎকার করেছিলেন। তাই তাঁর নামকরণ হয় মেঘনাদ। অন্যমতে, মেঘের আড়াল থেকে ঘোর যুদ্ধ করতেন বলে তাঁর নাম হয় মেঘনাদ। আবার দেবরাজ [[ইন্দ্র]]কে পরাভূত করেছিলেন বলে তিনি ইন্দ্রজিৎ নামেও অভিহিত হন।
 
মেঘনাদের জন্মসংক্রান্ত আর একটি কাহিনি প্রচলিত আছে: সমুদ্রমন্থন কালে সুলক্ষণা নামে এক সুন্দরী নারী উঠেছিলেন। তিনি পার্বতীর সখি হন। একদিন স্নানান্তে [[পার্বতী]] সুলক্ষণাকে তাঁর পরিধেয় বস্ত্র আনতে বলেন। বস্ত্র আনতে গেলে [[শিব]] সুলক্ষণাকে একা পেয়ে সম্ভোগ করেন। সুলক্ষণা বিব্রত হয়ে পড়লে শিব বর দেন যে তাঁর বিবাহের পরই পুত্রের জন্ম হবে। এদিকে পার্বতীর কাছে পরে বস্ত্র নিয়ে গেলে তিনি সব বুঝতে পারেন। তিনি সুলক্ষণাকে অভিশাপ দেন। সুলক্ষণা মন্দোদরীতে পরিণত হন। এই কারণে মেঘনাদের অপর নাম হয় কানীন। <ref>''পৌরাণিকা: বিশ্বকোষ হিন্দুধর্ম'', প্রথম খণ্ড, অমলকুমার মুখোপাধ্যায়, ফার্মা কেএলএম প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, ২০০১, পৃষ্ঠা ১৯৪</ref>
 
মেঘনাদের দুই সহোদরের নাম অতিকায় ও অক্ষয়কুমার। বাল্যকালেই মেঘনাদ [[ব্রহ্মাস্ত্র]], পাশুপতাস্ত্র, বৈষ্ণবাস্ত্র প্রভৃতি দৈব অস্ত্রশস্ত্রের অধিকারী হয়েছিলেন। তাঁর গুরু ছিলেন দৈত্যগুরু [[শুক্রাচার্য]]। মেঘনাদ নাগরাজ শেষনাগের কন্যা সুলোচনাকে বিবাহ করেছিলেন।
 
=== ব্রহ্মার বরদান ===
রাবণ মেঘনাদকে সঙ্গে নিয়ে দিগ্বিজয়ে বার হয়ে স্বর্গ আক্রমণ করেন। এই যুদ্ধে মেঘনাদের অস্ত্রাঘাতে ইন্দ্রের পুত্র জয়ন্ত অজ্ঞান হয়ে পড়লে জয়ন্তর পিতামহ পুলোমা তাঁকে নিয়ে সকলের অজ্ঞাতে পালিয়ে যান। শোকে মুহ্যমান হয়ে ইন্দ্র রাবণকে অস্ত্রাঘাত করেন। ফলে রাবণ অজ্ঞান হয়ে যান। মেঘনাদ শিবের বরে মায়াপ্রভাবে অদৃশ্য অবস্থায় যুদ্ধ করে ইন্দ্রকে পরাভূত ও বন্দী করেন। ইতিমধ্যে রাবণের জ্ঞান ফেরে এবং তিনি ইন্দ্রকে লঙ্কায় বন্দী করে আনেন। রামায়ণ অনুসারে<ref>রামায়ণ ৭।৩০</ref> অহল্যা ধর্ষণের পাপে ইন্দ্র বন্দী হয়েছিলেন।
 
