লিগাল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডার, ১৯৭০: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
নতুন পৃষ্ঠা: '''লিগাল ফেমওয়ার্ক অর্ডার, ১৯৭০''' (এলএফও) ছিল পাকিস্তান|পাকিস্...
(কোনও পার্থক্য নেই)

১৬:০২, ১৬ মার্চ ২০১৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

লিগাল ফেমওয়ার্ক অর্ডার, ১৯৭০ (এলএফও) ছিল পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া খান কর্তৃক জারিকৃত একটি ফরমান। এতে ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনের নীতিসমূহ উল্লেখ করা হয়েছিল। এই নির্বাচন ছিল পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথম প্রত্যক্ষ নির্বাচন।[১][২] এলএফও এর মাধ্যমে “এক ইউনিট” ব্যবস্থা বাতিল করা হয়। এবং পশ্চিম পাকিস্তানে চারটি প্রদেশ পাঞ্জাব, সিন্ধু, বালুচিস্তানউত্তরপশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ পুনর্বহাল করা হয়।[১][২]

ভিত্তি

পূর্বসুরি আইয়ুব খানের পর জেনারেল ইয়াহিয়া খান ক্ষমতা লাভ করেন। তার দায়িত্ব ছিল আইয়ুবের শাসনামলের শেষদিকে অস্থির পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণে এনে আইনশৃঙ্খলা পুনর্বহাল করা।[১] ইয়াহিয়া খান দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের প্রতিশ্রুতি দেন এবং ঘোষণা করেন যে এ উদ্দেশ্যে প্রত্যক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।[১] একইসাথে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তান কিভাবে প্রতিনিধিত্ব করবে তাও আলোচনার বিষয় ছিল।[২] পাকিস্তানের জাতিগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিরা ছিল সংখ্যাগরিষ্ঠ। দেশের দুই অংশের মধ্যে বৈষম্য বিরাজ করছিল।[১] পূর্ব পাকিস্তানের বৃহৎ রাজনৈতিক দল প্রদেশের জন্য অধিক স্বায়ত্তশাসন দাবি করে যা অনেক পশ্চিম পাকিস্তানী বিচ্ছিন্নতাবাদ বলে সন্দেহ করত।[২]

নিয়ম

১৯৭০ সালের ৩১ মার্চ জেনারেল ইয়াহিয়া খান লিগাল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডার ঘোষণা করেন। এতে বলা হয় যে আইনসভায় ৩০০টি আসন থাকবে।[২] ১৯৫৬ সালের সংবিধানে সংখ্যাসাম্যের উল্লেখ ছিল। ফ্রেমওয়ার্কে রাষ্ট্রের দুই অংশের জন্য সংখ্যানুপাতের কথা বলা হয়। এই নিয়মের আওতায় পূর্ব পাকিস্তান ১৬২টি ও পশ্চিম পাকিস্তান ১৩৮টি আসন লাভ করে।[২] আরো উল্লেখ করা হয় যে জাতীয় পরিষদ অধিবেশন আহ্বানের ১২০ দিনের মধ্যে একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন করবে, কিন্তু প্রক্রিয়ার নিয়ম ভবিষ্যত আইনসভার হাতে অর্পণ করা হয়।[২] ১২০ দিনের মধ্যে নতুন আইনসভা সংবিধান প্রণয়নে ব্যর্থ হলে নতুন নির্বাচন দেয়া হবে। রাজনৈতিক দল কর্তৃক প্রস্তাবিত সকল বক্তব্য ও সম্মতি প্রস্তাব রাষ্ট্রপতির সামনে সত্যায়িত করার জন্য পেশ করা হবে।[৩] এছাড়াও এক ইউনিট পদ্ধতি বাতিল করা হয়। পূর্বে এক ইউনিটের আওতায় পশ্চিম পাকিস্তানের চারটি প্রদেশকে একত্রে একটি প্রদেশ গণ্য করা হত।[১][২]

ফলাফল

এলএফও সংখ্যানুপাত পদ্ধতিকে স্বীকৃতি দেয়ায় বাঙালিদের কাছে তা গ্রহণযোগ্য হয়।[২] ১৯৭০ সালের ইরবাচনে আওয়ামী লীগ পূর্ব পাকিস্তানে শুধু দুইটি আসনে পরাজিত হয় এবং জাতীয় পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। তাই সরকার গঠনের জন্য পশ্চিম পাকিস্তানের কোনো দলের সহায়তার প্রয়োজন ছিল না। এলএফও তে সংবিধান প্রণয়নের কোনো নির্দিষ্ট নিয়ম উল্লেখ ছিল না বলে আওয়ামী লীগ নিজেদের মত সংবিধান প্রণয়ন করার অধিকার লাভ করে।[২] অন্যদিকে পশ্চিম পাকিস্তানে জুলফিকার আলী ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টি সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছিল। তারা ঘোষণা করে যে তারা নতুন আইনসভা বয়কট করবে। ফলে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পর জেনারেল ইয়াহিয়া খান আইনসভার অধিবেশন স্থগিত করেন। ফলে পূর্ব পাকিস্তানে বিদ্রোহ দেখা দেয় এবং ১৯৭১ সালের এক পর্যায়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়।[১][২]

তথ্যসূত্র

  1. "Emerging Discontent (1966 - 1970)"Library of Congress Country Studies। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৯-০৭ 
  2. Owen Bennett-Jones (২০০৩)। Pakistan: Eye of the StormYale University Press। পৃষ্ঠা 146–180। আইএসবিএন 978-0-300-10147-8 
  3. Richard Sisson, Leo E. Rose (১৯৯১)। War and Secession: Pakistan, India and the Creation of Bangladesh। University of California Press। পৃষ্ঠা 55। আইএসবিএন 978-0-520-07665-5