দেবতাদের অনুরোধে এক বছর বাদে [[ব্রহ্মা]] ইন্দ্রকে মুক্ত করে নিয়ে আসেন। তিনি মেঘনাদকে ইন্দ্রজিৎ নাম দেন এবং ইন্দ্রের মুক্তির প্রতিদানে মেঘনাদকে বরদান করতে চান। মেঘনাদ অমরত্বের বর চান। কিন্তু ব্রহ্মা তা দিতে রাজি হন না। তখন পরিবর্তে মেঘনাদ এই বর চান যে যুদ্ধে যাওয়ার আগে তিনি ইষ্টদেব [[অগ্নি]]র পূজা করবেন এবং অগ্নিসম্ভূত অশ্ব দ্বারা চালিত রথে যুদ্ধে গেলে তিনিই অজেয় হবেন; কিন্তু যজ্ঞ অসমাপ্ত রেখে যুদ্ধে গেলে তাঁর মৃত্যু হবে। এই বরের মাধ্যমে প্রকৃতপক্ষে মেঘনাদ নিজের বিক্রমে অমরত্ব চান। ব্রহ্মা তা মেনে নেন।
 
অন্যমতে [[মহামায়া]]র পূজা করে মেঘনাদ তাঁর মায়াবল লাভ করেছিলেন।
 
=== নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগার ===
রামায়ণ অনুসারে, রাবণ যখন ত্রিলোক জয়ে বেরিয়েছিলেন তখন নিকুম্ভিলা নামক লঙ্কার এক উপবনে<ref>রামায়ণ ৭।২৫</ref> উশনার পৌরহিত্যে মেঘনাদ অগ্নিষ্টোম, অশ্বমেধ, বহুসুবর্ণক, রাজসূয়, গোমেধ, বৈষ্ণব ও মাহেশ্বর নামে সাতটি যজ্ঞ সম্পাদনা করেন। এই যজ্ঞসমূহের ফলে তিনি শিবের কাছ থেকে কামগ স্যন্দন, তামসী মায়া, অক্ষয় ইষুধি ও আরো অনেক অস্ত্রশস্ত্র লাভ করেন। শিবের কাছ থেকে এই সকল মায়াবিদ্যা লাভ করে তিনি মায়াবী নামে অভিহিত হন।
 
যজ্ঞ শেষ হওয়ার পর রাবণ লঙ্কায় ফিরে আসেন। ফিরে পুত্রের কাছে যজ্ঞের সংবাদ লাভ করেন। বৈষ্ণব যজ্ঞ করার জন্য রাবণ অতিশয় বিরক্ত হন। তখন যজ্ঞের পুরোহিত শুক্রাচার্য রাবণকে শাপ দেন যে তিনি [[বিষ্ণু]]র হাতেই নিহত হবেন।
 
=== লঙ্কার যুদ্ধ ===
[[হনুমান]] লঙ্কায় সীতার খোঁজে এলে মেঘনাদের সঙ্গে তাঁর যুদ্ধ হয়েছিল। মেঘনাদ হনুমানকে বন্দী করেছিলেন। নিজের ভ্রাতৃগণের মৃত্যুর পর মেঘনাদ যুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন। রামের হাতে পিতা রাবণের দুর্দশা ও পিতৃব্য [[কুম্ভকর্ণ|কুম্ভকর্ণের]] মৃত্যুর পর তিনি যুদ্ধক্ষেত্রে অবতীর্ণ হন। রাম ও লক্ষ্মণের সঙ্গে তাঁর তিন দিন যুদ্ধ হয়েছিল।
==== প্রথম দিনের যুদ্ধ ====
প্রথম দিন রামের বাহিনীর সঙ্গে মেঘনাদের যুদ্ধ হয়। চতুর রণকৌশলে তিনি [[সুগ্রীব|সুগ্রীবের]] বাহিনীকে হটিয়ে দেন। রাম ও লক্ষ্মণকে বার বার গুপ্ত স্থান থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানাতে থাকেন যাতে তিনি পিতৃব্যের হত্যার প্রতিশোধ তুলতে পারেন। রাম ও লক্ষ্মণ বেরিয়ে এলে তাঁদের সঙ্গে মেঘনাদের ভয়ংকর যুদ্ধ হয়। মেঘনাদ তাঁদের নাগপাশে বদ্ধ করেন। দুজনে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে যান। এই সময়ে হনুমানের অনুরোধে [[গরুড়]] এসে তাঁদের প্রাণরক্ষা করেন। প্রসঙ্গত গরুড় ছিলেন নারায়ণের বাহন ও সাপেদের শত্রু।
==== দ্বিতীয় দিনের যুদ্ধ ====
মেঘনাদ যখন জানতে পারেন যে রাম ও লক্ষ্মণ জীবিত এবং গরুড় তাঁদের উদ্ধার করেছেন, তখন ক্রুদ্ধ হয়ে তিনি শপথ করেন যে অন্তত দুই ভাইয়ের একজনকে সেই দিন হত্যা করবেন। প্রথমে সুগ্রীবের বাহিনীর সঙ্গে তাঁর ভয়ানক যুদ্ধ হয়। পরে লক্ষ্মণ এসে তাঁর সঙ্গে যুদ্ধ শুরু করেন। লক্ষ্মণকে হারানো সহজ নয় বুঝে তিনি মায়াবলে ঝড়বৃষ্টি সৃষ্টি করে তাঁর সম্মুখ ভাগ থেকে বারংবার অদৃশ্য হয়ে যেতে থাকেন। শেষে তাঁর সর্বাপেক্ষা ভয়ানক অস্ত্র শক্তি প্রয়োগ করেন লক্ষ্মণের উপর। লক্ষ্মণ অচৈতন্য হয়ে পড়েন। তাঁর শরীরে এমন এক বিষক্রিয়া শুরু হয় যা ঠিক সূর্যোদয়ের মুহুর্তে তাঁর প্রাণ হরণ করতে উদ্যত হয়। হনুমান লঙ্কার দুর্গ থেকে রাজবৈদ্য সুষেণকে অপহরণ করে আনেন। সুষেণ জানান যদি রাত্রি শেষ হওয়ার পূর্বেই হিমালয়ের ধৌলাধর পর্বত থেকে সঞ্জীবনী বুটি নিয়ে আসা যায় তবে লক্ষ্মণের প্রাণরক্ষা সম্ভব। হনুমান সেই পর্বত উৎপাটন করে আনেন রাতারাতি। সুষেণ প্রথমে শত্রুর শরীরে সেই ঔষধ প্রয়োগ করতে চাননি। কিন্তু রাম যখন তাঁকে মনে করিয়ে দেন আয়ুর্বেদের একটি প্রাচীন প্রবচনের কথা – চিকিৎসকের বন্ধু বা শত্রু নেই। তখন সুষেণ লক্ষ্মণের শরীরে ঔষধ প্রয়োগ করে তাঁকে সারিয়ে তোলেন।
 
==== তৃতীয় দিনের যুদ্ধ ====
লক্ষ্মণ পুনরুজ্জীবিত হয়েছেন জানতে পেরে মেঘনাদ নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে যজ্ঞ সম্পাদনা করতে যান। বিভীষণ তাঁর গুপ্তচর মারফৎ সেই সংবাদ পেয়ে রামকে সতর্ক করেন। কারণ এই যজ্ঞ সম্পূর্ণ হলে মেঘনাদ অজেয় হয়ে যাবেন। বিভীষণ লক্ষ্মণকে যজ্ঞাগারে নিয়ে যান। যজ্ঞাগারে মেঘনাদ অস্ত্র স্পর্শ করতেন না। তিনি প্রথমে যজ্ঞের বাসন ছুঁড়ে লক্ষ্মণকে অচেতন করে দেন। কিন্তু অস্ত্রাগারে যাওয়ার সময় পান না। তার পূর্বেই লক্ষ্মণের জ্ঞান ফেরে এবং তিনি নিরস্ত্র মেঘনাদকে হত্যা করেন।
 
== মেঘনাদবধ কাব্যে মেঘনাদ ==